alt

ডিজিটাল বাংলাদেশের সাফল্যের গল্প তুলে ধরতে সাংবাদিকদের প্রতি আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর আহবান

সংবাদ অনলাইন ডেস্ক : মঙ্গলবার, ২৭ এপ্রিল ২০২১

‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ অর্জনের সাফল্যের গল্প নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে তা দেশের জনগণ ও বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতে সাংবাদিকদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেন, ‘এটা আমার প্রত্যাশা যে, ডিজিটাল বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার সাফল্যের গল্প, যা বিগত ১২ বছরের শ্রেষ্ট অর্জন। এগুলো নিয়ে আপনারা (সাংবাদিকরা) প্রতিবেদন তৈরি করে দেশের ১৭ কোটি মানুষ এবং বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরবেন।’ প্রতিমন্ত্রী ২৭ এপ্রিল ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে স্থানীয় সাংবাদিকদের ভূমিকা’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল ওয়ার্কশপ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ আহবান জানান।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের বাস্তবায়নাধীন ও ইউএনডিপি-এর সহায়তায় পরিচালিত এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) প্রোগ্রাম এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) যৌথভাবে এই ওয়ার্কশপের আয়োজন করে। বাসস’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালম আজাদ ওয়ার্কশপের সমাপনী সেশনে সভাপতিত্ব করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্থার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুর রহমান। বাসস ইনফোটেনমেন্ট ইনচার্জ মাহফুজা জেসমিনের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন এটুআই প্রকল্পের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. আব্দুল মান্নান, পিএএ। বাসস’র প্রধান বার্তা সম্পাদক এ জেড এম সাজ্জাদ হোসেন সবুজ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

বাসস’র সিটি এডিটর ও পরিচালনা বোর্ডের সদস্য মধূসুধন মন্ডল, এটুআই’র কমিউনিকেশন অফিসার মামুনুর রহমান, এটুআই’র কমিউনিকেশনস অ্যান্ড মিডিয়া আউটরীচ কনসালটেন্ট আদনান ফয়সল এ সময় উপস্থিত ছিলেন। সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এটুআই’র যুগ্ম-প্রকল্প পরিচালক ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব (ই-গর্ভনেন্স অধিশাখা) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর। এটুআই’র ই-সার্ভিস স্পেশালিস্ট দৌলতুজ্জামান খান ও পলিসি স্পেশালিস্ট আফজাল হোসেন সারোয়ার, বাসস’র প্রধান বার্তা সম্পাদক (বাংলা) রুহুল গনি সরকার জ্যোতি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক মীর আকরাম উদ্দিন আহমেদ রিসোর্সপার্সন হিসেবে কর্মশালায় অংশ নেন। বাসস’র রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৭ জন প্রতিনিধি ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয় নিজে ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকল্পের আর্কিটেকচার উল্লেখ করে পলক বলেন, ‘তার নির্দেশনায় এটুআই প্রকল্প এবং আমরা সকলে মিলে এই রূপকল্প বাস্তবায়নে কাজ করেছি। ১২ বছরের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপকল্প-২০২১ কিভাবে ধাপে ধাপে প্রান্ত থেকে কেন্দ্র শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার যায় এজন্য কাজ করেছি। গত ১২ বছর ধরে একটানা কাজ করে সফলভাবে এই কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করা গেছে বলেই বিগত ১৩ মাসে করোনাকালীন সময়ে সাড়ে ৪ কোটি ছাত্র-ছাত্রী স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার পরও তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারছেন।’ তিনি বলেন, ‘আজকের এই কর্মশালার শুধু আপনাদেরকে জানানোর জন্যই নয় আপনাদের মাধ্যমে সারাদেশের ১৭ কোটি মানুষের কাছে এই তথ্য-উপাত্তগুলো পৌঁছে দেয়া সম্ভব। আপনাদের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ ও উপদেশ গ্রহণের মাধ্যমে আমরা নিজেরাও সমৃদ্ধ হতে চাই এবং আগামী দিনের ডিজিটাল বাংলাদেশ কি করণীয় এবং কিভাবে বৈশি^ক যে পরিবর্তন, এই পরিবর্তনে কিভাবে নেতৃত্বের আসনে বসতে পারি সেভাবেই পুরো কর্মশালাটি ডিজাইন করা হয়েছে।’ প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি ব্যতিক্রম ধরনের ডিজিটাল বাংলাদেশের দর্শন বিশ্ববাসীর সামনে দিয়েছেন। সেটি হচ্ছে আগে প্রান্ত পরে কেন্দ্র গ্রাম থেকে আমাদের ডিজিটাইজেশনের কাজ শুরু হয়েছিল ২০০৯ সালে এবং আজকে ২০২১ সালে এসে আমরা সারা বিশ্বের কাছে ডিজিটাল বাংলাদেশ যে শুধুমাত্র একটি উন্নয়ন মন্ত্র নয়, একটি উন্নয়ন দর্শন, সেটি আজকে বিশ্বের কাছে শেখ হাসিনা প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার ছোট্ট একটি উদাহরণ হচ্ছে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার। ২০১০ সালে যখন ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন ভোলা জেলার প্রত্যন্ত একটি দ্বীপে চর কুকরি মুকরি থেকে। তিনি সেদিন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এটি উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, ১০ বছরের ব্যবধানে ২০২১ সালে এসে প্রায় ৭০০১টি ডিজিটাল সেন্টারে প্রায় ১৪ হাজারের বেশি উদ্যোক্তা কাজ করছে। যেখানে ৫০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা কাজ করছে। এর ফলে একদিকে নারী-পুরুষের বৈষম্য, অপরদিকে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য ও গ্রাম-শহরের বৈষম্য দূর হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের ফলে একদিকে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বৈষম্য তৈরী হয়নি গ্রাম-শহরের বৈষম্য দূর হয়েছে অপরদিকে নারী এবং পুরুষকে আমাদের ডিজিটাল ইকোনমি বিনির্মাণে সমানভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি হয়েছে।

জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন, সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ হিসেবে মানবসম্পদ উন্নয়নের উপর জোর দিয়েছিলেন। সেই মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য একেবারে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত আইসিটি বিষয়কে বাধ্যতামূলক করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যদি এই দশ বছরে আইসিটি বিষয়টা আবশ্যিক না হতো বাংলাদেশে সাড়ে ৬ লাখ ফ্রিল্যান্সার প্রায় ১৫ লক্ষাধিক তরুণ-তরুণী কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতো না। তিনি বলেন, ২০১০ সালের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প দেশবাসীর সামনে তুলে ধরেছিলেন তখন বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৫৬ লাখ। এখন ১১ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী সৃষ্টি হয়েছে। ইন্টারনেটের দাম ৭৮ হাজার টাকা পার এমবিপিএস থেকে কমিয়ে ৩০০ টাকার নিচে নামিয়ে আনা হয়েছে। একেবারে গ্রাম পর্যায়ে ৩৮শ ইউনিয়নে ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবল স্থাপন এবং ফোরজি মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রতিটি গ্রামে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্মে সরকারের প্রায় ১৪শ’ সেবাকে অ্যাভেইলেবল করা হয়েছে, ৫১ হাজার ওয়েবসাইট ন্যাশনাল পোর্টালে নিয়ে আসা হয়েছে, ২৭০টির বেশি ইন্টারনেট নির্ভর ডিজিটাল সেন্টারভিত্তিক সেবা প্রদান করা হচ্ছে। ফাইনান্সিয়াল ওয়ালেটে আজকে ১০ কোটি মানুষ লেনদেন করছে। অফিস ব্যবস্থাপনাকে পেপারলেস, পরিবেশবান্ধব করা হয়েছে। গত ১৩ মাসে প্যানডেমিকের এই সময়ে ২০ লক্ষের অধিক ফাইল সম্পাদন হয়েছে এবং সব মিলিয়ে ২০১৬ সাল থেকে প্রায় ১ কোটির উপরে ই-ফাইল সম্পাদন হয়েছে। এখন প্রায় ৮ হাজার অফিসে ১ লাখ অফিসার ই-ফাইল ব্যবহার করছে। এর ফলে বিগত বছরের ৬৬ দিন এবং বর্তমান লকডাউন অবস্থায় আমাদের অফিস-আদালত বন্ধ থাকলেও সরকারি কোনো কার্যক্রম থেমে নেই।

সমাপনী বক্তব্যে বাসস ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণা দিয়েছিলেন, তখন এটাকে নিয়ে অনেকে হাস্যরস করেছেন। কিন্তু এখন এটি এখন আর স্বপ্ন নয়, ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন বাস্তব। তিনি ধর্মের নামে যারা এদেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে, সেসব স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে সাংবাদিকদের প্রতি আহবান জানান।

ছবি

পাঠাও ১০ বছরে : একসাথে বেড়ে ওঠার প্রতিটি মুহূর্তে

ছবি

এআই অ্যাপ ও এজেন্টদের জন্য প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারণ করলো স্ল্যাক

