দীর্ঘ আলোচনার অবসান ঘটিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করতে আজ ভোট দিচ্ছেন মার্কিন নাগরিকরা। এরই মধ্যে আগাম ভোটও হয়ে গেছে।
অর্থনীতি, রাজনীতি, কূটনীতিসহ বিভিন্ন কারণে এ নির্বাচন নিয়ে বিশ্বজুড়ে যেমন আগ্রহের শেষ নেই, তেমনি মার্কিন নাগরিকদের মাঝে এখন পর্যন্ত উদ্বেগেরও শেষ নেই।
গাধা না হাতির জোর বেশি, শেষ পর্যন্ত কে যাবে হোয়াইট হাউসে। এবার কি যুক্তরাস্ট্রের ইতিহাসে নতুন সূচনা হবে? নাকি মার্কিন ব্যবস্থা হিলারির মতো এবারও নারীকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে গ্রহণ করবে না। এরকম নানা হিসেব-নিকেশ চলছে ভোটারসহ পর্যবেক্ষকদের মধ্যে।
নির্বাচন নিয়ে নানা জরিপ চলছেই। সম্প্রতি মার্কিন সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (এপিএ) এক গবেষণায় দেখিয়েছে, প্রাপ্তবয়স্ক প্রতি ১০ জন নাগরিকের মধ্যে সাতজনই আসন্ন নির্বাচন নিয়ে মানসিক চাপে আছেন। গত চার বছরে হওয়া দুটি যুদ্ধ, গণহত্যা, নৈতিক প্রশ্ন এবং ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক মেরুকরণ, সব মিলিয়ে এই নির্বাচনের ফলাফল যুক্তরাষ্ট্রের সীমানা ছাড়িয়ে আরও অনেককে প্রভাবিত করবে।
আমরা জানি, নির্বাচনের পূর্বাভাসের জন্য জরিপগুলো সবক্ষেত্রে ভালো ফল দেয় না। যদি করেও, এবারের সমীক্ষাগুলোও দেখাচ্ছে যে, দুই প্রার্থীর মধ্যে তফাৎ নেই বললেই চলে। দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতে সমীক্ষার গ্রহণযোগ্য ভুলের মাত্রা (মার্জিন অব এরর) হিসেবে নিলে ডনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিস, দু’জনেরই নির্বাচনে জয়ের সম্ভাবনা সামনে সমান। নির্বাচন-পূর্ব সমীক্ষায় আগের দুবার ট্রাম্প কখনও তার ডেমোক্র্যাটিক প্রতিদ্বন্দ্বীর এতোটা কাছাকাছি ছিলেন না। ২০১৬ এবং ২০২০ সালে দু’বারই সমীক্ষায় ট্রাম্পের ভোটারদের হিসাব উঠে আসেনি।
এবারও এমন হবে ধরে নিয়ে অনেকে এরই মধ্যে ট্রাম্পকে বিজয়ী ঘোষণা করে দিচ্ছে। একই কথা প্রযোজ্য কমলার ক্ষেত্রেও। আবার নির্বাচনে দুই প্রার্থীর মধ্যে ব্যবধান অনেক কমও থাকতে পারে। এমনকি দুই প্রার্থীর ইলেক্টর সংখ্যা সমানও হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে নির্বাচনের রায় দেবে হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ, যেখানে এখন রিপাবলিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। সেক্ষেত্রে হয়তো ট্রাম্প জিতবেন।
আবার ২০০০ সালের বুশ বনাম আল গোর নির্বাচনের মতোও কিছু হতে পারে। সেবার নির্বাচনের ব্যবধান এতোই কম ছিল যে কয়েক সপ্তাহ লাগিয়ে পুর্নগণনা চালানোর পর সুপ্রিম কোর্টে যেতে হয়েছিল সমাধানের জন্য।
ফলাফলের ভবিষ্যদ্বাণী করাটা এতো কঠিন হওয়ার পেছনে কারণ হচ্ছে, এবার সামান্য হলেও ট্রাম্প নিন্দিত। অপরদিকে, কমলা অপ্রত্যাশিতভাবে মধ্যপন্থী প্রচার চালিয়েছেন। লিজ চেনির মতো রিপাবলিকানদের নিজের দলে ভিড়িয়েছেন, দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতে রিপাবলিকানদের ভোট পেতে শিক্ষার্থীদের ঋণ মওকুফের চাইতে বন্দুকের মালিকানা নিয়ে বেশি কথা বলেছেন। এছাড়াও স্বাস্থ্যসেবা এবং মধ্যবিত্তের আবাসন ব্যয় কমানোর মতো জনপ্রিয় অর্থনৈতিক নীতি নিয়েও কথা বলেছেন তিনি।
শেষ মুহূর্তেও দুই প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিস দু’জনেই জোর প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতে।
