যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্যে হোয়াইট হাউজের কাছে দুই ন্যাশনাল গার্ড সদস্যকে গুলি করা হয়েছে। গুলিতে তারা মারাত্মভাবে আহত হয়েছেন। তাদের অবস্থা সঙ্কটজনক। গতকাল বুধবার ওয়াশিংটন ডিসির কেন্দ্রস্থলের এ ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত চোরাগোপ্তা’ হামলা বলে বর্ণনা করেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। হামলার সময় সন্দেহভাজনও গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। তাকে আটক করে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
পরিচয় না প্রকাশ করার শর্তে ট্রাম্প প্রশাসনের দুই কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তদন্তকারীরা সন্দেহভাজনকে রহমানুল্লাহ লাকানওয়াল (২৯) বলে শনাক্ত করেছেন। আফগানিস্তানের এই নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রের অন্য প্রান্তের ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা।
হামলাটিকে একটি ‘সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ’ ধরে নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এক কর্মকর্তা। আরেক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, লাকানওয়াল আফগান শরণার্থীদের পুনর্বাসন কর্মসূচি ‘অপারেশন অ্যালাইস ওয়েলকাম’ এর অধীনে ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আমলের এই কর্মসূচির মাধ্যমে আফগান যুদ্ধের সময় মার্কিন বাহিনীকে সাহায্য করা কয়েক হাজার আফগান নাগরিককে যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসন করা হয়। আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহারের পর এসব আফগান তালেবানের প্রতিশোধমূলক হামলার শঙ্কার মধ্যে পড়েছিল।
ওই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০২১ সালের ৮ সেপ্টেম্বর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতে থাকা লাকানওয়াল ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন আর প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের তিন মাস পর চলতি বছরের এপ্রিলে অনুমোদন পান। তার পূর্ববর্তী অপরাধের কোনো রেকর্ড নেই।
ঘটনার সময় ট্রাম্প তার ফ্লোরিডার রিসোর্টে ছিলেন। গতকাল বুধবার রাতে তিনি পূর্বে ধারণ করা একটি ভিডিও বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। তাতে গুলিবর্ষণের ঘটনাটিকে ‘খারাপ কাজ, ঘৃণার ও সন্ত্রাসী কাজ’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তার প্রশাসন বাইডেনের আমলে যুক্তরাষ্ট্রে আসা সব আফগানকে ‘পুনঃপরীক্ষা’ করবে।
এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে ওয়াশিংটন ডিসির মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী প্রধান জেফ ক্যারল জানান, আহত ওই দুই সেনা ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া ন্যাশনাল গার্ডের সদস্য। তারা ‘হাই-ভিজিবিলিটি পেট্রল’ এর অংশ। স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ১৫ মিনিটের দিকে ১৭তম এবং ১ নম্বর রাস্তা কোণের কাছে, হোয়াইট হাউজ থেকে কয়েক ব্লক দূরে ছিলেন। সন্দেহভাজন এক কোণে এসে তাদের ওপর ‘চোরাগোপ্তা’ হামলা চালায়। দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির পর ন্যাশনার গার্ডের অন্য সদস্যরা গুলিবর্ষণকারীকে আটক করতে সক্ষম হয়।
এফবিআইয়ের পরিচালক ক্যাশ প্যাটেল জানান, আহত দুই সেনাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, তাদের অবস্থা সঙ্কটজনক। ওয়াশিংটন ডিসির মেয়র ম্যুরিয়েল বাউজার এক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘এটি একটি পরিকল্পিত হামলা।’ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সন্দেহভাজন গুলিবর্ষণকারী একাই এ কাজ করেছে বলে ধারণা পাওয়া গেছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ট্রাম্প ওয়াশিংটন ডিসিতে আরও ৫০০ ন্যাশনাল গার্ড সেনা মোতায়েনের আদেশ দিয়েছেন। তারা ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত শহরটিতে আগে থেকে মোতায়েন থাকা প্রায় ২২০০ সেনার সঙ্গে যোগ দেবেন।
গতকাল বুধবার কেন্টাকিতে থাকা মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এক্স এ এক পোস্টে বলেছেন, এই গুলিবর্ষণ প্রমাণ করেছে ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতি ন্যায্য ছিল।
তিনি বলেছেন, ‘আমাদের দেশে থাকার কোনো অধিকার নেই এমন লোকজনকে বিতাড়িত করতে আমাদের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করতে হবে।’
