alt

ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ, যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৩

ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর তীব্র দমনপীড়নের প্রতিক্রিয়ায় তেহরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ পশ্চিম এশীয় দেশটির মোল্লাতন্ত্রের ওপর চাপ বাড়াতে সোমবার তারা এ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ইরানের সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর সম্পর্ক এমনিতেই ভালো না, সেপ্টেম্বরে নীতি পুলিশ হেফাজতে কুর্দি নারী মাশা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট অস্থিরতা দমনে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির সরকারি বাহিনীগুলো যে ভয়াবহ দমনপীড়ন চালিয়েছে, তার প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কের ফাটল আরও চওড়া করেছে।

মাশা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরান যে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দেখছে, তাকে ১৯৭৯ সালে ইসলামে বিপ্লবের পর দেশটির শাসকগোষ্ঠীর জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলা হচ্ছে। তেহরান এ অস্থিরতা উসকে দেওয়ার জন্য পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠীকে দুষছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এবারের নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য ছিল ইরানের প্রভাবশালী বিপ্লবী রক্ষীবাহিনী (আইআরজিসি) ও বিক্ষোভ দমনের দায়িত্বে থাকা শীর্ষ কর্মকর্তারা।

তারা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আইআরজিসি কোঅপারেটিভ ফাউন্ডেশন ও এর পরিচালনা পর্ষদের ৫ সদস্যের ওপর; ইরানের গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা বিষয়ক উপমন্ত্রী নাসের রাশেদি এবং আইআরজিসির ৪ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও তাদের কালো তালিকায় ঢুকেছে।

মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, ইরানের শাসকগোষ্ঠীর বর্বরতা চালানোর বেশিরভাগ অর্থ আসা আইআরজিসির একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক স্তম্ভকে লক্ষ্য করেই তারা এবারের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তালিকায় এর সঙ্গে জাতীয় ও প্রাদেশিক পর্যায়ে দমনপীড়নে সমন্বয় করা ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তারাও স্থান পেয়েছে।

ওয়াশিংটনের অভিযোগ, আইআরজিসি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে দমনপীড়ন চালিয়েই যাচ্ছে এবং এরা মানবাধিকারের বিস্তৃত লংঘনের মাধ্যমে বিক্ষোভ দমানোর ক্ষেত্রে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করছে।

১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের শিয়া মোল্লাতন্ত্রের সুরক্ষায় এই আইআরজিসি গঠিত হয়েছিল; বাহিনীটিতে এখন সেনা, নৌ ও বিমান ইউনিট মিলিয়ে আনুমানিক এক লাখ ২৫ হাজারের মতো সদস্য আছে বলে মনে করা হয়।

আইআরজিসি ধর্মীয় মিলিশিয়া বাহিনী বাসিজেরও নেতৃত্বে আছে, যে বাহিনীটিকে প্রায়ই দমনপীড়নের কাজে ব্যবহার করা হয়।

মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভাষ্যমতে, আইআরজিসির বিনিয়োগ ও ইরানের অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে এর উপস্থিতি ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা কোঅপারেটিভ ফাউন্ডেশন আইআরজিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরই বানানো প্রতিষ্ঠান।

এটি ‘দুর্নীতি ও লুটপাটের আখড়ায় পরিণত হয়েছে’ এবং এর অর্থে আইআরজিসি বিদেশে নানান কর্মকাণ্ড করে বেড়ায় বলেও অভিযোগ মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের।

“যতদিন ইরানের শাসকরা সহিংসতা, নামকাওয়াস্তে বিচার, বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুদণ্ডসহ নানান উপায়ে জনগণকে দমিয়ে রাখতে থাকবে ততদিন তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে আমরা এ ধরনের পদক্ষেপ অব্যাহত রাখবো,” বিবৃতিতে বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সন্ত্রাসবাদ ও আর্থিক গোয়েন্দা তথ্যের আন্ডার সেক্রেটারি ব্রায়ান নেলসন।

বিক্ষোভকারীদের ওপর ‘বর্বর’ নিপীড়ন চালানো এবং অন্যান্য মানবাধিকার লংঘনের দায় দিয়ে বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর কিছু ইউনিটসহ ৩০ এর বেশি ইরানি কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

ব্রাসেলসে এক বৈঠকে ইইউ-র ২৭টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এ পদক্ষেপের ব্যাপারে সম্মত হন।

রাষ্ট্রীয় দমনপীড়ন যেখানে বেশি, সেই সুন্নি অধ্যুষিত এলাকাসহ ইরানজুড়ে আইআরজিসির বিভিন্ন ইউনিট ও কর্মকর্তাকে লক্ষ্য করে এবারের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তারা। কারা কারা এই নিষেধাজ্ঞায় আছে তার একটি তালিকাও ইইউর জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

