alt

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

পাঁচ সংগঠনের বাজেট প্রতিক্রিয়া

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে এখন প্রয়োজন নীতিগত সহায়তা

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : রোববার, ০৯ জুন ২০২৪

সরকার ঘোষিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিখাতের কর অব্যাহতির মেয়াদ তিন বছর বৃদ্ধি করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সমগ্র তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন এই খাত সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠনগুলোর ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ। পাশাপাশি, তারা বলেছেন এই খাতে স্বনির্ভরতা অর্জনের জন্য এখন প্রয়োজন নীতিগত সহায়তা। কাওরান বাজার বেসিস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো), ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) এবংই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশেন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর যৌথ উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ, বাক্কো সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ, আইএসপিএবি সভাপতি মোঃ ইমদাদুল হক এবং ই-ক্যাব সহ-সভাপতি সৈয়দা আম্বারীন রেজা উপস্থিত থেকে নিজ নিজ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে বাজেট প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন।

বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ তার বক্তেব্যে বলেন, বেসিস এর বাজেট প্রস্তাবনাকে মাথায় রেখে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কর অব্যাহতির মেয়াদ তিন বছর বৃদ্ধি করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সমগ্র তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই কর অব্যাহতি শুধুমাত্র তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে অবদান রাখবে তা নয় বরং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এটি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি, ব্যাংকিং ব্যবস্থা, রপ্তানিমুখী উৎপাদনশিল্প সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিউক্লিয়াসের ভূমিকা পালন করবে। যা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত এবং জ্ঞানভিত্তিক ক্যাশলেস অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং উদ্ভাবনের একটি নতুন জোয়ার সৃষ্টি করবে বলে আমরা আশা করি।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দেশের ক্লাউড সার্ভিস এবং ওয়েব হোস্টিং এর ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজারের মাত্র ১০% দেশীয় উদ্যোক্তাদের হাতে রয়েছে। নতুন করে একে করের আওতায় আনা হলে তা দেশীয় উদ্যোক্তাদের নিরুৎসাহিত করবে। ওয়েব হোস্টিং ও ক্লাউড সার্ভিসেসের স্থানীয় বাজার যেভাবে বৃদ্ধি পেতে যাচ্ছে তাতে করে বাংলাদেশি তথ্যপ্রযুক্তি ও পরিষেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে উদ্বুদ্ধ করতে এই দুটি খাতকে কর অব্যাহতির আওতায় অবশ্যই রাখা প্রয়োজন। পাশাপাশি, হাই-টেক পার্কের বিনিয়োগকারীরা তাদের বর্তমান শুল্কমুক্ত সুবিধা হারিয়ে প্রায় সমস্ত ক্যাটাগরির মূলধনি যন্ত্রপাতির ওপর ১% আমদানি শুল্কের মুখোমুখি হতে পারেন। এটি পুনর্বিবেচনা করে হাই-টেক পার্কের বিনিয়োগকারীদের জন্য বর্তমান শুল্কমুক্ত সুবিধা বহাল রাখার আহবান জানাচ্ছি।

বাক্কো সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর অব্যাহতি নিঃসন্দেহে প্রত্যক্ষভাবে অবদান রাখবে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, নতুন উদ্ভাবন এবং নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে শিক্ষা ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা, ব্যাংকিং ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন রপ্তানিমুখী শিল্পে। ফলে একদিকে যেমন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, তেমনি অর্জিত হবে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। যা দেশের অর্থনীতিকে আরো বেগবান করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

তিনি আরও বলেন, অপরদিকে বাজেটে ক্লাউড সার্ভিস, আইটি প্রোসেস আউটসোর্সিং, মেডিক্যাল ট্রান্সক্রিপশন, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন এবং এনটিটিএন সেবার মতো খাতগুলো থেকে কর অব্যাহতির বিষয়টি তুলে নেওয়া হয়েছে। ফলে একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে । অন্যদিকে মোবাইলের সিম কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে প্রদত্ত সেবায় সম্পূরক শুল্ক ৫ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করায় মোবাইল ইন্টারনেট সেবার ব্যয় বাড়বে। মোবাইল ইন্টারনেট এবং প্রান্তিক পর্যায়ে ইন্টারনেটের সম্প্রসারণ ছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশ অর্জন করা সম্ভব নয় ।