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্যে হোয়াইট হাউজের কাছে দুই ন্যাশনাল গার্ড সদস্যকে গুলি করা হয়েছে। গুলিতে তারা মারাত্মভাবে আহত হয়েছেন। তাদের অবস্থা সঙ্কটজনক। গতকাল বুধবার ওয়াশিংটন ডিসির কেন্দ্রস্থলের এ ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত চোরাগোপ্তা’ হামলা বলে বর্ণনা করেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। হামলার সময় সন্দেহভাজনও গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। তাকে আটক করে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
পরিচয় না প্রকাশ করার শর্তে ট্রাম্প প্রশাসনের দুই কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তদন্তকারীরা সন্দেহভাজনকে রহমানুল্লাহ লাকানওয়াল (২৯) বলে শনাক্ত করেছেন। আফগানিস্তানের এই নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রের অন্য প্রান্তের ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা।
হামলাটিকে একটি ‘সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ’ ধরে নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এক কর্মকর্তা। আরেক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, লাকানওয়াল আফগান শরণার্থীদের পুনর্বাসন কর্মসূচি ‘অপারেশন অ্যালাইস ওয়েলকাম’ এর অধীনে ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আমলের এই কর্মসূচির মাধ্যমে আফগান যুদ্ধের সময় মার্কিন বাহিনীকে সাহায্য করা কয়েক হাজার আফগান নাগরিককে যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসন করা হয়। আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহারের পর এসব আফগান তালেবানের প্রতিশোধমূলক হামলার শঙ্কার মধ্যে পড়েছিল।
ওই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০২১ সালের ৮ সেপ্টেম্বর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতে থাকা লাকানওয়াল ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন আর প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের তিন মাস পর চলতি বছরের এপ্রিলে অনুমোদন পান। তার পূর্ববর্তী অপরাধের কোনো রেকর্ড নেই।
ঘটনার সময় ট্রাম্প তার ফ্লোরিডার রিসোর্টে ছিলেন। গতকাল বুধবার রাতে তিনি পূর্বে ধারণ করা একটি ভিডিও বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। তাতে গুলিবর্ষণের ঘটনাটিকে ‘খারাপ কাজ, ঘৃণার ও সন্ত্রাসী কাজ’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তার প্রশাসন বাইডেনের আমলে যুক্তরাষ্ট্রে আসা সব আফগানকে ‘পুনঃপরীক্ষা’ করবে।
এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে ওয়াশিংটন ডিসির মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী প্রধান জেফ ক্যারল জানান, আহত ওই দুই সেনা ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া ন্যাশনাল গার্ডের সদস্য। তারা ‘হাই-ভিজিবিলিটি পেট্রল’ এর অংশ। স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ১৫ মিনিটের দিকে ১৭তম এবং ১ নম্বর রাস্তা কোণের কাছে, হোয়াইট হাউজ থেকে কয়েক ব্লক দূরে ছিলেন। সন্দেহভাজন এক কোণে এসে তাদের ওপর ‘চোরাগোপ্তা’ হামলা চালায়। দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির পর ন্যাশনার গার্ডের অন্য সদস্যরা গুলিবর্ষণকারীকে আটক করতে সক্ষম হয়।
এফবিআইয়ের পরিচালক ক্যাশ প্যাটেল জানান, আহত দুই সেনাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, তাদের অবস্থা সঙ্কটজনক। ওয়াশিংটন ডিসির মেয়র ম্যুরিয়েল বাউজার এক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘এটি একটি পরিকল্পিত হামলা।’ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সন্দেহভাজন গুলিবর্ষণকারী একাই এ কাজ করেছে বলে ধারণা পাওয়া গেছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ট্রাম্প ওয়াশিংটন ডিসিতে আরও ৫০০ ন্যাশনাল গার্ড সেনা মোতায়েনের আদেশ দিয়েছেন। তারা ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত শহরটিতে আগে থেকে মোতায়েন থাকা প্রায় ২২০০ সেনার সঙ্গে যোগ দেবেন।
গতকাল বুধবার কেন্টাকিতে থাকা মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এক্স এ এক পোস্টে বলেছেন, এই গুলিবর্ষণ প্রমাণ করেছে ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতি ন্যায্য ছিল।
তিনি বলেছেন, ‘আমাদের দেশে থাকার কোনো অধিকার নেই এমন লোকজনকে বিতাড়িত করতে আমাদের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করতে হবে।’