alt

গাজায় পূর্ণমাত্রায় হামলা, আরও অঞ্চল দখলের হুমকি

যুদ্ধবিরতির জন্য ইসরায়েলের প্রতি জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের আহ্বান

বিদেশী সংবাদ মাধ্যম : শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার একটি এলাকা -এএফপি

গাজায় পূর্ণমাত্রায় হামলা চালিয়ে সংঘাত আরও তীব্র করার হুমকি দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ। সেই সঙ্গে গাজার অতিরিক্ত এলাকা দখল করার হুমকিও দিয়েছেন তিনি। এক বিবৃতিতে এই ইসরায়েলি মন্ত্রী বলেন, আমরা আকাশ, সমুদ্র এবং স্থল থেকে হামলা চালিয়ে লড়াই আরও তীব্র করব। জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া এবং হামাস পরাজিত না হওয়া পর্যন্ত স্থল অভিযান সম্প্রসারণ করব।

কাটজ বলেন, জিম্মিদের মুক্তি দিতে ‘হামাস যত বেশি অস্বীকৃতি অব্যাহত রাখবে, তত বেশি ভূখ- ইসরায়েলের কাছে হারাবে’। ইসরায়েলি মন্ত্রীর এই হুমকি গায়ায় গণহত্যার যুদ্ধকে আরও উস্কে দেয়। কেননা জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে পুনরায় বোমা হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। সম্প্রতি ব্যাপক তাণ্ডব শুরু করলে শত শত নিরীহ মানুষ নিহত হয়েছে। গত মঙ্গলবার ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় ব্যাপক বিমান হামলা শুরু করলে যুদ্ধবিরতি নতুন করে ভেঙে যায়। গত দুই-তিন দিনে ৫০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে দখলদার বাহিনী। এর জবাবে শনিবার প্রথমবার তেল আবিবে রকেট হামলা চালায় হামাস।

এদিকে, গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে ফেরার জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য। শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়েছে। গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যও ইসরায়েলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে তিন দেশ। জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওই যৌথ বিবৃতিটি দিয়েছেন। তাঁরা ওই বিবৃতিতে বলেন, ‘পানি, বিদ্যুৎসহ মানবিক সহায়তাগুলোর প্রবেশাধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের সঙ্গে সংগতি রেখে চিকিৎসাসেবা ও চিকিৎসার উদ্দেশ্যে অস্থায়ীভাবে স্থানান্তরের সুযোগ নিশ্চিতের জন্য আমরা ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বলেছেন, তাঁরা বেসামরিক মানুষদের নিহত হওয়ার ঘটনায় মর্মাহত। ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দিতে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মতে, সামরিকভাবে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার সমস্যার সমাধান করা যাবে না। একটি দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র নির্ভরযোগ্য পথ। মন্ত্রীরা আরও বলেন, গাজায় জাতিসংঘের প্রকল্প পরিষেবা কার্যালয় (ইউএনওপিএস) ভবনে হামলার ঘটনায় তাঁরা ‘গভীরভাবে মর্মাহত’। তাঁরা ঘটনা তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।

যুদ্ধবিরতি অব্যাহত রাখতে বিদেশি সরকারগুলোর আহ্বান উপেক্ষা করে সম্প্রতি আকাশ ও স্থলপথে হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল। এর মধ্য দিয়ে গত জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি ভেস্তে গেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, গাজায় গত কয়েক দিনে ইসরায়েলের হামলায় প্রায় ৬০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন চলছে প্রায় দেড় বছর ধরে। এই সময়ের মধ্যে অল্প কিছু দিন যুদ্ধবিরতি থাকলেও ইসরায়েল অঞ্চলটিতে আবারও হামলা শুরু করেছে। এই হামলায় মাত্র ৭২ ঘণ্টায় ৭০০ ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অঞ্চলটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার। এদিকে, গাজার একমাত্র ক্যানসার হাসপাতালটিও ধ্বংস করে দিয়েছিল ইসরায়েল।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, অঞ্চলটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯ হাজার ৬১৭ জনে। এ ছাড়া আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ৯৫০ জন। একই সময়ে, হামলায় নিখোঁজ হয়ে গেছেন প্রায় ১৪ হাজার।

