যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ। এখন ফলাফলের অপেক্ষা। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) স্থানীয় সময় ভোর পাঁচটা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। শেষ হয় মধ্যরাতে। নির্বাচনে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইঙ্গিত আগেই পাওয়া গেছে। সেক্ষেত্রে এবার ফলাফল ঘোষণায় দেরি হতে পারে।
অতীতে অনেক প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভোটগ্রহণের কয়েক ঘণ্টা পর সেদিন রাতেই অথবা পরদিন সকালে ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে, বলছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। কিন্তু ভোটগ্রহণের রাতেই বিজয়ীর নাম ঘোষণার দাবি জানান রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প।
২০১৬ সালের ভোটের পর ডনাল্ড ট্রাম্প নিউইয়র্কে তার বিজয়ীর ভাষণ দিয়েছিলেন ভোররাতে। অবশ্য ২০২০ সালের নির্বাচনে জো বাইডেনকে বিজয়ী ঘোষণা করতে কয়েক দিন সময় লেগে গিয়েছিল। সব ভোট গণনা করতে সময় লাগায় চূড়ান্ত বিজয়ীর নাম প্রকাশে বিলম্ব হয়েছিল।
২০০০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী জর্জ বুশ ও ডেমোক্রেট অ্যাল গোরের মধ্যেও তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছিল। যা শেষ পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছিল ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের ভোট গণনায়। দুই প্রার্থীর মধ্যে মাত্র কয়েকশ’ ভোটের ব্যবধান ছিল।
এ নিয়ে শুরু হয় কয়েক সপ্তাহব্যাপী আইনি যুদ্ধ, যার পরিণামে ভোট পুনর্গণনা করতে হয়। শেষ পর্যন্ত ব্যাপারটা সুপ্রিম কোর্টে গড়ায়। অবশেষে বুশকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়, ফলে তিনি ফ্লোরিডা রাজ্যের ২৫টি ইলেক্টোরাল ভোটের সবগুলো পেয়ে যান। তাতে তার মোট ইলেক্টোরাল ভোট দাঁড়ায় ২৭১ এবং বিজয় নিশ্চিত হয়। গোর পপুলার ভোট বেশি পেলেও পরাজয় স্বীকার করে নেন। সব মিলিয়ে কয়েক সপ্তাহ সময় লেগে যায়।
এবার ট্রাম্প ও হ্যারিসের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে বিভিন্ন জরিপে আভাস পাওয়া গেছে। ফলে এবারও দ্রুত ফলাফল ঘোষণা নিয়ে অনিশ্চয়তার দানা আগেই বেঁধেছিল মার্কিনিদের অন্তরে। আর এই অনিশ্চয়তা রাজনৈতিক পন্ডিতদেরও চিন্তায় ফেলেছে।
কোনো প্রার্থী যদি নজিরবিহীনভাবে অন্য প্রার্থীর তুলনায় অল্প ব্যবধানে জয়ী হন তাহলে ভোট পুনর্গণনা করা হতে পারে। যেমন, গুরুত্বপূর্ণ সুইং স্টেট পেনসিলভানিয়ার রাজ্য আইন অনুসারে ভোট পুনর্গণনা বাধ্যতামূলক হবে, যদি বিজয়ী এবং পরাজিত প্রার্থীর মধ্যে ভোটের ব্যবধান দশমিক ৫ শতাংশ পয়েন্টের মধ্যে থাকে। ২০২০ সালের নির্বাচনে ট্রাম্প ও বাইডেনের মধ্যে এই ব্যবধান ছিল ১ দশমিক ১ শতাংশের একটু বেশি।
আছে আইনি চ্যালেঞ্জের সম্ভাবনাও। এরই মধ্যে ১০০টিরও বেশি মামলা দায়ের করেছে রিপাবলিকানরা। ভোটারের যোগ্যতা ও ভোটার তালিকা ব্যবস্থাপনা নিয়ে এসব মামলা। এক্ষেত্রে ভোট গণনা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে আইন লড়াই হতে পারে। অথবা, ভোটকেন্দ্রে কোনো ঝামেলা হলে তাতেও ফলাফল ঘোষণায় বিলম্ব হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের ভারমন্ট অঙ্গরাজ্যে সবার আগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এরপর শুরু হয় নিউইয়র্ক ও ভার্জিনিয়া। বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় দেশটির বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে অগ্রিম ভোট গণনা শুরু হয়। বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ সুইং স্টেট মিশিগান অঙ্গরাজ্যে।
এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সাতটি দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য ট্রাম্প এবং হ্যারিসের ভাগ্য নির্ধারণ করবে। কারণ এসব অঙ্গরাজ্যের ভোটের ফলাফল যে কারো ভাগ্য পরিবর্তন করে দিতে পারে। দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলো জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলিনা, পেনসিলভানিয়া, মিশিগান, উইসকসিন, অ্যারিজোনা এবং নেভাদা।
মার্কিন মুলুকে ৫৩৮ সদস্যের ‘ইলেক্টোরাল কলেজ’ রয়েছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ম্যাজিক ফিগার হলো ২৭০। ট্রাম্প ও হ্যারিস, দু’জনেই যদি ২৭০-এর গ-ী টপকাতে না পারেন, তাহলে মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, সিদ্ধান্ত নেবে কংগ্রেস। এ অবস্থায় নবনির্বাচিত হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবে। সেনেট মনোনীত করবে পরবর্তী ভাইস প্রেসিডেন্টকে।
মঙ্গলবারের এ নির্বাচনে কে বিজয়ী হবেন তা নিয়ে চিন্তামগ্ন পুরো বিশ্ব। সম্ভাব্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন অ্যালান লিচম্যান ও নেট সিলভার। অতীতের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনগুলোতে ১০টি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লিচম্যান। যার মধ্যে ৯টিই যথাযথভাবে দিতে পেরেছিলেন। এবারে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিসই জয়ী হতে যাচ্ছেন তার দেয়া আভাসে।
তবে পরিসংখ্যানবিদ ও জরিপ বিশেষজ্ঞ সিলভারের মত উল্টো। সম্প্রতি নিউইয়র্ক টাইমসে তিনি লিখেন, এ প্রতিদ্বন্দ্বিতা হাড্ডাহাড্ডি হচ্ছে। তবে তার মন বলছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পই আবারও হোয়াইট হাউজে ফিরছেন। ভবিষ্যদ্বাণী দেয়া এই দুই ব্যক্তি তাদের নিজ নিজ পদ্ধতির যৌক্তিকতা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বিরোধেও জড়িয়ে পড়েছেন।
বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ। এখন ফলাফলের অপেক্ষা। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) স্থানীয় সময় ভোর পাঁচটা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। শেষ হয় মধ্যরাতে। নির্বাচনে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইঙ্গিত আগেই পাওয়া গেছে। সেক্ষেত্রে এবার ফলাফল ঘোষণায় দেরি হতে পারে।
অতীতে অনেক প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভোটগ্রহণের কয়েক ঘণ্টা পর সেদিন রাতেই অথবা পরদিন সকালে ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে, বলছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। কিন্তু ভোটগ্রহণের রাতেই বিজয়ীর নাম ঘোষণার দাবি জানান রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প।
২০১৬ সালের ভোটের পর ডনাল্ড ট্রাম্প নিউইয়র্কে তার বিজয়ীর ভাষণ দিয়েছিলেন ভোররাতে। অবশ্য ২০২০ সালের নির্বাচনে জো বাইডেনকে বিজয়ী ঘোষণা করতে কয়েক দিন সময় লেগে গিয়েছিল। সব ভোট গণনা করতে সময় লাগায় চূড়ান্ত বিজয়ীর নাম প্রকাশে বিলম্ব হয়েছিল।
২০০০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী জর্জ বুশ ও ডেমোক্রেট অ্যাল গোরের মধ্যেও তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছিল। যা শেষ পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছিল ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের ভোট গণনায়। দুই প্রার্থীর মধ্যে মাত্র কয়েকশ’ ভোটের ব্যবধান ছিল।
এ নিয়ে শুরু হয় কয়েক সপ্তাহব্যাপী আইনি যুদ্ধ, যার পরিণামে ভোট পুনর্গণনা করতে হয়। শেষ পর্যন্ত ব্যাপারটা সুপ্রিম কোর্টে গড়ায়। অবশেষে বুশকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়, ফলে তিনি ফ্লোরিডা রাজ্যের ২৫টি ইলেক্টোরাল ভোটের সবগুলো পেয়ে যান। তাতে তার মোট ইলেক্টোরাল ভোট দাঁড়ায় ২৭১ এবং বিজয় নিশ্চিত হয়। গোর পপুলার ভোট বেশি পেলেও পরাজয় স্বীকার করে নেন। সব মিলিয়ে কয়েক সপ্তাহ সময় লেগে যায়।