আইএসপিএবি সভাপতি মোঃ ইমদাদুল হক বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা খাতের কাঙ্খিত উন্নয়নে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা থাকা সত্বেও আইএসপি প্রতিষ্ঠানের সকল সেবাকে আইটিইএস এর অন্তর্ভুক্তি না করা, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর ১০% (AIT) ও ONU, OLT উপর বর্তমানে ৩৭% আরোপিত ভ্যাট ও শুল্ক এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যবহৃত সকল সামগ্রীর উপর শুল্ক না কমায় ইন্টারনেট সেবার প্রসার ও ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার বিষয়টি বাধাগ্রস্ত হবে বলে আইএসপি অ্যাসোসিয়েশন মনে করে।

ই-ক্যাব সহ-সভাপতি সৈয়দা আম্বারীন রেজা বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে আইটি ও আইটিইস খাতের বিদ্যমান সুবিধাগুলো বহাল রেখে এর সাথে সহায়ক খাতও বিকাশের সুযোগ করে দেয়া উচিৎ। কারণ অনেক সময় সাপোর্ট ইন্ডাস্ট্রির কারণে মুল ইন্ডাস্ট্রির প্রবৃদ্ধি বাঁধাগ্রস্থ হয়। ডিজিটাল ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম সহায়ক খাত ওয়েবসাইট হোস্টিং ও ক্লাউড সার্ভিস। বর্তমানে দেশের এই খাতটি এখনো বৈদেশিক সেবা নির্ভর। এ খাতে দেশীয় সেবার বিকাশের জন্য প্রতিযোগিতামূলক দাম ও সেবা নিশ্চিত করতে আগামী বছরগুলোতে কর অব্যাহতি খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আরেকটি সহায়ক ও অঙ্গীভূত খাত হলো লজিস্টিক খাত। ই-কমার্স ও স্মার্ট লজিস্টিক সেবা বিস্তৃত করতে লজিস্টিক খাতের বর্তমান ভ্যাট প্রত্যাহার করা প্রয়োজন। কারণ এতে করে অনলাইনে বিক্রিত পণ্য সেবা এবং প্রচলিত দোকানের পণ্য সেবায় দামের পার্থক্য তৈরী হয়। একই সাথে অনলাইন পণ্য সেবার উদ্যোক্তারা লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড পান না। তাই ই-ক্যাবের প্রস্তাবনা অনুসারে যেসব প্রতিষ্ঠান নিজস্ব পণ্য সেবা ডেলিভারী করে তাদের ক্ষেত্রে ভ্যাট প্রত্যাহার এবং যেসব প্রতিষ্ঠান তৃতীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য এই সেবা দেয় তাদের জন্য নূন্যতম ৫% ভ্যাট হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল পেমেন্টকে উৎসাহিত করতে এই সেক্টরে পেমেন্ট চার্জ সমমানের ন্যূনতম দুই শতাংশ ক্যাশ ইন্সেটিভ প্রদান করার দাবি জানাচ্ছি। যেহেতু ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ পেমেন্ট চার্জ কেটে রেখে অবশিষ্ট টাকা ই-কমার্স ও আইটি প্ল্যাটফর্ম কে ফেরত দেওয়া হয়, তাই উৎসে কর কর্তন এর কোন সুযোগ নেই । এই পরিস্থিতিতে, পেমেন্ট গেটওয়ে চার্জকে উৎসে কর কর্তন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করার (Non-TDS deduction list) যৌক্তিক আহবান জানাচ্ছি ।

ছবি

বিএটি বাংলাদেশের নতুন চেয়ারম্যান ওয়েল সাবরা

ছবি

ঢাকায় প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এস্ট্রনট ক্যাম্প

ছবি

বাজারে নতুন স্মার্টফোন ওয়ানপ্লাস নর্ড সিই৪ লাইট ফাইভজি

ছবি

সাইবার নিরাপত্তা, মহাকাশ প্রযুক্তি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে ফ্রান্স