এদিকে, ইসরায়েলি হামলায় গাজার হাসপাতালগুলোর ভেতরের পরিস্থিতি এখনো অত্যন্ত কঠিন। উত্তর গাজা ও গাজা শহরের আবাসিক ভবনগুলোর ওপর লাগাতার হামলার ফলে বিপুলসংখ্যক আহত ও নিহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে আনা হচ্ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও সংকটময় করে তুলেছে।গাজা উপত্যকার অন্যান্য অংশেও পরিস্থিতি ভয়াবহ। একাধিক বিমান হামলায় আরও অনেক আবাসিক ভবন, জনসাধারণের ব্যবহারযোগ্য স্থাপনা এবং সাময়িক আশ্রয়কেন্দ্র ধ্বংস হয়েছে, যেখানে মানুষ নিরাপত্তার আশায় আশ্রয় নিয়েছিল, অথচ আকস্মিক বোমা হামলার হাত থেকে কেউ রেহাই পাচ্ছে না।

এ ছাড়া, ধ্বংসযজ্ঞের অংশ হিসেবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী নেতজারিম করিডরের কাছে অবস্থিত ক্যানসার রোগীদের একমাত্র বিশেষায়িত হাসপাতাল তুরস্ক-ফিলিস্তিনি মৈত্রী হাসপাতাল উড়িয়ে দিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, করিডর সম্প্রসারণ করে আরও বড় একটি বাফার জোন তৈরির লক্ষ্যেই এই ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে।

এই গণহত্যার যুদ্ধের শুরুতে করিডরটি ছিল ৫০০ মিটার (১ হাজার ৬৪০ ফুট) চওড়া, কিন্তু এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আট কিলোমিটার (পাঁচ মাইল) এবং এটি ক্রমাগত আরও সম্প্রসারিত হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় ইসরায়েলি বাহিনী আরও বহু আবাসিক ভবন ধ্বংস করেছে, পাশাপাশি ওই এলাকার বিস্তীর্ণ কৃষিজমিও বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।

ছবি

নেপাল: দায়িত্ব নিয়েই নির্বাচনের তারিখ জানিয়ে দিলেন অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান

ছবি

আফগানিস্তানে বন্দি থাকা মার্কিন নাগরিকদের বিষয় নিয়ে কাবুলে আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তা

ছবি

রাশিয়ার ড্রোন হামলা কোনো ভুল ছিল না: পোল্যান্ড

ছবি

উত্তর কোরিয়ায় বিদেশি চলচ্চিত্র দেখলেও মৃত্যুদণ্ড

ছবি

ইসরায়েলি হামলার পর ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী

ছবি

নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হলেন সুশীলা কারকি

ছবি

হামাসমুক্ত স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে ভোট

ছবি

কেন নেপালের এ সংকট দক্ষিণ এশিয়াসহ বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

ছবি

পাকিস্তানে জঙ্গিদের হামলায় ১২ সেনা নিহত

ছবি

নেপালে নির্বাচন ৫ মার্চ

ছবি

জাতিসংঘে দুই-রাষ্ট্র সমাধানের ঘোষণায় বিপুল সমর্থন

ছবি

কঙ্গোতে পৃথক দুই নৌকা দুর্ঘটনায় ১৯৩ জনের মৃত্যু

ছবি

নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হলেন সুশীলা কারকি

ছবি

বিদেশি সিনেমা দেখায় উত্তর কোরিয়ায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর বেড়েছে: জাতিসংঘ

ছবি

চার্লি কার্কের হত্যাকারীকে ধরিয়ে দিলে ১ লাখ ডলার পুরস্কার

ছবি

পশ্চিমবঙ্গের তরুণদের নেপাল থেকে শিক্ষা নেয়ার আহ্বান বিজেপি নেতার, পাল্টা একাধিক এফআইআর

ছবি

প্যালেস্টাইন বলে কোনো রাষ্ট্র থাকবে না, এ ভূমি আমাদের: নেতানিয়াহু

ছবি

ব্রাজিলে অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্রের দায়ে বলসোনারোকে ২৭ বছরের কারাদণ্ড

