বিদ্রোহীদের তীব্র প্রতিরোধ, সামরিক সরকারের বৈধতা অর্জনের চেষ্টা
গৃহযুদ্ধের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে মায়ানমারের সামরিক সরকার। তবে দেশজুড়ে বিরোধী বাহিনীর তীব্র প্রতিরোধের কারণে এই পরিকল্পনা সহিংসতা বাড়িয়ে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো একদিকে সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে তারা এই নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ বলে নিন্দা জানাচ্ছে।
বিশ্লেষক, কূটনীতিক ও বিদ্রোহী নেতাদের মতে, সামরিক জান্তা নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে নিজেদের ক্ষমতাকে বৈধতা দিতে চাইলেও বাস্তবতা ভিন্ন। সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বেসামরিক সরকারকে উৎখাতের পর থেকেই জান্তা ক্রমাগত আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চলেছে।
গত দুই মাস ধরে জান্তা সরকার প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা ব্যাখ্যা করছে। ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও আদমশুমারি সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছে তারা। তবে বাস্তবতা হলো, গৃহযুদ্ধের কারণে জান্তা শুধু দেশের অর্ধেক অঞ্চলে ভোট আয়োজনের সক্ষমতা রাখে।
ডিসেম্বরে প্রকাশিত আদমশুমারির তথ্যমতে, মায়ানমারের ৩৩০টি শহরের মধ্যে মাত্র ১৪৫টিতে সরেজমিনে শুমারি চালানো সম্ভব হয়েছে। নেপিদোর এক সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানা গেছে, বছরের শেষ দিকে জান্তা ১৬০ থেকে ১৭০টি শহরে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে।
তবে নির্বাচনের তারিখ এখনো ঘোষণা করা হয়নি। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি বিরোধী দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, এবং শুধুমাত্র সামরিকপন্থি দলগুলোকেই ভোটে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ফলে নির্বাচনটি দেশের বেশিরভাগ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সামরিক অভ্যুত্থানের পর গঠিত প্রতিরোধ বাহিনী এবং সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর বিদ্রোহী দলগুলো মিলে জান্তার নিয়ন্ত্রণাধীন বহু এলাকা দখল করেছে। সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে জান্তা বাহিনীকে হটিয়ে দিয়ে তারা এখন মধ্যাঞ্চলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পিস ইনস্টিটিউটের মায়ানমার বিষয়ক বিশ্লেষক মায়ো হাইন বলেন, “এই নির্বাচন সংঘাতকে আরও উসকে দেবে এবং দেশে নজিরবিহীন সহিংসতার পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে।”
জানুয়ারির শেষে মায়ানমারজুড়ে জারি থাকা জরুরি অবস্থার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু সামরিক সরকার ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থান বার্ষিকীর আগেই হয়তো নির্বাচন না করে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর ঘোষণা দিতে পারে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জান্তা বাহিনী রাজনৈতিক ও সামরিকভাবে দুর্বল অবস্থানে থাকায় তারা সময় কিনতে চাইছে।
সামরিক সরকারের এই নির্বাচন পরিকল্পনা দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। বিরোধী দলগুলো এবং সাধারণ জনগণ একে ‘প্রহসনমূলক নির্বাচন’ হিসেবে অভিহিত করছে। তবে জান্তা সরকার তাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে এই নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যার ফলে মায়ানমারের রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হতে পারে।
বিদ্রোহীদের তীব্র প্রতিরোধ, সামরিক সরকারের বৈধতা অর্জনের চেষ্টা
বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫
গৃহযুদ্ধের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে মায়ানমারের সামরিক সরকার। তবে দেশজুড়ে বিরোধী বাহিনীর তীব্র প্রতিরোধের কারণে এই পরিকল্পনা সহিংসতা বাড়িয়ে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো একদিকে সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে তারা এই নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ বলে নিন্দা জানাচ্ছে।
বিশ্লেষক, কূটনীতিক ও বিদ্রোহী নেতাদের মতে, সামরিক জান্তা নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে নিজেদের ক্ষমতাকে বৈধতা দিতে চাইলেও বাস্তবতা ভিন্ন। সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বেসামরিক সরকারকে উৎখাতের পর থেকেই জান্তা ক্রমাগত আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চলেছে।
গত দুই মাস ধরে জান্তা সরকার প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা ব্যাখ্যা করছে। ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও আদমশুমারি সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছে তারা। তবে বাস্তবতা হলো, গৃহযুদ্ধের কারণে জান্তা শুধু দেশের অর্ধেক অঞ্চলে ভোট আয়োজনের সক্ষমতা রাখে।
ডিসেম্বরে প্রকাশিত আদমশুমারির তথ্যমতে, মায়ানমারের ৩৩০টি শহরের মধ্যে মাত্র ১৪৫টিতে সরেজমিনে শুমারি চালানো সম্ভব হয়েছে। নেপিদোর এক সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানা গেছে, বছরের শেষ দিকে জান্তা ১৬০ থেকে ১৭০টি শহরে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে।
তবে নির্বাচনের তারিখ এখনো ঘোষণা করা হয়নি। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি বিরোধী দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, এবং শুধুমাত্র সামরিকপন্থি দলগুলোকেই ভোটে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ফলে নির্বাচনটি দেশের বেশিরভাগ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সামরিক অভ্যুত্থানের পর গঠিত প্রতিরোধ বাহিনী এবং সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর বিদ্রোহী দলগুলো মিলে জান্তার নিয়ন্ত্রণাধীন বহু এলাকা দখল করেছে। সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে জান্তা বাহিনীকে হটিয়ে দিয়ে তারা এখন মধ্যাঞ্চলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পিস ইনস্টিটিউটের মায়ানমার বিষয়ক বিশ্লেষক মায়ো হাইন বলেন, “এই নির্বাচন সংঘাতকে আরও উসকে দেবে এবং দেশে নজিরবিহীন সহিংসতার পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে।”
জানুয়ারির শেষে মায়ানমারজুড়ে জারি থাকা জরুরি অবস্থার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু সামরিক সরকার ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থান বার্ষিকীর আগেই হয়তো নির্বাচন না করে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর ঘোষণা দিতে পারে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জান্তা বাহিনী রাজনৈতিক ও সামরিকভাবে দুর্বল অবস্থানে থাকায় তারা সময় কিনতে চাইছে।
সামরিক সরকারের এই নির্বাচন পরিকল্পনা দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। বিরোধী দলগুলো এবং সাধারণ জনগণ একে ‘প্রহসনমূলক নির্বাচন’ হিসেবে অভিহিত করছে। তবে জান্তা সরকার তাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে এই নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যার ফলে মায়ানমারের রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হতে পারে।