ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বাংলাদেশের নির্বাচনের প্রতিক্ষায় আছে ভারত। নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণায় তারা উৎসাহিত বলে জানালেন দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। তিনি জানান, নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করে বাংলাদেশ সরকার যে বক্তব্য দিয়েছে, আমরা তাতে উৎসাহিত এবং আমরা প্রতীক্ষায় আছি, নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা আশা করি ‘কোনো বিলম্ব না ছাড়াই তা হবে এবং সে নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকারই আসুক না কেন, আমরা তার সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার প্রতীক্ষা আছি।
‘অবশ্য, এটা হবে এমন সরকার, যারা জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আসবে এবং বাংলাদেশের জনগণ তাদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য যে সরকারেই বাছাই করবে, আমরা তার সঙ্গে কাজ করবো।’
সোমবার,(০৬ অক্টোবর ২০২৫) সকালে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ডিক্যাব) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে এক মতবিনিময়ে তিনি এ কথা বলেন।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনাবসান হয়। তখন থেকে দিল্লিতে ভারত সরকারের আশ্রয়ে আছেন ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলতি বছরের মে মাসে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা জারি থাকার কথা বলা হয়।
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকার মধ্যে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমরা তার মধ্যে যেতে চাই না। আমি মনে করি, বাংলাদেশ সরকার, বাংলাদেশের জনগণ, বাংলাদেশের নাগরিক সমাজই দেখবে, এ নির্বাচনকে কীভাবে তারা মূল্যায়ন করবে এবং বাইরের লোকজনও দেখবে। আমি শুধু এভাবে বলতে পারি, এটা কেবল অভ্যন্তরীণ বৈধতার প্রশ্ন নয়, বহির্বিশ্বের বৈধতার প্রশ্নও। সুতরাং, সেদিক থেকে এটাও একটা দিক এবং নির্বাচনটা নিয়ে কী ভাবা হয়, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। কেবল আক্ষরিক অর্থ বিবেচনায় নিয়ে বলছি- অবাধ, নিরপেক্ষ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ওই প্রক্রিয়ার অংশ, যেই প্রক্রিয়া এটাকে বৈধতা দেয়।’
ভোটের বৈধতার প্রশ্নও জনগণের ওপর ছেড়ে দেয়ার দাবি করে তিনি বলেন, ‘দিনশেষে বাংলাদেশের মানুষই সিদ্ধান্ত নেবে, কীভাবে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নেবে এবং সেটাকে কীভাবে অনুষ্ঠিত হয়। কেননা, এই সিদ্ধান্তগুলো কেবল এ বছর ও এখনকার জন্য না বরং মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদে অনেক দূর যাবে। সর্বশেষে বাংলাদেশের মানুষকেই এটা দেখতে হবে।’
এ প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে নেয়ার কথা তুলে ধরে বিক্রিম মিশ্রি বলেন, সরকারের এ গঠন কাঠামো বাংলাদেশের সংবিধানে না থাকার মধ্যেও প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে স্বাগত জানানো ব্যক্তিদের মধ্যে শুরুর দিকে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর বিষয় যে দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে বাধা হিসেবে রয়েছে, সে বিষয়েও জানতে চাওয়া হয় বিক্রম মিশ্রির কাছে। উত্তরে তিনি বলেন, ‘এটা বিচারিক ও আইনি প্রক্রিয়া। এক্ষেত্রে দুদেশের সরকারের মধ্যে আলোচনা ও মতবিনিময় প্রয়োজন। এটা আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে কাজ করার প্রতীক্ষায় আছি। এ মুহূর্তে এই বিষয়ে আর কিছু বলা গঠনমূলক হবে বলে আমি মনে করছি না।’
আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনে ভারত চেষ্টা করছে, বাংলাদেশের মানুষের এমন ‘ধারণার’ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘আমরা কেবল বাংলাদেশে খুব দ্রুত একটা নির্বাচন, ম্যান্ডেট দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জনগণের মতপ্রকাশের এবং তাদের সরকার নির্বাচনের পক্ষে। আমরা সরকারের সঙ্গে কাজ করবো। আমরা সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। আমি মনে করি না, এ বিষয়ে এর বেশি কিছু বলার আছে।’
মত বিনিময়ের সময় অন্যদের মধ্যে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এবং বাংলাদেশ ও মায়ানমারবিষয়ক যুগ্ম সচিব বি শ্যাম, ডিক্যাব সভাপতি এ কে এম মঈনুদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান মামুন উপস্থিত ছিলেন।#