ছবি

ডিআরইউ বর্ষসেরা রিপোর্টের জন্য পুরস্কার দেবে নগদ

ছবি

ইনফিনিক্স জিটি ৩০ গেমিং স্মার্টফোন যখন লাইফস্টাইল অনুষঙ্গ

ছবি

চট্টগ্রামের সিকো অ্যারেনাতে ১০% পর্যন্ত ছাড় পাবেন রবি এলিট গ্রাহকরা

ছবি

গ্রাহকদের জন্য ফ্রি অ্যাসেসমেন্টের সুযোগ নিয়ে এলো সার্ভিসিং ২৪

ছবি

তরুণদের ডিজিটাল দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করবে রবি ও সেভ দ্য চিলড্রেন

ছবি

ট্যাপম্যাডের সাথে গ্রামীণফোনের চুক্তি

ছবি

ক্যামন ৪০ সিরিজের ৫জি ফোন আনল টেকনো

ছবি

এআই-ভিত্তিক গ্রাহক সেবা চালু করেছে বাংলালিংক

ছবি

মেডিকেল শিক্ষার্থীদের জন্য মাস্টারকার্ড ও ইসলামী ব্যাংকের বিশেষ কো-ব্র্যান্ডেড ডেবিট কার্ড

ছবি

অনলাইনে ওয়াকিটকি ও রিপিটার কেনার সুযোগ দিচ্ছে ডিজিটাল ট্রেড করপোরেশন

ছবি

একসাথে কাজ করবে গ্রামীণফোন, মিমপেক্স ও গুডম্যান

ছবি

অনারের আলফা ফ্ল্যাগশিপ স্টোর উদ্বোধন

ছবি

পাঠাও কুরিয়ারের সেরা মার্চেন্টরা পুরস্কৃত

ছবি

প্রযুক্তি খাত নিয়ে টেলিভিশন শো ‘সার্চ ইঞ্জিন’ এর সিজন-২ শুরু হয়েছে

ছবি

নাটোর ও পাবনায় বিকাশ-বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বইপড়া কর্মসূচি সম্প্রসারণ

ছবি

শুরু হলো এআইইউবি প্রেজেন্টস ‘নাসা ইন্টারন্যাশনাল স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২৫’ বাংলাদেশ

ছবি

প্রো ভার্সনসহ বাংলাদেশে আসছে রিয়েলমি ১৫ সিরিজ

ছবি

দামুড়হুদার জিহাদ রোবট বানিয়ে মালয়েশিয়ায় স্বর্ণপদক জয়

ছবি

ব্যাচেলর পয়েন্টের স্পেশাল এপিসোডের অংশীদারিত্বে উন্মোচিত হয়েছে অপো এ৬ প্রো

ছবি

এআইভিত্তিক শিংহে ইন্টেলিজেন্ট নেটওয়ার্ক উন্মোচন করলো হুয়াওয়ে

ছবি

‘সিভিক ডিফেন্ডারস অব বাংলাদেশ’ ওয়েব পোর্টালের উদ্বোধন

ছবি

রিয়ালভিএনসি সেবা শুরু করেছে স্মার্ট টেকনোলজিস

ছবি

বাংলাদেশ সফরে গ্রাহকদের সাথে কথা বললেন টেলিনর সিইও

ছবি

ফুডি ও হোলসেল ক্লাবের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর

ছবি

অনার বাজারে নিয়ে আসছে আই সুবিধাসহ এক্স৭ডি স্মার্টফোন

ছবি

সুপারব্র্যান্ডস অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ জিতলো পাঠাও

ছবি

কার্ডবিহীন কিস্তিতে ডিভাইস-বান্ডেল অফার আনলো গ্রামীণফোন ও পামপে

ছবি

অক্টোবরে শুরু হচ্ছে মাসব্যাপী ১০ম সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা কর্মসূচি

ছবি

বাংলাদেশে উন্মোচন হলো টেকনো পোভা ফাইভজি সিরিজ

ছবি

ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক এমটিও পার্টনারদের নিয়ে বিকাশের কর্মশালা

ছবি

তিন পারফরম্যান্সে বুয়েটের স্বীকৃতি পেলো অপো অপো এ৬ প্রো

ছবি

কার্ড ছাড়াই ইএমআই সুবিধা নিয়ে এলো টপপে

ছবি

বাংলাদেশ বনাম হংকং ম্যাচের টাইটেল স্পন্সর টেকনো

ছবি

ওয়ার্ল্ড রোবট অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ ২০২৫ এর জাতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত

tab

ডিজিটাল বাংলাদেশের সাফল্যের গল্প তুলে ধরতে সাংবাদিকদের প্রতি আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর আহবান

