সীমান্তে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সংঘর্ষ অন্য এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। উভয়পক্ষ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে, সেনারা বেসমারিক এলাকায়ও হামলা করছে। সোমবার শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে দুই দেশেই হতাহতের সংখ্যা বেড়েছে। কম্বোডিয়ার সরকার জানিয়েছে, তাদের অন্তত সাতজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। অপরদিকে থাই কর্তৃপক্ষ তিন সেনা সদস্য নিহত হওয়ার তথ্য দিয়েছে। তাদের একজনের প্রাণ গেছে গ্রেনেড লঞ্চারের আঘাতে।
বেসামরিক এলাকায় গোলাবর্ষণ নিয়ে থাইল্যান্ড বলছে, কম্বোডিয়া ‘মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেম’ ও বোমা ফেলার ড্রোন ব্যবহার করছে। অন্যদিকে কম্বোডিয়ার অভিযোগ, থাইল্যান্ড তাদের সীমান্তবর্তী পুরসাত প্রদেশে নির্বিচারে গোলাবর্ষণ করেছে। মঙ্গলবার কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেন বলেন, থাইল্যান্ডের আক্রমণের জবাবে কম্বোডিয়া সোমবার রাতে এবং মঙ্গলবার সকালে পাল্টা আঘাত হেনেছে। এর আগে যুদ্ধবিরতির প্রতি সম্মান জানাতে তারা ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধৈর্য ধরেছিলেন।
এদিকে, থাইল্যান্ড বলেছে, নিজেদের ভূখণ্ড থেকে কম্বোডীয় বাহিনীকে সরিয়ে দিতে তারা আজ মঙ্গলবার পদক্ষেপ নিচ্ছে। থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার বিরোধপূর্ণ সীমান্ত অঞ্চলজুড়ে নতুন করে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ার পর এমন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রত্যেক পক্ষই সংঘর্ষের জন্য একে অপরকে দায়ী করছে। এ সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যকার অস্ত্রবিরতি ভেঙে গেছে। গত জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হওয়া অস্ত্রবিরতি চুক্তি সে সময় দুদেশের মধ্যকার পাঁচ দিনের লড়াইয়ের অবসান ঘটিয়েছিল।
কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, রাতভর সংঘর্ষে তাদের আরও দুই বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। এতে নতুন সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে কম্বোডিয়ায় নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে ৬–এ দাঁড়িয়েছে। দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক থাই সেনাও নিহত হয়েছেন। এদিকে আজ সকালে এক বিবৃতিতে থাইল্যান্ডের নৌবাহিনী বলেছে, থাই উপকূলীয় প্রদেশ ত্রাতের ভেতর কম্বোডীয় বাহিনীর উপস্থিতি দেখা গেছে। তাদের সরিয়ে দিতে সামরিক অভিযান শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে আর কোনো বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়নি।
কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত গতকাল সোমবার রাতে বলেন, ‘থাইল্যান্ড যেন নিজেদের সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধারের অজুহাতে বেসামরিক গ্রামগুলোর ওপর সামরিক শক্তি প্রয়োগ না করে।’ এর আগে কম্বোডিয়া বলেছিল, তাদের নিজেদের বাহিনী টানা হামলার শিকার হলেও পাল্টা হামলা চালায়নি। থাইল্যান্ডের নৌবাহিনী বলেছে, কম্বোডীয় বাহিনী সীমান্ত এলাকায় তাদের উপস্থিতি বাড়াচ্ছে, স্নাইপার ও ভারী অস্ত্র মোতায়েন করছে, বাংকার শক্তিশালী করছে এবং নতুন পরিখা খনন করছে। নৌবাহিনী বলেছে, এ কর্মকাণ্ড গুলো তারা থাইল্যান্ডের সার্বভৌমত্বের ওপর সরাসরি ও গুরুতর হুমকি হিসেবে দেখছে।
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় গত জুলাইয়ে। গত অক্টোবরে দুই দেশের মধ্যে একটি যৌথ ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার সংঘর্ষ শুরুর পর তিনি দুই দেশকে যুদ্ধবিরতি মেনে চলতে আহ্বান জানিয়েছেন।
এক মার্কিন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সহিংসতা বন্ধ রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি আশা করেন কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ড উভয় সরকারই সংঘাতের অবসানে তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে।
আন্তর্জাতিক: পাকিস্তানকে আরও ১২০ কোটি ডলার ঋণ দিল আইএমএফ
আন্তর্জাতিক: মদ বিক্রি শুরু করলো সৌদি আরব
আন্তর্জাতিক: ভারতের বৃহত্তম এয়ারলাইনে যেভাবে ধস নামলো