স্থানীয় সময় গত রোববার নসিলভানিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা ও জর্জিয়ায় প্রচার চালিয়েছেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের ভোট মানচিত্রে সবচেয়ে বড় দোদুল্যমান রাজ্যগুলোর মধ্যে পড়ে এই তিন অঙ্গরাজ্য। পেনসিলভানিয়ায় ট্রাম্প বলেন, তিনি ডেমোক্র্যাটিক পার্টি নামের একটি দুর্নীতিগ্রস্ত মেশিনের বিরুদ্ধে লড়ছেন। নির্বাচিত হলে দেশের পুরো ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনবেন বলে ঘোষণা দেন তিনি।
প্রচারণায় ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেন, ‘আমি (সীমান্তে) অনুপ্রবেশ বন্ধ করে দেব। জো বাইডেন ও কমলা হ্যারিসের কারণে বিশাল সংখ্যায় অপরাধীরা যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকছে।’ শেষ দিকের প্রচারেও ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রচারে অভিবাসনবিরোধী বার্তাকেই সামনে রেখেছেন।
এদিকে, কমলা প্রচারণা চালিয়েছেন আরেক দোদুল্যমান রাজ্য মিশিগানের কৃষ্ণাঙ্গ চার্চে। সেখানে তিনি বলেন, এই নির্বাচনের ফলাফল পরবর্তী কয়েক প্রজন্মের ভবিষ্যতকে প্রভাবিত করবে। তাই শুধু কথা বা প্রার্থনা না, কাজও করতে হবে। ট্রাম্প দেশকে বিভক্ত করছেন, চার্চের বক্তব্যে কমলা হ্যারিস এই ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, ‘ঈশ্বরের পরিকল্পনায় এই বিভাজন রোধ করার যথেষ্ট শক্তি রয়েছে। মঙ্গলবারের নির্বাচনের মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা, ভয় ও ঘৃণাকে থামানোর সুযোগ পাবেন আপনারা।’
এরই মধ্যে কমলা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন, তিনি ডাকযোগে ভোট দিয়েছেন।
মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪
দীর্ঘ আলোচনার অবসান ঘটিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করতে আজ ভোট দিচ্ছেন মার্কিন নাগরিকরা। এরই মধ্যে আগাম ভোটও হয়ে গেছে।
অর্থনীতি, রাজনীতি, কূটনীতিসহ বিভিন্ন কারণে এ নির্বাচন নিয়ে বিশ্বজুড়ে যেমন আগ্রহের শেষ নেই, তেমনি মার্কিন নাগরিকদের মাঝে এখন পর্যন্ত উদ্বেগেরও শেষ নেই।
গাধা না হাতির জোর বেশি, শেষ পর্যন্ত কে যাবে হোয়াইট হাউসে। এবার কি যুক্তরাস্ট্রের ইতিহাসে নতুন সূচনা হবে? নাকি মার্কিন ব্যবস্থা হিলারির মতো এবারও নারীকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে গ্রহণ করবে না। এরকম নানা হিসেব-নিকেশ চলছে ভোটারসহ পর্যবেক্ষকদের মধ্যে।
নির্বাচন নিয়ে নানা জরিপ চলছেই। সম্প্রতি মার্কিন সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (এপিএ) এক গবেষণায় দেখিয়েছে, প্রাপ্তবয়স্ক প্রতি ১০ জন নাগরিকের মধ্যে সাতজনই আসন্ন নির্বাচন নিয়ে মানসিক চাপে আছেন। গত চার বছরে হওয়া দুটি যুদ্ধ, গণহত্যা, নৈতিক প্রশ্ন এবং ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক মেরুকরণ, সব মিলিয়ে এই নির্বাচনের ফলাফল যুক্তরাষ্ট্রের সীমানা ছাড়িয়ে আরও অনেককে প্রভাবিত করবে।
আমরা জানি, নির্বাচনের পূর্বাভাসের জন্য জরিপগুলো সবক্ষেত্রে ভালো ফল দেয় না। যদি করেও, এবারের সমীক্ষাগুলোও দেখাচ্ছে যে, দুই প্রার্থীর মধ্যে তফাৎ নেই বললেই চলে। দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতে সমীক্ষার গ্রহণযোগ্য ভুলের মাত্রা (মার্জিন অব এরর) হিসেবে নিলে ডনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিস, দু’জনেরই নির্বাচনে জয়ের সম্ভাবনা সামনে সমান। নির্বাচন-পূর্ব সমীক্ষায় আগের দুবার ট্রাম্প কখনও তার ডেমোক্র্যাটিক প্রতিদ্বন্দ্বীর এতোটা কাছাকাছি ছিলেন না। ২০১৬ এবং ২০২০ সালে দু’বারই সমীক্ষায় ট্রাম্পের ভোটারদের হিসাব উঠে আসেনি।
