নেপালের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকি
ছয় মাসের মধ্যে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে চান নেপালের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকি। দায়িত্বগ্রহণের পর বিবিসি নেপালিকে দেয়া প্রথম সাক্ষাৎকারে তিনি এ অভিপ্রায় প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘যেদিন আমি ক্ষমতা হস্তান্তর করবো, সেদিন থেকেই আমি মুক্ত। আমি চাই আমার দায়িত্ব ছয় মাসের মধ্যে শেষ হোক।’
আগামী ২০২৬ সালের ৫ মার্চ নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত তারিখ সামনে রেখে কী কী চ্যালেঞ্জ রয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে কারকি জানান, নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত সক্রিয় করা হবে এবং ভোটার তালিকা হালনাগাদই হবে প্রধান কাজ। তিনি বলেন, ‘দিনরাত পরিশ্রম করলে ছয় মাসেই এই কাজ সম্ভব। প্রয়োজন হলে দিনে ১৮ ঘণ্টাও কাজ করবো।’
দুর্নীতির তদন্তে কঠোর অবস্থান
সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী কারকি জানান, আগের সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত হবে। তার কথায়, ‘প্রথমে ১০-১১ জন সদস্য নিয়ে একটি অন্তর্বর্তী মন্ত্রীসভা গঠন করবো। এরপর দুর্নীতির প্রকৃতি নির্ধারণ করে তদন্ত শুরু করবো। যতক্ষণ পর্যন্ত তদন্ত করে ব্যবস্থা না নেয়া যায়, ততক্ষণ এই জাতি শান্তি পাবে না।’
সহিংসতা ও সম্পত্তি ক্ষয়-ক্ষতির তদন্তে বিশেষ কমিশন
জেন-জি আন্দোলনের সময় সংঘটিত সহিংসতা, হত্যা ও সম্পত্তি ক্ষয়-ক্ষতির ঘটনাগুলোর তদন্তে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিশন গঠন করা হবে বলে জানান কারকি। তার ভাষায়, ‘আমাদের হাতে মাত্র ছয় মাস সময়। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করা হবে। তিনজন বিশেষজ্ঞকে এই তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হবে।’
অরাজনৈতিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক মন্ত্রীসভার পরিকল্পনা
কারকি জানান, রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পৌড়েল রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে মন্ত্রীসভা গঠনের পরামর্শ দিলেও তিনি সেটি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি এমন কাউকে মন্ত্রী করতে চাই না যারা নির্বাচনে অংশ নেবেন। নয়তো ক্ষমতার অপব্যবহার হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি নারী, দলিত, আদিবাসী ও অনগ্রসর শ্রেণীর মানুষদের অন্তর্ভুক্ত করার। তাদের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা আছে কিনা, তা যাচাই করে দেখে অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের বেছে নেয়া হবে।’
চাপ ও বিরোধিতা প্রসঙ্গে বক্তব্য
জেন-জি আন্দোলনকারীদের একটি অংশ ইতোমধ্যেই কারকির নেতৃত্বে গঠিত সরকারের বিরোধিতা শুরু করেছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যারা আমাদের নাম প্রস্তাব করেছিল, তারাই এখন বিরোধিতা করছে। কিন্তু আমরা পদ চাইনি। আন্দোলনের দাবিগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি। সব দাবি হয়তো পূরণ করা সম্ভব হবে না, তবে আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।’
মন্ত্রীসভা সম্প্রসারণ প্রক্রিয়াধীন
কারকি জানান, ইতোমধ্যেই তিনজন মন্ত্রী নিযুক্ত হয়েছেন, বাকিদের তালিকা চূড়ান্ত করা হবে আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে। তিনি বলেন, ‘আমাদের কিছু বন্ধু রয়েছেন যারা মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন এবং পরামর্শ দিচ্ছেন। আমরা চাই নির্বাচনী সরকার যেন সম্পূর্ণ আইন ও নিয়ম মেনে চলে।’
তিনি ভারতের সাবেক নির্বাচন কমিশনার টিএন শেশনের উদাহরণ টেনে বলেন, ‘নির্বাচন যেন তার মতো সুষ্ঠুভাবে হয়, সে চেষ্টাই করছি আমরা।’
