alt

তীব্র খাদ্যসংকট, বেঁচে থাকার লড়াইয়ে কচ্ছপ খাচ্ছে গাজাবাসী

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

অবরুদ্ধ ও যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। চরম এই দুরবস্থার মধ্যে পড়ে অনেক বাসিন্দা বেঁচে থাকার তাগিদে এখন খাচ্ছেন সামুদ্রিক কচ্ছপের মাংসযা একটি আন্তর্জাতিকভাবে সংরক্ষিত ও বিপন্ন প্রাণী। বিশেষ করে গত ১৮ মার্চ ইসরায়েল একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি ভেঙে আবার স্থল ও বিমান হামলা শুরু করলে গাজায় মানবিক বিপর্যয় চরম আকার ধারণ করে। বন্ধ হয়ে যায় ত্রাণ প্রবেশ, বাজার থেকে উধাও হয়ে যায় নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবারপণ্য।

এমন অবস্থায় গাজাবাসীরা বেঁচে থাকার জন্য আশ্রয় নিচ্ছেন পূর্বে অকল্পনীয় খাদ্য বিকল্পের দিকে। শনিবার (১৯ এপ্রিল) আরব নিউজ-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে সেই করুণ বাস্তবতা। এতে বলা হয়, খাবারের কোনো উপায় না পেয়ে অনেক পরিবার এখন বিকল্প প্রোটিনের উৎস হিসেবে সামুদ্রিক কচ্ছপ রান্না করে খাচ্ছেন।

খান ইউনিসের একটি অস্থায়ী তাঁবুতে আশ্রয় নেওয়া মাজিদা কানান নামে এক নারী জানান, যুদ্ধ শুরুর পর এই নিয়ে তৃতীয়বার তিনি কচ্ছপ রান্না করছেন।

রান্নার হাঁড়িতে কচ্ছপের মাংস ফুটাতে ফুটাতে তিনি বলেন, ‘বাচ্চারা কচ্ছপকে ভয় পেত, তাই বলেছিলাম এটা গরুর মাংসের মতোই সুস্বাদু। কেউ খেয়েছে, কেউ খায়নি।’ ৬১ বছর বয়সী মাজিদা আরো বলেন, ‘বাজারে কিছুই নেই, বিশেষ করে মাংস একেবারেই নাই। দুই ব্যাগ ছোট সবজি কিনতেও এখন খরচ হয় ৮০ শেকেল (২২ ডলার)।’ তিনি জানান, কচ্ছপের খোলস ছাড়িয়ে মাংস কেটে তা সিদ্ধ করে পেঁয়াজ, টমেটো, গোলমরিচ ও মসলা দিয়ে রান্না করা হয়। এদিকে উপকূলীয় এলাকায় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে এসব বিপন্ন কচ্ছপ। এক জেলে আবদেল হালিম কানান বলেন, ‘যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে কখনো ভাবিনি কচ্ছপ খেতে হবে। কিন্তু এখন আমাদের সামনে কোনো বিকল্প নেই। ইসলামি নিয়ম মেনেই কচ্ছপ জবাই করছি।

যদি দুর্ভিক্ষ না হতো, তাহলে ছেড়ে দিতাম। কিন্তু এখন প্রোটিন দরকার।’ বর্তমানে গাজা উপত্যকায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে জীবন কাটাচ্ছেন। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা হুঁশিয়ারি দিয়েছে, দুর্ভিক্ষ এখন কেবল আশঙ্কা নয়—বাস্তবে রূপ নিতে চলেছে।ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ, বাজারে পণ্যের সঙ্কট ও দামের ঊর্ধ্বগতির ফলে সাধারণ মানুষ বাধ্য হচ্ছেন পশুখাদ্য, ঘাস, এমনকি পচা পানি পর্যন্ত গ্রহণ করতে।

এই কঠিন সময়ে কচ্ছপের মতো একটি বিপন্ন প্রজাতিই হয়ে উঠেছে গাজাবাসীর প্রোটিনের একমাত্র উৎস। এটি এক ভয়াবহ বাস্তবতা—যেখানে ক্ষুধার তীব্রতায় মানুষ বাধ্য হচ্ছে সব নিষেধ, সংস্কার ও ভয়ের সীমা পেরিয়ে বেঁচে থাকার জন্য যা কিছু সম্ভব, তাই গ্রহণ করতে।

