ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, তার দেশ পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে ‘হাঁটতে চায় না, কখনো হাঁটেনি এবং ভবিষ্যতেও হাঁটবে না’। কিন্তু তবুও পশ্চিমা বিশ্ব, ‘বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো’ ইরানের ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা ‘চাপিয়ে যাচ্ছে’।
পেজেশকিয়ানের বক্তব্য অনুযায়ী, ‘আসল অপরাধী হচ্ছে ইসরায়েল, যারা আঞ্চলিক শান্তি নষ্ট করছে। অথচ শাস্তি ভোগ করতে হচ্ছে তেহরানকে।’
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে পেজেশকিয়ান বলেন, ‘আমি এই অধিবেশনের সামনে আবার ঘোষণা করছি, ইরান কখনো পারমাণবিক বোমা তৈরির চেষ্টা করেনি এবং কখনো করবে না।’
তার দাবি, তেহরান সব সময় পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করেছে ‘শান্তিপূর্ণ’ উদ্দেশ্যে—বিদ্যুৎ উৎপাদন ও চিকিৎসা গবেষণার জন্য। কিন্তু বাস্তবতা হলো, পশ্চিমা দেশগুলো ইরানের ‘আন্তরিক প্রচেষ্টা’ স্বীকার করছে না।
ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘অঞ্চলে বারবার যুদ্ধ ও সংঘাত সৃষ্টি করছে ইসরায়েল। কিন্তু আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো ইসরায়েলকে দায়ী করছে না, বরং ইরানের ওপর নতুন করে শাস্তি চাপাচ্ছে।’
জাতিসংঘের অধিবেশনে বক্তব্য দেওয়ার সময় পেজেশকিয়ান ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে নিহতদের ছবি দেখান। ইরানের দাবি, সাম্প্রতিক অভিযানে এক হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। শুধু তাই নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের যৌথ বিমান হামলায় ইরানের ঘরবাড়ি, শহর ও অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে।
পেজেশকিয়ান বলেন, ‘আমরা যখন কূটনৈতিক আলোচনার টেবিলে বসেছিলাম, তখনই আমাদের ওপর চালানো হয়েছে বিমান হামলা। এটি কেবল ইরানের বিরুদ্ধে নয়, কূটনীতির প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।’
ইরান বহু বছর ধরেই বলছে, তারা পারমাণবিক অস্ত্রের পক্ষে নয়। ইরানের শীর্ষ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মীয় ফরমানও দিয়েছেন, যেখানে বলা হয়েছে, ‘পারমাণবিক বোমা তৈরি ইসলামি নীতির বিরোধী’। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও এখনও নিশ্চিতভাবে বলতে পারেনি যে ইরান চূড়ান্তভাবে অস্ত্র তৈরির পথে গেছে।
তবুও সন্দেহ থামেনি ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের। তাদের আশঙ্কা, ইরানের কাছে উন্নত পারমাণবিক প্রযুক্তি রয়েছে। তাই চাইলে তারা দ্রুত অস্ত্র তৈরিতে সক্ষম হতে পারে।
এই সন্দেহের জের ধরে আবারও সামনে এসেছে নতুন নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি।
ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি জাতিসংঘের সেই নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করতে চায়, যা ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির কারণে স্থগিত ছিল। সেই চুক্তি হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায়। বারাক ওবামা প্রশাসনের সময়ে হওয়া ওই চুক্তিকে বলা হয় ‘যৌথ সামগ্রিক কর্মপরিকল্পনা’। কিন্তু ২০১৮ সালে ডনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে হঠাৎ করেই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যান। তার পর থেকে কার্যত ভেঙে পড়েছে পুরো প্রক্রিয়া।
ইউরোপীয় দেশগুলোর সমালোচনা করে ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তারা নিজেদের চুক্তির দায়িত্বশীল পক্ষ হিসেবে উপস্থাপন করেছে। অথচ বাস্তবে মিথ্যা বলেছে। ইরানের আন্তরিক প্রচেষ্টাকে তারা যথেচ্ছভাবে অপর্যাপ্ত আখ্যা দিয়েছে। আসলে তাদের উদ্দেশ্যই ছিল চুক্তি ধ্বংস করা।’
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশন চলছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের অংশগ্রহণে শুরু হয় সাধারণ বিতর্ক-পর্ব। বিতর্কের প্রথম দিনে দুটি অধিবেশনে ৩০ জনেরও বেশি বিশ্বনেতা বক্তব্য রাখেন।
বিশ্বনেতাদের অংশগ্রহণে সবচেয়ে বড় এ আসরের এবারের অধিবেশনের প্রতিপাদ্য: ‘বেটার টুগেদার: এইটি ইয়ারস এণ্ড মোর ফর পিস, ডেভেলপমেন্ট এণ্ড হিউম্যান রাইটস’।
২৬ সেপ্টেম্বর সকালের পর্বে শেষ বক্তা হিসেবে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে।
একইদিন ভাষণ দেবেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
প্রায় ১৫০ জন রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানসহ মোট দুইশোরও বেশি দেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে চলছে ১৯৩ সদস্যের বিশ্ব সংস্থাটির সাধারণ পরিষদের অধিবেশন।
বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, তার দেশ পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে ‘হাঁটতে চায় না, কখনো হাঁটেনি এবং ভবিষ্যতেও হাঁটবে না’। কিন্তু তবুও পশ্চিমা বিশ্ব, ‘বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো’ ইরানের ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা ‘চাপিয়ে যাচ্ছে’।
পেজেশকিয়ানের বক্তব্য অনুযায়ী, ‘আসল অপরাধী হচ্ছে ইসরায়েল, যারা আঞ্চলিক শান্তি নষ্ট করছে। অথচ শাস্তি ভোগ করতে হচ্ছে তেহরানকে।’
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে পেজেশকিয়ান বলেন, ‘আমি এই অধিবেশনের সামনে আবার ঘোষণা করছি, ইরান কখনো পারমাণবিক বোমা তৈরির চেষ্টা করেনি এবং কখনো করবে না।’
তার দাবি, তেহরান সব সময় পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করেছে ‘শান্তিপূর্ণ’ উদ্দেশ্যে—বিদ্যুৎ উৎপাদন ও চিকিৎসা গবেষণার জন্য। কিন্তু বাস্তবতা হলো, পশ্চিমা দেশগুলো ইরানের ‘আন্তরিক প্রচেষ্টা’ স্বীকার করছে না।
ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘অঞ্চলে বারবার যুদ্ধ ও সংঘাত সৃষ্টি করছে ইসরায়েল। কিন্তু আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো ইসরায়েলকে দায়ী করছে না, বরং ইরানের ওপর নতুন করে শাস্তি চাপাচ্ছে।’
জাতিসংঘের অধিবেশনে বক্তব্য দেওয়ার সময় পেজেশকিয়ান ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে নিহতদের ছবি দেখান। ইরানের দাবি, সাম্প্রতিক অভিযানে এক হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। শুধু তাই নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের যৌথ বিমান হামলায় ইরানের ঘরবাড়ি, শহর ও অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে।
পেজেশকিয়ান বলেন, ‘আমরা যখন কূটনৈতিক আলোচনার টেবিলে বসেছিলাম, তখনই আমাদের ওপর চালানো হয়েছে বিমান হামলা। এটি কেবল ইরানের বিরুদ্ধে নয়, কূটনীতির প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।’
ইরান বহু বছর ধরেই বলছে, তারা পারমাণবিক অস্ত্রের পক্ষে নয়। ইরানের শীর্ষ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মীয় ফরমানও দিয়েছেন, যেখানে বলা হয়েছে, ‘পারমাণবিক বোমা তৈরি ইসলামি নীতির বিরোধী’। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও এখনও নিশ্চিতভাবে বলতে পারেনি যে ইরান চূড়ান্তভাবে অস্ত্র তৈরির পথে গেছে।
তবুও সন্দেহ থামেনি ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের। তাদের আশঙ্কা, ইরানের কাছে উন্নত পারমাণবিক প্রযুক্তি রয়েছে। তাই চাইলে তারা দ্রুত অস্ত্র তৈরিতে সক্ষম হতে পারে।
এই সন্দেহের জের ধরে আবারও সামনে এসেছে নতুন নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি।
ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি জাতিসংঘের সেই নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করতে চায়, যা ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির কারণে স্থগিত ছিল। সেই চুক্তি হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায়। বারাক ওবামা প্রশাসনের সময়ে হওয়া ওই চুক্তিকে বলা হয় ‘যৌথ সামগ্রিক কর্মপরিকল্পনা’। কিন্তু ২০১৮ সালে ডনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে হঠাৎ করেই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যান। তার পর থেকে কার্যত ভেঙে পড়েছে পুরো প্রক্রিয়া।
ইউরোপীয় দেশগুলোর সমালোচনা করে ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তারা নিজেদের চুক্তির দায়িত্বশীল পক্ষ হিসেবে উপস্থাপন করেছে। অথচ বাস্তবে মিথ্যা বলেছে। ইরানের আন্তরিক প্রচেষ্টাকে তারা যথেচ্ছভাবে অপর্যাপ্ত আখ্যা দিয়েছে। আসলে তাদের উদ্দেশ্যই ছিল চুক্তি ধ্বংস করা।’
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশন চলছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের অংশগ্রহণে শুরু হয় সাধারণ বিতর্ক-পর্ব। বিতর্কের প্রথম দিনে দুটি অধিবেশনে ৩০ জনেরও বেশি বিশ্বনেতা বক্তব্য রাখেন।
বিশ্বনেতাদের অংশগ্রহণে সবচেয়ে বড় এ আসরের এবারের অধিবেশনের প্রতিপাদ্য: ‘বেটার টুগেদার: এইটি ইয়ারস এণ্ড মোর ফর পিস, ডেভেলপমেন্ট এণ্ড হিউম্যান রাইটস’।
২৬ সেপ্টেম্বর সকালের পর্বে শেষ বক্তা হিসেবে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে।
একইদিন ভাষণ দেবেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
প্রায় ১৫০ জন রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানসহ মোট দুইশোরও বেশি দেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে চলছে ১৯৩ সদস্যের বিশ্ব সংস্থাটির সাধারণ পরিষদের অধিবেশন।