যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবেও পুরো একদিন বন্ধ রইলো না কঙ্গো ও রুয়ান্ডার লড়াই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ওয়াশিংটনে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) এক চুক্তিতে স্বাক্ষর করে দুদেশের নেতা, যার লক্ষ্য চলমান সংঘাতের অবসান এবং খনিজসমৃদ্ধ অঞ্চলে পশ্চিমা বিনিয়োগ বৃদ্ধি। তবে চুক্তিস্বাক্ষরের পরদিন শুক্রবারও সংঘাতের খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স তেশিসেকেদি ও রুয়ান্ডার পল কাগামে জুনে হওয়া মার্কিন সমর্থিত স্থিতিশীলতা চুক্তির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। ট্রাম্প বলেন, আমরা দশকের পর দশক ধরে চলা যুদ্ধের সমাধান করছি। এর মাধ্যমে সংঘাত নিরসন ও মার্কিন ব্যবসায়িক স্বার্থ অগ্রসর হবে। তবে বাস্তবে লড়াই থামেনি। এ নিয়ে অবশ্য দুপক্ষই পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছে। বছরজুড়ে পূর্ব কঙ্গোর দুটি প্রধান শহর দখল করা রুয়ান্ডা সমর্থিত এম২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠী, যারা ওয়াশিংটন চুক্তির অন্তর্ভুক্ত নয়, অভিযোগ করে যে সরকারি বাহিনী ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে।গোষ্ঠীটি দাবি করে, তিন দিন ধরে বুরুন্ডি থেকে নিক্ষেপ করা গোলার আঘাতে নারী ও শিশুসহ বহু মানুষ হতাহত হয়েছে, ধ্বংস হয়েছে বাড়িঘর, স্কুল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র। তারা বুরুন্ডির বিরুদ্ধে কঙ্গোর পক্ষ নিয়ে ড্রোন ও ভারী অস্ত্র দিয়ে হামলা সমন্বয়ের অভিযোগ তোলে। বুরুন্ডির পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে কঙ্গোর সেনাবাহিনী জানায়, তারা বেসামরিকদের টার্গেট করছে না। তবে সংঘর্ষ চলছে এবং রুয়ান্ডার বাহিনী হামলা চালাচ্ছে।
তাদের অভিযোগ, রুয়ান্ডার বুগারামা অঞ্চল থেকে প্রবেশ করা একটি ড্রোন নিস্ক্রিয় করা হয়েছে এবং এম২৩ বারবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে।
এম২৩ জানায়, লড়াইয়ে ২৩ জন নিহত হয়েছে। কঙ্গো সেনাবাহিনী বলছে, ১১ বেসামরিক নিহত হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, লুভুঙ্গি শহরের কাছে বহু পরিবার সহায়সম্বল ও গবাদিপশু নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। এম২৩ মুখপাত্র লরেন্স কানিউকা বলেন, অগণিত বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে, নারী-শিশুরা প্রাণ হারিয়েছে। কঙ্গোর সরকারি বাহিনী ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় অব্যাহত হামলা চালাচ্ছে।
কঙ্গো সেনাবাহিনীর সাউথ কিভু মুখপাত্র রেগান ম্বুই কালোনজি জানান, তারা কেবল কাজিবা ও রুরাম্বোর ওপার পাহাড়ে থাকা যোদ্ধাদের লক্ষ্যবস্তু করেছে। তিনি রুয়ান্ডার বাহিনীর ‘বাছবিচারহীন বোমাবর্ষণ’-এর কথা বলেন।
রুয়ান্ডার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এম২৩ এর একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা দাবি করেন, তারা লুবেরিকা শহর পুনর্দখল করেছে এবং কঙ্গোর একটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। তিনি বলেন, চুক্তি সত্ত্বেও যুদ্ধ চলছেই।
জাতিসংঘ জানায়, ২ ডিসেম্বর থেকে চলমান সংঘর্ষে বহু মানুষ হতাহত ও বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সংঘর্ষ ও রাস্তা অবরোধের কারণে বহু আহত ব্যক্তি চিকিৎসা পাচ্ছেন না।
