alt

রুবলের মান বৃদ্ধি : কতটা লাভ হচ্ছে রাশিয়ার?

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : সোমবার, ২৭ জুন ২০২২

মার্কিন ডলারের বিপরীতে রাশিয়ার মুদ্রা রুবলের মান ক্রমাগত বাড়ছে। বিশ্বে এ বছরের শক্তিশালী মুদ্রায় পরিণত হয়েছে রুবল। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রুবলের দাম ঘুরে দাঁড়ানোর কারণে রাশিয়া এখন সমস্যামুক্ত হলেও তা সাময়িক। খবর সিবিএস নিউজের।

ইউক্রেনে হামলাকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা বিশ্ব একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিতে শুরু করলে রুবলের মূল্য কমতে থাকে। তবে আবারও ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে রুবল। ডলারের বিপরীতে রুবলের মান ৪০ শতাংশ বেড়ে যায়।

হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের অধ্যাপক জেফ্রে ফ্রানকেল বলেন, এ ধরনের পরিস্থিতি সাধারণত দেখা যায় না। সাধারণত কোনো দেশ যখন আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও সামরিক সংঘাতের মধ্যে থাকে, তখন দেশটি থেকে বিনিয়োগকারীরা সরে পড়ে। মুদ্রাপ্রবাহে স্থিরতা দেখা দেয়। এতে মুদ্রার মান কমতে থাকে। তবে দেশের মুদ্রা যেন বাইরে না যায় তা নিশ্চিত করতে রাশিয়া কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিল। এসব পদক্ষেপের কারণে রুবলের চাহিদা তৈরি হয় এবং এর মূল্য বেড়ে যায়।

রুবলের স্থিরতা আসার মানে হলো আপাতত পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞার কারণে তৈরি হওয়া অর্থনৈতিক হুমকি কাটাতে পেরেছে রাশিয়া। তবে এ সুরক্ষা কতক্ষণ স্থায়ী হবে, তা অনিশ্চিত।

রুবলের মূল্য পুনরুদ্ধারের মূল কারণ হলো ভোগ্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি। ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর রাশিয়ার তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্য আরও বেড়ে যায়।

অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের অর্থনীতিবিদ তাতিয়ানা অরলোভা সিবিএস মানি ওয়াচকে সম্প্রতি বলেন, ‘ভোগ্যপণ্যের দাম বর্তমানে আকাশছোঁয়া। অবরোধ ও নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার রপ্তানির পরিমাণ কমে যাওয়ায় যে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে, তার তুলনায় ভোগ্যপণ্যের দাম বেশি।’

জ্বালানি রপ্তানি করে মাসে প্রায় দুই হাজার কোটি ডলার আয় করছে রাশিয়া। মার্চের শেষ নাগাদ অনেক বিদেশি ক্রেতাকে জ্বালানির মূল্য রুবলে পরিশোধ করতে বাধ্য করা হয়। এতে মুদ্রাটির মূল্য বেড়ে যায়।

একই সময়ে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে আমদানির পরিমাণও কমিয়ে দেয় রাশিয়া। বছরের প্রথম চার মাসে রাশিয়ার উদ্বৃত্ত হতে থাকে। রাশিয়ার রপ্তানি ও আমদানির মধ্যকার ব্যবধান বেড়ে রেকর্ড ৯ হাজার ৬০০ কোটি ডলারে দাঁড়ায়।

অরলোভা বলেন, ‘কাকতালীয়ভাবে আমাদের আমদানি কমার সঙ্গে সঙ্গে রপ্তানি বেড়েছে।’ রুবলের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে রেখেছে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে রুবলকে অন্য মুদ্রায় রূপান্তর করাটা কঠিন। এসব কড়াকড়ির মধ্যে আছে—রাশিয়ার শেয়ারবাজারে বিদেশি শেয়ার হোল্ডারের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রভৃতি।