সংবাদ অনলাইন ডেস্ক

মঙ্গলবার, ২৭ এপ্রিল ২০২১

‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ অর্জনের সাফল্যের গল্প নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে তা দেশের জনগণ ও বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতে সাংবাদিকদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেন, ‘এটা আমার প্রত্যাশা যে, ডিজিটাল বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার সাফল্যের গল্প, যা বিগত ১২ বছরের শ্রেষ্ট অর্জন। এগুলো নিয়ে আপনারা (সাংবাদিকরা) প্রতিবেদন তৈরি করে দেশের ১৭ কোটি মানুষ এবং বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরবেন।’ প্রতিমন্ত্রী ২৭ এপ্রিল ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে স্থানীয় সাংবাদিকদের ভূমিকা’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল ওয়ার্কশপ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ আহবান জানান।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের বাস্তবায়নাধীন ও ইউএনডিপি-এর সহায়তায় পরিচালিত এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) প্রোগ্রাম এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) যৌথভাবে এই ওয়ার্কশপের আয়োজন করে। বাসস’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালম আজাদ ওয়ার্কশপের সমাপনী সেশনে সভাপতিত্ব করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্থার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুর রহমান। বাসস ইনফোটেনমেন্ট ইনচার্জ মাহফুজা জেসমিনের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন এটুআই প্রকল্পের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. আব্দুল মান্নান, পিএএ। বাসস’র প্রধান বার্তা সম্পাদক এ জেড এম সাজ্জাদ হোসেন সবুজ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

বাসস’র সিটি এডিটর ও পরিচালনা বোর্ডের সদস্য মধূসুধন মন্ডল, এটুআই’র কমিউনিকেশন অফিসার মামুনুর রহমান, এটুআই’র কমিউনিকেশনস অ্যান্ড মিডিয়া আউটরীচ কনসালটেন্ট আদনান ফয়সল এ সময় উপস্থিত ছিলেন। সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এটুআই’র যুগ্ম-প্রকল্প পরিচালক ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব (ই-গর্ভনেন্স অধিশাখা) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর। এটুআই’র ই-সার্ভিস স্পেশালিস্ট দৌলতুজ্জামান খান ও পলিসি স্পেশালিস্ট আফজাল হোসেন সারোয়ার, বাসস’র প্রধান বার্তা সম্পাদক (বাংলা) রুহুল গনি সরকার জ্যোতি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক মীর আকরাম উদ্দিন আহমেদ রিসোর্সপার্সন হিসেবে কর্মশালায় অংশ নেন। বাসস’র রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৭ জন প্রতিনিধি ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয় নিজে ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকল্পের আর্কিটেকচার উল্লেখ করে পলক বলেন, ‘তার নির্দেশনায় এটুআই প্রকল্প এবং আমরা সকলে মিলে এই রূপকল্প বাস্তবায়নে কাজ করেছি। ১২ বছরের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপকল্প-২০২১ কিভাবে ধাপে ধাপে প্রান্ত থেকে কেন্দ্র শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার যায় এজন্য কাজ করেছি। গত ১২ বছর ধরে একটানা কাজ করে সফলভাবে এই কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করা গেছে বলেই বিগত ১৩ মাসে করোনাকালীন সময়ে সাড়ে ৪ কোটি ছাত্র-ছাত্রী স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার পরও তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারছেন।’ তিনি বলেন, ‘আজকের এই কর্মশালার শুধু আপনাদেরকে জানানোর জন্যই নয় আপনাদের মাধ্যমে সারাদেশের ১৭ কোটি মানুষের কাছে এই তথ্য-উপাত্তগুলো পৌঁছে দেয়া সম্ভব। আপনাদের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ ও উপদেশ গ্রহণের মাধ্যমে আমরা নিজেরাও সমৃদ্ধ হতে চাই এবং আগামী দিনের ডিজিটাল বাংলাদেশ কি করণীয় এবং কিভাবে বৈশি^ক যে পরিবর্তন, এই পরিবর্তনে কিভাবে নেতৃত্বের আসনে বসতে পারি সেভাবেই পুরো কর্মশালাটি ডিজাইন করা হয়েছে।’ প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি ব্যতিক্রম ধরনের ডিজিটাল বাংলাদেশের দর্শন বিশ্ববাসীর সামনে দিয়েছেন। সেটি হচ্ছে আগে প্রান্ত পরে কেন্দ্র গ্রাম থেকে আমাদের ডিজিটাইজেশনের কাজ শুরু হয়েছিল ২০০৯ সালে এবং আজকে ২০২১ সালে এসে আমরা সারা বিশ্বের কাছে ডিজিটাল বাংলাদেশ যে শুধুমাত্র একটি উন্নয়ন মন্ত্র নয়, একটি উন্নয়ন দর্শন, সেটি আজকে বিশ্বের কাছে শেখ হাসিনা প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার ছোট্ট একটি উদাহরণ হচ্ছে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার। ২০১০ সালে যখন ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন ভোলা জেলার প্রত্যন্ত একটি দ্বীপে চর কুকরি মুকরি থেকে। তিনি সেদিন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এটি উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, ১০ বছরের ব্যবধানে ২০২১ সালে এসে প্রায় ৭০০১টি ডিজিটাল সেন্টারে প্রায় ১৪ হাজারের বেশি উদ্যোক্তা কাজ করছে। যেখানে ৫০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা কাজ করছে। এর ফলে একদিকে নারী-পুরুষের বৈষম্য, অপরদিকে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য ও গ্রাম-শহরের বৈষম্য দূর হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের ফলে একদিকে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বৈষম্য তৈরী হয়নি গ্রাম-শহরের বৈষম্য দূর হয়েছে অপরদিকে নারী এবং পুরুষকে আমাদের ডিজিটাল ইকোনমি বিনির্মাণে সমানভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি হয়েছে।

জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন, সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ হিসেবে মানবসম্পদ উন্নয়নের উপর জোর দিয়েছিলেন। সেই মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য একেবারে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত আইসিটি বিষয়কে বাধ্যতামূলক করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যদি এই দশ বছরে আইসিটি বিষয়টা আবশ্যিক না হতো বাংলাদেশে সাড়ে ৬ লাখ ফ্রিল্যান্সার প্রায় ১৫ লক্ষাধিক তরুণ-তরুণী কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতো না। তিনি বলেন, ২০১০ সালের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প দেশবাসীর সামনে তুলে ধরেছিলেন তখন বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৫৬ লাখ। এখন ১১ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী সৃষ্টি হয়েছে। ইন্টারনেটের দাম ৭৮ হাজার টাকা পার এমবিপিএস থেকে কমিয়ে ৩০০ টাকার নিচে নামিয়ে আনা হয়েছে। একেবারে গ্রাম পর্যায়ে ৩৮শ ইউনিয়নে ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবল স্থাপন এবং ফোরজি মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রতিটি গ্রামে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্মে সরকারের প্রায় ১৪শ’ সেবাকে অ্যাভেইলেবল করা হয়েছে, ৫১ হাজার ওয়েবসাইট ন্যাশনাল পোর্টালে নিয়ে আসা হয়েছে, ২৭০টির বেশি ইন্টারনেট নির্ভর ডিজিটাল সেন্টারভিত্তিক সেবা প্রদান করা হচ্ছে। ফাইনান্সিয়াল ওয়ালেটে আজকে ১০ কোটি মানুষ লেনদেন করছে। অফিস ব্যবস্থাপনাকে পেপারলেস, পরিবেশবান্ধব করা হয়েছে। গত ১৩ মাসে প্যানডেমিকের এই সময়ে ২০ লক্ষের অধিক ফাইল সম্পাদন হয়েছে এবং সব মিলিয়ে ২০১৬ সাল থেকে প্রায় ১ কোটির উপরে ই-ফাইল সম্পাদন হয়েছে। এখন প্রায় ৮ হাজার অফিসে ১ লাখ অফিসার ই-ফাইল ব্যবহার করছে। এর ফলে বিগত বছরের ৬৬ দিন এবং বর্তমান লকডাউন অবস্থায় আমাদের অফিস-আদালত বন্ধ থাকলেও সরকারি কোনো কার্যক্রম থেমে নেই।

সমাপনী বক্তব্যে বাসস ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণা দিয়েছিলেন, তখন এটাকে নিয়ে অনেকে হাস্যরস করেছেন। কিন্তু এখন এটি এখন আর স্বপ্ন নয়, ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন বাস্তব। তিনি ধর্মের নামে যারা এদেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে, সেসব স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে সাংবাদিকদের প্রতি আহবান জানান।

back to top