জাকসু নির্বাচনের মাত্র চার দিন আগে ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী অমর্ত্য রায় জনের প্রার্থিতা বাতিলের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে প্যানেলটি। অন্যান্য প্যানেলের কয়েকজন প্রার্থীও এর প্রতিবাদ জানিয়েছে।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নির্বাচন কমিশন এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অমর্ত্য রায়ের প্রার্থিতা বাতিলের ঘোষণা দেয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ — জাকসুর গঠনতন্ত্রের ৪ ও ৮ ধারার বরাত দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অমর্ত্য রায়কে ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য ঘোষণা করেছে।
‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেল একে ‘সম্পূর্ণ অবৈধ, পক্ষপাতদুষ্ট এবং ষড়যন্ত্রমূলক’ বলছে। এর প্রতিবাদে ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেল জরুরি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে প্যানেলের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের আট দিন পর এই সিদ্ধান্ত নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বিতর্কিত করার একটি ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টা’।
*প্রধান অভিযোগসমূহ:*
১. *ভোটার ও প্রার্থী তালিকায় অনিয়ম:* ১৭ আগস্ট প্রকাশিত প্রাথমিক ভোটার তালিকা এবং ২৯ আগস্ট হালনাগাদকৃত চূড়ান্ত প্রার্থী ও ভোটার তালিকায় অমর্ত্য রায় জনের নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু ৬ সেপ্টেম্বরের বিজ্ঞপ্তির পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ভোটার তালিকা হঠাৎ পরিবর্তন করে তার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, যা কোনো পূর্বঘোষণা বা সংশোধনী বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই করা হয়। একে ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেল ‘স্পষ্ট জালিয়াতি’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
২. *বহিষ্কারাদেশ ও প্রশাসনের পক্ষপাত:* ২০২৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রাফিতি মোছার অভিযোগে অমর্ত্য রায়কে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। হাইকোর্টের নির্দেশে তিনি ২০২৪ সালের মার্চে শুধুমাত্র ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নিতে পারলেও ক্লাস, ল্যাব পরীক্ষা এবং হলে থাকার অনুমতি থেকে বঞ্চিত ছিলেন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে তিনি আবার নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পান। তবে, বহিষ্কারের সময় ল্যাব ক্লাসে অংশ নিতে না পারায় তিনি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪০৮ নম্বর কোর্সে অকৃতকার্য হন। প্যানেলের দাবি, এই ঘটনাকে কাজে লাগিয়ে প্রশাসন ‘অযৌক্তিকভাবে’ তার প্রার্থিতা বাতিল করেছে।
৩. *স্বার্থের দ্বন্দ্ব ও ষড়যন্ত্র:* অমর্ত্য রায়ের বহিষ্কারের ঘটনায় ছাত্রলীগের একটি অংশের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে তৎকালীন প্রশাসনের সিদ্ধান্তে তিন শিক্ষক—সোহেল আহমেদ, লুৎফুল এলাহী, মোতাহার হোসেন—এবং শিক্ষার্থী আবদুর রশিদ জিতু সংহতি প্রকাশ করেছিলেন। বর্তমানে এই শিক্ষকদের একজন উপ-উপাচার্য, একজন নির্বাচন কমিশনের সদস্য এবং আবদুর রশিদ জিতু অমর্ত্য রায়ের প্রতিদ্বন্দ্বী ভিপি প্রার্থী। এই পরিস্থিতি স্পষ্টভাবে স্বার্থের দ্বন্দ্ব এবং পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্তের ইঙ্গিত বহন করে।
৪. *নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় প্রতারণা:* চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর নির্বাচনের মাত্র চার দিন আগে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়াকে প্যানেল ইচ্ছাকৃত গাফিলতি ও প্রতারণা হিসেবে অভিহিত করেছে। এটি নির্বাচনী প্রস্তুতিকে ব্যাহত করেছে এবং ভোটারদের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। প্যানেলের দাবি, প্রশাসন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে।
‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অন্যান্য প্রার্থী এবং দেশের জনগণের প্রতি এই অন্যায় ও পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদের আহ্বান জানিয়েছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এই জালিয়াতির দ্রুত প্রতিকারের দাবি জানিয়েছে।
‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেল জানিয়েছে, জাকসু নির্বাচন বানচালের যে কোনো ষড়যন্ত্র তারা মেনে নেবে না এবং প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
*অন্যদের প্রতিবাদ*
‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’ প্যানেলের জিএস প্রার্থী আবু তৌহিদ মোঃ সিয়াম জাকসু নির্বাচন কমিশনের ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী অমর্ত্য রায় জনের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘এই অকর্মণ্য নির্বাচন কমিশন আরেকবার তার অথর্বতার পরিচয় দিয়েছে। অমর্ত্য রায়ের প্রার্থিতা নিয়ে যদি কোনো সমস্যা থাকে, তবে তা চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের সময় সমাধান করা উচিত ছিল। নির্বাচনের মাত্র ৪-৫ দিন বাকি থাকতে কমিশন কার নির্দেশে এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত নিল? এর ব্যাখ্যা না দিলে এটাই প্রমাণিত হবে যে কমিশন তার গ্রহণযোগ্যতা সম্পূর্ণ হারিয়েছে।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘নির্বাচন কমিশন প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে যৌক্তিক মাধ্যমে মিথস্ক্রিয়ার সকল পথ বন্ধ করে রেখেছে। তারা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের বিচরণ, শিক্ষকদের প্রচারণায় অংশগ্রহণ, দোকানে পোস্টার লাগানো, অঢেল অর্থ ব্যয়, বাইক শোডাউনের মতো বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয় না। কিন্তু সভা, বিতর্ক বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের ক্ষেত্রে শুধু নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কমিশন আসলে কী চায়, তা বোঝা দায়। এই অনিরপেক্ষ, অকর্মণ্য ও গোষ্ঠীগত স্বার্থে কাজ করা কমিশন জাকসুকে স্থবির করে দেবে। আমরা সকলকে আহ্বান জানাই, প্রশাসনের গোপন ইচ্ছা বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে আজই কথা বলুন। জাকসুকে স্বচ্ছ ও প্রকাশ্য কার্যক্রমের ধারক ও বাহক হতে দিন।’
‘স্বতন্ত্র অঙ্গীকার পরিষদ’ প্যানেলের শিক্ষা ও গবেষণা পদের প্রার্থী সৈয়দা মেহের আফরোজ শাঁওলি বলেন, ‘দুটি বিষয় স্পষ্ট: প্রথমত, এই প্রশাসন জাকসু নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। দ্বিতীয়ত, এই প্রশাসন ও আওয়ামী প্রশাসনের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। যদি ছাত্রত্ব ইস্যু হয়, তবে অমর্ত্য রায় মনোনয়নপত্র তুলতে পারতেন না, কিংবা চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় তার নাম থাকত না। জাকসু গঠনতন্ত্রের ৪ ও ৮ ধারা আকাশ থেকে পড়েনি। নির্বাচনের মাত্র ৫ দিন আগে এই ধারা তুলে তাকে বাতিল করার মাধ্যমে প্রশাসন পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে জাকসু নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে।’
তিনি আরও বলেন, “গত বছর আওয়ামী প্রশাসন শেখ মুজিবের গ্রাফিতি মোছার অভিযোগে অমর্ত্য রায়ের বিরুদ্ধে অন্যায় মামলা দিয়েছিল, যার ফলে তার ১০ মাস ক্লাস মিস হয়। তিনি রিপিট কোর্সে পড়লেও ল্যাব ক্লাসে অংশ নিতে না পারায় পরীক্ষায় তার খাতা কাটতে হয়েছে। এর ফলে তিনি অনার্স পাস করতে পারেননি। প্রশাসন এসব বিষয় জানে। তবুও তারা আবারও তাকে অন্যায়ভাবে বাতিল করেছে। এই প্রশাসন ও আওয়ামী প্রশাসনের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? অমর্ত্য রায় আমাদের সহযোদ্ধা। তার সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে। তার প্রার্থিতা অন্যায়ভাবে বাতিল করা হয়েছে।”
অমর্ত্য রায় জন ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেলের হয়ে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন। এই প্যানেলটি ছাত্র ইউনিয়নের একাংশ, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেট অরগানাইজেশন, ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, গণকৃষ্টি, চলচ্চিত্র আন্দোলন, জহির রায়হান চলচ্চিত্র সংসদ, জাহাঙ্গীরনগর ফটোগ্রাফি সোসাইটি, জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার অডিটোরিয়াম এবং জলসিঁড়ির সমন্বয়ে গঠিত। প্যানেলের অন্যান্য প্রার্থীদের মধ্যে সাধারণ সম্পাদক পদে শরণ এহসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে নুর এ তামীম স্রোত এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে ফারিয়া জামান নিকি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