ছবি

ভারতের ১৫তম উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিলেন সিপি রাধাকৃষ্ণান

ছবি

গাজায় ত্রাণ শিবিরের পাহারায় ঘৃণাবাহী মার্কিন বাইকার গ্যাং

ছবি

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় একদিনে নিহত আরও ৭২ ফিলিস্তিনি

ছবি

‘ভারত-সমর্থিত’ ১৯ সন্ত্রাসীকে হত্যার দাবি পাকিস্তানের

ছবি

কাতারের পর এবার ইয়েমেনে ইসরায়েলি হামলা, নিহত ৩৫

ছবি

এবার সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল ফ্রান্স

ছবি

তিন দশকের লুটের বিচার, নতুন সংবিধান চায় নেপালের তরুণরা

ছবি

নেপালে কেন ‘আন্দোলন ছিনতাইয়ের’ শঙ্কা, দেশ চালাচ্ছে কারা

ছবি

নেপালে সহিংস বিক্ষোভ: সেনা মোতায়েন, নিহত ২০-এর বেশি

ছবি

এবার ভারত-চীনের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক বসাতে বললেন ট্রাম্প

ছবি

ইসরায়েলের দুই মন্ত্রীকে নিষেধাজ্ঞা দিলো স্পেন

ছবি

কাতারে ইসরায়েলি হামলা সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত: মালয়েশিয়া

ছবি

কাতারে ইসরায়েলের বিমান হামলা

ছবি

নেপালজুড়ে মব আতঙ্ক, কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি সেনাবাহিনীর

ছবি

কোন পথে নেপাল, অলির জায়গায় কে আসছেন

ছবি

স্থল অভিযানের আগে গাজা সিটি খালি করার নির্দেশ ইসরায়েলের

ছবি

নেপালে চলমান সহিংসতা প্রতিরোধে সেনাবাহিনী দায়িত্ব নিল

ছবি

ফ্রান্সে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেলেন সেবাস্টিয়ান লুকোনু

tab

news » international

গাজায় পূর্ণমাত্রায় হামলা, আরও অঞ্চল দখলের হুমকি

যুদ্ধবিরতির জন্য ইসরায়েলের প্রতি জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের আহ্বান

বিদেশী সংবাদ মাধ্যম

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার একটি এলাকা -এএফপি

শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫

গাজায় পূর্ণমাত্রায় হামলা চালিয়ে সংঘাত আরও তীব্র করার হুমকি দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ। সেই সঙ্গে গাজার অতিরিক্ত এলাকা দখল করার হুমকিও দিয়েছেন তিনি। এক বিবৃতিতে এই ইসরায়েলি মন্ত্রী বলেন, আমরা আকাশ, সমুদ্র এবং স্থল থেকে হামলা চালিয়ে লড়াই আরও তীব্র করব। জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া এবং হামাস পরাজিত না হওয়া পর্যন্ত স্থল অভিযান সম্প্রসারণ করব।

কাটজ বলেন, জিম্মিদের মুক্তি দিতে ‘হামাস যত বেশি অস্বীকৃতি অব্যাহত রাখবে, তত বেশি ভূখ- ইসরায়েলের কাছে হারাবে’। ইসরায়েলি মন্ত্রীর এই হুমকি গায়ায় গণহত্যার যুদ্ধকে আরও উস্কে দেয়। কেননা জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে পুনরায় বোমা হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। সম্প্রতি ব্যাপক তাণ্ডব শুরু করলে শত শত নিরীহ মানুষ নিহত হয়েছে। গত মঙ্গলবার ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় ব্যাপক বিমান হামলা শুরু করলে যুদ্ধবিরতি নতুন করে ভেঙে যায়। গত দুই-তিন দিনে ৫০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে দখলদার বাহিনী। এর জবাবে শনিবার প্রথমবার তেল আবিবে রকেট হামলা চালায় হামাস।