ছবি

২৬ মার্কিন ধনকুবেরের সোয়া দুই কোটি ডলারও মামদানির জয় ঠেকাতে পারেনি

ছবি

আফগানিস্তান-পাকিস্তান শান্তি আলোচনা ব্যর্থ, যুদ্ধবিরতি এখনও বহাল

ছবি

পুতিনের সঙ্গে এখনও বৈঠকের সুযোগ আছে : ট্রাম্প

ছবি

ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে রাশিয়ার ভয়াবহ হামলা

ছবি

সন্ত্রাসী তালিকা থেকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের নাম মুছলো যুক্তরাষ্ট্র

ছবি

অ্যান্টার্কটিকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে

ছবি

ভেস্তে গেলো আফগানিস্তান-পাকিস্তান আলোচনা

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে তুরস্কের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ছবি

বাংলাদেশের সঙ্গে উত্তেজনা চায় না ভারত : রাজনাথ সিং

ছবি

প্রভাবশালী মার্কিন ডানপন্থিরা মামদানিকে আইএসের সঙ্গে জড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন

ছবি

ইরানে ইসরায়েলি হামলায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলেন ট্রাম্প

ছবি

ট্রাম্প-মামদানি কি সমানে সমান

ছবি

কেন দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন সুদানের নাগরিকরা

ছবি

গাজার নিরাপত্তায় আইএসএফ গঠনের প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রের

ছবি

সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলো জাতিসংঘ

ছবি

ইতিহাসের সবচেয়ে গরম বছরগুলোর একটি হতে যাচ্ছে ২০২৫

ছবি

ইতিহাসে সর্বোচ্চ বেতন-ভাতা মাস্কের

ছবি

পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার প্রস্তুতির নির্দেশ পুতিনের

ছবি

মামদানির জয়, নিউইয়র্কের ইহুদিদের দেশে চলে আসতে বললেন ইসরায়েলি মন্ত্রী

ছবি

মামদানি সম্মানজনক আচরণ করলে তাঁকে সহায়তা করব: ট্রাম্প

ছবি

গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন, যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ প্রায় শেষ

ছবি

১৭ হাজার নারী সংগীত শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেবে সৌদি আরব

ছবি

নিউইয়র্কে ইতিহাস: পাঁচ নারী নিয়ে মেয়র মামদানির প্রশাসনের সূচনা

ছবি

নিউইয়র্কের মেয়র মামদানি: নতুন ইতিহাস, ট্রাম্পের জন্য বড় ধাক্কা

ছবি

যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রথম দিনই দিয়েছিলাম: ভারত

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রে উড্ডয়নের পরপরই বিমান বিধ্বস্ত, নিহত অন্তত ৩

ছবি

মামদানিকে সমর্থন দেয়া ইহুদিদের ‘স্টুপিড’ বললেন ট্রাম্প

ছবি

যুদ্ধবিরতি চললেও ত্রাণ প্রবেশে বাধা, ক্ষুধায় কাতর গাজাবাসী

ছবি

সুদানে গণহত্যার প্রমাণ লোপাটে ‘গণকবর’ দিচ্ছে আরএসএফ

ছবি

মামদানির ঐতিহাসিক জয়ের রহস্য কী

ছবি

ভারতীয় শিক্ষার্থীদের জন্য কঠিন হচ্ছে কানাডার দরজা

ছবি

‘সন্ত্রাসবাদীদের মৃত্যুদণ্ড’ বিল পাসের পথে ইসরায়েলি সংসদ

ছবি

নিউইয়র্কে মামদানি জিতলে ফেডারেল তহবিল কমানোর হুমকি ট্রাম্পের

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রে ৩৫ দিন ধরে অচল সরকার, বিমানবন্দরে তীব্র বিশৃঙ্খলা