তাতে দেখা যাচ্ছে, নতুন নিষেধাজ্ঞায় ১৮ ব্যক্তি ও ১৯টি প্রতিষ্ঠান পড়েছে। নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া কর্মকর্তারা ইইউ-তে যেতে পারবেন না, ইইউ-তে থাকা তাদের সম্পদও জব্দ হতে পারে।

সদস্যভুক্ত অনেক দেশ পুরো আইআরজিসিকে ইইউ-র ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর’ তালিকায় অন্তর্ভুক্তের জোর দাবি জানালেও জোটের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান জোসেফ বোরেল বলেছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া কেবল তখনই সম্ভব হবে যখন ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত কোনো দেশ আইআরজিসিকে সন্ত্রাসী বলে দোষী সাব্যস্ত করবে।

যুক্তরাজ্যও সোমবার ইরানি জনগনের ওপর ‘নির্মম নিপীড়ন’ চালানোর অভিযোগে একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।

নিষেধাজ্ঞার ফলে যুক্তরাজ্যে ইরানের সহকারী প্রসিকিউটর জেনারেল আহমাদ ফাজেলিয়ানে কোনো সম্পদ থেকে থাকলে, তা জব্দ হবে। অন্যায্য বিচার ব্যবস্থা, যেখানে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মৃত্যুদণ্ডকে ব্যবহার করা হয়, তার জন্য ফাজেলিয়ানকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর।

সোমবার যুক্তরাজ্য যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তাদের মধ্যে আরও আছে ইরানের স্থলবাহিনীগুলোর কমান্ডার কিউমারস হাইদারি, আইআরজিসির ডেপুটি কমান্ডার হোসেইন নেজাত।

বাসিজ প্রতিরাধ বাহিনী এবং এর ডেপুটি কামন্ডার সালার আবনুশ, বাসিজ মিলিশিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বাসিজ কোঅপারেটিভ ফাউন্ডেশন এবং ইরানের আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার কাসেম রেজাই-র নামও এই তালিকায় ঢুকেছে।

এ নিয়ে মাশা আমিনির মৃত্যুর পর যুক্তরাজ্য ইরানের ওপর নতুন অর্ধশত নিষেধাজ্ঞা দিল, বলেছে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর।

ছবি

পাকিস্তানে আবার বাড়ছে দারিদ্র্যের হার

ছবি

কানাডার ওপর আরও ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প

ছবি

জাতিসংঘ এখন কাজ করছে না, নিরাপত্তা পরিষদ অকার্যকর: লুলা

ছবি

জোটের সদস্যদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান আনোয়ার ইব্রাহিমের

ছবি

আরেকটি শান্তি চুক্তির সাক্ষী হলেন ট্রাম্প

ছবি

পালাতে পালাতে ক্লান্ত গাজার মানুষ

ছবি

শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হলে যুদ্ধ: আফগানিস্তানকে হুঁশিয়ারি পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর

ছবি

শুল্কবিরোধী বিজ্ঞাপনে ক্ষুব্ধ ট্রাম্প, কানাডার পণ্যে বাড়ালেন আরও শুল্ক

ছবি

কম্বোডিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সই করবেন থাই প্রধানমন্ত্রী

ছবি

পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি অভিযানে ফিলিস্তিনি তরুণ নিহত

ছবি

বিরোধীদের ‘মুসলিম’ পরিচয় এনে কটাক্ষের জবাব যেভাবে দিচ্ছেন জোহরান

ছবি

আফগানিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ, পাকিস্তানে টমেটোর কেজি ৬০০ রুপি

ছবি

ক্যারিবিয়ান সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম রণতরী, ‘যুদ্ধাবস্থা তৈরির’ অভিযোগ ভেনেজুয়েলার

ছবি

ট্রাম্প-জিনপিং শীর্ষ সম্মেলনের আশা ম্লান

ছবি

কোনো নতুন আক্রমণ হবে ‘আরেকটি ব্যর্থতা’: ইরান

ছবি

সহিংস বিক্ষোভে প্রাণহানি, টিএলপিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলো পাকিস্তান

ছবি

ঝুঁকি মোকাবিলায় এশিয়ার দেশগুলোকে বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতা কমাতে হবে

ছবি

যুদ্ধবিরতির পরও গাজার মানুষের ক্ষুধার যন্ত্রণা দূর হচ্ছে না

ছবি

একের পর এক অঞ্চল দখল করছে মায়ানমার জান্তা, কেন পিছু হটছে বিদ্রোহীরা

ছবি

ট্রাম্প-পুতিনের বৈঠক কেন ভেস্তে গেল, ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ কী