রোববার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
জাকসু নির্বাচনের মাত্র চার দিন আগে ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী অমর্ত্য রায় জনের প্রার্থিতা বাতিলের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে প্যানেলটি। অন্যান্য প্যানেলের কয়েকজন প্রার্থীও এর প্রতিবাদ জানিয়েছে।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নির্বাচন কমিশন এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অমর্ত্য রায়ের প্রার্থিতা বাতিলের ঘোষণা দেয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ — জাকসুর গঠনতন্ত্রের ৪ ও ৮ ধারার বরাত দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অমর্ত্য রায়কে ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য ঘোষণা করেছে।
‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেল একে ‘সম্পূর্ণ অবৈধ, পক্ষপাতদুষ্ট এবং ষড়যন্ত্রমূলক’ বলছে। এর প্রতিবাদে ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেল জরুরি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে প্যানেলের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের আট দিন পর এই সিদ্ধান্ত নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বিতর্কিত করার একটি ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টা’।
*প্রধান অভিযোগসমূহ:*
১. *ভোটার ও প্রার্থী তালিকায় অনিয়ম:* ১৭ আগস্ট প্রকাশিত প্রাথমিক ভোটার তালিকা এবং ২৯ আগস্ট হালনাগাদকৃত চূড়ান্ত প্রার্থী ও ভোটার তালিকায় অমর্ত্য রায় জনের নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু ৬ সেপ্টেম্বরের বিজ্ঞপ্তির পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ভোটার তালিকা হঠাৎ পরিবর্তন করে তার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, যা কোনো পূর্বঘোষণা বা সংশোধনী বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই করা হয়। একে ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেল ‘স্পষ্ট জালিয়াতি’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
২. *বহিষ্কারাদেশ ও প্রশাসনের পক্ষপাত:* ২০২৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রাফিতি মোছার অভিযোগে অমর্ত্য রায়কে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। হাইকোর্টের নির্দেশে তিনি ২০২৪ সালের মার্চে শুধুমাত্র ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নিতে পারলেও ক্লাস, ল্যাব পরীক্ষা এবং হলে থাকার অনুমতি থেকে বঞ্চিত ছিলেন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে তিনি আবার নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পান। তবে, বহিষ্কারের সময় ল্যাব ক্লাসে অংশ নিতে না পারায় তিনি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪০৮ নম্বর কোর্সে অকৃতকার্য হন। প্যানেলের দাবি, এই ঘটনাকে কাজে লাগিয়ে প্রশাসন ‘অযৌক্তিকভাবে’ তার প্রার্থিতা বাতিল করেছে।
৩. *স্বার্থের দ্বন্দ্ব ও ষড়যন্ত্র:* অমর্ত্য রায়ের বহিষ্কারের ঘটনায় ছাত্রলীগের একটি অংশের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে তৎকালীন প্রশাসনের সিদ্ধান্তে তিন শিক্ষক—সোহেল আহমেদ, লুৎফুল এলাহী, মোতাহার হোসেন—এবং শিক্ষার্থী আবদুর রশিদ জিতু সংহতি প্রকাশ করেছিলেন। বর্তমানে এই শিক্ষকদের একজন উপ-উপাচার্য, একজন নির্বাচন কমিশনের সদস্য এবং আবদুর রশিদ জিতু অমর্ত্য রায়ের প্রতিদ্বন্দ্বী ভিপি প্রার্থী। এই পরিস্থিতি স্পষ্টভাবে স্বার্থের দ্বন্দ্ব এবং পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্তের ইঙ্গিত বহন করে।
৪. *নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় প্রতারণা:* চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর নির্বাচনের মাত্র চার দিন আগে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়াকে প্যানেল ইচ্ছাকৃত গাফিলতি ও প্রতারণা হিসেবে অভিহিত করেছে। এটি নির্বাচনী প্রস্তুতিকে ব্যাহত করেছে এবং ভোটারদের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। প্যানেলের দাবি, প্রশাসন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে।
‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অন্যান্য প্রার্থী এবং দেশের জনগণের প্রতি এই অন্যায় ও পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদের আহ্বান জানিয়েছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এই জালিয়াতির দ্রুত প্রতিকারের দাবি জানিয়েছে।
‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেল জানিয়েছে, জাকসু নির্বাচন বানচালের যে কোনো ষড়যন্ত্র তারা মেনে নেবে না এবং প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
*অন্যদের প্রতিবাদ*
‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’ প্যানেলের জিএস প্রার্থী আবু তৌহিদ মোঃ সিয়াম জাকসু নির্বাচন কমিশনের ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী অমর্ত্য রায় জনের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘এই অকর্মণ্য নির্বাচন কমিশন আরেকবার তার অথর্বতার পরিচয় দিয়েছে। অমর্ত্য রায়ের প্রার্থিতা নিয়ে যদি কোনো সমস্যা থাকে, তবে তা চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের সময় সমাধান করা উচিত ছিল। নির্বাচনের মাত্র ৪-৫ দিন বাকি থাকতে কমিশন কার নির্দেশে এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত নিল? এর ব্যাখ্যা না দিলে এটাই প্রমাণিত হবে যে কমিশন তার গ্রহণযোগ্যতা সম্পূর্ণ হারিয়েছে।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘নির্বাচন কমিশন প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে যৌক্তিক মাধ্যমে মিথস্ক্রিয়ার সকল পথ বন্ধ করে রেখেছে। তারা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের বিচরণ, শিক্ষকদের প্রচারণায় অংশগ্রহণ, দোকানে পোস্টার লাগানো, অঢেল অর্থ ব্যয়, বাইক শোডাউনের মতো বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয় না। কিন্তু সভা, বিতর্ক বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের ক্ষেত্রে শুধু নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কমিশন আসলে কী চায়, তা বোঝা দায়। এই অনিরপেক্ষ, অকর্মণ্য ও গোষ্ঠীগত স্বার্থে কাজ করা কমিশন জাকসুকে স্থবির করে দেবে। আমরা সকলকে আহ্বান জানাই, প্রশাসনের গোপন ইচ্ছা বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে আজই কথা বলুন। জাকসুকে স্বচ্ছ ও প্রকাশ্য কার্যক্রমের ধারক ও বাহক হতে দিন।’
‘স্বতন্ত্র অঙ্গীকার পরিষদ’ প্যানেলের শিক্ষা ও গবেষণা পদের প্রার্থী সৈয়দা মেহের আফরোজ শাঁওলি বলেন, ‘দুটি বিষয় স্পষ্ট: প্রথমত, এই প্রশাসন জাকসু নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। দ্বিতীয়ত, এই প্রশাসন ও আওয়ামী প্রশাসনের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। যদি ছাত্রত্ব ইস্যু হয়, তবে অমর্ত্য রায় মনোনয়নপত্র তুলতে পারতেন না, কিংবা চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় তার নাম থাকত না। জাকসু গঠনতন্ত্রের ৪ ও ৮ ধারা আকাশ থেকে পড়েনি। নির্বাচনের মাত্র ৫ দিন আগে এই ধারা তুলে তাকে বাতিল করার মাধ্যমে প্রশাসন পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে জাকসু নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে।’
তিনি আরও বলেন, “গত বছর আওয়ামী প্রশাসন শেখ মুজিবের গ্রাফিতি মোছার অভিযোগে অমর্ত্য রায়ের বিরুদ্ধে অন্যায় মামলা দিয়েছিল, যার ফলে তার ১০ মাস ক্লাস মিস হয়। তিনি রিপিট কোর্সে পড়লেও ল্যাব ক্লাসে অংশ নিতে না পারায় পরীক্ষায় তার খাতা কাটতে হয়েছে। এর ফলে তিনি অনার্স পাস করতে পারেননি। প্রশাসন এসব বিষয় জানে। তবুও তারা আবারও তাকে অন্যায়ভাবে বাতিল করেছে। এই প্রশাসন ও আওয়ামী প্রশাসনের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? অমর্ত্য রায় আমাদের সহযোদ্ধা। তার সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে। তার প্রার্থিতা অন্যায়ভাবে বাতিল করা হয়েছে।”
অমর্ত্য রায় জন ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেলের হয়ে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন। এই প্যানেলটি ছাত্র ইউনিয়নের একাংশ, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেট অরগানাইজেশন, ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, গণকৃষ্টি, চলচ্চিত্র আন্দোলন, জহির রায়হান চলচ্চিত্র সংসদ, জাহাঙ্গীরনগর ফটোগ্রাফি সোসাইটি, জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার অডিটোরিয়াম এবং জলসিঁড়ির সমন্বয়ে গঠিত। প্যানেলের অন্যান্য প্রার্থীদের মধ্যে সাধারণ সম্পাদক পদে শরণ এহসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে নুর এ তামীম স্রোত এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে ফারিয়া জামান নিকি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।