alt

মার্কিন নির্বাচনে সর্বশেষ সময়ের জরিপ : কমলা-ট্রাম্প সমানে সমান

সংবাদ ডেস্ক : রোববার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সংবাদ মাধ্যম সিএনএন-এর জরিপে কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমানে সমান লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে। অন্যদিকে, নিউইয়র্ক টাইমস এবং সিয়েনা কলেজ পরিচালিত সর্বশেষ জাতীয় জরিপে কমলা হ্যারিস এবং ট্রাম্প যৌথভাবে ৪৮ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।

অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে আর বাকি মাত্র নয় দিন। এখন চলছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের শেষ মুহূর্তের প্রচারণা। পাশাপাশি চলছে দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর অবস্থান জানতে জনমত জরিপ। ভোটের আগে দেশজুড়ে নিজেদের চূড়ান্ত জনমত জরিপ চালিয়েছে সিএনএন। জরিপে কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমানে সমান লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে।

সিএনএন পরিচালিত এই জরিপে ৪৭ শতাংশ সম্ভাব্য ভোটার ডেমোক্রেটিক দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলাকে এবং ৪৭ শতাংশ সম্ভাব্য ভোটার রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়েছেন। এর আগে সেপ্টেম্বরে হওয়া জরিপে কমলা ৪৮ শতাংশ ও ট্রাম্প ৪৭ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পান।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেয়ার পর কমলা ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী হন। বাইডেন সরে দাঁড়িয়ে কমলাকে সমর্থন দিয়ে যান। সে সময় সিএনএনের জনমত জরিপে ৪৯ শতাংশ নিবন্ধিত ভোটার ট্রাম্পকে এবং ৪৬ শতাংশ ভোটার কমলাকে সমর্থন দিয়েছিলেন।

এ বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে সিএনএন যে কয়টা জরিপ চালিয়েছে, তার কোনোটিতেই (প্রথমে বাইডেন, তারপর কমলার বিপক্ষে) ট্রাম্প কখনো প্রত্যাশিত ফলাফলের বাইরে যাননি। তিনি আরও দুইবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেছেন। তবে কোনোবারই জনমত জরিপে তার এবারের মতো অবস্থান ছিল না।

এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির অবস্থা বেশ টালমাটাল। কিন্তু জনমত জরিপগুলোতে উল্লেখ করার মতো স্থিতিশীল অবস্থা দেখা গেছে।

জরিপে দেখা গেছে, ৮৫ শতাংশ সম্ভাব্য ভোটার তাদের প্রার্থী পছন্দ করে ফেলেছেন এবং তারা সিদ্ধান্তে অটল। মাত্র ১৫ শতাংশ বলেছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তারা পছন্দ পরিবর্তন করেছেন।

যারা প্রার্থী ঠিক করে ফেলেছেন তাদের মধ্যে ৫০ শতাংশ কমলাকে ও ৪৯ শতাংশ ট্রাম্পের পক্ষে বলেছেন। মাত্র এক শতাংশ অন্যান্য প্রার্থীদের সমর্থন দিয়েছেন।

এদিকে, এই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণার শেষ সময়ে এসে আমেরিকার জনগণ নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন। দেশটির নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সরকার পরিচালনা ও দেশ যেভাবে চলছে, তা নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব আরও গভীর হয়েছে। প্রায় ৪৯ শতাংশ ভোটার বলেছেন, এক বছর আগের চেয়ে তারা অর্থনৈতিকভাবে খারাপ অবস্থায় আছেন। যেখানে মাত্র ১৬ শতাংশ ভোটার বলেছেন, গত ১২ মাসে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে।