ইউনিসেফ জানায়, ৩ ও ৪ ডিসেম্বর সাউথ কিভুতে সংঘর্ষে তিনটি স্কুলসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এতে কমপক্ষে সাত শিশু নিহত ও অনেকে আহত হয়েছে। সংস্থাটি বলছে, ২০২৫ সালে সহিংসতা বহু বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছেছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবেও পুরো একদিন বন্ধ রইলো না কঙ্গো ও রুয়ান্ডার লড়াই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ওয়াশিংটনে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) এক চুক্তিতে স্বাক্ষর করে দুদেশের নেতা, যার লক্ষ্য চলমান সংঘাতের অবসান এবং খনিজসমৃদ্ধ অঞ্চলে পশ্চিমা বিনিয়োগ বৃদ্ধি। তবে চুক্তিস্বাক্ষরের পরদিন শুক্রবারও সংঘাতের খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স তেশিসেকেদি ও রুয়ান্ডার পল কাগামে জুনে হওয়া মার্কিন সমর্থিত স্থিতিশীলতা চুক্তির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। ট্রাম্প বলেন, আমরা দশকের পর দশক ধরে চলা যুদ্ধের সমাধান করছি। এর মাধ্যমে সংঘাত নিরসন ও মার্কিন ব্যবসায়িক স্বার্থ অগ্রসর হবে। তবে বাস্তবে লড়াই থামেনি। এ নিয়ে অবশ্য দুপক্ষই পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছে। বছরজুড়ে পূর্ব কঙ্গোর দুটি প্রধান শহর দখল করা রুয়ান্ডা সমর্থিত এম২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠী, যারা ওয়াশিংটন চুক্তির অন্তর্ভুক্ত নয়, অভিযোগ করে যে সরকারি বাহিনী ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে।গোষ্ঠীটি দাবি করে, তিন দিন ধরে বুরুন্ডি থেকে নিক্ষেপ করা গোলার আঘাতে নারী ও শিশুসহ বহু মানুষ হতাহত হয়েছে, ধ্বংস হয়েছে বাড়িঘর, স্কুল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র। তারা বুরুন্ডির বিরুদ্ধে কঙ্গোর পক্ষ নিয়ে ড্রোন ও ভারী অস্ত্র দিয়ে হামলা সমন্বয়ের অভিযোগ তোলে। বুরুন্ডির পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে কঙ্গোর সেনাবাহিনী জানায়, তারা বেসামরিকদের টার্গেট করছে না। তবে সংঘর্ষ চলছে এবং রুয়ান্ডার বাহিনী হামলা চালাচ্ছে।
তাদের অভিযোগ, রুয়ান্ডার বুগারামা অঞ্চল থেকে প্রবেশ করা একটি ড্রোন নিস্ক্রিয় করা হয়েছে এবং এম২৩ বারবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে।
এম২৩ জানায়, লড়াইয়ে ২৩ জন নিহত হয়েছে। কঙ্গো সেনাবাহিনী বলছে, ১১ বেসামরিক নিহত হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, লুভুঙ্গি শহরের কাছে বহু পরিবার সহায়সম্বল ও গবাদিপশু নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। এম২৩ মুখপাত্র লরেন্স কানিউকা বলেন, অগণিত বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে, নারী-শিশুরা প্রাণ হারিয়েছে। কঙ্গোর সরকারি বাহিনী ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় অব্যাহত হামলা চালাচ্ছে।
কঙ্গো সেনাবাহিনীর সাউথ কিভু মুখপাত্র রেগান ম্বুই কালোনজি জানান, তারা কেবল কাজিবা ও রুরাম্বোর ওপার পাহাড়ে থাকা যোদ্ধাদের লক্ষ্যবস্তু করেছে। তিনি রুয়ান্ডার বাহিনীর ‘বাছবিচারহীন বোমাবর্ষণ’-এর কথা বলেন।
রুয়ান্ডার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এম২৩ এর একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা দাবি করেন, তারা লুবেরিকা শহর পুনর্দখল করেছে এবং কঙ্গোর একটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। তিনি বলেন, চুক্তি সত্ত্বেও যুদ্ধ চলছেই।
জাতিসংঘ জানায়, ২ ডিসেম্বর থেকে চলমান সংঘর্ষে বহু মানুষ হতাহত ও বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সংঘর্ষ ও রাস্তা অবরোধের কারণে বহু আহত ব্যক্তি চিকিৎসা পাচ্ছেন না।
ইউনিসেফ জানায়, ৩ ও ৪ ডিসেম্বর সাউথ কিভুতে সংঘর্ষে তিনটি স্কুলসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এতে কমপক্ষে সাত শিশু নিহত ও অনেকে আহত হয়েছে। সংস্থাটি বলছে, ২০২৫ সালে সহিংসতা বহু বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছেছে।