অস্ট্রেলিয়ার নর্দান টেরিটরি রাজ্যে একটি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পর থেকে হাজার হাজার মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছেন।
ফিনা নামের তিন মাত্রার ঘূর্ণিঝড়টি শনিবার রাতে রাজ্যের রাজধানী ডারউনসহ অঞ্চলটিতে আঘাত হানে। এ সময় ওই অঞ্চলজুড়ে ধ্বংসাত্মক ঝড় বয়ে যায়, জানিয়েছে রয়টার্স।
অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া ব্যুরো জানিয়েছে, রোববার ডারউইন থেকে দূরে সরে চলে যাওয়ার সময় ঝড়টি দমকা হাওয়া আকারে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২০৫ কিলোমিটার (১২৭ মাইল/ঘণ্টা) বেগে বইছিল। এর আগে শনিবার রাতে এটি ‘তীব্র ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়’ হিসেবে স্থলে উঠে আসে।
ফিনা ডারউইনের প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার বাসিন্দার মনে ঘূর্ণিঝড় ট্রেসির বেদনাদায়ক স্মৃতি ফিরিয়ে আনে। ১৯৭৪ সালে ক্রিসমাসের দিন আঘাত হানা ট্রেসি শহরটিকে প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছিল আর মৃত্যু হয়েছিল ৬৬ জনের। এটি অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছিল।
নর্দান টেরিটরি রাজ্যের সরকার প্রধান মুখ্যমন্ত্রী লিনা ফিনাচিয়ারো জানিয়েছেন, ফিনার কারণে প্রায় ১৯ হাজার মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছেন। ঝড়ে সম্পদের ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে এবং প্রবল বৃষ্টিতে রাস্তাগুলো তলিয়ে গেছে, কিন্তু এতে কেউ আহত হননি।
ডারউইনে এক সংবাদ সম্মেলনে ফিনাচিয়ারো বলেন, “এই ঘূর্ণিঝড় এমন একটি অঞ্চল দেখেছে যেটি ঐক্যবদ্ধ ও যা আসছে তার জন্য প্রস্তুত ছিল।”
কর্তৃপক্ষ অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় গ্যারিসন শহর ডারউনের বাসিন্দাদের ছিঁড়ে পড়া বৈদ্যুতিক লাইনগুলো থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছে। রাজ্যটির জরুরি পরিষেবার কর্মীরা ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ন করা শুরু করেছেন।
ফিনার পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে শনিবার ডারউইন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বন্ধ রাখা হয়েছিল। রোববার বিমানবন্দরটির কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা কার্যক্রম আবার শুরু করার জন্য কাজ করছেন।
এদিকে, অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে প্রশাসন। ফেডারেল এমপি লুক গোসলিং জানান, বেশ কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ নেই, তবে মানুষ আগে থেকেই ঝড়ের আঘাতের জন্য প্রস্তুত ছিল।
তিনি আরো বলেন, ‘ডারউইনে সবাই সবাইকে সাহায্য করে। যারা বহুদিন ধরে এখানে আছেন এবং আগের সাইক্লোনগুলোর অভিজ্ঞতা আছে, তারা এখানকার নতুন বাসিন্দা ও উদ্বিগ্নদের পরামর্শ দেন।’
বর্তমানে ফিনা পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার দিকে সাগরপথে এগোচ্ছে এবং পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এটি ক্যাটাগরি-৪ ঝড়ে পরিণত হতে পারে।
তবে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টির স্থলভাগে আঘাত হানার সম্ভাবনা কম এবং আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এটি ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে যাবে।
আবহাওয়া ব্যুরোর ভাষ্য অনুযায়ী, তিন মাত্রার ঘূর্ণিঝড় সর্বোচ্চ বিপজ্জনক মাত্রার দুই স্তর নিচে। এ ধরনের ঘূর্ণিঝড়ে সাধারণত ঘরবাড়ি, গাছপালা ও ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়। এর আগে চলতি বছরের মার্চে আরেকটি ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় অনেকটা শক্তি হারিয়ে প্রতিবেশী কুইন্সল্যান্ডে আঘাত হেনেছিল। ওই সময় ঝড়বৃষ্টির কারণে স্কুলগুলো বন্ধ রাখতে হয়েছিল এবং শত শত মানুষ বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছিলেন।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