ছবি

বাংলালিংক ও বিপিডিবির মধ্যে চুক্তি

ছবি

ফটোগ্রাফি স্টুডিও হারকোর্ট ফিচার নিয়ে আসছে অনার ২০০ সিরিজ

ছবি

ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে সমান সুযোগের বিশ্ব গড়ে তোলা সম্ভব: জুনাইদ আহমেদ পলক

ছবি

ফিলিপ ভারিন আইসিসি’র চেয়ারম্যান নির্বাচিত

ছবি

অপো’র ২০২৩ সাসটেইনেবিলিটি রিপোর্ট প্রকাশ

ছবি

ঢাকায় প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে `এস্ট্রনট ক্যাম্প’

ছবি

সাইবার হামলা নিয়ে সার্টের বিশেষ বুলেটিন

ছবি

ঈদ উপলক্ষ্যে ৮ হাজার আউটলেটে জিপি স্টার গ্রাহকদের জন্য বিশেষ সুবিধা

ছবি

আইডিয়া প্রকল্প এবং এসটুএস ভেঞ্চার এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত

ছবি

আইআইজিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম, মহাসচিব আহমেদ জুনায়েদ

ছবি

ইউআইটিএসে গুগল ক্রাউডসোর্স এবং মেশিন লার্নিং কর্মশালা

ছবি

বুয়েটে একটি অত্যাধুনিক ন্যানো ল্যাব স্থাপনের ঘোষণা দিলেন প্রতিমন্ত্রী পলক

ছবি

দুইশতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় অনুষ্ঠিত হলো বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক স্টেম ফেস্ট

ছবি

লজিটেক বাংলাদেশে নিয়ে এলো এমকে২২০ ওয়্যারলেস বাংলা কি-বোর্ড ও মাউস কম্বো

ছবি

হেলথ কেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসে এসএপি সেবা প্রদান করবে স্মার্ট

ছবি

বাংলাদেশে এআই বিশেষজ্ঞ ও ডেভলপার তৈরিতে‌ মাইক্রোসফটের আগ্রহ প্রকাশ

ছবি

প্রায় ৩০ লক্ষ ম্যালওয়ার ব্লক করেছে ক্যাস্পারস্কি

ছবি

কুষ্টিয়ার ইউটিউব ভিলেজে গ্রামীণফোনের টাওয়ার

ছবি

রিভ চ্যাট এর লাইভ চ্যাট ব্যবহার করছে টালিখাতা

ছবি

ইনফিনিক্স ভিআর ক্রিকেট ক্যাম্পেইনে তাসকিনের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ

ছবি

ভিসা অ্যাকসেলেরেটর প্রোগ্রাম ২০২৪ এ অংশগ্রহণ করছে আইফার্মার

ছবি

কম্পিউটেক্স ২০২৪ এ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন আসুসের নতুন ল্যাপটপ

ছবি

গিগাবাইট মার্কেটিং এক্সিলেন্স এওয়ার্ড পেল স্মার্ট টেকনোলজিস

ছবি

ইএটিএল ইনোভেশন হাবের উদ্যোগে কৃষিতে এআই এবং আইওটি এর ব্যবহার নিয়ে কর্মশালা

ছবি

বিশ্বজয়ী বাংলাদেশী দলের নাসার প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ

ছবি

স্টার্টআপদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে আইডিয়া প্রকল্প

ছবি

ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সৃজনশীল, উদ্ভাবনী এবং সমস্যা সমাধানকারী হিসেবে গড়ে তোলা হবে: প্রতিমন্ত্রী পলক

ছবি

নাসা হেড কোয়ার্টার পরিদর্শনে ‘টিম ডায়মন্ডস’ দল

গ্লোবাল ইকোনোমিক্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৪ অর্জন করলো এনার্জিপ্যাক

ছবি

আইসিটি বিভাগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের আরএডিপি পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত

ছবি

দেশে ডেটা-ড্রিভেন ডিসিশন মেকিং ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা হবে: প্রতিমন্ত্রী পলক

ছবি

রাজশাহীতে জিপি এক্সিলারেটর বুটক্যাম্প

tab

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

পাঁচ সংগঠনের বাজেট প্রতিক্রিয়া

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে এখন প্রয়োজন নীতিগত সহায়তা

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

রোববার, ০৯ জুন ২০২৪

সরকার ঘোষিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিখাতের কর অব্যাহতির মেয়াদ তিন বছর বৃদ্ধি করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সমগ্র তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন এই খাত সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠনগুলোর ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ। পাশাপাশি, তারা বলেছেন এই খাতে স্বনির্ভরতা অর্জনের জন্য এখন প্রয়োজন নীতিগত সহায়তা। কাওরান বাজার বেসিস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো), ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) এবংই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশেন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর যৌথ উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ, বাক্কো সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ, আইএসপিএবি সভাপতি মোঃ ইমদাদুল হক এবং ই-ক্যাব সহ-সভাপতি সৈয়দা আম্বারীন রেজা উপস্থিত থেকে নিজ নিজ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে বাজেট প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন।

বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ তার বক্তেব্যে বলেন, বেসিস এর বাজেট প্রস্তাবনাকে মাথায় রেখে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কর অব্যাহতির মেয়াদ তিন বছর বৃদ্ধি করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সমগ্র তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই কর অব্যাহতি শুধুমাত্র তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে অবদান রাখবে তা নয় বরং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এটি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি, ব্যাংকিং ব্যবস্থা, রপ্তানিমুখী উৎপাদনশিল্প সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিউক্লিয়াসের ভূমিকা পালন করবে। যা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত এবং জ্ঞানভিত্তিক ক্যাশলেস অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং উদ্ভাবনের একটি নতুন জোয়ার সৃষ্টি করবে বলে আমরা আশা করি।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দেশের ক্লাউড সার্ভিস এবং ওয়েব হোস্টিং এর ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজারের মাত্র ১০% দেশীয় উদ্যোক্তাদের হাতে রয়েছে। নতুন করে একে করের আওতায় আনা হলে তা দেশীয় উদ্যোক্তাদের নিরুৎসাহিত করবে। ওয়েব হোস্টিং ও ক্লাউড সার্ভিসেসের স্থানীয় বাজার যেভাবে বৃদ্ধি পেতে যাচ্ছে তাতে করে বাংলাদেশি তথ্যপ্রযুক্তি ও পরিষেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে উদ্বুদ্ধ করতে এই দুটি খাতকে কর অব্যাহতির আওতায় অবশ্যই রাখা প্রয়োজন। পাশাপাশি, হাই-টেক পার্কের বিনিয়োগকারীরা তাদের বর্তমান শুল্কমুক্ত সুবিধা হারিয়ে প্রায় সমস্ত ক্যাটাগরির মূলধনি যন্ত্রপাতির ওপর ১% আমদানি শুল্কের মুখোমুখি হতে পারেন। এটি পুনর্বিবেচনা করে হাই-টেক পার্কের বিনিয়োগকারীদের জন্য বর্তমান শুল্কমুক্ত সুবিধা বহাল রাখার আহবান জানাচ্ছি।

বাক্কো সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর অব্যাহতি নিঃসন্দেহে প্রত্যক্ষভাবে অবদান রাখবে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, নতুন উদ্ভাবন এবং নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে শিক্ষা ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা, ব্যাংকিং ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন রপ্তানিমুখী শিল্পে। ফলে একদিকে যেমন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, তেমনি অর্জিত হবে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। যা দেশের অর্থনীতিকে আরো বেগবান করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

