ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শান্তি আলোচনায় গতি এসেছে। তবে বেড়েছে যুদ্ধের তীব্রতা। গত সোমবার রাতে ইউক্রেন ও রাশিয়া উভয় দেশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে পাল্টাপাল্টি হামলা চালায়। এতে দুই দেশে অন্তত ৯ জন নিহত হন। মঙ্গলবার সিএনএন জানায়, ২২টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ৪৬০টি ড্রোন দিয়ে কিয়েভে হামলা চালায় মস্কো। এতে ছয়জন নিহত হন। আহত হন ১৩ জন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে, রাশিয়ায়ও ড্রোন হামলা চালায় ইউক্রেন। এতে অন্তত তিনজন নিহত ও আটজন আহত হন। রাশিয়া ২৪৯টি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে।
গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি শান্তি প্রস্তাব দেন, যা এ সপ্তাহের শুরুতে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসে ইউক্রেন ও তাঁর ইউরোপের মিত্ররা সংস্কার করেন। পরে মার্কিন কর্মকর্তারা বৈঠক করেন রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও। রয়টার্স জানায়, গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন সেনা সচিব ড্যান ড্রিসকল আবুধাবিতে রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে অঘোষিত আলোচনা করেছেন। এদিন দুপক্ষের মধ্যে আরও বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। এমন একসময় এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের কর্মকর্তারা একটি শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে তাদের মধ্যে ব্যবধান কমাতে চেষ্টা করছেন। তবে মূল বিষয়গুলো এখনও অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
গত আগস্টে আলাস্কায় ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে তাড়াহুড়া করে আয়োজিত শীর্ষ সম্মেলন কিয়েভ ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের উদ্বেগে ফেলে। তারা ভাবতে থাকেন- ওয়াশিংটন রাশিয়ার অনেক দাবি মেনে নিতে পারে। এ প্রেক্ষাপটে গত সপ্তাহে ২৮ দফা পরিকল্পনা তুলে ধরেন ট্রাম্প, যা কিয়েভ ও ইউরোপের অনেকের মনে অস্বস্তি তৈরি করে। এ পরিকল্পনায় রয়েছে– কিয়েভকে রাশিয়ার কাছে আরও অঞ্চল ছেড়ে দিতে হবে, তার সামরিক বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা মেনে নিতে হবে এবং ন্যাটোতে যোগদান থেকে বিরত থাকতে হবে। এ শর্তগুলো কিয়েভ দীর্ঘদিন ধরে আত্মসমর্পণের সমতুল্য বলে প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্রের এ পরিকল্পনা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির ওপর চাপ বাড়িয়েছে।
এ বাস্তবতায় গত সোমবার জেলেনস্কি বলেন, জেনেভায় সপ্তাহান্তে আলোচনার পর সর্বশেষ প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনায় ‘সঠিক’ বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে ট্রাম্পের সঙ্গে সংবেদনশীল বিষয়গুলো নিয়ে এখনও আলোচনা বাকি রয়েছে। রাতের ভিডিও ভাষণে তিনি বলেন, ‘জেনেভার পর পয়েন্ট কমেছে। আর ২৮টি নেই। অনেক সঠিক বিষয় এ কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের দল ইতোমধ্যেই নতুন খসড়া তৈরি করেছে। সংবেদনশীল ও সবচেয়ে সূক্ষ্ম বিষয়গুলো নিয়ে আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করব।’ ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সিএনএন জানায়, চলতি সপ্তাহেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্র সফর করতে পারেন।
এ নিয়ে রাশিয়ার পক্ষ থেকেও প্রতিক্রিয়া এসেছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘বর্তমানে একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ বিষয়– মার্কিন প্রকল্প, ট্রাম্প প্রকল্প। আমরা বিশ্বাস করি, এটি আলোচনার জন্য একটি খুব ভালো ভিত্তি হয়ে উঠতে পারে।’
যেহেতু ট্রাম্পের প্রস্তাবকে কেন্দ্র করেই ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ বন্ধের উদ্যোগ এগোচ্ছে, তাই এটাকেই সবাই গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছেন। এ প্রস্তাবটি নিয়ে মিত্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে ইউরোপের। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, ‘এটি একটি উদ্যোগ, যা সঠিক দিকে যায়, শান্তি দিকে যায়। তবে, এ পরিকল্পনার কিছু দিক আছে, যা নিয়ে আলোচনা, আলোচনা এবং উন্নতির সুযোগ আছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫
ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শান্তি আলোচনায় গতি এসেছে। তবে বেড়েছে যুদ্ধের তীব্রতা। গত সোমবার রাতে ইউক্রেন ও রাশিয়া উভয় দেশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে পাল্টাপাল্টি হামলা চালায়। এতে দুই দেশে অন্তত ৯ জন নিহত হন। মঙ্গলবার সিএনএন জানায়, ২২টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ৪৬০টি ড্রোন দিয়ে কিয়েভে হামলা চালায় মস্কো। এতে ছয়জন নিহত হন। আহত হন ১৩ জন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে, রাশিয়ায়ও ড্রোন হামলা চালায় ইউক্রেন। এতে অন্তত তিনজন নিহত ও আটজন আহত হন। রাশিয়া ২৪৯টি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে।
গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি শান্তি প্রস্তাব দেন, যা এ সপ্তাহের শুরুতে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসে ইউক্রেন ও তাঁর ইউরোপের মিত্ররা সংস্কার করেন। পরে মার্কিন কর্মকর্তারা বৈঠক করেন রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও। রয়টার্স জানায়, গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন সেনা সচিব ড্যান ড্রিসকল আবুধাবিতে রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে অঘোষিত আলোচনা করেছেন। এদিন দুপক্ষের মধ্যে আরও বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। এমন একসময় এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের কর্মকর্তারা একটি শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে তাদের মধ্যে ব্যবধান কমাতে চেষ্টা করছেন। তবে মূল বিষয়গুলো এখনও অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
গত আগস্টে আলাস্কায় ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে তাড়াহুড়া করে আয়োজিত শীর্ষ সম্মেলন কিয়েভ ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের উদ্বেগে ফেলে। তারা ভাবতে থাকেন- ওয়াশিংটন রাশিয়ার অনেক দাবি মেনে নিতে পারে। এ প্রেক্ষাপটে গত সপ্তাহে ২৮ দফা পরিকল্পনা তুলে ধরেন ট্রাম্প, যা কিয়েভ ও ইউরোপের অনেকের মনে অস্বস্তি তৈরি করে। এ পরিকল্পনায় রয়েছে– কিয়েভকে রাশিয়ার কাছে আরও অঞ্চল ছেড়ে দিতে হবে, তার সামরিক বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা মেনে নিতে হবে এবং ন্যাটোতে যোগদান থেকে বিরত থাকতে হবে। এ শর্তগুলো কিয়েভ দীর্ঘদিন ধরে আত্মসমর্পণের সমতুল্য বলে প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্রের এ পরিকল্পনা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির ওপর চাপ বাড়িয়েছে।
এ বাস্তবতায় গত সোমবার জেলেনস্কি বলেন, জেনেভায় সপ্তাহান্তে আলোচনার পর সর্বশেষ প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনায় ‘সঠিক’ বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে ট্রাম্পের সঙ্গে সংবেদনশীল বিষয়গুলো নিয়ে এখনও আলোচনা বাকি রয়েছে। রাতের ভিডিও ভাষণে তিনি বলেন, ‘জেনেভার পর পয়েন্ট কমেছে। আর ২৮টি নেই। অনেক সঠিক বিষয় এ কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের দল ইতোমধ্যেই নতুন খসড়া তৈরি করেছে। সংবেদনশীল ও সবচেয়ে সূক্ষ্ম বিষয়গুলো নিয়ে আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করব।’ ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সিএনএন জানায়, চলতি সপ্তাহেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্র সফর করতে পারেন।
এ নিয়ে রাশিয়ার পক্ষ থেকেও প্রতিক্রিয়া এসেছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘বর্তমানে একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ বিষয়– মার্কিন প্রকল্প, ট্রাম্প প্রকল্প। আমরা বিশ্বাস করি, এটি আলোচনার জন্য একটি খুব ভালো ভিত্তি হয়ে উঠতে পারে।’
যেহেতু ট্রাম্পের প্রস্তাবকে কেন্দ্র করেই ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ বন্ধের উদ্যোগ এগোচ্ছে, তাই এটাকেই সবাই গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছেন। এ প্রস্তাবটি নিয়ে মিত্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে ইউরোপের। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, ‘এটি একটি উদ্যোগ, যা সঠিক দিকে যায়, শান্তি দিকে যায়। তবে, এ পরিকল্পনার কিছু দিক আছে, যা নিয়ে আলোচনা, আলোচনা এবং উন্নতির সুযোগ আছে।