রোববার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
অস্ট্রেলিয়ার নর্দান টেরিটরি রাজ্যে একটি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পর থেকে হাজার হাজার মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছেন।
ফিনা নামের তিন মাত্রার ঘূর্ণিঝড়টি শনিবার রাতে রাজ্যের রাজধানী ডারউনসহ অঞ্চলটিতে আঘাত হানে। এ সময় ওই অঞ্চলজুড়ে ধ্বংসাত্মক ঝড় বয়ে যায়, জানিয়েছে রয়টার্স।
অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া ব্যুরো জানিয়েছে, রোববার ডারউইন থেকে দূরে সরে চলে যাওয়ার সময় ঝড়টি দমকা হাওয়া আকারে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২০৫ কিলোমিটার (১২৭ মাইল/ঘণ্টা) বেগে বইছিল। এর আগে শনিবার রাতে এটি ‘তীব্র ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়’ হিসেবে স্থলে উঠে আসে।
ফিনা ডারউইনের প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার বাসিন্দার মনে ঘূর্ণিঝড় ট্রেসির বেদনাদায়ক স্মৃতি ফিরিয়ে আনে। ১৯৭৪ সালে ক্রিসমাসের দিন আঘাত হানা ট্রেসি শহরটিকে প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছিল আর মৃত্যু হয়েছিল ৬৬ জনের। এটি অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছিল।
নর্দান টেরিটরি রাজ্যের সরকার প্রধান মুখ্যমন্ত্রী লিনা ফিনাচিয়ারো জানিয়েছেন, ফিনার কারণে প্রায় ১৯ হাজার মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছেন। ঝড়ে সম্পদের ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে এবং প্রবল বৃষ্টিতে রাস্তাগুলো তলিয়ে গেছে, কিন্তু এতে কেউ আহত হননি।
ডারউইনে এক সংবাদ সম্মেলনে ফিনাচিয়ারো বলেন, “এই ঘূর্ণিঝড় এমন একটি অঞ্চল দেখেছে যেটি ঐক্যবদ্ধ ও যা আসছে তার জন্য প্রস্তুত ছিল।”
কর্তৃপক্ষ অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় গ্যারিসন শহর ডারউনের বাসিন্দাদের ছিঁড়ে পড়া বৈদ্যুতিক লাইনগুলো থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছে। রাজ্যটির জরুরি পরিষেবার কর্মীরা ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ন করা শুরু করেছেন।
ফিনার পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে শনিবার ডারউইন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বন্ধ রাখা হয়েছিল। রোববার বিমানবন্দরটির কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা কার্যক্রম আবার শুরু করার জন্য কাজ করছেন।
এদিকে, অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে প্রশাসন। ফেডারেল এমপি লুক গোসলিং জানান, বেশ কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ নেই, তবে মানুষ আগে থেকেই ঝড়ের আঘাতের জন্য প্রস্তুত ছিল।
তিনি আরো বলেন, ‘ডারউইনে সবাই সবাইকে সাহায্য করে। যারা বহুদিন ধরে এখানে আছেন এবং আগের সাইক্লোনগুলোর অভিজ্ঞতা আছে, তারা এখানকার নতুন বাসিন্দা ও উদ্বিগ্নদের পরামর্শ দেন।’
বর্তমানে ফিনা পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার দিকে সাগরপথে এগোচ্ছে এবং পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এটি ক্যাটাগরি-৪ ঝড়ে পরিণত হতে পারে।
তবে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টির স্থলভাগে আঘাত হানার সম্ভাবনা কম এবং আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এটি ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে যাবে।
আবহাওয়া ব্যুরোর ভাষ্য অনুযায়ী, তিন মাত্রার ঘূর্ণিঝড় সর্বোচ্চ বিপজ্জনক মাত্রার দুই স্তর নিচে। এ ধরনের ঘূর্ণিঝড়ে সাধারণত ঘরবাড়ি, গাছপালা ও ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়। এর আগে চলতি বছরের মার্চে আরেকটি ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় অনেকটা শক্তি হারিয়ে প্রতিবেশী কুইন্সল্যান্ডে আঘাত হেনেছিল। ওই সময় ঝড়বৃষ্টির কারণে স্কুলগুলো বন্ধ রাখতে হয়েছিল এবং শত শত মানুষ বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছিলেন।