মার্কিন প্রতিবেদন
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
চীন গত মে মাসে ‘সুযোগ বুঝে’ ভারত-পাকিস্তান সংঘাতকে তাদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতার ‘পরীক্ষা ও প্রচারের’ জন্য কাজে লাগিয়েছে। দ্বি-দলীয় মার্কিন কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার প্রকাশিত ইউএস-চায়না ইকোনমিক অ্যান্ড সিকিউরিটি রিভিউ কমিশনের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেইজিং চার দিনের এই সংঘাতকে কাজে লাগিয়ে তাদের আধুনিক অস্ত্রের পরীক্ষা ও বিজ্ঞাপন চালিয়েছে। ভারতের সঙ্গে তাদের চলমান সীমান্ত উত্তেজনা ও তাদের সম্প্রসারিত প্রতিরক্ষা শিল্পের লক্ষ্য পূরণে এটি সহায়ক হবে।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ‘এই সংঘর্ষে প্রথম চীনের আধুনিক অস্ত্র ব্যবস্থা- যার মধ্যে রয়েছে এইচকিউ-৯ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, পিএল-১৫ আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র এবং জে-১০ যুদ্ধবিমান সক্রিয় যুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছে। এটি বাস্তব অর্থে মাঠের পরীক্ষা হিসেবে কাজ করেছে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এরপর চীন নাকি জুনে পাকিস্তানকে জে-৩৫ পঞ্চম প্রজন্মের ৪০টি যুদ্ধবিমান, কেজে-৫০০ বিমান এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছিল।
কমিটির শুনানি ও গবেষণা এবং প্রকাশ্যে আসা তথ্য ও গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তৈরি করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংঘাতের কয়েক সপ্তাহ পর চীনের দূতাবাসগুলোও ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষে তাদের অস্ত্র ব্যবস্থার ‘সাফল্যের’ প্রশংসা করে, যা ‘অস্ত্র বিক্রি বৃদ্ধির’ চেষ্টা ছিল।
প্রতিবেদনটিতে আরও দাবি করা হয়েছে, মে মাসের এই সংঘাতকে ‘প্রক্সি যুদ্ধ’ বলা হলে ‘উসকানিদাতা’ হিসেবে চীনের ভূমিকাকে বাড়িয়ে বলা হবে।
ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের পর রাফাল যুদ্ধবিমান নিয়ে প্রশ্ন প্রতিবেদনে অভিযোগ তোলা হয়েছে, ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের পর ফরাসি রাফাল যুদ্ধবিমানকে হেয় করতে চীন ‘ভুয়া তথ্য প্রচার’ চালিয়েছিল।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ফরাসি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যানুসারে, চীন ফরাসি রাফালের বিপক্ষে তাদের নিজস্ব জে-৩৫-এর পক্ষে ভুয়া প্রচার শুরু করে। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) এবং ভিডিও গেমের ছবি প্রচার করে দাবি করে, সেগুলো চীনের অস্ত্রে ধ্বংস হওয়া যুদ্ধবিমানগুলোর ‘ধ্বংসাবশেষ’।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, চীনা দূতাবাসের কর্মকর্তারা ইন্দোনেশিয়াকে ফ্রান্সের সঙ্গে প্রক্রিয়াধীন থাকা রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি থামাতে রাজি করিয়েছিলেন। তবে চীন এসব প্রতিবেদনকে ‘ভুয়া তথ্য’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং রাফাল নিয়ে ভুয়া তথ্য প্রচারের বিষয়ে ব্রিফিংয় এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আপনারা যে তথাকথিত কমিশন’-এর কথা বলছেন, তারা সব সময় চীনের প্রতি আদর্শগত বিদ্বেষ পোষণ করে। তাদের বলার মতো বিশ্বাসযোগ্য কোনো কিছু নেই। মাও নিং আরও যোগ করেন, ‘কমিশনের তৈরি করা প্রতিবেদন নিজেই একটি ভুয়া তথ্য।’
ভারত-পাকিস্তান সংঘাত
জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্রগোষ্ঠীর হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। ওই হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছিল।
ভারত এই হামলায় জড়িতদের পাকিস্তানের সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে বলে ভারত অভিযোগ করে। তবে পাকিস্তান এই অভিযোগ নাকচ করে দেয়। গত ৭ মে ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দিয়ে পাকিস্তানে হামলা চালিয়ে বসে। জবাবে পাকিস্তানও পাল্টা আঘাত করে।
পাল্টাপাল্টি হামলার পর দুইপক্ষের মধ্যে সংঘাত বেঁধে যায়। এই সংঘাত চার দিন ধরে চলে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, তার মধ্যস্থতায় গত ১০ মে দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। তবে নরেন্দ্র মোদি সরকার ট্রাম্পের এই দাবি অস্বীকার করেছে। তারা দাবি করেছে, দুই দেশ কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সংঘাত বন্ধে রাজি হয়।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মার্কিন প্রতিবেদন