ইতিমধ্যে রাশিয়ার রপ্তানিকারকদের অতিরিক্ত রাজস্বের অর্ধেকটাই রুবলে রূপান্তর করতে হচ্ছে। এতে এ মুদ্রার চাহিদা তৈরি হচ্ছে। (রুবলে রূপান্তরের এ বাধ্যবাধকতা মে মাসের শেষ পর্যন্ত ৮০ শতাংশ ছিল, এরপর তা কমিয়ে ৫০ শতাংশ করা হয়।)

ওরলোভা উল্লেখ করেছেন, বিদেশি কোম্পানিগুলো রাশিয়ায় যে বিনিয়োগ করেছিল, তা বিক্রি করে দেওয়াটা তাদের জন্য খুব কঠিন হবে। দেশের অর্থ বাইরে যেতে না পারার এটি আরেকটি কারণ।

ওরলোভা বলেন, ‘আমরা দেখছি যে পশ্চিমা কোম্পানিগুলো রাশিয়া ছাড়ার ঘোষণা দিচ্ছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এসব কোম্পানিকে স্থানীয় অংশীদারের কাছে তাদের শেয়ার হস্তান্তর করতে হবে। তার মানে এই নয় যে তাদের ন্যায্য দাম পরিশোধ করা হবে। সুতরাং তারা দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ সরিয়ে নিতে পারবে না।’ এসব দিক রুবলের চাহিদা বাড়াচ্ছে। এতে মুদ্রাটির মূল্য বেড়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শক্তিশালী মুদ্রা থাকার মানে এই নয় যে রাশিয়া অর্থনৈতিক সমস্যা থেকে মুক্ত। রুবলের মূল্য আগের অবস্থায় ফিরে আসা এবং রাশিয়ার তেল রপ্তানির মধ্য দিয়ে সাময়িকভাবে দেশটি সমস্যামুক্ত হলেও এর কার্যকারিতা স্বল্পমেয়াদি।

রেমন্ড জেমসের বিশ্লেষক পাভেল মোলচানভ বলেছেন, আন্তর্জাতিক মূল্যমান ব্রেন্ট ক্রুডের চেয়ে ব্যারেল প্রতি ৩৫ ডলার কম মূল্যে বিক্রি হচ্ছে রাশিয়ার তেল। তিনি বলেন, কেউই এখন ব্যারেলপ্রতি ১২০ ডলার মূল্যে রাশিয়ার তেল কিনবে না। প্রকৃতপক্ষে এমন প্রচুরসংখ্যক জ্বালানি ক্রেতা আছে, যারা কোনো মূল্যেই রাশিয়ার তেল কিনবে না।

নিষেধাজ্ঞা ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার ভয়ে তারা এ অবস্থান নিতে পারে। যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার প্রতিদিন প্রায় ২০ কোটি ডলার করে ক্ষতি হচ্ছে। বার্ষিকভাবে বিবেচনা করলে এ ক্ষতির পরিমাণ সাত হাজার কোটি ডলার।

ইউরোপীয় দেশগুলো চলতি বছর রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানির পরিমাণ দুই–তৃতীয়াংশ কমিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। জ্বালানি রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল রাশিয়ার ওপর চাপ তৈরি করাটাই এর উদ্দেশ্য।

হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের ফানকেল বলেন, রাশিয়ার অর্থনীতি প্রচণ্ড চাপে থাকার একটি চিহ্ন হলো দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতির হার যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় দ্বিগুণ। এতে দেশের বাইরে অর্থ সরিয়ে নিতে রুশ নাগরিকদের ওপর চাপ তৈরি হচ্ছে।

ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স (আইআইএফ) আভাস দিয়েছে, রাশিয়ার জন্য আরেকটি উদ্বেগের জায়গা হলো, আমদানি কমে যাওয়ায় দেশটিতে শিল্পপণ্যের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। বিদেশি বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় বছরের পর বছর ধরে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার নিম্নমুখী থাকবে।

ছবি

ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতির ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করে লেবাননে ইসরায়েলের হামলা, নিহত ৪