নিবন্ধিত ভোটাররা কমলা (৪১ শতাংশ পছন্দ থেকে ৫২ শতাংশ অপছন্দ) ও ট্রাম্প (৪১ শতাংশ থেকে ৫৪ শতাংশ) উভয়ের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। ট্রাম্পের পক্ষে তাদের সমর্থন অনেকটা সেপ্টেম্বর মাসের মতোই আছে। কমলার প্রতি নেতিবাচক মনোভাব সামান্য বেড়েছে।

কমলাকে সমর্থন দেয়া অর্ধেকের বেশি ভোটার বলেছেন, তারা ট্রাম্পের বিরোধিতা (৪৫ শতাংশ) করতে নয় বরং কমলাকে (৫৪ শতাংশ) সমর্থন করে তাকে ভোট দেবেন। তবে গত মাসের তুলনায় ট্রাম্পের বিরোধিতা করতে গিয়ে কমলার ভোট ৫ পয়েন্ট বেড়েছে। নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিকে এসে ট্রাম্পকে আক্রমণ করে বক্তব্য দিচ্ছেন কমলা, এটি এর প্রভাবে হতে পারে।

অন্যদিকে, ট্রাম্পের সমর্থকেরা তার প্রতি জোরালো সমর্থন (৭৩ শতাংশ) জানিয়েছেন। তবে ১৬ শতাংশ বা তার থেকে কিছু বেশি ভোটার বলেছেন, দুই প্রার্থীর কেউই প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্য নন। সবচেয়ে উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো, ২৯ শতাংশ ভোটার মনে করেন, দুই প্রার্থীর কেউই সৎ ও বিশ্বস্ত নন। ১৯ শতাংশ বলেছেন, কোনো প্রার্থীই তাদের মতো মানুষদের কথা ভাবেন না।

যারা ট্রাম্পের বিপক্ষে ভোট দেবেন বলে ঠিক করেছেন, তাদের ৫৬ শতাংশ বলেছেন, ট্রাম্পের আচরণ ও মেজাজের কারণে তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আর ৫১ শতাংশ বলেছেন, ফৌজদারি মামলায় ট্রাম্পের দোষীসাব্যস্ত হওয়া এবং তার বিরুদ্ধে অপরাধমূলক মামলা থাকার কারণে তারা ট্রাম্পকে ভোট না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

৪৬ শতাংশ ভোটার ট্রাম্পের শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা নিয়ে সংশয়ের কারণে তাকে ভোট না দেয়ার কথা বলেছেন।

কমলার ক্ষেত্রে তার আচরণ ও মেজাজের জন্য ৪৫ শতাংশ ভোটার তার পক্ষে এবং ৩৪ শতাংশ বিপক্ষে ভোট দেবেন বলে জানিয়েছেন। বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলার মানসিক ও শারীরিক সক্ষমতা প্রশ্নে ৪৯ শতাংশ তার পক্ষে রয়েছেন। অন্যদিকে ২৭ শতাংশ কমলাকে ভোট না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কমলার ভূমিকাকে বেশিরভাগ ভোটার নেতিবাচক হিসেবে দেখেন। ৪৬ শতাংশ ভোটার বলেছেন, এ কারণে তারা কমলার বিপক্ষে ভোট দেবেন। তবে ২৬ শতাংশ ভোটার কমলার পক্ষ নিয়েছেন।

অল্প কয়েকজন ভোটার মনে করেন, কমলার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাব্যতা এবারের নির্বাচনের ফলাফলে ভূমিকা রাখতে পারে। অন্যদিকে ৬৫ শতাংশ ভোটার মনে করেন, এটা কোনো ধরনের পার্থক্য গড়ে দেবে না।

এদিকে, ৩৫ বছরের কম বয়সী ভোটারদের মধ্যে কমলা ৫১ শতাংশ ও ট্রাম্প ৪১ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন।