তিনি আরও বলেন, অপরদিকে বাজেটে ক্লাউড সার্ভিস, আইটি প্রোসেস আউটসোর্সিং, মেডিক্যাল ট্রান্সক্রিপশন, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন এবং এনটিটিএন সেবার মতো খাতগুলো থেকে কর অব্যাহতির বিষয়টি তুলে নেওয়া হয়েছে। ফলে একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে । অন্যদিকে মোবাইলের সিম কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে প্রদত্ত সেবায় সম্পূরক শুল্ক ৫ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করায় মোবাইল ইন্টারনেট সেবার ব্যয় বাড়বে। মোবাইল ইন্টারনেট এবং প্রান্তিক পর্যায়ে ইন্টারনেটের সম্প্রসারণ ছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশ অর্জন করা সম্ভব নয় ।

আইএসপিএবি সভাপতি মোঃ ইমদাদুল হক বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা খাতের কাঙ্খিত উন্নয়নে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা থাকা সত্বেও আইএসপি প্রতিষ্ঠানের সকল সেবাকে আইটিইএস এর অন্তর্ভুক্তি না করা, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর ১০% (AIT) ও ONU, OLT উপর বর্তমানে ৩৭% আরোপিত ভ্যাট ও শুল্ক এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যবহৃত সকল সামগ্রীর উপর শুল্ক না কমায় ইন্টারনেট সেবার প্রসার ও ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার বিষয়টি বাধাগ্রস্ত হবে বলে আইএসপি অ্যাসোসিয়েশন মনে করে।

ই-ক্যাব সহ-সভাপতি সৈয়দা আম্বারীন রেজা বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে আইটি ও আইটিইস খাতের বিদ্যমান সুবিধাগুলো বহাল রেখে এর সাথে সহায়ক খাতও বিকাশের সুযোগ করে দেয়া উচিৎ। কারণ অনেক সময় সাপোর্ট ইন্ডাস্ট্রির কারণে মুল ইন্ডাস্ট্রির প্রবৃদ্ধি বাঁধাগ্রস্থ হয়। ডিজিটাল ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম সহায়ক খাত ওয়েবসাইট হোস্টিং ও ক্লাউড সার্ভিস। বর্তমানে দেশের এই খাতটি এখনো বৈদেশিক সেবা নির্ভর। এ খাতে দেশীয় সেবার বিকাশের জন্য প্রতিযোগিতামূলক দাম ও সেবা নিশ্চিত করতে আগামী বছরগুলোতে কর অব্যাহতি খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আরেকটি সহায়ক ও অঙ্গীভূত খাত হলো লজিস্টিক খাত। ই-কমার্স ও স্মার্ট লজিস্টিক সেবা বিস্তৃত করতে লজিস্টিক খাতের বর্তমান ভ্যাট প্রত্যাহার করা প্রয়োজন। কারণ এতে করে অনলাইনে বিক্রিত পণ্য সেবা এবং প্রচলিত দোকানের পণ্য সেবায় দামের পার্থক্য তৈরী হয়। একই সাথে অনলাইন পণ্য সেবার উদ্যোক্তারা লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড পান না। তাই ই-ক্যাবের প্রস্তাবনা অনুসারে যেসব প্রতিষ্ঠান নিজস্ব পণ্য সেবা ডেলিভারী করে তাদের ক্ষেত্রে ভ্যাট প্রত্যাহার এবং যেসব প্রতিষ্ঠান তৃতীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য এই সেবা দেয় তাদের জন্য নূন্যতম ৫% ভ্যাট হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল পেমেন্টকে উৎসাহিত করতে এই সেক্টরে পেমেন্ট চার্জ সমমানের ন্যূনতম দুই শতাংশ ক্যাশ ইন্সেটিভ প্রদান করার দাবি জানাচ্ছি। যেহেতু ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ পেমেন্ট চার্জ কেটে রেখে অবশিষ্ট টাকা ই-কমার্স ও আইটি প্ল্যাটফর্ম কে ফেরত দেওয়া হয়, তাই উৎসে কর কর্তন এর কোন সুযোগ নেই । এই পরিস্থিতিতে, পেমেন্ট গেটওয়ে চার্জকে উৎসে কর কর্তন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করার (Non-TDS deduction list) যৌক্তিক আহবান জানাচ্ছি ।

back to top