ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে চারটি পশ্চিমা দেশ। রোববার পর্যায়ক্রমে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্য ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র স্বীকৃতি দেওয়ার পর একই পথে হেঁটেছে পর্তুগাল।
পর্তুগালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাওলো র্যাঙ্গেল বলেছেন, “ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া আমাদের পররাষ্ট্রনীতির মৌলিক ও স্থায়ী অঙ্গ। দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানই ন্যায্য ও টেকসই শান্তির একমাত্র পথ। এখনই যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন। হামাস কোনওভাবেই গাজায় বা অন্য কোথাও নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে না এবং সব জিম্মিকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।”
চার দেশের এই পদক্ষেপের পর আরও ছয় দেশ সোমবার একই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে চলেছে। এই দেশগুলো হলো: বেলজিয়াম, ফ্রান্স, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, নিউজিল্যান্ড ও লিশটেনস্টাইন। সোমবার জাতিসংঘের এক বিশেষ সম্মেলনে এই দেশগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র স্বীকৃতি দেবে। সম্মেলনটি আয়োজন করছে ফ্রান্স ও সৌদি আরব। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ উপস্থিত থাকলেও সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান উপস্থিত থাকছেন না।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র স্বীকৃতি দেওয়ার পদক্ষেপকে “লোক দেখানো” আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “গুরুতর কূটনীতির ওপরই আমরা মনোনিবেশ করেছি, লোক দেখানোর বিষয়ে নয়। আমাদের অগ্রাধিকার স্পষ্ট—জিম্মিদের মুক্তি, ইসরায়েলের নিরাপত্তা, এবং হামাসমুক্ত অঞ্চলে শান্তি ও সমৃদ্ধি।”
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের আপত্তির মুখে ১০ দেশের ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির এই প্রতীকী পদক্ষেপ আরও সংঘাতের নেতিবাচক আবর্ত তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে বদলা হিসাবে ইসরায়েলের পশ্চিম তীরের আরও অংশ দখলের আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া, ইসরায়েলের ওপর ইউরোপীয় বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা, রাজনৈতিকভাবে একঘরে হয়ে পড়া এবং জাতিসংঘ থেকে সাময়িক বহিষ্কার হওয়ার ঝুঁকিও বাড়বে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি বলেছেন, “কানাডা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে এবং শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যৎ গড়তে অংশীদার হতে চায়।” অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ বলেন, “এটি ফিলিস্তিনিদের নিজেদের রাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের বৈধ আকাঙ্ক্ষার স্বীকৃতি।” ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, “দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান ছাড়া শান্তি সম্ভব নয়। এখন আমাদের কাছে নেই নিরাপদ ইসরায়েল, নেই কার্যকর ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র।”
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস দেশগুলোকে পশ্চিম তীর দখল নিয়ে ইসরায়েলের হুমকিতে ভীত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ফ্রান্সের উদ্যোগে যে স্বীকৃতির ঢেউ তৈরি হয়েছে, তাতে আরব রাষ্ট্রগুলোর পূর্ণ সমর্থন মিলেছে। এই প্রক্রিয়ার মূল লক্ষ্য একটি সংস্কারকৃত, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ গঠন করা, যারা অস্ত্রবিহীন ও ভেঙে দেওয়া হামাসের জায়গায় গাজার নেতৃত্ব নেবে।
ইতালি, জার্মানি ও কয়েকটি বাল্টিক দেশ এখনও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়নি। তবে দেশগুলোর অভ্যন্তরীন চাপে অবস্থান পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেল ১২-এ বলেন, “ইসরায়েলি সরকারের নীতি দুই রাষ্ট্র সমাধান ধ্বংস করছে। নতুন বসতি নির্মাণের কারণে আমরা শেষ মুহূর্তে এসে দাঁড়িয়েছি।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, ফিলিস্তিনকে এই স্বীকৃতি হামাসের পুরস্কার নয়। মাক্রোঁ সতর্ক করেছেন, গাজা সিটিতে ইসরায়েলের চলমান হামলায় এত বেশি বেসামরিক মানুষ হতাহত হচ্ছে, যা ইসরায়েলের ভাবমূর্তি ভেঙে ফেলছে বিশ্বজুড়ে।
ফ্রান্স, সৌদি আরব, নরওয়ে ও স্পেন একসঙ্গে জরুরি সহায়তা তহবিল গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। এতে ইসরায়েলের অর্থনৈতিক চাপের মধ্যেও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ভেঙে না পড়ে। আগামী ছয় মাসে অন্তত ২০০ মিলিয়ন ডলার তোলার লক্ষ্য রাখা হয়েছে।
ইসরায়েল পশ্চিম তীরে দখল আরও বাড়ালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ওপর বিশেষ চাপ পড়বে। তারা ২০২০ সালের আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছিল। সংযুক্ত আরব আমিরাত বলেছে, পশ্চিম তীর দখল করা হলে এটি হবে শেষ সীমা (রেড লাইন), যা আঞ্চলিক অখণ্ডতার সব সম্ভাবনাই শেষ করে দেবে।
সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে চারটি পশ্চিমা দেশ। রোববার পর্যায়ক্রমে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্য ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র স্বীকৃতি দেওয়ার পর একই পথে হেঁটেছে পর্তুগাল।
পর্তুগালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাওলো র্যাঙ্গেল বলেছেন, “ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া আমাদের পররাষ্ট্রনীতির মৌলিক ও স্থায়ী অঙ্গ। দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানই ন্যায্য ও টেকসই শান্তির একমাত্র পথ। এখনই যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন। হামাস কোনওভাবেই গাজায় বা অন্য কোথাও নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে না এবং সব জিম্মিকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।”
চার দেশের এই পদক্ষেপের পর আরও ছয় দেশ সোমবার একই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে চলেছে। এই দেশগুলো হলো: বেলজিয়াম, ফ্রান্স, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, নিউজিল্যান্ড ও লিশটেনস্টাইন। সোমবার জাতিসংঘের এক বিশেষ সম্মেলনে এই দেশগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র স্বীকৃতি দেবে। সম্মেলনটি আয়োজন করছে ফ্রান্স ও সৌদি আরব। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ উপস্থিত থাকলেও সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান উপস্থিত থাকছেন না।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র স্বীকৃতি দেওয়ার পদক্ষেপকে “লোক দেখানো” আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “গুরুতর কূটনীতির ওপরই আমরা মনোনিবেশ করেছি, লোক দেখানোর বিষয়ে নয়। আমাদের অগ্রাধিকার স্পষ্ট—জিম্মিদের মুক্তি, ইসরায়েলের নিরাপত্তা, এবং হামাসমুক্ত অঞ্চলে শান্তি ও সমৃদ্ধি।”
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের আপত্তির মুখে ১০ দেশের ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির এই প্রতীকী পদক্ষেপ আরও সংঘাতের নেতিবাচক আবর্ত তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে বদলা হিসাবে ইসরায়েলের পশ্চিম তীরের আরও অংশ দখলের আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া, ইসরায়েলের ওপর ইউরোপীয় বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা, রাজনৈতিকভাবে একঘরে হয়ে পড়া এবং জাতিসংঘ থেকে সাময়িক বহিষ্কার হওয়ার ঝুঁকিও বাড়বে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি বলেছেন, “কানাডা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে এবং শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যৎ গড়তে অংশীদার হতে চায়।” অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ বলেন, “এটি ফিলিস্তিনিদের নিজেদের রাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের বৈধ আকাঙ্ক্ষার স্বীকৃতি।” ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, “দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান ছাড়া শান্তি সম্ভব নয়। এখন আমাদের কাছে নেই নিরাপদ ইসরায়েল, নেই কার্যকর ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র।”
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস দেশগুলোকে পশ্চিম তীর দখল নিয়ে ইসরায়েলের হুমকিতে ভীত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ফ্রান্সের উদ্যোগে যে স্বীকৃতির ঢেউ তৈরি হয়েছে, তাতে আরব রাষ্ট্রগুলোর পূর্ণ সমর্থন মিলেছে। এই প্রক্রিয়ার মূল লক্ষ্য একটি সংস্কারকৃত, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ গঠন করা, যারা অস্ত্রবিহীন ও ভেঙে দেওয়া হামাসের জায়গায় গাজার নেতৃত্ব নেবে।
ইতালি, জার্মানি ও কয়েকটি বাল্টিক দেশ এখনও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়নি। তবে দেশগুলোর অভ্যন্তরীন চাপে অবস্থান পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেল ১২-এ বলেন, “ইসরায়েলি সরকারের নীতি দুই রাষ্ট্র সমাধান ধ্বংস করছে। নতুন বসতি নির্মাণের কারণে আমরা শেষ মুহূর্তে এসে দাঁড়িয়েছি।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, ফিলিস্তিনকে এই স্বীকৃতি হামাসের পুরস্কার নয়। মাক্রোঁ সতর্ক করেছেন, গাজা সিটিতে ইসরায়েলের চলমান হামলায় এত বেশি বেসামরিক মানুষ হতাহত হচ্ছে, যা ইসরায়েলের ভাবমূর্তি ভেঙে ফেলছে বিশ্বজুড়ে।
ফ্রান্স, সৌদি আরব, নরওয়ে ও স্পেন একসঙ্গে জরুরি সহায়তা তহবিল গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। এতে ইসরায়েলের অর্থনৈতিক চাপের মধ্যেও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ভেঙে না পড়ে। আগামী ছয় মাসে অন্তত ২০০ মিলিয়ন ডলার তোলার লক্ষ্য রাখা হয়েছে।
ইসরায়েল পশ্চিম তীরে দখল আরও বাড়ালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ওপর বিশেষ চাপ পড়বে। তারা ২০২০ সালের আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছিল। সংযুক্ত আরব আমিরাত বলেছে, পশ্চিম তীর দখল করা হলে এটি হবে শেষ সীমা (রেড লাইন), যা আঞ্চলিক অখণ্ডতার সব সম্ভাবনাই শেষ করে দেবে।