উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকার অত্যন্ত দরিদ্র এবং আফ্রিকা মহাদেশের অন্যতম ক্ষুদ্র দেশ গিনি-বিসাউয়ে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছে সেনাবাহিনী। প্রেসিডেন্ট উমারো সিসোকো এমবালোকে গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দেশের নিয়ন্ত্রণভার নেয়ার কথা জানিয়েছে দেশটির একদল সামরিক কর্মকর্তা।
রাজধানী বিসাউয়ে গুলির শব্দ শোনা যাওয়ার পর দেশটির সরকারের একাধিক সূত্র এমবালোকে আটকের কথা নিশ্চিত করেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। ক্ষমতা দখলের পর সামরিক কর্মকর্তারা রাষ্ট্রীয় টিভিতে হাজির হয়ে বলেন, তারা নির্বাচনী প্রক্রিয়া স্থগিত করেছে। পশ্চিম আফ্রিকার এ দেশটিতে গত রোববারই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়েছিল। নাগরিকরা ফল জানার জন্য যখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল, তখনই এ অভ্যুত্থানের খবর এলো।
গিনি-বিসাউ আফ্রিকা মহাদেশের সবচেয়ে ক্ষুদ্র রাষ্ট্রগুলোর একটি। এর উত্তরে সেনেগাল, পূর্বে ও দক্ষিণে গিনি এবং পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর। সমুদ্রে অবস্থিত প্রায় ৬০টি দ্বীপও গিনি-বিসাউয়ের সীমানাভুক্ত। দেশটির আয়তন ৩৬,১২৫ বর্গকিমি। দেশটি অতীতে একটি পর্তুগিজ উপনিবেশ ছিল; তখন এর নাম ছিল পর্তুগিজ গিনি। ১৯৭৪ সালে এক রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধের পর দেশটি পর্তুগাল থেকে স্বাধীন হয়। দেশের ১৫ লক্ষ মানুষের দুই-তৃতীয়াংশই দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলোর একটি।
ক্ষমতার দখল নেয়া সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, দেশকে অস্থিতিশীল করতে ‘এক সুপরিচিত মাদক ব্যবসায়ীর সহায়তায়’ কিছু রাজনীতিকদের ছক নস্যাতে তাদেরকে এই ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। ওই রাজনীতিকদের নাম বলেনি তারা। সামরিক কর্মকর্তারা গিনি-বিসাউয়ের সীমান্ত বন্ধ এবং দেশজুড়ে রাতের বেলা কারফিউও জারি করেছেন। বৃহস্পতিবার, (২৭ নভেম্বর ২০২৫) দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল ঘোষণার কথা ছিল। তবে তার আগেই এমবালো এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ফার্নান্দো দিয়াজ উভয়েই নিজেদের জয়ী ঘোষণা করেন। দিয়াজকে সমর্থন দিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী দোমিঙ্গোজ পেরেইরা; নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষিত হওয়ায় পেরেইরা নিজে লড়তে পারেননি।
গতকাল বুধবার বিকেলে এমবালো এক ফোন কলে ফ্রান্স ২৪-কে তার বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের খবর দেন। ‘আমাকে উৎখাত করা হয়েছে’ বলেন তিনি।
সরকারের একাধিক সূত্র পরে বিবিসিকে জানায়- দিয়াজ, পেরেইরা এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বোচে কান্দেকেও আটক করা হয়েছে। সামরিক কর্মকর্তারা সেনাপ্রধান জেনারেল বিয়াগে না নতান ও তার সহকারী জেনারেল মামাদু তুরেকেও হেফাজতে নিয়েছে।
অভ্যুত্থানের খবর শুনে আফ্রিকান ইউনিয়ন ও পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর জোট ইকোওয়াসের নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী মিশনের নেতারা এক যৌথ বিবৃতিতে গিনি-বিসাউয়ে ‘সশস্ত্র বাহিনীর দ্বারা অভ্যুত্থানের ঘোষণায় গভীর উদ্বেগ’ জানিয়েছেন। ‘এটা খুবই দুঃখজনক যে, এমন এক সময়ে এ ঘোষণা এলো যখন মিশন মাত্রই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দুই শীর্ষ প্রার্থীর সঙ্গে বৈঠক শেষ করেছে। যারা আমাদেরকে জনগণের রায় মেনে নেয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছিলেন’ বিবৃতিতে বলেছে তারা।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকার অত্যন্ত দরিদ্র এবং আফ্রিকা মহাদেশের অন্যতম ক্ষুদ্র দেশ গিনি-বিসাউয়ে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছে সেনাবাহিনী। প্রেসিডেন্ট উমারো সিসোকো এমবালোকে গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দেশের নিয়ন্ত্রণভার নেয়ার কথা জানিয়েছে দেশটির একদল সামরিক কর্মকর্তা।
