ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
গুরুত্বপূর্ণ ও বিরল খনিজের সরবরাহে চীনের দাপট কমাতে এবার অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে হাত মেলালো যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউজে সোমবার (২০ অক্টোবর) আয়োজিত এক বৈঠকে খনিজ উত্তোলন ও প্রক্রিয়াজাত নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। দুই দেশের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, আগামী ছয় মাসে উভয় দেশই খনিজ উত্তোলন ও প্রক্রিয়াজাত প্রকল্পে একশ কোটি ডলার করে বিনিয়োগ করবে। এছাড়া, পশ্চিমা ব্যবসায়ীদের দাবি অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ খনিজের জন্য একটি ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করার বিষয়েও চুক্তিতে সম্মতি জানানো হয়। বিরল ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ বলতে সাধারণত লিথিয়াম ও নিকেলসহ এমন উপাদান বোঝানো হয়, যা বৈদ্যুতিক গাড়ি, উড়োজাহাজের ইঞ্জিন ও সামরিক রাডার তৈরিতে অপরিহার্য। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ অনুযায়ী, চীনের মজুত সবচেয়ে বড়। তবে অস্ট্রেলিয়ারও উল্লেখযোগ্য মজুত রয়েছে। মূলত চীনভিত্তিক সরবরাহ ব্যবস্থার বিকল্প গড়ে তোলা নিয়ে বৈঠকটি আয়োজিত হলেও, শুরুতেই পরিস্থিতি কিছুটা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ২০২০ সালে সামাজিক মাধ্যমে ট্রাম্পকে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক প্রেসিডেন্ট’ বলেছিলেন অস্ট্রেলীয় কর্মকর্তা কেভিন রাড।
বৈঠকে অস্ট্রেলীয় প্রতিনিধি দলে রাডকে দেখে ট্রাম্প বলে বসেন, আপনাকে আমি পছন্দ করি না, বোধহয় কোনও দিন করবও না। অবশ্য, আলবানিজের সঙ্গে তিনি উষ্ণ অভ্যর্থনা বিনিময় করেছেন।
বৈঠকে এরপর অবশ্য আর কোনও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। ট্রাম্প ও আলবানিজ একসঙ্গে প্রায় সাড়ে আটশ কোটি ডলারের বিনিয়োগ প্রকল্পে স্বাক্ষর করেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, আর এক বছরের মধ্যে আমাদের কাছে এত বিরল ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ থাকবে যে, বুঝতে পারবেন না এগুলো নিয়ে করবেন কি! হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, প্রায় পাঁচ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের খনিজ সম্পদ সমৃদ্ধ অঞ্চলে প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে। তবে নির্ধারিত কোনও খনিজ বা প্রকল্প এলাকার নাম বিবৃতিতে ছিল না।
চুক্তির অংশ হিসেবে উভয় দেশ খনি অনুমোদন প্রক্রিয়া সংক্ষিপ্ত করা, খনিজ পুনঃব্যবহার, ভূতাত্ত্বিক সম্পদ মানচিত্রায়ন ও জাতীয় নিরাপত্তার কারণে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদের বিক্রি প্রতিরোধে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এতে পরোক্ষভাবে ইঙ্গিত করা হয়েছে চীনের দিকেই—যে দেশটি গত এক দশকে সারা বিশ্বে বৃহৎ খনি প্রকল্প কিনে নিয়েছে, যার মধ্যে ২০১৬ সালে কঙ্গোতে ফ্রিপোর্ট-ম্যাকমরান থেকে বিশ্বের বৃহত্তম কোবাল্ট খনি ক্রয়ও অন্তর্ভুক্ত।
সম্প্রতি বিরল খনিজের রফতানিতে নিয়ন্ত্রণ কঠোর করতে বাড়তি কিছু বিধিনিষেধ জারি করেছে চীন। তাদের পদক্ষেপকে বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলের জন্য (সাপ্লাই চেইন) হুমকি বলে কড়া সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই পরিস্থিতিতে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে চুক্তির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে বৈকি। এরমধ্যে, চুক্তিটি স্বাক্ষর হলো চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ট্রাম্পের অনুষ্ঠেয় বৈঠকের এক সপ্তাহ আগে। যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্রটির সঙ্গে চলতি বছর বাণিজ্য উত্তেজনা তুঙ্গে নিয়ে গেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫
গুরুত্বপূর্ণ ও বিরল খনিজের সরবরাহে চীনের দাপট কমাতে এবার অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে হাত মেলালো যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউজে সোমবার (২০ অক্টোবর) আয়োজিত এক বৈঠকে খনিজ উত্তোলন ও প্রক্রিয়াজাত নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। দুই দেশের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, আগামী ছয় মাসে উভয় দেশই খনিজ উত্তোলন ও প্রক্রিয়াজাত প্রকল্পে একশ কোটি ডলার করে বিনিয়োগ করবে। এছাড়া, পশ্চিমা ব্যবসায়ীদের দাবি অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ খনিজের জন্য একটি ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করার বিষয়েও চুক্তিতে সম্মতি জানানো হয়। বিরল ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ বলতে সাধারণত লিথিয়াম ও নিকেলসহ এমন উপাদান বোঝানো হয়, যা বৈদ্যুতিক গাড়ি, উড়োজাহাজের ইঞ্জিন ও সামরিক রাডার তৈরিতে অপরিহার্য। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ অনুযায়ী, চীনের মজুত সবচেয়ে বড়। তবে অস্ট্রেলিয়ারও উল্লেখযোগ্য মজুত রয়েছে। মূলত চীনভিত্তিক সরবরাহ ব্যবস্থার বিকল্প গড়ে তোলা নিয়ে বৈঠকটি আয়োজিত হলেও, শুরুতেই পরিস্থিতি কিছুটা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ২০২০ সালে সামাজিক মাধ্যমে ট্রাম্পকে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক প্রেসিডেন্ট’ বলেছিলেন অস্ট্রেলীয় কর্মকর্তা কেভিন রাড।
বৈঠকে অস্ট্রেলীয় প্রতিনিধি দলে রাডকে দেখে ট্রাম্প বলে বসেন, আপনাকে আমি পছন্দ করি না, বোধহয় কোনও দিন করবও না। অবশ্য, আলবানিজের সঙ্গে তিনি উষ্ণ অভ্যর্থনা বিনিময় করেছেন।
বৈঠকে এরপর অবশ্য আর কোনও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। ট্রাম্প ও আলবানিজ একসঙ্গে প্রায় সাড়ে আটশ কোটি ডলারের বিনিয়োগ প্রকল্পে স্বাক্ষর করেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, আর এক বছরের মধ্যে আমাদের কাছে এত বিরল ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ থাকবে যে, বুঝতে পারবেন না এগুলো নিয়ে করবেন কি! হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, প্রায় পাঁচ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের খনিজ সম্পদ সমৃদ্ধ অঞ্চলে প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে। তবে নির্ধারিত কোনও খনিজ বা প্রকল্প এলাকার নাম বিবৃতিতে ছিল না।
চুক্তির অংশ হিসেবে উভয় দেশ খনি অনুমোদন প্রক্রিয়া সংক্ষিপ্ত করা, খনিজ পুনঃব্যবহার, ভূতাত্ত্বিক সম্পদ মানচিত্রায়ন ও জাতীয় নিরাপত্তার কারণে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদের বিক্রি প্রতিরোধে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এতে পরোক্ষভাবে ইঙ্গিত করা হয়েছে চীনের দিকেই—যে দেশটি গত এক দশকে সারা বিশ্বে বৃহৎ খনি প্রকল্প কিনে নিয়েছে, যার মধ্যে ২০১৬ সালে কঙ্গোতে ফ্রিপোর্ট-ম্যাকমরান থেকে বিশ্বের বৃহত্তম কোবাল্ট খনি ক্রয়ও অন্তর্ভুক্ত।
সম্প্রতি বিরল খনিজের রফতানিতে নিয়ন্ত্রণ কঠোর করতে বাড়তি কিছু বিধিনিষেধ জারি করেছে চীন। তাদের পদক্ষেপকে বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলের জন্য (সাপ্লাই চেইন) হুমকি বলে কড়া সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই পরিস্থিতিতে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে চুক্তির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে বৈকি। এরমধ্যে, চুক্তিটি স্বাক্ষর হলো চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ট্রাম্পের অনুষ্ঠেয় বৈঠকের এক সপ্তাহ আগে। যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্রটির সঙ্গে চলতি বছর বাণিজ্য উত্তেজনা তুঙ্গে নিয়ে গেছে ট্রাম্প প্রশাসন।