image
ছবি: সংগৃহীত

ইউক্রেনের সেনাবাহিনী সিভারস্ক শহর থেকে প্রত্যাহার

বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক অঞ্চলের সিভারস্ক শহর থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী। অগ্রসর রুশ বাহিনীর সঙ্গে তীব্র লড়াইয়ের পর ইউক্রেন বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে।

এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর জেনারেল স্টাফ জানায়, রুশ বাহিনী জনবল ও সামরিক সরঞ্জামে যথেষ্ট সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল। প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও ছোট ছোট ইউনিটে বিভক্ত হয়ে রুশ সেনারা ইউক্রেনের সেনাদের ওপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করেছে। সেনাদের জীবন বাঁচানো এবং ইউনিটের যুদ্ধের সক্ষমতা বজায় রাখতে ইউক্রেন পিছু হটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

পিছু হটার আগে রুশ বাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করা হয়েছে, সিভারস্ক শহর এখনও ইউক্রেনীয় সেনাদের নাগালে রয়েছে এবং শত্রুপক্ষের অগ্রগতি রুখে দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ।

তবে ইউক্রেনের সামরিক পর্যবেক্ষণ সাইট ডিপ স্টেট’ জানায়, রুশ বাহিনী সিভারস্কের পাশাপাশি ইউক্রেনের সুমি অঞ্চলের সীমান্ত সংলগ্ন গ্রাম হ্রাবোভস্কও দখল করে নিয়েছে।

এর আগে গত ১১ ডিসেম্বর রুশ লেফটেন্যান্ট জেনারেল সের্গেই মেদভেদেভ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে জানিয়েছিলেন যে, তারা সিভারস্ক দখল করেছেন। তবে সে সময় ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ এই দাবি অস্বীকার করেছিল।

যুদ্ধের আগে মাত্র ১০ হাজার জনসংখ্যার এই ছোট শহরটি উত্তর দোনেৎস্কের প্রতিরক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এটি স্লাভিয়ানস্ক এবং ক্রামাতোরস্কের মতো বড় শহরগুলোর জন্য ঢাল হিসেবে কাজ করত।

তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বরের শুরু নাগাদ ইউক্রেনের প্রায় ১৯ শতাংশ এলাকা রাশিয়ার দখলে রয়েছে। এর মধ্যে লুহানস্কের পুরোটা এবং দোনেৎস্কের ৮০ শতাংশের বেশি এলাকা অন্তর্ভুক্ত। দোনেৎস্ক সেই তিনটি অঞ্চলের একটি, যা নিয়ে রাশিয়ার দাবি যুদ্ধবিরতির পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনায় ক্রাইমিয়া, লুহানস্ক এবং দোনেৎস্ককে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র দোনেৎস্ক থেকে সেনা সরিয়ে সেখানে মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল’ গঠনের জন্য চাপ দিচ্ছে, যাকে রাশিয়া অসামরিক অঞ্চল’ হিসেবে বর্ণনা করছে।

যুদ্ধক্ষেত্রে এই বিপর্যয়ের মধ্যেই জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়ার ব্যাপক হামলায়’ ১৩টি অঞ্চলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। এতে এক শিশুসহ অন্তত ৩ জন নিহত হয়েছে। অন্যদিকে, বেলগোরোদ অঞ্চলে ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলায় গত দুই দিনে ৪ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ।

২৫ ডিসেম্বর বড়দিন উপলক্ষে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব রাশিয়া প্রত্যাখ্যান করায় হতাশা প্রকাশ করেছেন পোপ চতুর্দশ লিও। তিনি বলেন, "আমি আবারও সদিচ্ছাসম্পন্ন মানুষের কাছে অন্তত বড়দিনের দিনটিতে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানাচ্ছি।"

ইউক্রেন ও রাশিয়ার অধিকাংশ মানুষ অর্থোডক্স খ্রিস্টান হওয়ায় তারা সাধারণত ৭ জানুয়ারি বড়দিন পালন করে।

এর আগে চলতি বছর ইস্টার উৎসবের সময় পুতিন ৩০ ঘণ্টার একতরফা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিলেন। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু করা রাশিয়ার এই আগ্রাসন এখন তিন বছর পূর্ণ হওয়ার পথে।

‘আন্তর্জাতিক’ : আরও খবর

সম্প্রতি