ছবি

রাশিয়ার দুটি প্রধান তেল কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের

ছবি

আসিয়ান সম্মেলন এড়িয়ে যাচ্ছেন মোদি, যাবেন না মালয়েশিয়া

ছবি

চীনের সহায়তায় হারানো এলাকা পুনর্দখলে নিচ্ছে মায়ানমার সেনাবাহিনী

ছবি

বিশ্বের জন্য বড় হুমকি হয়ে আসছে ম্যালেরিয়া

ছবি

পাকিস্তান-তালেবান উত্তেজনায় অনিশ্চিত জীবন আফগান শরণার্থীদের

ছবি

রাশিয়ার দুই তেল কোম্পানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

ছবি

‘কয়েক প্রজন্ম ধরে’ চলবে গাজায় স্বাস্থ্য সংকট: ডব্লিউএইচও

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রে ১০ মাসে পাঁচ লাখ অবৈধ অভিবাসী গ্রেপ্তার

ছবি

অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু

ছবি

‘শারীরিক সম্পর্ক’ মানেই ধর্ষণ নয়, দিল্লি হাইকোর্টের রায়

ছবি

ক্যারিবীয় সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা ‘বিচারবহির্ভুত হত্যাকাণ্ডের’ সমতুল্য: জাতিসংঘ

ছবি

আফগানিস্তানে ডায়রিয়ায় বছরে মৃত্যু ৯৭ হাজারের অধিক

ছবি

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে ট্রাম্পের শান্তি আলোচনায় ইউরোপের সায়

ছবি

যুদ্ধবিরতি হলেও ভিন্ন আতঙ্কে গাজার বাসিন্দারা

ছবি

নাইজেরিয়ায় জ্বালানি ট্যাঙ্কার বিস্ফোরণে নিহত অন্তত ৩৫

ছবি

ইউক্রেইনে যুদ্ধবিরতি নিয়ে রাশিয়ার কঠোর অবস্থান, অনিশ্চয়তায় ট্রাম্প–পুতিন বৈঠক

tab

ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ, যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৩

ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর তীব্র দমনপীড়নের প্রতিক্রিয়ায় তেহরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ পশ্চিম এশীয় দেশটির মোল্লাতন্ত্রের ওপর চাপ বাড়াতে সোমবার তারা এ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ইরানের সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর সম্পর্ক এমনিতেই ভালো না, সেপ্টেম্বরে নীতি পুলিশ হেফাজতে কুর্দি নারী মাশা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট অস্থিরতা দমনে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির সরকারি বাহিনীগুলো যে ভয়াবহ দমনপীড়ন চালিয়েছে, তার প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কের ফাটল আরও চওড়া করেছে।

মাশা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরান যে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দেখছে, তাকে ১৯৭৯ সালে ইসলামে বিপ্লবের পর দেশটির শাসকগোষ্ঠীর জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলা হচ্ছে। তেহরান এ অস্থিরতা উসকে দেওয়ার জন্য পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠীকে দুষছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এবারের নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য ছিল ইরানের প্রভাবশালী বিপ্লবী রক্ষীবাহিনী (আইআরজিসি) ও বিক্ষোভ দমনের দায়িত্বে থাকা শীর্ষ কর্মকর্তারা।

তারা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আইআরজিসি কোঅপারেটিভ ফাউন্ডেশন ও এর পরিচালনা পর্ষদের ৫ সদস্যের ওপর; ইরানের গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা বিষয়ক উপমন্ত্রী নাসের রাশেদি এবং আইআরজিসির ৪ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও তাদের কালো তালিকায় ঢুকেছে।

মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, ইরানের শাসকগোষ্ঠীর বর্বরতা চালানোর বেশিরভাগ অর্থ আসা আইআরজিসির একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক স্তম্ভকে লক্ষ্য করেই তারা এবারের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তালিকায় এর সঙ্গে জাতীয় ও প্রাদেশিক পর্যায়ে দমনপীড়নে সমন্বয় করা ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তারাও স্থান পেয়েছে।

ওয়াশিংটনের অভিযোগ, আইআরজিসি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে দমনপীড়ন চালিয়েই যাচ্ছে এবং এরা মানবাধিকারের বিস্তৃত লংঘনের মাধ্যমে বিক্ষোভ দমানোর ক্ষেত্রে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করছে।