এছাড়া কৃষ্ণাঙ্গ (কমলা ৭৯ শতাংশ, ট্রাম্প ১৩ শতাংশ), হিস্পানিক (কমলা ৫৪ শতাংশ, ট্রাম্প ৩৭ শতাংশ) ভোটারদের মধ্যে কমলা এগিয়ে আছেন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটারদের কাছে বেশি জনপ্রিয় ট্রাম্প। ৫১ শতাংশ পুরুষ ভোটার ট্রাম্পকে ও ৪৫ শতাংশ কমলাকে সমর্থন দিয়েছেন।

শ্বেতাঙ্গ ভোটারদের মধ্যেও ট্রাম্প (৫৫ শতাংশ, কমলা ৪১ শতাংশ) এগিয়ে।

গ্রামীণ ভোটারদের মধ্যে ট্রাম্প ৬৪ শতাংশ ও কমলা ৩১ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন।

২০২০ সালে যারা ভোট দেননি, এমন ভোটারদের মধ্যে ট্রাম্প ৫০ শতাংশ এবং কমলা ৪০ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন। চলতি বছরের ২০ থেকে ২৩ অক্টোবর টেলিফোনে এই জরিপ পরিচালিত হয়। যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে নিবন্ধিত ১ হাজার ৭০৪ ভোটার জরিপে অংশ নেন।

অন্যদিকে, ২০ থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত নিউইয়র্ক টাইমস এবং সিয়েনা কলেজ পরিচালিত সর্বশেষ জাতীয় জরিপে দেখা যায় যে, কমলা হ্যারিস এবং ট্রাম্প যৌথভাবে ৪৮ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। আর ৮ শতাংশ সিদ্ধান্তহীনতায় আছেন।

মহিলা ভোটারদের মধ্যে কমলা ট্রাম্পের চেয়ে ৫৪ শতাংশ থেকে ৪২ শতাংশের সমর্থন পাবেন বলে জরিপটিতে দেখা যাচ্ছে। আর পুরুষ ভোটারদের মধ্যে ৫৫ শতাংশের বিপরীতে ৪১ শতাংশ কমলাকে সমর্থন করছেন।

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রে চলছে শাটডাউন, বন্ধ হচ্ছে খাদ্য সহায়তা

ছবি

দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত

ছবি

জ্বালানি সংকটে মালিতে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা

ছবি

চীনা পণ্যে বাড়তি শুল্ক বাতিল করল যুক্তরাষ্ট্র!

ছবি

শীতে আরও ভয়াবহ হতে পারে গাজার পরিস্থিতি

ছবি

কারা যোগ দিয়েছেন, কী হতে পারে

ছবি

পাকিস্তানে আবার বাড়ছে দারিদ্র্যের হার

ছবি

কানাডার ওপর আরও ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প

ছবি

জাতিসংঘ এখন কাজ করছে না, নিরাপত্তা পরিষদ অকার্যকর: লুলা

ছবি

জোটের সদস্যদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান আনোয়ার ইব্রাহিমের

ছবি

আরেকটি শান্তি চুক্তির সাক্ষী হলেন ট্রাম্প

ছবি

পালাতে পালাতে ক্লান্ত গাজার মানুষ

ছবি

শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হলে যুদ্ধ: আফগানিস্তানকে হুঁশিয়ারি পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর

ছবি

শুল্কবিরোধী বিজ্ঞাপনে ক্ষুব্ধ ট্রাম্প, কানাডার পণ্যে বাড়ালেন আরও শুল্ক

ছবি

কম্বোডিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সই করবেন থাই প্রধানমন্ত্রী

ছবি

পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি অভিযানে ফিলিস্তিনি তরুণ নিহত

ছবি

বিরোধীদের ‘মুসলিম’ পরিচয় এনে কটাক্ষের জবাব যেভাবে দিচ্ছেন জোহরান

ছবি

আফগানিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ, পাকিস্তানে টমেটোর কেজি ৬০০ রুপি

ছবি

ক্যারিবিয়ান সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম রণতরী, ‘যুদ্ধাবস্থা তৈরির’ অভিযোগ ভেনেজুয়েলার