ছবি

চীনের সর্বকনিষ্ঠ নভোচারীর সঙ্গে মহাকাশে পাঠানো হলো ৪টি কালো ইঁদুর

ছবি

‘সুদানে বিদ্রোহীদের চীনা ড্রোন-কামান দিচ্ছে আরব আমিরাত’

ছবি

‘গ্রে জোনে’ হাজার হাজার রুশ সেনা, কোণঠাসা ইউক্রেনের বাহিনী

ছবি

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি বন্ধ করবে না ইরান : আরাগচি

ছবি

ওনেই পানি-খাবার, বাঁচার আশায় মাইলের পর মাইল হাঁটছে মানুষ

ছবি

চুক্তি ভেঙে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বাধা দিচ্ছে ইসরায়েল, চালাচ্ছে হামলা

ছবি

৩০ প্যালেস্টাইনির মৃতদেহ ফেরত দিয়েছে ইসরায়েল, গাজায় ফের হামলা

ছবি

ট্রাম্পের কাছে ক্ষমা চাইলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী কার্নি

ছবি

ট্রাম্পের কাছে ক্ষমা চাইলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী কার্নি

ছবি

যুক্তরাষ্ট্র-ভারত ১০ বছরের প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসন ঠেকাতে রাশিয়া-চীন-ইরানের দ্বারে মাদুরো

ছবি

‘না যুদ্ধ’, ‘না শান্তির’ মরণফাঁদে পড়ার ঝুঁকিতে গাজা

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউনের মধ্যেও খাদ্য সহায়তা দিতে আদালতের নির্দেশ

ছবি

গৃহযুদ্ধে নাকাল সুদান

ছবি

প্রিন্স উপাধি হারালেও আপাতত রয়েল লজেই থাকছেন অ্যান্ড্রু

এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতিতে রাজি পাকিস্তান আফগানিস্তান

ওমরাহ ভিসা নিয়ে সৌদির নতুন সিদ্ধান্ত

ছবি

যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে ১০ বছর মেয়াদী প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর

ছবি

নতুন পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন

ছবি

পাকিস্তান–আফগানিস্তান যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে সম্মত

ছবি

গাজায় ‘শক্তিশালী’ হামলা চালানোর নির্দেশ নেতানিয়াহুর

ছবি

নেটোর সঙ্গে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া, সমন্বয়ের অভাব ইউরোপে

ছবি

ট্রাম্পের আগমন ঘিরে দ. কোরিয়ায় বিক্ষোভ

ছবি

কানাডায় এবার ভারতীয় বংশোদ্ভূত শিল্পপতিকে খুন করল বিষ্ণোই গ্যাং

ছবি

ট্রাম্পের দক্ষিণ কোরিয়া সফরের আগে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা

ছবি

এক মাসে রেকর্ড ১ কোটি ১৭ লাখ মানুষের ওমরাহ পালন

ছবি

ভারতের অন্ধ্র উপকূলে ঘূর্ণিঝড় ‘মোনথা’র তাণ্ডব, নিহত ১

ছবি

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত অন্তত ৩৩, যুদ্ধবিরতির পর সবচেয়ে বড় সহিংসতা

ছবি

গাজায় সেনা পাঠাচ্ছে পাকিস্তান!

ছবি

অ্যামাজনে চাকরি হারাচ্ছে আরও ৩০ হাজার কর্মী

ছবি

ইউরোপীয় আদালতের জলবায়ু রায়ের মুখোমুখি নরওয়ে

ছবি

পাকিস্তান-আফগানিস্তান শান্তি আলোচনা ব্যর্থ

ছবি

ট্রাম্প-জিনপিংয়ের বৈঠকে ঘিরে বাণিজ্যযুদ্ধ বিরতির আশা

ছবি

চ্যালেঞ্জের’ মুখে ভারত, সীমান্তে ৩৬টি যুদ্ধবিমান ‘শেল্টার’ বানিয়েছে চীন

ছবি

হামাস ফেরত দিল আরও এক জিম্মির দেহ, যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ইসরায়েলি হামলায় নিহত ২ ফিলিস্তিনি

tab

রুবলের মান বৃদ্ধি : কতটা লাভ হচ্ছে রাশিয়ার?

