image

হামাসকে ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি: নিরস্ত্রীকরণ না হয় ’নরক’

মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে ’খুব দ্রুত’ পৌঁছানোর আশা প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি হামাসের দ্রুত নিরস্ত্রীকরণ না হলে সংগঠনটিকে ’চরম মূল্য’ দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

ফ্লোরিডার মার-আ-লাগো রিসোর্টে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সোমবারের এক বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প এ বক্তব্য দেন। তিনি দাবি করেন, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান চললেও দেশটি শান্তি পরিকল্পনার শর্তগুলো ’শতভাগ’ মেনে চলছে।

ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার একটি প্রধান শর্ত হামাসের পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তাদের অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। যদি তারা চুক্তিমতো অস্ত্র না ছাড়ে, তবে তাদের জন্য নরক নেমে আসবে।" গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে কত দ্রুত এগোনো উচিত—জিজ্ঞাসিত হয়ে তিনি বলেন, "যত দ্রুত সম্ভব। তবে হামাসের নিরস্ত্রীকরণ অবশ্যই হতে হবে।"

অক্টোবরে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে গাজায় একটি টেকনোক্র্যাট সরকার গঠন, হামাসকে পুরোপুরি নিরস্ত্র করা এবং ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের কথা রয়েছে। এরপরই গাজার পুনর্গঠন কাজ শুরু হওয়ার কথা।

তবে সমালোচকদের মতে, নেতানিয়াহু চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ বাস্তবায়নে দেরি করতে পারেন এবং সেনা প্রত্যাহারের আগেই হামাসকে নিরস্ত্র করতে চাপ দিতে পারেন। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ফিলিস্তিনিদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আন্তরিক আলোচনায় বসতে চান না বলেও অভিযোগ আছে।

অন্যদিকে, হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়ে অগ্রগতির সঙ্গে সমান্তরালভাবে হতে হবে। হামাসের সশস্ত্র শাখা ’ইজ্জেদিন আল-কাসাম ব্রিগেড’ স্পষ্ট করে জানিয়েছে, ইসরায়েলের দখলদারিত্ব বজায় থাকা অবস্থায় তারা অস্ত্র ছাড়বে না।

ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে যথেষ্ট দ্রুত এগোচ্ছে কি না, সে প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, "ইসরায়েল পরিকল্পনা মেনে চলছে। ইসরায়েল যা করছে তা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন নই। আমি উদ্বিগ্ন অন্যরা কী করছে বা করছে না—তা নিয়ে।"

হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত ৪১৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইসরায়েলের দাবি, তারা কেবল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের জবাবেই গুলি চালাচ্ছে এবং এই সময়ে তিন ইসরায়েলি সেনার মৃত্যুর জন্য হামাসকে দায়ী করেছে।

ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর আলোচনায় ইরান, সিরিয়া এবং লেবাননের হিজবুল্লাহসহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য বিষয়ও উঠে এসেছে। ট্রাম্প সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা’র প্রশংসা করে বলেন, "তিনি একজন শক্তিশালী নেতা এবং সিরিয়াকে ঠিক পথে নিতে কঠোর পরিশ্রম করছেন।" তিনি ইসরায়েলকে সিরিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার পরামর্শ দেন।

তবে পশ্চিম তীর ও সেখানে ইহুদি বসতি সম্প্রসারণ নিয়ে নেতানিয়াহুর সঙ্গে ট্রাম্পের কিছুটা মতভেদ দেখা গেছে। ট্রাম্প স্বীকার করেন, "আমরা পশ্চিম তীর নিয়ে ১০০ ভাগ একমত নই, তবে আমরা একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাব।"

‘আন্তর্জাতিক’ : আরও খবর

সম্প্রতি