১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের শিয়া মোল্লাতন্ত্রের সুরক্ষায় এই আইআরজিসি গঠিত হয়েছিল; বাহিনীটিতে এখন সেনা, নৌ ও বিমান ইউনিট মিলিয়ে আনুমানিক এক লাখ ২৫ হাজারের মতো সদস্য আছে বলে মনে করা হয়।

আইআরজিসি ধর্মীয় মিলিশিয়া বাহিনী বাসিজেরও নেতৃত্বে আছে, যে বাহিনীটিকে প্রায়ই দমনপীড়নের কাজে ব্যবহার করা হয়।

মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভাষ্যমতে, আইআরজিসির বিনিয়োগ ও ইরানের অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে এর উপস্থিতি ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা কোঅপারেটিভ ফাউন্ডেশন আইআরজিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরই বানানো প্রতিষ্ঠান।

এটি ‘দুর্নীতি ও লুটপাটের আখড়ায় পরিণত হয়েছে’ এবং এর অর্থে আইআরজিসি বিদেশে নানান কর্মকাণ্ড করে বেড়ায় বলেও অভিযোগ মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের।

“যতদিন ইরানের শাসকরা সহিংসতা, নামকাওয়াস্তে বিচার, বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুদণ্ডসহ নানান উপায়ে জনগণকে দমিয়ে রাখতে থাকবে ততদিন তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে আমরা এ ধরনের পদক্ষেপ অব্যাহত রাখবো,” বিবৃতিতে বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সন্ত্রাসবাদ ও আর্থিক গোয়েন্দা তথ্যের আন্ডার সেক্রেটারি ব্রায়ান নেলসন।

বিক্ষোভকারীদের ওপর ‘বর্বর’ নিপীড়ন চালানো এবং অন্যান্য মানবাধিকার লংঘনের দায় দিয়ে বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর কিছু ইউনিটসহ ৩০ এর বেশি ইরানি কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

ব্রাসেলসে এক বৈঠকে ইইউ-র ২৭টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এ পদক্ষেপের ব্যাপারে সম্মত হন।

রাষ্ট্রীয় দমনপীড়ন যেখানে বেশি, সেই সুন্নি অধ্যুষিত এলাকাসহ ইরানজুড়ে আইআরজিসির বিভিন্ন ইউনিট ও কর্মকর্তাকে লক্ষ্য করে এবারের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তারা। কারা কারা এই নিষেধাজ্ঞায় আছে তার একটি তালিকাও ইইউর জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

তাতে দেখা যাচ্ছে, নতুন নিষেধাজ্ঞায় ১৮ ব্যক্তি ও ১৯টি প্রতিষ্ঠান পড়েছে। নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া কর্মকর্তারা ইইউ-তে যেতে পারবেন না, ইইউ-তে থাকা তাদের সম্পদও জব্দ হতে পারে।

সদস্যভুক্ত অনেক দেশ পুরো আইআরজিসিকে ইইউ-র ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর’ তালিকায় অন্তর্ভুক্তের জোর দাবি জানালেও জোটের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান জোসেফ বোরেল বলেছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া কেবল তখনই সম্ভব হবে যখন ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত কোনো দেশ আইআরজিসিকে সন্ত্রাসী বলে দোষী সাব্যস্ত করবে।

যুক্তরাজ্যও সোমবার ইরানি জনগনের ওপর ‘নির্মম নিপীড়ন’ চালানোর অভিযোগে একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।

নিষেধাজ্ঞার ফলে যুক্তরাজ্যে ইরানের সহকারী প্রসিকিউটর জেনারেল আহমাদ ফাজেলিয়ানে কোনো সম্পদ থেকে থাকলে, তা জব্দ হবে। অন্যায্য বিচার ব্যবস্থা, যেখানে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মৃত্যুদণ্ডকে ব্যবহার করা হয়, তার জন্য ফাজেলিয়ানকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর।

সোমবার যুক্তরাজ্য যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তাদের মধ্যে আরও আছে ইরানের স্থলবাহিনীগুলোর কমান্ডার কিউমারস হাইদারি, আইআরজিসির ডেপুটি কমান্ডার হোসেইন নেজাত।

বাসিজ প্রতিরাধ বাহিনী এবং এর ডেপুটি কামন্ডার সালার আবনুশ, বাসিজ মিলিশিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বাসিজ কোঅপারেটিভ ফাউন্ডেশন এবং ইরানের আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার কাসেম রেজাই-র নামও এই তালিকায় ঢুকেছে।

এ নিয়ে মাশা আমিনির মৃত্যুর পর যুক্তরাজ্য ইরানের ওপর নতুন অর্ধশত নিষেধাজ্ঞা দিল, বলেছে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর।

back to top