এবারও এমন হবে ধরে নিয়ে অনেকে এরই মধ্যে ট্রাম্পকে বিজয়ী ঘোষণা করে দিচ্ছে। একই কথা প্রযোজ্য কমলার ক্ষেত্রেও। আবার নির্বাচনে দুই প্রার্থীর মধ্যে ব্যবধান অনেক কমও থাকতে পারে। এমনকি দুই প্রার্থীর ইলেক্টর সংখ্যা সমানও হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে নির্বাচনের রায় দেবে হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ, যেখানে এখন রিপাবলিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। সেক্ষেত্রে হয়তো ট্রাম্প জিতবেন।
আবার ২০০০ সালের বুশ বনাম আল গোর নির্বাচনের মতোও কিছু হতে পারে। সেবার নির্বাচনের ব্যবধান এতোই কম ছিল যে কয়েক সপ্তাহ লাগিয়ে পুর্নগণনা চালানোর পর সুপ্রিম কোর্টে যেতে হয়েছিল সমাধানের জন্য।
ফলাফলের ভবিষ্যদ্বাণী করাটা এতো কঠিন হওয়ার পেছনে কারণ হচ্ছে, এবার সামান্য হলেও ট্রাম্প নিন্দিত। অপরদিকে, কমলা অপ্রত্যাশিতভাবে মধ্যপন্থী প্রচার চালিয়েছেন। লিজ চেনির মতো রিপাবলিকানদের নিজের দলে ভিড়িয়েছেন, দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতে রিপাবলিকানদের ভোট পেতে শিক্ষার্থীদের ঋণ মওকুফের চাইতে বন্দুকের মালিকানা নিয়ে বেশি কথা বলেছেন। এছাড়াও স্বাস্থ্যসেবা এবং মধ্যবিত্তের আবাসন ব্যয় কমানোর মতো জনপ্রিয় অর্থনৈতিক নীতি নিয়েও কথা বলেছেন তিনি।
শেষ মুহূর্তেও দুই প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিস দু’জনেই জোর প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতে।
স্থানীয় সময় গত রোববার নসিলভানিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা ও জর্জিয়ায় প্রচার চালিয়েছেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের ভোট মানচিত্রে সবচেয়ে বড় দোদুল্যমান রাজ্যগুলোর মধ্যে পড়ে এই তিন অঙ্গরাজ্য। পেনসিলভানিয়ায় ট্রাম্প বলেন, তিনি ডেমোক্র্যাটিক পার্টি নামের একটি দুর্নীতিগ্রস্ত মেশিনের বিরুদ্ধে লড়ছেন। নির্বাচিত হলে দেশের পুরো ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনবেন বলে ঘোষণা দেন তিনি।
প্রচারণায় ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেন, ‘আমি (সীমান্তে) অনুপ্রবেশ বন্ধ করে দেব। জো বাইডেন ও কমলা হ্যারিসের কারণে বিশাল সংখ্যায় অপরাধীরা যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকছে।’ শেষ দিকের প্রচারেও ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রচারে অভিবাসনবিরোধী বার্তাকেই সামনে রেখেছেন।
এদিকে, কমলা প্রচারণা চালিয়েছেন আরেক দোদুল্যমান রাজ্য মিশিগানের কৃষ্ণাঙ্গ চার্চে। সেখানে তিনি বলেন, এই নির্বাচনের ফলাফল পরবর্তী কয়েক প্রজন্মের ভবিষ্যতকে প্রভাবিত করবে। তাই শুধু কথা বা প্রার্থনা না, কাজও করতে হবে। ট্রাম্প দেশকে বিভক্ত করছেন, চার্চের বক্তব্যে কমলা হ্যারিস এই ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, ‘ঈশ্বরের পরিকল্পনায় এই বিভাজন রোধ করার যথেষ্ট শক্তি রয়েছে। মঙ্গলবারের নির্বাচনের মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা, ভয় ও ঘৃণাকে থামানোর সুযোগ পাবেন আপনারা।’
এরই মধ্যে কমলা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন, তিনি ডাকযোগে ভোট দিয়েছেন।