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

সোমবার, ২৭ জুন ২০২২

মার্কিন ডলারের বিপরীতে রাশিয়ার মুদ্রা রুবলের মান ক্রমাগত বাড়ছে। বিশ্বে এ বছরের শক্তিশালী মুদ্রায় পরিণত হয়েছে রুবল। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রুবলের দাম ঘুরে দাঁড়ানোর কারণে রাশিয়া এখন সমস্যামুক্ত হলেও তা সাময়িক। খবর সিবিএস নিউজের।

ইউক্রেনে হামলাকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা বিশ্ব একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিতে শুরু করলে রুবলের মূল্য কমতে থাকে। তবে আবারও ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে রুবল। ডলারের বিপরীতে রুবলের মান ৪০ শতাংশ বেড়ে যায়।

হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের অধ্যাপক জেফ্রে ফ্রানকেল বলেন, এ ধরনের পরিস্থিতি সাধারণত দেখা যায় না। সাধারণত কোনো দেশ যখন আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও সামরিক সংঘাতের মধ্যে থাকে, তখন দেশটি থেকে বিনিয়োগকারীরা সরে পড়ে। মুদ্রাপ্রবাহে স্থিরতা দেখা দেয়। এতে মুদ্রার মান কমতে থাকে। তবে দেশের মুদ্রা যেন বাইরে না যায় তা নিশ্চিত করতে রাশিয়া কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিল। এসব পদক্ষেপের কারণে রুবলের চাহিদা তৈরি হয় এবং এর মূল্য বেড়ে যায়।

রুবলের স্থিরতা আসার মানে হলো আপাতত পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞার কারণে তৈরি হওয়া অর্থনৈতিক হুমকি কাটাতে পেরেছে রাশিয়া। তবে এ সুরক্ষা কতক্ষণ স্থায়ী হবে, তা অনিশ্চিত।

রুবলের মূল্য পুনরুদ্ধারের মূল কারণ হলো ভোগ্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি। ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর রাশিয়ার তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্য আরও বেড়ে যায়।

অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের অর্থনীতিবিদ তাতিয়ানা অরলোভা সিবিএস মানি ওয়াচকে সম্প্রতি বলেন, ‘ভোগ্যপণ্যের দাম বর্তমানে আকাশছোঁয়া। অবরোধ ও নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার রপ্তানির পরিমাণ কমে যাওয়ায় যে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে, তার তুলনায় ভোগ্যপণ্যের দাম বেশি।’

জ্বালানি রপ্তানি করে মাসে প্রায় দুই হাজার কোটি ডলার আয় করছে রাশিয়া। মার্চের শেষ নাগাদ অনেক বিদেশি ক্রেতাকে জ্বালানির মূল্য রুবলে পরিশোধ করতে বাধ্য করা হয়। এতে মুদ্রাটির মূল্য বেড়ে যায়।

একই সময়ে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে আমদানির পরিমাণও কমিয়ে দেয় রাশিয়া। বছরের প্রথম চার মাসে রাশিয়ার উদ্বৃত্ত হতে থাকে। রাশিয়ার রপ্তানি ও আমদানির মধ্যকার ব্যবধান বেড়ে রেকর্ড ৯ হাজার ৬০০ কোটি ডলারে দাঁড়ায়।

অরলোভা বলেন, ‘কাকতালীয়ভাবে আমাদের আমদানি কমার সঙ্গে সঙ্গে রপ্তানি বেড়েছে।’ রুবলের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে রেখেছে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে রুবলকে অন্য মুদ্রায় রূপান্তর করাটা কঠিন। এসব কড়াকড়ির মধ্যে আছে—রাশিয়ার শেয়ারবাজারে বিদেশি শেয়ার হোল্ডারের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রভৃতি।