ছবি

ট্রাম্প-জিনপিং শীর্ষ সম্মেলনের আশা ম্লান

ছবি

কোনো নতুন আক্রমণ হবে ‘আরেকটি ব্যর্থতা’: ইরান

ছবি

সহিংস বিক্ষোভে প্রাণহানি, টিএলপিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলো পাকিস্তান

ছবি

ঝুঁকি মোকাবিলায় এশিয়ার দেশগুলোকে বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতা কমাতে হবে

ছবি

যুদ্ধবিরতির পরও গাজার মানুষের ক্ষুধার যন্ত্রণা দূর হচ্ছে না

ছবি

একের পর এক অঞ্চল দখল করছে মায়ানমার জান্তা, কেন পিছু হটছে বিদ্রোহীরা

ছবি

ট্রাম্প-পুতিনের বৈঠক কেন ভেস্তে গেল, ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ কী

ছবি

রাশিয়ার দুটি প্রধান তেল কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের

ছবি

আসিয়ান সম্মেলন এড়িয়ে যাচ্ছেন মোদি, যাবেন না মালয়েশিয়া

ছবি

চীনের সহায়তায় হারানো এলাকা পুনর্দখলে নিচ্ছে মায়ানমার সেনাবাহিনী

ছবি

বিশ্বের জন্য বড় হুমকি হয়ে আসছে ম্যালেরিয়া

ছবি

পাকিস্তান-তালেবান উত্তেজনায় অনিশ্চিত জীবন আফগান শরণার্থীদের

ছবি

রাশিয়ার দুই তেল কোম্পানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

ছবি

‘কয়েক প্রজন্ম ধরে’ চলবে গাজায় স্বাস্থ্য সংকট: ডব্লিউএইচও

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রে ১০ মাসে পাঁচ লাখ অবৈধ অভিবাসী গ্রেপ্তার

ছবি

অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু

ছবি

‘শারীরিক সম্পর্ক’ মানেই ধর্ষণ নয়, দিল্লি হাইকোর্টের রায়

tab

মার্কিন নির্বাচনে সর্বশেষ সময়ের জরিপ : কমলা-ট্রাম্প সমানে সমান

সংবাদ ডেস্ক

রোববার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সংবাদ মাধ্যম সিএনএন-এর জরিপে কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমানে সমান লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে। অন্যদিকে, নিউইয়র্ক টাইমস এবং সিয়েনা কলেজ পরিচালিত সর্বশেষ জাতীয় জরিপে কমলা হ্যারিস এবং ট্রাম্প যৌথভাবে ৪৮ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।

অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে আর বাকি মাত্র নয় দিন। এখন চলছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের শেষ মুহূর্তের প্রচারণা। পাশাপাশি চলছে দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর অবস্থান জানতে জনমত জরিপ। ভোটের আগে দেশজুড়ে নিজেদের চূড়ান্ত জনমত জরিপ চালিয়েছে সিএনএন। জরিপে কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমানে সমান লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে।

সিএনএন পরিচালিত এই জরিপে ৪৭ শতাংশ সম্ভাব্য ভোটার ডেমোক্রেটিক দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলাকে এবং ৪৭ শতাংশ সম্ভাব্য ভোটার রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়েছেন। এর আগে সেপ্টেম্বরে হওয়া জরিপে কমলা ৪৮ শতাংশ ও ট্রাম্প ৪৭ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পান।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেয়ার পর কমলা ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী হন। বাইডেন সরে দাঁড়িয়ে কমলাকে সমর্থন দিয়ে যান। সে সময় সিএনএনের জনমত জরিপে ৪৯ শতাংশ নিবন্ধিত ভোটার ট্রাম্পকে এবং ৪৬ শতাংশ ভোটার কমলাকে সমর্থন দিয়েছিলেন।