এদিকে, গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে ফেরার জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য। শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়েছে। গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যও ইসরায়েলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে তিন দেশ। জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওই যৌথ বিবৃতিটি দিয়েছেন। তাঁরা ওই বিবৃতিতে বলেন, ‘পানি, বিদ্যুৎসহ মানবিক সহায়তাগুলোর প্রবেশাধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের সঙ্গে সংগতি রেখে চিকিৎসাসেবা ও চিকিৎসার উদ্দেশ্যে অস্থায়ীভাবে স্থানান্তরের সুযোগ নিশ্চিতের জন্য আমরা ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বলেছেন, তাঁরা বেসামরিক মানুষদের নিহত হওয়ার ঘটনায় মর্মাহত। ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দিতে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মতে, সামরিকভাবে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার সমস্যার সমাধান করা যাবে না। একটি দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র নির্ভরযোগ্য পথ। মন্ত্রীরা আরও বলেন, গাজায় জাতিসংঘের প্রকল্প পরিষেবা কার্যালয় (ইউএনওপিএস) ভবনে হামলার ঘটনায় তাঁরা ‘গভীরভাবে মর্মাহত’। তাঁরা ঘটনা তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।

যুদ্ধবিরতি অব্যাহত রাখতে বিদেশি সরকারগুলোর আহ্বান উপেক্ষা করে সম্প্রতি আকাশ ও স্থলপথে হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল। এর মধ্য দিয়ে গত জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি ভেস্তে গেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, গাজায় গত কয়েক দিনে ইসরায়েলের হামলায় প্রায় ৬০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন চলছে প্রায় দেড় বছর ধরে। এই সময়ের মধ্যে অল্প কিছু দিন যুদ্ধবিরতি থাকলেও ইসরায়েল অঞ্চলটিতে আবারও হামলা শুরু করেছে। এই হামলায় মাত্র ৭২ ঘণ্টায় ৭০০ ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অঞ্চলটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার। এদিকে, গাজার একমাত্র ক্যানসার হাসপাতালটিও ধ্বংস করে দিয়েছিল ইসরায়েল।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, অঞ্চলটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯ হাজার ৬১৭ জনে। এ ছাড়া আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ৯৫০ জন। একই সময়ে, হামলায় নিখোঁজ হয়ে গেছেন প্রায় ১৪ হাজার।

এদিকে, ইসরায়েলি হামলায় গাজার হাসপাতালগুলোর ভেতরের পরিস্থিতি এখনো অত্যন্ত কঠিন। উত্তর গাজা ও গাজা শহরের আবাসিক ভবনগুলোর ওপর লাগাতার হামলার ফলে বিপুলসংখ্যক আহত ও নিহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে আনা হচ্ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও সংকটময় করে তুলেছে।গাজা উপত্যকার অন্যান্য অংশেও পরিস্থিতি ভয়াবহ। একাধিক বিমান হামলায় আরও অনেক আবাসিক ভবন, জনসাধারণের ব্যবহারযোগ্য স্থাপনা এবং সাময়িক আশ্রয়কেন্দ্র ধ্বংস হয়েছে, যেখানে মানুষ নিরাপত্তার আশায় আশ্রয় নিয়েছিল, অথচ আকস্মিক বোমা হামলার হাত থেকে কেউ রেহাই পাচ্ছে না।

এ ছাড়া, ধ্বংসযজ্ঞের অংশ হিসেবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী নেতজারিম করিডরের কাছে অবস্থিত ক্যানসার রোগীদের একমাত্র বিশেষায়িত হাসপাতাল তুরস্ক-ফিলিস্তিনি মৈত্রী হাসপাতাল উড়িয়ে দিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, করিডর সম্প্রসারণ করে আরও বড় একটি বাফার জোন তৈরির লক্ষ্যেই এই ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে।

এই গণহত্যার যুদ্ধের শুরুতে করিডরটি ছিল ৫০০ মিটার (১ হাজার ৬৪০ ফুট) চওড়া, কিন্তু এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আট কিলোমিটার (পাঁচ মাইল) এবং এটি ক্রমাগত আরও সম্প্রসারিত হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় ইসরায়েলি বাহিনী আরও বহু আবাসিক ভবন ধ্বংস করেছে, পাশাপাশি ওই এলাকার বিস্তীর্ণ কৃষিজমিও বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।

back to top