ইতিমধ্যে রাশিয়ার রপ্তানিকারকদের অতিরিক্ত রাজস্বের অর্ধেকটাই রুবলে রূপান্তর করতে হচ্ছে। এতে এ মুদ্রার চাহিদা তৈরি হচ্ছে। (রুবলে রূপান্তরের এ বাধ্যবাধকতা মে মাসের শেষ পর্যন্ত ৮০ শতাংশ ছিল, এরপর তা কমিয়ে ৫০ শতাংশ করা হয়।)

ওরলোভা উল্লেখ করেছেন, বিদেশি কোম্পানিগুলো রাশিয়ায় যে বিনিয়োগ করেছিল, তা বিক্রি করে দেওয়াটা তাদের জন্য খুব কঠিন হবে। দেশের অর্থ বাইরে যেতে না পারার এটি আরেকটি কারণ।

ওরলোভা বলেন, ‘আমরা দেখছি যে পশ্চিমা কোম্পানিগুলো রাশিয়া ছাড়ার ঘোষণা দিচ্ছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এসব কোম্পানিকে স্থানীয় অংশীদারের কাছে তাদের শেয়ার হস্তান্তর করতে হবে। তার মানে এই নয় যে তাদের ন্যায্য দাম পরিশোধ করা হবে। সুতরাং তারা দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ সরিয়ে নিতে পারবে না।’ এসব দিক রুবলের চাহিদা বাড়াচ্ছে। এতে মুদ্রাটির মূল্য বেড়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শক্তিশালী মুদ্রা থাকার মানে এই নয় যে রাশিয়া অর্থনৈতিক সমস্যা থেকে মুক্ত। রুবলের মূল্য আগের অবস্থায় ফিরে আসা এবং রাশিয়ার তেল রপ্তানির মধ্য দিয়ে সাময়িকভাবে দেশটি সমস্যামুক্ত হলেও এর কার্যকারিতা স্বল্পমেয়াদি।

রেমন্ড জেমসের বিশ্লেষক পাভেল মোলচানভ বলেছেন, আন্তর্জাতিক মূল্যমান ব্রেন্ট ক্রুডের চেয়ে ব্যারেল প্রতি ৩৫ ডলার কম মূল্যে বিক্রি হচ্ছে রাশিয়ার তেল। তিনি বলেন, কেউই এখন ব্যারেলপ্রতি ১২০ ডলার মূল্যে রাশিয়ার তেল কিনবে না। প্রকৃতপক্ষে এমন প্রচুরসংখ্যক জ্বালানি ক্রেতা আছে, যারা কোনো মূল্যেই রাশিয়ার তেল কিনবে না।

নিষেধাজ্ঞা ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার ভয়ে তারা এ অবস্থান নিতে পারে। যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার প্রতিদিন প্রায় ২০ কোটি ডলার করে ক্ষতি হচ্ছে। বার্ষিকভাবে বিবেচনা করলে এ ক্ষতির পরিমাণ সাত হাজার কোটি ডলার।

ইউরোপীয় দেশগুলো চলতি বছর রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানির পরিমাণ দুই–তৃতীয়াংশ কমিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। জ্বালানি রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল রাশিয়ার ওপর চাপ তৈরি করাটাই এর উদ্দেশ্য।

হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের ফানকেল বলেন, রাশিয়ার অর্থনীতি প্রচণ্ড চাপে থাকার একটি চিহ্ন হলো দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতির হার যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় দ্বিগুণ। এতে দেশের বাইরে অর্থ সরিয়ে নিতে রুশ নাগরিকদের ওপর চাপ তৈরি হচ্ছে।

ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স (আইআইএফ) আভাস দিয়েছে, রাশিয়ার জন্য আরেকটি উদ্বেগের জায়গা হলো, আমদানি কমে যাওয়ায় দেশটিতে শিল্পপণ্যের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। বিদেশি বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় বছরের পর বছর ধরে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার নিম্নমুখী থাকবে।

back to top