নেপালের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকি
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছয় মাসের মধ্যে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে চান নেপালের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকি। দায়িত্বগ্রহণের পর বিবিসি নেপালিকে দেয়া প্রথম সাক্ষাৎকারে তিনি এ অভিপ্রায় প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘যেদিন আমি ক্ষমতা হস্তান্তর করবো, সেদিন থেকেই আমি মুক্ত। আমি চাই আমার দায়িত্ব ছয় মাসের মধ্যে শেষ হোক।’
আগামী ২০২৬ সালের ৫ মার্চ নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত তারিখ সামনে রেখে কী কী চ্যালেঞ্জ রয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে কারকি জানান, নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত সক্রিয় করা হবে এবং ভোটার তালিকা হালনাগাদই হবে প্রধান কাজ। তিনি বলেন, ‘দিনরাত পরিশ্রম করলে ছয় মাসেই এই কাজ সম্ভব। প্রয়োজন হলে দিনে ১৮ ঘণ্টাও কাজ করবো।’
দুর্নীতির তদন্তে কঠোর অবস্থান
সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী কারকি জানান, আগের সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত হবে। তার কথায়, ‘প্রথমে ১০-১১ জন সদস্য নিয়ে একটি অন্তর্বর্তী মন্ত্রীসভা গঠন করবো। এরপর দুর্নীতির প্রকৃতি নির্ধারণ করে তদন্ত শুরু করবো। যতক্ষণ পর্যন্ত তদন্ত করে ব্যবস্থা না নেয়া যায়, ততক্ষণ এই জাতি শান্তি পাবে না।’
সহিংসতা ও সম্পত্তি ক্ষয়-ক্ষতির তদন্তে বিশেষ কমিশন
জেন-জি আন্দোলনের সময় সংঘটিত সহিংসতা, হত্যা ও সম্পত্তি ক্ষয়-ক্ষতির ঘটনাগুলোর তদন্তে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিশন গঠন করা হবে বলে জানান কারকি। তার ভাষায়, ‘আমাদের হাতে মাত্র ছয় মাস সময়। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করা হবে। তিনজন বিশেষজ্ঞকে এই তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হবে।’
অরাজনৈতিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক মন্ত্রীসভার পরিকল্পনা
কারকি জানান, রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পৌড়েল রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে মন্ত্রীসভা গঠনের পরামর্শ দিলেও তিনি সেটি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি এমন কাউকে মন্ত্রী করতে চাই না যারা নির্বাচনে অংশ নেবেন। নয়তো ক্ষমতার অপব্যবহার হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি নারী, দলিত, আদিবাসী ও অনগ্রসর শ্রেণীর মানুষদের অন্তর্ভুক্ত করার। তাদের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা আছে কিনা, তা যাচাই করে দেখে অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের বেছে নেয়া হবে।’
চাপ ও বিরোধিতা প্রসঙ্গে বক্তব্য
জেন-জি আন্দোলনকারীদের একটি অংশ ইতোমধ্যেই কারকির নেতৃত্বে গঠিত সরকারের বিরোধিতা শুরু করেছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যারা আমাদের নাম প্রস্তাব করেছিল, তারাই এখন বিরোধিতা করছে। কিন্তু আমরা পদ চাইনি। আন্দোলনের দাবিগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি। সব দাবি হয়তো পূরণ করা সম্ভব হবে না, তবে আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।’
মন্ত্রীসভা সম্প্রসারণ প্রক্রিয়াধীন
কারকি জানান, ইতোমধ্যেই তিনজন মন্ত্রী নিযুক্ত হয়েছেন, বাকিদের তালিকা চূড়ান্ত করা হবে আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে। তিনি বলেন, ‘আমাদের কিছু বন্ধু রয়েছেন যারা মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন এবং পরামর্শ দিচ্ছেন। আমরা চাই নির্বাচনী সরকার যেন সম্পূর্ণ আইন ও নিয়ম মেনে চলে।’
তিনি ভারতের সাবেক নির্বাচন কমিশনার টিএন শেশনের উদাহরণ টেনে বলেন, ‘নির্বাচন যেন তার মতো সুষ্ঠুভাবে হয়, সে চেষ্টাই করছি আমরা।’