alt

মায়ানমারে জান্তার নির্বাচন পরিকল্পনা: গৃহযুদ্ধের মধ্যে সহিংসতার শঙ্কা

বিদ্রোহীদের তীব্র প্রতিরোধ, সামরিক সরকারের বৈধতা অর্জনের চেষ্টা

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫

গৃহযুদ্ধের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে মায়ানমারের সামরিক সরকার। তবে দেশজুড়ে বিরোধী বাহিনীর তীব্র প্রতিরোধের কারণে এই পরিকল্পনা সহিংসতা বাড়িয়ে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো একদিকে সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে তারা এই নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ বলে নিন্দা জানাচ্ছে।

বিশ্লেষক, কূটনীতিক ও বিদ্রোহী নেতাদের মতে, সামরিক জান্তা নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে নিজেদের ক্ষমতাকে বৈধতা দিতে চাইলেও বাস্তবতা ভিন্ন। সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বেসামরিক সরকারকে উৎখাতের পর থেকেই জান্তা ক্রমাগত আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চলেছে।

গত দুই মাস ধরে জান্তা সরকার প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা ব্যাখ্যা করছে। ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও আদমশুমারি সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছে তারা। তবে বাস্তবতা হলো, গৃহযুদ্ধের কারণে জান্তা শুধু দেশের অর্ধেক অঞ্চলে ভোট আয়োজনের সক্ষমতা রাখে।

ডিসেম্বরে প্রকাশিত আদমশুমারির তথ্যমতে, মায়ানমারের ৩৩০টি শহরের মধ্যে মাত্র ১৪৫টিতে সরেজমিনে শুমারি চালানো সম্ভব হয়েছে। নেপিদোর এক সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানা গেছে, বছরের শেষ দিকে জান্তা ১৬০ থেকে ১৭০টি শহরে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে।

তবে নির্বাচনের তারিখ এখনো ঘোষণা করা হয়নি। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি বিরোধী দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, এবং শুধুমাত্র সামরিকপন্থি দলগুলোকেই ভোটে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ফলে নির্বাচনটি দেশের বেশিরভাগ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সামরিক অভ্যুত্থানের পর গঠিত প্রতিরোধ বাহিনী এবং সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর বিদ্রোহী দলগুলো মিলে জান্তার নিয়ন্ত্রণাধীন বহু এলাকা দখল করেছে। সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে জান্তা বাহিনীকে হটিয়ে দিয়ে তারা এখন মধ্যাঞ্চলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পিস ইনস্টিটিউটের মায়ানমার বিষয়ক বিশ্লেষক মায়ো হাইন বলেন, “এই নির্বাচন সংঘাতকে আরও উসকে দেবে এবং দেশে নজিরবিহীন সহিংসতার পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে।”

জানুয়ারির শেষে মায়ানমারজুড়ে জারি থাকা জরুরি অবস্থার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু সামরিক সরকার ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থান বার্ষিকীর আগেই হয়তো নির্বাচন না করে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর ঘোষণা দিতে পারে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জান্তা বাহিনী রাজনৈতিক ও সামরিকভাবে দুর্বল অবস্থানে থাকায় তারা সময় কিনতে চাইছে।

সামরিক সরকারের এই নির্বাচন পরিকল্পনা দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। বিরোধী দলগুলো এবং সাধারণ জনগণ একে ‘প্রহসনমূলক নির্বাচন’ হিসেবে অভিহিত করছে। তবে জান্তা সরকার তাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে এই নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যার ফলে মায়ানমারের রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হতে পারে।

ছবি

গাজায় সেনা পাঠাচ্ছে পাকিস্তান!

ছবি

অ্যামাজনে চাকরি হারাচ্ছে আরও ৩০ হাজার কর্মী

ছবি

ইউরোপীয় আদালতের জলবায়ু রায়ের মুখোমুখি নরওয়ে

ছবি

পাকিস্তান-আফগানিস্তান শান্তি আলোচনা ব্যর্থ

ছবি

ট্রাম্প-জিনপিংয়ের বৈঠকে ঘিরে বাণিজ্যযুদ্ধ বিরতির আশা

ছবি

চ্যালেঞ্জের’ মুখে ভারত, সীমান্তে ৩৬টি যুদ্ধবিমান ‘শেল্টার’ বানিয়েছে চীন

ছবি

হামাস ফেরত দিল আরও এক জিম্মির দেহ, যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ইসরায়েলি হামলায় নিহত ২ ফিলিস্তিনি

ছবি

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত ৫০ ভারতীয় তরুণ: উন্নত জীবনের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রে চলছে শাটডাউন, বন্ধ হচ্ছে খাদ্য সহায়তা

ছবি

দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত

ছবি

জ্বালানি সংকটে মালিতে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা

ছবি

চীনা পণ্যে বাড়তি শুল্ক বাতিল করল যুক্তরাষ্ট্র!

ছবি

শীতে আরও ভয়াবহ হতে পারে গাজার পরিস্থিতি

ছবি

কারা যোগ দিয়েছেন, কী হতে পারে

ছবি

পাকিস্তানে আবার বাড়ছে দারিদ্র্যের হার

ছবি

কানাডার ওপর আরও ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প

ছবি

জাতিসংঘ এখন কাজ করছে না, নিরাপত্তা পরিষদ অকার্যকর: লুলা

ছবি

জোটের সদস্যদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান আনোয়ার ইব্রাহিমের

ছবি

আরেকটি শান্তি চুক্তির সাক্ষী হলেন ট্রাম্প

ছবি

পালাতে পালাতে ক্লান্ত গাজার মানুষ

ছবি

শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হলে যুদ্ধ: আফগানিস্তানকে হুঁশিয়ারি পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর

ছবি

শুল্কবিরোধী বিজ্ঞাপনে ক্ষুব্ধ ট্রাম্প, কানাডার পণ্যে বাড়ালেন আরও শুল্ক

ছবি

কম্বোডিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সই করবেন থাই প্রধানমন্ত্রী

ছবি

পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি অভিযানে ফিলিস্তিনি তরুণ নিহত

ছবি

বিরোধীদের ‘মুসলিম’ পরিচয় এনে কটাক্ষের জবাব যেভাবে দিচ্ছেন জোহরান

ছবি

আফগানিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ, পাকিস্তানে টমেটোর কেজি ৬০০ রুপি

ছবি

ক্যারিবিয়ান সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম রণতরী, ‘যুদ্ধাবস্থা তৈরির’ অভিযোগ ভেনেজুয়েলার

ছবি

ট্রাম্প-জিনপিং শীর্ষ সম্মেলনের আশা ম্লান

ছবি

কোনো নতুন আক্রমণ হবে ‘আরেকটি ব্যর্থতা’: ইরান

ছবি

সহিংস বিক্ষোভে প্রাণহানি, টিএলপিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলো পাকিস্তান

ছবি

ঝুঁকি মোকাবিলায় এশিয়ার দেশগুলোকে বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতা কমাতে হবে

ছবি

যুদ্ধবিরতির পরও গাজার মানুষের ক্ষুধার যন্ত্রণা দূর হচ্ছে না

ছবি

একের পর এক অঞ্চল দখল করছে মায়ানমার জান্তা, কেন পিছু হটছে বিদ্রোহীরা

ছবি

ট্রাম্প-পুতিনের বৈঠক কেন ভেস্তে গেল, ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ কী

ছবি

রাশিয়ার দুটি প্রধান তেল কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের

ছবি

আসিয়ান সম্মেলন এড়িয়ে যাচ্ছেন মোদি, যাবেন না মালয়েশিয়া

tab

মায়ানমারে জান্তার নির্বাচন পরিকল্পনা: গৃহযুদ্ধের মধ্যে সহিংসতার শঙ্কা

বিদ্রোহীদের তীব্র প্রতিরোধ, সামরিক সরকারের বৈধতা অর্জনের চেষ্টা

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫

গৃহযুদ্ধের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে মায়ানমারের সামরিক সরকার। তবে দেশজুড়ে বিরোধী বাহিনীর তীব্র প্রতিরোধের কারণে এই পরিকল্পনা সহিংসতা বাড়িয়ে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো একদিকে সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে তারা এই নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ বলে নিন্দা জানাচ্ছে।

বিশ্লেষক, কূটনীতিক ও বিদ্রোহী নেতাদের মতে, সামরিক জান্তা নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে নিজেদের ক্ষমতাকে বৈধতা দিতে চাইলেও বাস্তবতা ভিন্ন। সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বেসামরিক সরকারকে উৎখাতের পর থেকেই জান্তা ক্রমাগত আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চলেছে।

গত দুই মাস ধরে জান্তা সরকার প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা ব্যাখ্যা করছে। ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও আদমশুমারি সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছে তারা। তবে বাস্তবতা হলো, গৃহযুদ্ধের কারণে জান্তা শুধু দেশের অর্ধেক অঞ্চলে ভোট আয়োজনের সক্ষমতা রাখে।

ডিসেম্বরে প্রকাশিত আদমশুমারির তথ্যমতে, মায়ানমারের ৩৩০টি শহরের মধ্যে মাত্র ১৪৫টিতে সরেজমিনে শুমারি চালানো সম্ভব হয়েছে। নেপিদোর এক সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানা গেছে, বছরের শেষ দিকে জান্তা ১৬০ থেকে ১৭০টি শহরে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে।

তবে নির্বাচনের তারিখ এখনো ঘোষণা করা হয়নি। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি বিরোধী দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, এবং শুধুমাত্র সামরিকপন্থি দলগুলোকেই ভোটে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ফলে নির্বাচনটি দেশের বেশিরভাগ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সামরিক অভ্যুত্থানের পর গঠিত প্রতিরোধ বাহিনী এবং সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর বিদ্রোহী দলগুলো মিলে জান্তার নিয়ন্ত্রণাধীন বহু এলাকা দখল করেছে। সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে জান্তা বাহিনীকে হটিয়ে দিয়ে তারা এখন মধ্যাঞ্চলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পিস ইনস্টিটিউটের মায়ানমার বিষয়ক বিশ্লেষক মায়ো হাইন বলেন, “এই নির্বাচন সংঘাতকে আরও উসকে দেবে এবং দেশে নজিরবিহীন সহিংসতার পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে।”

জানুয়ারির শেষে মায়ানমারজুড়ে জারি থাকা জরুরি অবস্থার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু সামরিক সরকার ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থান বার্ষিকীর আগেই হয়তো নির্বাচন না করে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর ঘোষণা দিতে পারে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জান্তা বাহিনী রাজনৈতিক ও সামরিকভাবে দুর্বল অবস্থানে থাকায় তারা সময় কিনতে চাইছে।

সামরিক সরকারের এই নির্বাচন পরিকল্পনা দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। বিরোধী দলগুলো এবং সাধারণ জনগণ একে ‘প্রহসনমূলক নির্বাচন’ হিসেবে অভিহিত করছে। তবে জান্তা সরকার তাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে এই নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যার ফলে মায়ানমারের রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হতে পারে।

back to top