রাশিয়ার ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ইউক্রেনে অন্তত পাঁচজন নিহত ও অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, শনিবার রাতভর ইউক্রেনের বিভিন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো লক্ষ্য করে ৫০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র এবং প্রায় ৫০০ ড্রোন ছুড়েছে রুশ বাহিনী। জেলেনস্কি বলেন, ‘আকাশপথে রাশিয়ার এই সন্ত্রাস বন্ধ করতে হলে আমাদের আরও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রয়োজন।’
এদিন সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা হয়েছে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় লভিভে, যেখানে চারজন নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন। শহরের মেয়র আন্দ্রি সাদোভিই জানিয়েছেন, রুশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর লভিভের বেশ কিছু অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। তবে এখনও নতুন হামলার আশঙ্কা রয়েছে।’
হামলা চালানো হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলীয় জাপোরিঝিয়ায়ও। একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র লক্ষ্য করে চালানো হামলায় একজন নিহত ও ৯ জন আহত হন। শহরটির গভর্নর ইভান ফেদোরভ জানান, প্রায় ৭৩ হাজার পরিবার বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরীসহ আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, রুশ হামলার সময় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ড। দেশটির সীমান্তের কাছাকাছি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত হওয়ার পর যুদ্ধবিমান আকাশে ওড়ায় তারা। এমনকি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও। পোল্যান্ডের সামরিক বাহিনী জানায়, আকাশ টহলে অংশ নিচ্ছে ন্যাটোর মিত্রবাহিনীর বিমানও। পোল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত অঞ্চলগুলোতে জোরদার করা হয়েছে রাডার ও নজরদারি ব্যবস্থা। দেশটির প্রতিরক্ষা দপ্তর জানিয়েছে, যে কোনো অনুপ্রবেশ প্রতিহত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে তারা।
এদিকে, আকাশ নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে ইউক্রেনের প্রতিবেশী ও অন্যতম দৃঢ় সমর্থক দেশ লিথুয়ানিয়ায়। শনিবার দেশটির আকাশে সন্দেহজনক বেলুন দেখা যাওয়ায় রাজধানী ভিলনিয়াসের বিমানবন্দর থেকে সব ফ্লাইট স্থগিত রাখা হয়। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ডেনমার্ক, জার্মানি ও নরওয়ের আকাশেও এমন বেলুনসদৃশ বস্তু দেখার খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব ঘটনা ইউরোপের আকাশ নিরাপত্তার ওপর নতুন করে চাপ সৃষ্টি করছে।
রুশ হামলার পর ইউক্রেনীয় প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া স্বিরিদেনকো বলেছেন, ‘রাশিয়া ইচ্ছা করে আমাদের জনগণের জীবনযাপন ব্যবস্থাকে ভেঙে দিতে চায়। তাদের লক্ষ্য ভয় ছড়িয়ে শীতের আগে ইউক্রেনের মনোবল দুর্বল করা।’ গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটির সব অঞ্চলজুড়ে বিমান হামলার সতর্কতা জারি করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।
অন্যদিকে, শনিবার ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলীয় শোস্তকা শহরের একটি রেলস্টেশনে রুশ ড্রোন হামলায় অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এই হামলাকে ‘নৃশংস ও পরিকল্পিত সন্ত্রাসী আক্রমণ’ বলে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া জানত তারা সাধারণ যাত্রীবাহী ট্রেনকে লক্ষ্য করছে।’ সুমি শহরের স্থানীয় কর্মকর্তা ওলেক্সি কুলেবা জানান, প্রথমে একটি স্থানীয় ট্রেন এবং পরে কিয়েভগামী আরেকটি ট্রেনকে লক্ষ্য করে দুটি ড্রোন আঘাত হানে। বিস্ফোরণে সৃষ্ট আগুন দ্রুত ট্রেনটিতে ছড়িয়ে পড়ে এবং রেলওয়ে কর্মী ও যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
ফ্রন্টলাইনে সৈন্য ও সহায়তা পৌঁছাতে বাধা সৃষ্টির জন্য সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে রাশিয়া ইউক্রেনের রেল নেটওয়ার্কে নিয়মিত হামলা চালাচ্ছে বলেন তিনি। গত দুই মাসে প্রায় প্রতিদিনই রেল অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা হয়েছে। ইউক্রেনের জ্বালানি খাতেও হামলা বাড়িয়েছে রুশ বাহিনী। গত সপ্তাহেই ইউক্রেনের গ্যাস স্থাপনায় ভয়াবহ আক্রমণ চালায় তারা। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেন ছাড়িয়ে এই সংঘাত এখন উত্তেজনা ছড়াচ্ছে ইউরোপের আকাশেও।
সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫
রাশিয়ার ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ইউক্রেনে অন্তত পাঁচজন নিহত ও অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, শনিবার রাতভর ইউক্রেনের বিভিন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো লক্ষ্য করে ৫০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র এবং প্রায় ৫০০ ড্রোন ছুড়েছে রুশ বাহিনী। জেলেনস্কি বলেন, ‘আকাশপথে রাশিয়ার এই সন্ত্রাস বন্ধ করতে হলে আমাদের আরও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রয়োজন।’
এদিন সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা হয়েছে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় লভিভে, যেখানে চারজন নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন। শহরের মেয়র আন্দ্রি সাদোভিই জানিয়েছেন, রুশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর লভিভের বেশ কিছু অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। তবে এখনও নতুন হামলার আশঙ্কা রয়েছে।’
হামলা চালানো হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলীয় জাপোরিঝিয়ায়ও। একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র লক্ষ্য করে চালানো হামলায় একজন নিহত ও ৯ জন আহত হন। শহরটির গভর্নর ইভান ফেদোরভ জানান, প্রায় ৭৩ হাজার পরিবার বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরীসহ আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, রুশ হামলার সময় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ড। দেশটির সীমান্তের কাছাকাছি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত হওয়ার পর যুদ্ধবিমান আকাশে ওড়ায় তারা। এমনকি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও। পোল্যান্ডের সামরিক বাহিনী জানায়, আকাশ টহলে অংশ নিচ্ছে ন্যাটোর মিত্রবাহিনীর বিমানও। পোল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত অঞ্চলগুলোতে জোরদার করা হয়েছে রাডার ও নজরদারি ব্যবস্থা। দেশটির প্রতিরক্ষা দপ্তর জানিয়েছে, যে কোনো অনুপ্রবেশ প্রতিহত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে তারা।
এদিকে, আকাশ নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে ইউক্রেনের প্রতিবেশী ও অন্যতম দৃঢ় সমর্থক দেশ লিথুয়ানিয়ায়। শনিবার দেশটির আকাশে সন্দেহজনক বেলুন দেখা যাওয়ায় রাজধানী ভিলনিয়াসের বিমানবন্দর থেকে সব ফ্লাইট স্থগিত রাখা হয়। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ডেনমার্ক, জার্মানি ও নরওয়ের আকাশেও এমন বেলুনসদৃশ বস্তু দেখার খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব ঘটনা ইউরোপের আকাশ নিরাপত্তার ওপর নতুন করে চাপ সৃষ্টি করছে।
রুশ হামলার পর ইউক্রেনীয় প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া স্বিরিদেনকো বলেছেন, ‘রাশিয়া ইচ্ছা করে আমাদের জনগণের জীবনযাপন ব্যবস্থাকে ভেঙে দিতে চায়। তাদের লক্ষ্য ভয় ছড়িয়ে শীতের আগে ইউক্রেনের মনোবল দুর্বল করা।’ গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটির সব অঞ্চলজুড়ে বিমান হামলার সতর্কতা জারি করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।
অন্যদিকে, শনিবার ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলীয় শোস্তকা শহরের একটি রেলস্টেশনে রুশ ড্রোন হামলায় অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এই হামলাকে ‘নৃশংস ও পরিকল্পিত সন্ত্রাসী আক্রমণ’ বলে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া জানত তারা সাধারণ যাত্রীবাহী ট্রেনকে লক্ষ্য করছে।’ সুমি শহরের স্থানীয় কর্মকর্তা ওলেক্সি কুলেবা জানান, প্রথমে একটি স্থানীয় ট্রেন এবং পরে কিয়েভগামী আরেকটি ট্রেনকে লক্ষ্য করে দুটি ড্রোন আঘাত হানে। বিস্ফোরণে সৃষ্ট আগুন দ্রুত ট্রেনটিতে ছড়িয়ে পড়ে এবং রেলওয়ে কর্মী ও যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
ফ্রন্টলাইনে সৈন্য ও সহায়তা পৌঁছাতে বাধা সৃষ্টির জন্য সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে রাশিয়া ইউক্রেনের রেল নেটওয়ার্কে নিয়মিত হামলা চালাচ্ছে বলেন তিনি। গত দুই মাসে প্রায় প্রতিদিনই রেল অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা হয়েছে। ইউক্রেনের জ্বালানি খাতেও হামলা বাড়িয়েছে রুশ বাহিনী। গত সপ্তাহেই ইউক্রেনের গ্যাস স্থাপনায় ভয়াবহ আক্রমণ চালায় তারা। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেন ছাড়িয়ে এই সংঘাত এখন উত্তেজনা ছড়াচ্ছে ইউরোপের আকাশেও।