কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় পাকিস্তানভিত্তিক দুই জঙ্গি সংগঠন ও ছয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে গতকাল সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) চার্জশিট দাখিল করেছে ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী সংস্থা ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। এপ্রিলে সংঘটিত ওই হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছিলেন। খবর বিবিসি’র
পহেলগাঁও পর্যটন শহরে সংঘটিত ওই সন্ত্রাসী হামলা পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশীদের যুদ্ধের কিনারায় নিয়ে গিয়েছিল। ভারত হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করলেও ইসলামাবাদ সেই অভিযোগ অস্বীকার করে।
জাতিসংঘ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি) এবং দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ)-এর বিরুদ্ধে হামলার “পরিকল্পনা, সহায়তা ও বাস্তবায়ন”-এর অভিযোগ আনা হয়েছে। এ বিষয়ে পাকিস্তান সরকার এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য করেনি। টিআরএফ প্রথমে হামলার দায় মেনে নিলেও পরে নিজেদের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে।
সোমবার জম্মুর একটি বিশেষ আদালতে দাখিল করা এক হাজার ৫৯৭ পৃষ্ঠার চার্জশিটে ওই দুই জঙ্গি সংগঠন এবং আরও ছয়জনের নাম রয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন হামলার কয়েক দিনের মধ্যেই নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে নিহত হন। এনআইএ’র চার্জশিটে “পাকিস্তানি জঙ্গি হ্যান্ডলার” হিসেবে অভিযুক্ত সাজিদ জাটের নাম রয়েছে।এছাড়া জুন থেকে এনআইএ’র হেফাজতে থাকা আরও দুই ব্যক্তির নামও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এনআইএ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই দুই ব্যক্তি হামলায় জড়িত তিন সশস্ত্র জঙ্গির পরিচয় প্রকাশ করেছে এবং নিশ্চিত করেছে যে তারা পাকিস্তানি নাগরিক এবং নিষিদ্ধ এলইটি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতের দ-বিধি ও কঠোর সন্ত্রাসবিরোধী আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনার অভিযোগও আনা হয়েছে। এনআইএ’র দাবি, প্রায় আট মাসব্যাপী তদন্ত চালিয়ে হামলার ষড়যন্ত্রের সূত্র পাকিস্তান পর্যন্ত পাওয়া গেছে। তবে তদন্ত এখনও চলমান।
কাশ্মীর দীর্ঘদিন ধরেই ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু। উভয় দেশই পুরো অঞ্চলটির ওপর দাবি করলেও প্রত্যেকে এর অংশবিশেষ নিয়ন্ত্রণ করে। এই অঞ্চলকে ঘিরে দুই দেশ ইতোমধ্যে দুটি যুদ্ধে জড়িয়েছে।
পহেলগাঁও হামলাটি ২০১৯ সালের পর ভারতশাসিত কাশ্মীরে সংঘটিত অন্যতম প্রাণঘাতী জঙ্গি হামলা ছিল। ২২ এপ্রিল ওই হামলায় সন্ত্রাসীরা বেছে বেছে ২৫ জন হিন্দু পুরুষ তীর্থযাত্রীকে গুলি করে হত্যা করে। সাহায্য করতে এগিয়ে আসা এক স্থানীয় মুসলিম ঘোড়সওয়ারও নিহত হন।
হামলার কয়েক দিনের মধ্যেই ভারত ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানিচুক্তি বাতিল করে। এর জবাবে পাকিস্তান ১৯৭২ সালের দ্বিপাক্ষিক বিরোধ নিষ্পত্তি সংক্রান্ত সিমলা চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ায়। এর কিছুদিন পর, চার দিনের এক সংক্ষিপ্ত যুদ্ধে জড়িয়ে যায় ভারত-পাকিস্তান, শেষ পর্যন্ত এক নাজুক যুদ্ধবিরতি দিয়ে যার অবসান ঘটে।
নগর-মহানগর: গাজীপুরে বিএনপির বর্ণাঢ্য বিজয় র্যালি