মসজিদে ভূমি জরিপ করা নিয়ে ভারতে চলমান সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা থামাতে দেশটির ‘মুসলমান প্রতিনিধিদের’ সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন দিল্লি জামে মসজিদের শাহী ইমাম সৈয়দ আহমেদ বুখারী।
মুসলিম তরুণদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনি (নরেন্দ্র মোদি) যে চেয়ারে বসে আছেন, দয়া করে তার প্রতি ন্যায়বিচার করুন; মুসলমানদের হৃদয় জয় করুন। আপনি সেসব দুর্বৃত্তকে থামান, যারা যারা অস্থিরতা তৈরি করছে এবং দেশের পরিস্থিতি নষ্ট করছে।”
শুক্রবার জুমার খুতবায় সৈয়দ আহমেদ বুখারী আহমেদ এসব মন্তব্য করেন বলে শনিবার হিন্দুস্তান টাইমসসহ ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।
এদিকে দিল্লির শাহী ইমাম গত মঙ্গলবার বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগের কথা তুলে ধরে নিন্দা জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে অবিলম্বে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলেন।
আর ভারতের বিভিন্ন জায়গার মসজিদে ভূমি জরিপ করার বিষয় নিয়ে দেশটির বর্তমান পরিস্থিতির বর্ণনায় শুক্রবার খুতবায় তিনি বলেন, “আমরা ১৯৪৭ সালের চেয়েও শোচনীয় একটা পরিস্থিতিতে এসে দাঁড়িয়েছি। দেশের সামনে কী অপেক্ষা করছে, তা কেউ জানে না।”
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে দিল্লি জামে মসজিদের এই ইমাম বলেন, “আলোচনার জন্য হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্য থেকে তিনজন করে প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো যেতে পারে।”
উত্তর প্রদেশে অবস্থিত ‘শাহী জামে মসজিদ’ ঘিরে সম্প্রতি হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
সাম্ভাল জেলার মুঘল আমলের ওই মসজিদ মন্দির ভেঙে নির্মাণ করা হয়েছে বলে দাবি তুলেছে কট্টরপন্থি কিছু সংগঠন। তাদের এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৯ নভেম্বর মসজিদটি নিয়ে একটা জরিপ চালানোর আদেশ দেয় আদালত।
মসজিদ ভবনটিতে কখনও কোনো মন্দিরের অস্তিত্ব ছিল কি না, মূলত সেটা যাচাই করে দেখতেই জরিপের আদেশ আসে। আদালতের এ আদেশকে কেন্দ্র করে গত ২৪ নভেম্বর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষও হয়, যাতে মারা গেছেন চারজন।
উত্তর প্রদেশের ওই মসজিদসহ মুসলমানদের আরও কয়েক উপাসনালয়ে মন্দিরের ‘অস্তিত্ব’ খুঁজে দেখতে সম্প্রতি ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে আরও কয়েকটি রিট আবেদন হয়েছে।
সৈয়দ বুখারী বলেন, “ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ (এএসআই) সংস্থা আমাদের বলেছে, দিল্লির জামে মসজিদে জরিপ চালানোর কোনো ইচ্ছা তাদের নেই।
“কিন্তু সাম্ভালসহ অন্যান্য স্থানে যেসব জরিপ হচ্ছে, সেগুলোর ব্যাপারে সরকারকে এখনই গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে। এগুলোর কোনো কিছুই দেশের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না। আমি শুধু এটাই বলি, মুহূর্তের ভুলে শতাব্দিজুড়ে ভুগতে হয়।”
রাজস্থানের আদালতেও এ ধরনের একটি আবেদন হয়েছে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, একটা শিব মন্দিরকে আজমির শরিফে পরিণত করা হয়েছে। আদালত আবেদনটি গ্রহণ করে গত ২৭ নভেম্বর এএসআই, আজমি শরিফ দরগাহ কমিটি ও কেন্দ্রীয় সরকারের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে নোটিশ পাঠায়।
বাংলাদেশে নিয়ে বিবৃতি
ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনে গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় এর প্রতিবাদে ভারতের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে। বিশেষ করে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তারের পর বিক্ষোভ আরও বেড়েছে। দেশটির সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে একের পর এক খবর প্রচার করা হচ্ছে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কলকাতায় উপ হাই কমিশনের সামনে পতাকা পোড়ানো এবং আগরতলায় সহকারী হাই কমিশনে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় দুই দেশের সম্পর্কে এক ধরনের অস্বস্তি তৈরি হয়েছে।
এমন প্রেক্ষাপটে গত মঙ্গলবার দিল্লির শাহী ইমাম সৈয়দ মুখারী বাংলাদেশ বিষয়েও কথা বলেন।
তিনি হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগের কথা ধরে এর নিন্দা জানান এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে অবিলম্বে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
সেদিনের বিবৃতিতে তিনি বলেন, “আমি আশা করব, ভারতের বিশ্বস্ত প্রতিবেশী, ঘনিষ্ঠ মিত্র ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্রের একজন রক্ষক হিসেবে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারপ্রধান নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস অবিলম্বে হিন্দু সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে যেকোনো অবিচার বন্ধে পদক্ষেপ নেবেন।”