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫
বাংলাদেশের নির্বাচনের প্রতিক্ষায় আছে ভারত। নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণায় তারা উৎসাহিত বলে জানালেন দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। তিনি জানান, নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করে বাংলাদেশ সরকার যে বক্তব্য দিয়েছে, আমরা তাতে উৎসাহিত এবং আমরা প্রতীক্ষায় আছি, নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা আশা করি ‘কোনো বিলম্ব না ছাড়াই তা হবে এবং সে নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকারই আসুক না কেন, আমরা তার সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার প্রতীক্ষা আছি।
‘অবশ্য, এটা হবে এমন সরকার, যারা জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আসবে এবং বাংলাদেশের জনগণ তাদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য যে সরকারেই বাছাই করবে, আমরা তার সঙ্গে কাজ করবো।’
সোমবার,(০৬ অক্টোবর ২০২৫) সকালে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ডিক্যাব) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে এক মতবিনিময়ে তিনি এ কথা বলেন।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনাবসান হয়। তখন থেকে দিল্লিতে ভারত সরকারের আশ্রয়ে আছেন ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলতি বছরের মে মাসে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা জারি থাকার কথা বলা হয়।
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকার মধ্যে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমরা তার মধ্যে যেতে চাই না। আমি মনে করি, বাংলাদেশ সরকার, বাংলাদেশের জনগণ, বাংলাদেশের নাগরিক সমাজই দেখবে, এ নির্বাচনকে কীভাবে তারা মূল্যায়ন করবে এবং বাইরের লোকজনও দেখবে। আমি শুধু এভাবে বলতে পারি, এটা কেবল অভ্যন্তরীণ বৈধতার প্রশ্ন নয়, বহির্বিশ্বের বৈধতার প্রশ্নও। সুতরাং, সেদিক থেকে এটাও একটা দিক এবং নির্বাচনটা নিয়ে কী ভাবা হয়, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। কেবল আক্ষরিক অর্থ বিবেচনায় নিয়ে বলছি- অবাধ, নিরপেক্ষ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ওই প্রক্রিয়ার অংশ, যেই প্রক্রিয়া এটাকে বৈধতা দেয়।’
ভোটের বৈধতার প্রশ্নও জনগণের ওপর ছেড়ে দেয়ার দাবি করে তিনি বলেন, ‘দিনশেষে বাংলাদেশের মানুষই সিদ্ধান্ত নেবে, কীভাবে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নেবে এবং সেটাকে কীভাবে অনুষ্ঠিত হয়। কেননা, এই সিদ্ধান্তগুলো কেবল এ বছর ও এখনকার জন্য না বরং মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদে অনেক দূর যাবে। সর্বশেষে বাংলাদেশের মানুষকেই এটা দেখতে হবে।’
এ প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে নেয়ার কথা তুলে ধরে বিক্রিম মিশ্রি বলেন, সরকারের এ গঠন কাঠামো বাংলাদেশের সংবিধানে না থাকার মধ্যেও প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে স্বাগত জানানো ব্যক্তিদের মধ্যে শুরুর দিকে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর বিষয় যে দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে বাধা হিসেবে রয়েছে, সে বিষয়েও জানতে চাওয়া হয় বিক্রম মিশ্রির কাছে। উত্তরে তিনি বলেন, ‘এটা বিচারিক ও আইনি প্রক্রিয়া। এক্ষেত্রে দুদেশের সরকারের মধ্যে আলোচনা ও মতবিনিময় প্রয়োজন। এটা আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে কাজ করার প্রতীক্ষায় আছি। এ মুহূর্তে এই বিষয়ে আর কিছু বলা গঠনমূলক হবে বলে আমি মনে করছি না।’
আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনে ভারত চেষ্টা করছে, বাংলাদেশের মানুষের এমন ‘ধারণার’ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘আমরা কেবল বাংলাদেশে খুব দ্রুত একটা নির্বাচন, ম্যান্ডেট দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জনগণের মতপ্রকাশের এবং তাদের সরকার নির্বাচনের পক্ষে। আমরা সরকারের সঙ্গে কাজ করবো। আমরা সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। আমি মনে করি না, এ বিষয়ে এর বেশি কিছু বলার আছে।’
মত বিনিময়ের সময় অন্যদের মধ্যে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এবং বাংলাদেশ ও মায়ানমারবিষয়ক যুগ্ম সচিব বি শ্যাম, ডিক্যাব সভাপতি এ কে এম মঈনুদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান মামুন উপস্থিত ছিলেন।#