রাজধানী বিসাউয়ে গুলির শব্দ শোনা যাওয়ার পর দেশটির সরকারের একাধিক সূত্র এমবালোকে আটকের কথা নিশ্চিত করেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। ক্ষমতা দখলের পর সামরিক কর্মকর্তারা রাষ্ট্রীয় টিভিতে হাজির হয়ে বলেন, তারা নির্বাচনী প্রক্রিয়া স্থগিত করেছে। পশ্চিম আফ্রিকার এ দেশটিতে গত রোববারই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়েছিল। নাগরিকরা ফল জানার জন্য যখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল, তখনই এ অভ্যুত্থানের খবর এলো।
গিনি-বিসাউ আফ্রিকা মহাদেশের সবচেয়ে ক্ষুদ্র রাষ্ট্রগুলোর একটি। এর উত্তরে সেনেগাল, পূর্বে ও দক্ষিণে গিনি এবং পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর। সমুদ্রে অবস্থিত প্রায় ৬০টি দ্বীপও গিনি-বিসাউয়ের সীমানাভুক্ত। দেশটির আয়তন ৩৬,১২৫ বর্গকিমি। দেশটি অতীতে একটি পর্তুগিজ উপনিবেশ ছিল; তখন এর নাম ছিল পর্তুগিজ গিনি। ১৯৭৪ সালে এক রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধের পর দেশটি পর্তুগাল থেকে স্বাধীন হয়। দেশের ১৫ লক্ষ মানুষের দুই-তৃতীয়াংশই দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলোর একটি।
ক্ষমতার দখল নেয়া সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, দেশকে অস্থিতিশীল করতে ‘এক সুপরিচিত মাদক ব্যবসায়ীর সহায়তায়’ কিছু রাজনীতিকদের ছক নস্যাতে তাদেরকে এই ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। ওই রাজনীতিকদের নাম বলেনি তারা। সামরিক কর্মকর্তারা গিনি-বিসাউয়ের সীমান্ত বন্ধ এবং দেশজুড়ে রাতের বেলা কারফিউও জারি করেছেন। বৃহস্পতিবার, (২৭ নভেম্বর ২০২৫) দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল ঘোষণার কথা ছিল। তবে তার আগেই এমবালো এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ফার্নান্দো দিয়াজ উভয়েই নিজেদের জয়ী ঘোষণা করেন। দিয়াজকে সমর্থন দিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী দোমিঙ্গোজ পেরেইরা; নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষিত হওয়ায় পেরেইরা নিজে লড়তে পারেননি।
গতকাল বুধবার বিকেলে এমবালো এক ফোন কলে ফ্রান্স ২৪-কে তার বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের খবর দেন। ‘আমাকে উৎখাত করা হয়েছে’ বলেন তিনি।
সরকারের একাধিক সূত্র পরে বিবিসিকে জানায়- দিয়াজ, পেরেইরা এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বোচে কান্দেকেও আটক করা হয়েছে। সামরিক কর্মকর্তারা সেনাপ্রধান জেনারেল বিয়াগে না নতান ও তার সহকারী জেনারেল মামাদু তুরেকেও হেফাজতে নিয়েছে।
অভ্যুত্থানের খবর শুনে আফ্রিকান ইউনিয়ন ও পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর জোট ইকোওয়াসের নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী মিশনের নেতারা এক যৌথ বিবৃতিতে গিনি-বিসাউয়ে ‘সশস্ত্র বাহিনীর দ্বারা অভ্যুত্থানের ঘোষণায় গভীর উদ্বেগ’ জানিয়েছেন। ‘এটা খুবই দুঃখজনক যে, এমন এক সময়ে এ ঘোষণা এলো যখন মিশন মাত্রই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দুই শীর্ষ প্রার্থীর সঙ্গে বৈঠক শেষ করেছে। যারা আমাদেরকে জনগণের রায় মেনে নেয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছিলেন’ বিবৃতিতে বলেছে তারা।