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫
চীন গত মে মাসে ‘সুযোগ বুঝে’ ভারত-পাকিস্তান সংঘাতকে তাদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতার ‘পরীক্ষা ও প্রচারের’ জন্য কাজে লাগিয়েছে। দ্বি-দলীয় মার্কিন কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার প্রকাশিত ইউএস-চায়না ইকোনমিক অ্যান্ড সিকিউরিটি রিভিউ কমিশনের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেইজিং চার দিনের এই সংঘাতকে কাজে লাগিয়ে তাদের আধুনিক অস্ত্রের পরীক্ষা ও বিজ্ঞাপন চালিয়েছে। ভারতের সঙ্গে তাদের চলমান সীমান্ত উত্তেজনা ও তাদের সম্প্রসারিত প্রতিরক্ষা শিল্পের লক্ষ্য পূরণে এটি সহায়ক হবে।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ‘এই সংঘর্ষে প্রথম চীনের আধুনিক অস্ত্র ব্যবস্থা- যার মধ্যে রয়েছে এইচকিউ-৯ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, পিএল-১৫ আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র এবং জে-১০ যুদ্ধবিমান সক্রিয় যুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছে। এটি বাস্তব অর্থে মাঠের পরীক্ষা হিসেবে কাজ করেছে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এরপর চীন নাকি জুনে পাকিস্তানকে জে-৩৫ পঞ্চম প্রজন্মের ৪০টি যুদ্ধবিমান, কেজে-৫০০ বিমান এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছিল।
কমিটির শুনানি ও গবেষণা এবং প্রকাশ্যে আসা তথ্য ও গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তৈরি করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংঘাতের কয়েক সপ্তাহ পর চীনের দূতাবাসগুলোও ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষে তাদের অস্ত্র ব্যবস্থার ‘সাফল্যের’ প্রশংসা করে, যা ‘অস্ত্র বিক্রি বৃদ্ধির’ চেষ্টা ছিল।
প্রতিবেদনটিতে আরও দাবি করা হয়েছে, মে মাসের এই সংঘাতকে ‘প্রক্সি যুদ্ধ’ বলা হলে ‘উসকানিদাতা’ হিসেবে চীনের ভূমিকাকে বাড়িয়ে বলা হবে।
ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের পর রাফাল যুদ্ধবিমান নিয়ে প্রশ্ন প্রতিবেদনে অভিযোগ তোলা হয়েছে, ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের পর ফরাসি রাফাল যুদ্ধবিমানকে হেয় করতে চীন ‘ভুয়া তথ্য প্রচার’ চালিয়েছিল।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ফরাসি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যানুসারে, চীন ফরাসি রাফালের বিপক্ষে তাদের নিজস্ব জে-৩৫-এর পক্ষে ভুয়া প্রচার শুরু করে। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) এবং ভিডিও গেমের ছবি প্রচার করে দাবি করে, সেগুলো চীনের অস্ত্রে ধ্বংস হওয়া যুদ্ধবিমানগুলোর ‘ধ্বংসাবশেষ’।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, চীনা দূতাবাসের কর্মকর্তারা ইন্দোনেশিয়াকে ফ্রান্সের সঙ্গে প্রক্রিয়াধীন থাকা রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি থামাতে রাজি করিয়েছিলেন। তবে চীন এসব প্রতিবেদনকে ‘ভুয়া তথ্য’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং রাফাল নিয়ে ভুয়া তথ্য প্রচারের বিষয়ে ব্রিফিংয় এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আপনারা যে তথাকথিত কমিশন’-এর কথা বলছেন, তারা সব সময় চীনের প্রতি আদর্শগত বিদ্বেষ পোষণ করে। তাদের বলার মতো বিশ্বাসযোগ্য কোনো কিছু নেই। মাও নিং আরও যোগ করেন, ‘কমিশনের তৈরি করা প্রতিবেদন নিজেই একটি ভুয়া তথ্য।’
ভারত-পাকিস্তান সংঘাত
জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্রগোষ্ঠীর হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। ওই হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছিল।
ভারত এই হামলায় জড়িতদের পাকিস্তানের সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে বলে ভারত অভিযোগ করে। তবে পাকিস্তান এই অভিযোগ নাকচ করে দেয়। গত ৭ মে ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দিয়ে পাকিস্তানে হামলা চালিয়ে বসে। জবাবে পাকিস্তানও পাল্টা আঘাত করে।
পাল্টাপাল্টি হামলার পর দুইপক্ষের মধ্যে সংঘাত বেঁধে যায়। এই সংঘাত চার দিন ধরে চলে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, তার মধ্যস্থতায় গত ১০ মে দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। তবে নরেন্দ্র মোদি সরকার ট্রাম্পের এই দাবি অস্বীকার করেছে। তারা দাবি করেছে, দুই দেশ কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সংঘাত বন্ধে রাজি হয়।