ছবি

সুদানে ছড়িয়ে পড়ছে সংঘাত, পালাচ্ছে মানুষ

ছবি

গাজায় হাসপাতালে ধুঁকছে রোগী

tab

তীব্র খাদ্যসংকট, বেঁচে থাকার লড়াইয়ে কচ্ছপ খাচ্ছে গাজাবাসী

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

অবরুদ্ধ ও যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। চরম এই দুরবস্থার মধ্যে পড়ে অনেক বাসিন্দা বেঁচে থাকার তাগিদে এখন খাচ্ছেন সামুদ্রিক কচ্ছপের মাংসযা একটি আন্তর্জাতিকভাবে সংরক্ষিত ও বিপন্ন প্রাণী। বিশেষ করে গত ১৮ মার্চ ইসরায়েল একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি ভেঙে আবার স্থল ও বিমান হামলা শুরু করলে গাজায় মানবিক বিপর্যয় চরম আকার ধারণ করে। বন্ধ হয়ে যায় ত্রাণ প্রবেশ, বাজার থেকে উধাও হয়ে যায় নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবারপণ্য।

এমন অবস্থায় গাজাবাসীরা বেঁচে থাকার জন্য আশ্রয় নিচ্ছেন পূর্বে অকল্পনীয় খাদ্য বিকল্পের দিকে। শনিবার (১৯ এপ্রিল) আরব নিউজ-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে সেই করুণ বাস্তবতা। এতে বলা হয়, খাবারের কোনো উপায় না পেয়ে অনেক পরিবার এখন বিকল্প প্রোটিনের উৎস হিসেবে সামুদ্রিক কচ্ছপ রান্না করে খাচ্ছেন।

খান ইউনিসের একটি অস্থায়ী তাঁবুতে আশ্রয় নেওয়া মাজিদা কানান নামে এক নারী জানান, যুদ্ধ শুরুর পর এই নিয়ে তৃতীয়বার তিনি কচ্ছপ রান্না করছেন।

রান্নার হাঁড়িতে কচ্ছপের মাংস ফুটাতে ফুটাতে তিনি বলেন, ‘বাচ্চারা কচ্ছপকে ভয় পেত, তাই বলেছিলাম এটা গরুর মাংসের মতোই সুস্বাদু। কেউ খেয়েছে, কেউ খায়নি।’ ৬১ বছর বয়সী মাজিদা আরো বলেন, ‘বাজারে কিছুই নেই, বিশেষ করে মাংস একেবারেই নাই। দুই ব্যাগ ছোট সবজি কিনতেও এখন খরচ হয় ৮০ শেকেল (২২ ডলার)।’ তিনি জানান, কচ্ছপের খোলস ছাড়িয়ে মাংস কেটে তা সিদ্ধ করে পেঁয়াজ, টমেটো, গোলমরিচ ও মসলা দিয়ে রান্না করা হয়। এদিকে উপকূলীয় এলাকায় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে এসব বিপন্ন কচ্ছপ। এক জেলে আবদেল হালিম কানান বলেন, ‘যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে কখনো ভাবিনি কচ্ছপ খেতে হবে। কিন্তু এখন আমাদের সামনে কোনো বিকল্প নেই। ইসলামি নিয়ম মেনেই কচ্ছপ জবাই করছি।

যদি দুর্ভিক্ষ না হতো, তাহলে ছেড়ে দিতাম। কিন্তু এখন প্রোটিন দরকার।’ বর্তমানে গাজা উপত্যকায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে জীবন কাটাচ্ছেন। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা হুঁশিয়ারি দিয়েছে, দুর্ভিক্ষ এখন কেবল আশঙ্কা নয়—বাস্তবে রূপ নিতে চলেছে।ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ, বাজারে পণ্যের সঙ্কট ও দামের ঊর্ধ্বগতির ফলে সাধারণ মানুষ বাধ্য হচ্ছেন পশুখাদ্য, ঘাস, এমনকি পচা পানি পর্যন্ত গ্রহণ করতে।

এই কঠিন সময়ে কচ্ছপের মতো একটি বিপন্ন প্রজাতিই হয়ে উঠেছে গাজাবাসীর প্রোটিনের একমাত্র উৎস। এটি এক ভয়াবহ বাস্তবতা—যেখানে ক্ষুধার তীব্রতায় মানুষ বাধ্য হচ্ছে সব নিষেধ, সংস্কার ও ভয়ের সীমা পেরিয়ে বেঁচে থাকার জন্য যা কিছু সম্ভব, তাই গ্রহণ করতে।

back to top