এবার ট্রাম্প ও হ্যারিসের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে বিভিন্ন জরিপে আভাস পাওয়া গেছে। ফলে এবারও দ্রুত ফলাফল ঘোষণা নিয়ে অনিশ্চয়তার দানা আগেই বেঁধেছিল মার্কিনিদের অন্তরে। আর এই অনিশ্চয়তা রাজনৈতিক পন্ডিতদেরও চিন্তায় ফেলেছে।
কোনো প্রার্থী যদি নজিরবিহীনভাবে অন্য প্রার্থীর তুলনায় অল্প ব্যবধানে জয়ী হন তাহলে ভোট পুনর্গণনা করা হতে পারে। যেমন, গুরুত্বপূর্ণ সুইং স্টেট পেনসিলভানিয়ার রাজ্য আইন অনুসারে ভোট পুনর্গণনা বাধ্যতামূলক হবে, যদি বিজয়ী এবং পরাজিত প্রার্থীর মধ্যে ভোটের ব্যবধান দশমিক ৫ শতাংশ পয়েন্টের মধ্যে থাকে। ২০২০ সালের নির্বাচনে ট্রাম্প ও বাইডেনের মধ্যে এই ব্যবধান ছিল ১ দশমিক ১ শতাংশের একটু বেশি।
আছে আইনি চ্যালেঞ্জের সম্ভাবনাও। এরই মধ্যে ১০০টিরও বেশি মামলা দায়ের করেছে রিপাবলিকানরা। ভোটারের যোগ্যতা ও ভোটার তালিকা ব্যবস্থাপনা নিয়ে এসব মামলা। এক্ষেত্রে ভোট গণনা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে আইন লড়াই হতে পারে। অথবা, ভোটকেন্দ্রে কোনো ঝামেলা হলে তাতেও ফলাফল ঘোষণায় বিলম্ব হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের ভারমন্ট অঙ্গরাজ্যে সবার আগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এরপর শুরু হয় নিউইয়র্ক ও ভার্জিনিয়া। বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় দেশটির বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে অগ্রিম ভোট গণনা শুরু হয়। বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ সুইং স্টেট মিশিগান অঙ্গরাজ্যে।
এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সাতটি দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য ট্রাম্প এবং হ্যারিসের ভাগ্য নির্ধারণ করবে। কারণ এসব অঙ্গরাজ্যের ভোটের ফলাফল যে কারো ভাগ্য পরিবর্তন করে দিতে পারে। দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলো জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলিনা, পেনসিলভানিয়া, মিশিগান, উইসকসিন, অ্যারিজোনা এবং নেভাদা।
মার্কিন মুলুকে ৫৩৮ সদস্যের ‘ইলেক্টোরাল কলেজ’ রয়েছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ম্যাজিক ফিগার হলো ২৭০। ট্রাম্প ও হ্যারিস, দু’জনেই যদি ২৭০-এর গ-ী টপকাতে না পারেন, তাহলে মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, সিদ্ধান্ত নেবে কংগ্রেস। এ অবস্থায় নবনির্বাচিত হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবে। সেনেট মনোনীত করবে পরবর্তী ভাইস প্রেসিডেন্টকে।
মঙ্গলবারের এ নির্বাচনে কে বিজয়ী হবেন তা নিয়ে চিন্তামগ্ন পুরো বিশ্ব। সম্ভাব্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন অ্যালান লিচম্যান ও নেট সিলভার। অতীতের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনগুলোতে ১০টি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লিচম্যান। যার মধ্যে ৯টিই যথাযথভাবে দিতে পেরেছিলেন। এবারে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিসই জয়ী হতে যাচ্ছেন তার দেয়া আভাসে।
তবে পরিসংখ্যানবিদ ও জরিপ বিশেষজ্ঞ সিলভারের মত উল্টো। সম্প্রতি নিউইয়র্ক টাইমসে তিনি লিখেন, এ প্রতিদ্বন্দ্বিতা হাড্ডাহাড্ডি হচ্ছে। তবে তার মন বলছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পই আবারও হোয়াইট হাউজে ফিরছেন। ভবিষ্যদ্বাণী দেয়া এই দুই ব্যক্তি তাদের নিজ নিজ পদ্ধতির যৌক্তিকতা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বিরোধেও জড়িয়ে পড়েছেন।