অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ফেডারেল রিজার্ভ) গভর্নর লিসা কুককে বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছেন। বন্ধকি ঋণে (মর্টগেজ) অনিয়মের অভিযোগ এনে ট্রাম্প এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ স্বাধীন সংস্থা হিসেবে কাজ করে। ট্রাম্পের এ ধরনের পদক্ষেপ নজিরবিহীন। সিএনএন বলছে, ফেডারেল রিজার্ভের ১১১ বছরের ইতিহাসে এমন ঘটেনি। বিষয়টি আদালতে গড়ালে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার সীমা পরীক্ষা হতে পারে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
কুক ফেডারেল রিজার্ভের সাত সদস্য বোর্ডের একজন সদস্য এবং প্রথম আফ্রিকান বংশোদ্ভুত অ্যামেরিকান যিনি গভর্নরের দায়িত্ব পেয়েছেন।
ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম, ট্রুথ সেশালে কুককে লেখা এক চিঠিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। ট্রাম্প বলছেন, কুককে বরখাস্ত করার মতো যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
কুককে ২০২২ সালে ফেডের বোর্ডে নিয়োগ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল হাউজিং ফাইন্যান্স এজেন্সির পরিচালক উইলিয়াম পুলটে কুকের বিষয়টি তুলেন এবং তদন্তের জন্য অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডির কাছে পাঠান। এর পর থেকেই তা আলোচনায় আসে।
ট্রাম্প তার চিঠিতে কুকের বিরুদ্ধে ‘প্রতারণা ও অপরাধমূলক আর্থিক আচরণ’-এর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, কুকের ‘সততা ও যোগ্যতার’ ওপর তার ‘আস্থা নেই’।
অভিযোগ, ২০২১ সালে মিশিগান ও জর্জিয়ার দুটি বাড়ির ওপর আলাদা বন্ধকি ঋণ নেন কুক। কাগজপত্রে দুটি বাড়িকেই নিজের ‘প্রধান বাসস্থান’ হিসেবে দেখান তিনি।
‘এ ঘটনায় আর্থিক লেনদেনে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া যায়, যা একজন আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক হিসেবে আপনার দক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে’, লিখেছেন ট্রাম্প। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ ও ১৯১৩ সালের ফেডারেল রিজার্ভ আইনের অধীন কুককে বরখাস্তের ক্ষমতা তার আছে বলে দাবি করেন।
গত সপ্তাহে বিষয়টি প্রথম প্রকাশ্যে আসার পর ট্রাম্প কুককে পদত্যাগ করতে বললেও তিনি দৃঢ়ভাবে জানিয়ে দেন, তিনি ফেডে কাজ চালিয়ে যাবেন।
২০ আগস্ট কুক বলেন, ‘শুধু একটি টুইটের কারণে আমি পদ ছাড়ব না। তবে আমার আর্থিক লেনদেন নিয়ে প্রশ্ন উঠলে সেগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করব এবং যথাযথ তথ্য দিয়ে উত্তর দেব।’
ফেডারেল রিজার্ভ গভর্নরদের মেয়াদ দীর্ঘ হয়, যা কোনো প্রেসিডেন্টের মেয়াদের সঙ্গে শেষ হয় না। কুকের মেয়াদ ২০৩৮ সাল পর্যন্ত চলার কথা। তবে আইন অনুযায়ী, গুরুতর কারণে একজন গভর্নরকে সরানো সম্ভব।
কিন্তু এ ধরনের পদক্ষেপ আগে কখনো প্রেসিডেন্ট নেননি। আর ১৯৭০-এর দশক থেকে ফেডারেল রিজার্ভ বা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখার চেষ্টাই দেখা যায়।
ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্ত আদালতে চ্যালেঞ্জ হলে নানা জটিল প্রশ্ন উঠবে বলেই ধারণা সংশ্লিষ্টদের। যেমন প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার সীমা, ফেডের বিশেষ কাঠামো, ইতিহাস। কুক আসলেই আইন ভেঙেছেন কি না, তা নিয়েও বিতর্ক হবে।
পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক পিটার কন্টি-ব্রাউন রয়টার্সের বলেছেন, কুকের মর্টগেজ–সংক্রান্ত লেনদেন ছিল ফেডে যোগ দেয়ার আগে। তার নিয়োগ সিনেটের অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় থাকার সময় তা নথিবদ্ধ ছিল। তিনি আরও বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বা সিনেটের অনুমোদনপ্রক্রিয়ায় যেসব কর্মকর্তা ফেডে আসেন, তাদের ব্যক্তিগত জীবনের সব তথ্য খতিয়ে দেখা হয়। তাই অতীতের গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ তুলে তাদের অপসারণ করাটা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।’
মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট ২০২৫
অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ফেডারেল রিজার্ভ) গভর্নর লিসা কুককে বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছেন। বন্ধকি ঋণে (মর্টগেজ) অনিয়মের অভিযোগ এনে ট্রাম্প এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ স্বাধীন সংস্থা হিসেবে কাজ করে। ট্রাম্পের এ ধরনের পদক্ষেপ নজিরবিহীন। সিএনএন বলছে, ফেডারেল রিজার্ভের ১১১ বছরের ইতিহাসে এমন ঘটেনি। বিষয়টি আদালতে গড়ালে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার সীমা পরীক্ষা হতে পারে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
কুক ফেডারেল রিজার্ভের সাত সদস্য বোর্ডের একজন সদস্য এবং প্রথম আফ্রিকান বংশোদ্ভুত অ্যামেরিকান যিনি গভর্নরের দায়িত্ব পেয়েছেন।
ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম, ট্রুথ সেশালে কুককে লেখা এক চিঠিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। ট্রাম্প বলছেন, কুককে বরখাস্ত করার মতো যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
কুককে ২০২২ সালে ফেডের বোর্ডে নিয়োগ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল হাউজিং ফাইন্যান্স এজেন্সির পরিচালক উইলিয়াম পুলটে কুকের বিষয়টি তুলেন এবং তদন্তের জন্য অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডির কাছে পাঠান। এর পর থেকেই তা আলোচনায় আসে।
ট্রাম্প তার চিঠিতে কুকের বিরুদ্ধে ‘প্রতারণা ও অপরাধমূলক আর্থিক আচরণ’-এর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, কুকের ‘সততা ও যোগ্যতার’ ওপর তার ‘আস্থা নেই’।
অভিযোগ, ২০২১ সালে মিশিগান ও জর্জিয়ার দুটি বাড়ির ওপর আলাদা বন্ধকি ঋণ নেন কুক। কাগজপত্রে দুটি বাড়িকেই নিজের ‘প্রধান বাসস্থান’ হিসেবে দেখান তিনি।
‘এ ঘটনায় আর্থিক লেনদেনে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া যায়, যা একজন আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক হিসেবে আপনার দক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে’, লিখেছেন ট্রাম্প। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ ও ১৯১৩ সালের ফেডারেল রিজার্ভ আইনের অধীন কুককে বরখাস্তের ক্ষমতা তার আছে বলে দাবি করেন।
গত সপ্তাহে বিষয়টি প্রথম প্রকাশ্যে আসার পর ট্রাম্প কুককে পদত্যাগ করতে বললেও তিনি দৃঢ়ভাবে জানিয়ে দেন, তিনি ফেডে কাজ চালিয়ে যাবেন।
২০ আগস্ট কুক বলেন, ‘শুধু একটি টুইটের কারণে আমি পদ ছাড়ব না। তবে আমার আর্থিক লেনদেন নিয়ে প্রশ্ন উঠলে সেগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করব এবং যথাযথ তথ্য দিয়ে উত্তর দেব।’
ফেডারেল রিজার্ভ গভর্নরদের মেয়াদ দীর্ঘ হয়, যা কোনো প্রেসিডেন্টের মেয়াদের সঙ্গে শেষ হয় না। কুকের মেয়াদ ২০৩৮ সাল পর্যন্ত চলার কথা। তবে আইন অনুযায়ী, গুরুতর কারণে একজন গভর্নরকে সরানো সম্ভব।
কিন্তু এ ধরনের পদক্ষেপ আগে কখনো প্রেসিডেন্ট নেননি। আর ১৯৭০-এর দশক থেকে ফেডারেল রিজার্ভ বা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখার চেষ্টাই দেখা যায়।
ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্ত আদালতে চ্যালেঞ্জ হলে নানা জটিল প্রশ্ন উঠবে বলেই ধারণা সংশ্লিষ্টদের। যেমন প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার সীমা, ফেডের বিশেষ কাঠামো, ইতিহাস। কুক আসলেই আইন ভেঙেছেন কি না, তা নিয়েও বিতর্ক হবে।
পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক পিটার কন্টি-ব্রাউন রয়টার্সের বলেছেন, কুকের মর্টগেজ–সংক্রান্ত লেনদেন ছিল ফেডে যোগ দেয়ার আগে। তার নিয়োগ সিনেটের অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় থাকার সময় তা নথিবদ্ধ ছিল। তিনি আরও বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বা সিনেটের অনুমোদনপ্রক্রিয়ায় যেসব কর্মকর্তা ফেডে আসেন, তাদের ব্যক্তিগত জীবনের সব তথ্য খতিয়ে দেখা হয়। তাই অতীতের গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ তুলে তাদের অপসারণ করাটা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।’