এ বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে সিএনএন যে কয়টা জরিপ চালিয়েছে, তার কোনোটিতেই (প্রথমে বাইডেন, তারপর কমলার বিপক্ষে) ট্রাম্প কখনো প্রত্যাশিত ফলাফলের বাইরে যাননি। তিনি আরও দুইবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেছেন। তবে কোনোবারই জনমত জরিপে তার এবারের মতো অবস্থান ছিল না।

এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির অবস্থা বেশ টালমাটাল। কিন্তু জনমত জরিপগুলোতে উল্লেখ করার মতো স্থিতিশীল অবস্থা দেখা গেছে।

জরিপে দেখা গেছে, ৮৫ শতাংশ সম্ভাব্য ভোটার তাদের প্রার্থী পছন্দ করে ফেলেছেন এবং তারা সিদ্ধান্তে অটল। মাত্র ১৫ শতাংশ বলেছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তারা পছন্দ পরিবর্তন করেছেন।

যারা প্রার্থী ঠিক করে ফেলেছেন তাদের মধ্যে ৫০ শতাংশ কমলাকে ও ৪৯ শতাংশ ট্রাম্পের পক্ষে বলেছেন। মাত্র এক শতাংশ অন্যান্য প্রার্থীদের সমর্থন দিয়েছেন।

এদিকে, এই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণার শেষ সময়ে এসে আমেরিকার জনগণ নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন। দেশটির নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সরকার পরিচালনা ও দেশ যেভাবে চলছে, তা নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব আরও গভীর হয়েছে। প্রায় ৪৯ শতাংশ ভোটার বলেছেন, এক বছর আগের চেয়ে তারা অর্থনৈতিকভাবে খারাপ অবস্থায় আছেন। যেখানে মাত্র ১৬ শতাংশ ভোটার বলেছেন, গত ১২ মাসে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে।

নিবন্ধিত ভোটাররা কমলা (৪১ শতাংশ পছন্দ থেকে ৫২ শতাংশ অপছন্দ) ও ট্রাম্প (৪১ শতাংশ থেকে ৫৪ শতাংশ) উভয়ের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। ট্রাম্পের পক্ষে তাদের সমর্থন অনেকটা সেপ্টেম্বর মাসের মতোই আছে। কমলার প্রতি নেতিবাচক মনোভাব সামান্য বেড়েছে।

কমলাকে সমর্থন দেয়া অর্ধেকের বেশি ভোটার বলেছেন, তারা ট্রাম্পের বিরোধিতা (৪৫ শতাংশ) করতে নয় বরং কমলাকে (৫৪ শতাংশ) সমর্থন করে তাকে ভোট দেবেন। তবে গত মাসের তুলনায় ট্রাম্পের বিরোধিতা করতে গিয়ে কমলার ভোট ৫ পয়েন্ট বেড়েছে। নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিকে এসে ট্রাম্পকে আক্রমণ করে বক্তব্য দিচ্ছেন কমলা, এটি এর প্রভাবে হতে পারে।

অন্যদিকে, ট্রাম্পের সমর্থকেরা তার প্রতি জোরালো সমর্থন (৭৩ শতাংশ) জানিয়েছেন। তবে ১৬ শতাংশ বা তার থেকে কিছু বেশি ভোটার বলেছেন, দুই প্রার্থীর কেউই প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্য নন। সবচেয়ে উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো, ২৯ শতাংশ ভোটার মনে করেন, দুই প্রার্থীর কেউই সৎ ও বিশ্বস্ত নন। ১৯ শতাংশ বলেছেন, কোনো প্রার্থীই তাদের মতো মানুষদের কথা ভাবেন না।

যারা ট্রাম্পের বিপক্ষে ভোট দেবেন বলে ঠিক করেছেন, তাদের ৫৬ শতাংশ বলেছেন, ট্রাম্পের আচরণ ও মেজাজের কারণে তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আর ৫১ শতাংশ বলেছেন, ফৌজদারি মামলায় ট্রাম্পের দোষীসাব্যস্ত হওয়া এবং তার বিরুদ্ধে অপরাধমূলক মামলা থাকার কারণে তারা ট্রাম্পকে ভোট না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

