অক্টোবরে গাজায় যুদ্ধবিরতিতে খাদ্য সরবরাহ বাড়ার পরও পাঁচ লাখ মানুষ জরুরি পরিস্থিতিতে পড়েছে এবং এক লাখের বেশি মানুষ এখনও চরম খাদ্য অনিরাপত্তায় আছে- বলছে ‘দ্য ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন’।
জাতিসংঘ-সমর্থিত খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির মধ্যে খাদ্য সরবরাহ পরিস্থিতি এবং পুষ্টির হারের উন্নতি হচ্ছে। তবে বিপর্যয় এখনও কাটেনি। গত মাসে বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্য দিয়ে গেছে ১ লাখ মানুষ।
অগাস্টে ‘দ্য ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন’ (আইপিসি) দেখতে পেয়েছিল, পাঁচ লাখ মানুষ (গাজার জনসংখ্যার প্রায় এক চতুর্থাংশ) দুর্ভিক্ষ পীড়িত এলাকাগুলোতে বাস করছে।
এরপর অক্টোবরে গাজায় যুদ্ধবিরতি হওয়ার পর থেকে জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবিক ত্রাণ সংস্থাগুলো সেখানে খাদ্য সরবরাহ বাড়াতে সক্ষম হয়।
কিন্তু খাদ্য সরবরাহ বাড়লেও আইপিসি’র বিশ্লেষণে বলা হচ্ছে, একমাস আগেও পাঁচ লাখ গাজাবাসী জরুরি পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে। আর এক লাখের বেশি মানুষ এখনও চরম মাত্রার খাদ্য অনিরাপত্তার মধ্যে আছে। তারা বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
এই সংখ্যা ক্রমেই কমবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হলেও পরিস্থিতি যে এখনও চরমভাবে নাজুক সেকথা জোর দিয়েই বলা হচ্ছে। আবার গাজার কোনও এলাকাই এখন দুর্ভিক্ষ এলাকা হিসাবে চিহ্নিত নয় বলেও জানিয়েছে আইপিসি।
তবে আইপিসি এও বলেছে যে, গুরুতর পর্যায়ের চরম অপুষ্টি বিরাজ করছে গাজা সিটিতে, দেইর আল-বালায় এবং খান ইউনিসে। আগামী মাসগুলোতে পরিস্থিতি একইরকম থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে সবচেয়ে মারাত্মক পরিস্থিতির মুখে থাকা মানুষের সংখ্যা কমে এপ্রিলের মধ্যে ১ হাজার ৯০০ হতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছে আইপিসি’র প্রতিবেদনে।
আইপিসি সতর্ক করে বলেছে, যদি আবার সংঘর্ষ শুরু হয় এবং মানবিক ও বাণিজ্যিক পণ্য প্রবেশ বন্ধ হয়ে যায়, তবে গোটা গাজাই আবার দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে পড়বে।
গাজায় এখনও খাদ্য অনিরাপত্তা বিরাজ করার মূল কারণ হিসাবে আইপিসি মানবিক ত্রাণ প্রবেশে কড়াকড়ি, ৭ লাখ ৩০ গাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়া এবং জীবিকা ধ্বংস হওয়াকে দায়ী করেছে। তারা জানিয়েছে গাজার ৯৬ শতাংশের বেশি কৃষিজমি বিধ্বস্ত হয়েছে।
তবে ইসরায়েল আইপিসি’র প্রতিবেদনের সমালোচনা করে বলেছে, এতে গাজায় ত্রাণ সহায়তার বিষয়টি বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। মিথ্যা বর্ণনা দেওয়া হয়েছে এবং মাঠ পর্যায়ের প্রকৃত মানবিক পরিস্থিতিকে আমলে নেওয়া হয়নি।
ওদিকে, ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক জাতিসংঘ সংস্থা ইউএনডব্লিউআরএ বলেছে, আইপিসি প্রতিবেদনে গাজায় দুর্ভিক্ষ আর নেই বলা হলেও পরিস্থিতি এখনও গুরুতর।
“গাজায় মানুষের সামগ্রিক জীবন যাপন পরিস্থিতি এখনও বিপর্যয়কর। শীতকালের প্রতিকূল আবহাওয়া অবস্থা আরও শোচণীয় করে তুলেছে। সেখানে আরও বেশি পরিমাণে এবং নিরবিচ্ছিন্নভাবে মানবিক ও বাণিজ্যিক পণ্য প্রবেশ করতে হবে,” এক বিবৃতিতে বলেছে ইউএনডব্লিউআরএ