রোববার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪
মসজিদে ভূমি জরিপ করা নিয়ে ভারতে চলমান সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা থামাতে দেশটির ‘মুসলমান প্রতিনিধিদের’ সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন দিল্লি জামে মসজিদের শাহী ইমাম সৈয়দ আহমেদ বুখারী।
মুসলিম তরুণদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনি (নরেন্দ্র মোদি) যে চেয়ারে বসে আছেন, দয়া করে তার প্রতি ন্যায়বিচার করুন; মুসলমানদের হৃদয় জয় করুন। আপনি সেসব দুর্বৃত্তকে থামান, যারা যারা অস্থিরতা তৈরি করছে এবং দেশের পরিস্থিতি নষ্ট করছে।”
শুক্রবার জুমার খুতবায় সৈয়দ আহমেদ বুখারী আহমেদ এসব মন্তব্য করেন বলে শনিবার হিন্দুস্তান টাইমসসহ ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।
এদিকে দিল্লির শাহী ইমাম গত মঙ্গলবার বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগের কথা তুলে ধরে নিন্দা জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে অবিলম্বে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলেন।
আর ভারতের বিভিন্ন জায়গার মসজিদে ভূমি জরিপ করার বিষয় নিয়ে দেশটির বর্তমান পরিস্থিতির বর্ণনায় শুক্রবার খুতবায় তিনি বলেন, “আমরা ১৯৪৭ সালের চেয়েও শোচনীয় একটা পরিস্থিতিতে এসে দাঁড়িয়েছি। দেশের সামনে কী অপেক্ষা করছে, তা কেউ জানে না।”
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে দিল্লি জামে মসজিদের এই ইমাম বলেন, “আলোচনার জন্য হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্য থেকে তিনজন করে প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো যেতে পারে।”
উত্তর প্রদেশে অবস্থিত ‘শাহী জামে মসজিদ’ ঘিরে সম্প্রতি হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
সাম্ভাল জেলার মুঘল আমলের ওই মসজিদ মন্দির ভেঙে নির্মাণ করা হয়েছে বলে দাবি তুলেছে কট্টরপন্থি কিছু সংগঠন। তাদের এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৯ নভেম্বর মসজিদটি নিয়ে একটা জরিপ চালানোর আদেশ দেয় আদালত।
মসজিদ ভবনটিতে কখনও কোনো মন্দিরের অস্তিত্ব ছিল কি না, মূলত সেটা যাচাই করে দেখতেই জরিপের আদেশ আসে। আদালতের এ আদেশকে কেন্দ্র করে গত ২৪ নভেম্বর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষও হয়, যাতে মারা গেছেন চারজন।
উত্তর প্রদেশের ওই মসজিদসহ মুসলমানদের আরও কয়েক উপাসনালয়ে মন্দিরের ‘অস্তিত্ব’ খুঁজে দেখতে সম্প্রতি ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে আরও কয়েকটি রিট আবেদন হয়েছে।
সৈয়দ বুখারী বলেন, “ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ (এএসআই) সংস্থা আমাদের বলেছে, দিল্লির জামে মসজিদে জরিপ চালানোর কোনো ইচ্ছা তাদের নেই।
“কিন্তু সাম্ভালসহ অন্যান্য স্থানে যেসব জরিপ হচ্ছে, সেগুলোর ব্যাপারে সরকারকে এখনই গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে। এগুলোর কোনো কিছুই দেশের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না। আমি শুধু এটাই বলি, মুহূর্তের ভুলে শতাব্দিজুড়ে ভুগতে হয়।”
রাজস্থানের আদালতেও এ ধরনের একটি আবেদন হয়েছে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, একটা শিব মন্দিরকে আজমির শরিফে পরিণত করা হয়েছে। আদালত আবেদনটি গ্রহণ করে গত ২৭ নভেম্বর এএসআই, আজমি শরিফ দরগাহ কমিটি ও কেন্দ্রীয় সরকারের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে নোটিশ পাঠায়।
বাংলাদেশে নিয়ে বিবৃতি
ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনে গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় এর প্রতিবাদে ভারতের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে। বিশেষ করে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তারের পর বিক্ষোভ আরও বেড়েছে। দেশটির সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে একের পর এক খবর প্রচার করা হচ্ছে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কলকাতায় উপ হাই কমিশনের সামনে পতাকা পোড়ানো এবং আগরতলায় সহকারী হাই কমিশনে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় দুই দেশের সম্পর্কে এক ধরনের অস্বস্তি তৈরি হয়েছে।
এমন প্রেক্ষাপটে গত মঙ্গলবার দিল্লির শাহী ইমাম সৈয়দ মুখারী বাংলাদেশ বিষয়েও কথা বলেন।
তিনি হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগের কথা ধরে এর নিন্দা জানান এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে অবিলম্বে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
সেদিনের বিবৃতিতে তিনি বলেন, “আমি আশা করব, ভারতের বিশ্বস্ত প্রতিবেশী, ঘনিষ্ঠ মিত্র ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্রের একজন রক্ষক হিসেবে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারপ্রধান নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস অবিলম্বে হিন্দু সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে যেকোনো অবিচার বন্ধে পদক্ষেপ নেবেন।”