৪৬ শতাংশ ভোটার ট্রাম্পের শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা নিয়ে সংশয়ের কারণে তাকে ভোট না দেয়ার কথা বলেছেন।

কমলার ক্ষেত্রে তার আচরণ ও মেজাজের জন্য ৪৫ শতাংশ ভোটার তার পক্ষে এবং ৩৪ শতাংশ বিপক্ষে ভোট দেবেন বলে জানিয়েছেন। বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলার মানসিক ও শারীরিক সক্ষমতা প্রশ্নে ৪৯ শতাংশ তার পক্ষে রয়েছেন। অন্যদিকে ২৭ শতাংশ কমলাকে ভোট না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কমলার ভূমিকাকে বেশিরভাগ ভোটার নেতিবাচক হিসেবে দেখেন। ৪৬ শতাংশ ভোটার বলেছেন, এ কারণে তারা কমলার বিপক্ষে ভোট দেবেন। তবে ২৬ শতাংশ ভোটার কমলার পক্ষ নিয়েছেন।

অল্প কয়েকজন ভোটার মনে করেন, কমলার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাব্যতা এবারের নির্বাচনের ফলাফলে ভূমিকা রাখতে পারে। অন্যদিকে ৬৫ শতাংশ ভোটার মনে করেন, এটা কোনো ধরনের পার্থক্য গড়ে দেবে না।

এদিকে, ৩৫ বছরের কম বয়সী ভোটারদের মধ্যে কমলা ৫১ শতাংশ ও ট্রাম্প ৪১ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন।

এছাড়া কৃষ্ণাঙ্গ (কমলা ৭৯ শতাংশ, ট্রাম্প ১৩ শতাংশ), হিস্পানিক (কমলা ৫৪ শতাংশ, ট্রাম্প ৩৭ শতাংশ) ভোটারদের মধ্যে কমলা এগিয়ে আছেন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটারদের কাছে বেশি জনপ্রিয় ট্রাম্প। ৫১ শতাংশ পুরুষ ভোটার ট্রাম্পকে ও ৪৫ শতাংশ কমলাকে সমর্থন দিয়েছেন।

শ্বেতাঙ্গ ভোটারদের মধ্যেও ট্রাম্প (৫৫ শতাংশ, কমলা ৪১ শতাংশ) এগিয়ে।

গ্রামীণ ভোটারদের মধ্যে ট্রাম্প ৬৪ শতাংশ ও কমলা ৩১ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন।

২০২০ সালে যারা ভোট দেননি, এমন ভোটারদের মধ্যে ট্রাম্প ৫০ শতাংশ এবং কমলা ৪০ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন। চলতি বছরের ২০ থেকে ২৩ অক্টোবর টেলিফোনে এই জরিপ পরিচালিত হয়। যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে নিবন্ধিত ১ হাজার ৭০৪ ভোটার জরিপে অংশ নেন।

অন্যদিকে, ২০ থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত নিউইয়র্ক টাইমস এবং সিয়েনা কলেজ পরিচালিত সর্বশেষ জাতীয় জরিপে দেখা যায় যে, কমলা হ্যারিস এবং ট্রাম্প যৌথভাবে ৪৮ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। আর ৮ শতাংশ সিদ্ধান্তহীনতায় আছেন।

মহিলা ভোটারদের মধ্যে কমলা ট্রাম্পের চেয়ে ৫৪ শতাংশ থেকে ৪২ শতাংশের সমর্থন পাবেন বলে জরিপটিতে দেখা যাচ্ছে। আর পুরুষ ভোটারদের মধ্যে ৫৫ শতাংশের বিপরীতে ৪১ শতাংশ কমলাকে সমর্থন করছেন।

back to top