জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এবিএম মূসা-সেতারা মূসা স্মারক বক্তৃতা ও আজীবন সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তি ব্যক্তিরা বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কারণে সাংবাদিকেরা প্রবল চাপের মুখে আছেন।
শনিবার বিশিষ্ট সাংবাদিক এবিএম মূসার ৯২তম জন্মদিনে দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এবিএম মূসা-সেতারা মূসা ফাউন্ডেশন। এবার ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়েছে দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে।
বক্তারা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ নানা পদক্ষেপে অবাধে তথ্যপ্রাপ্তি ও নিশ্চিন্তে তথ্য ব্যবহারের অবকাশ সংকুচিত হচ্ছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কারণে সাংবাদিকেরা প্রবল চাপের মুখে আছেন। মুক্ত সমাজ না থাকলে মুক্ত সাংবাদিকতা হয় না।
অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা দেন কবি, প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক আবুল মোমেন। তিনি বলেন, এবিএম মূসা, ফয়েজ আহমদ ও আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী—এই তিনজন সাংবাদিকের সঙ্গেই বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তাঁদের কেউ কেউ তাঁর (বঙ্গবন্ধু) বা তাঁর মাধ্যমে সরকারের আনুকূল্যও পেয়েছেন। কিন্তু যখনই প্রয়োজন বোধ করেছেন, তখনই তাঁরা সরকারের সমালোচনায় পিছপা হননি। ফয়েজ আহমদ ঘাতক-দালালবিরোধী আন্দোলন ও গণ-আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থেকে ইতিহাসের এক বাঁকবদলে ভূমিকা রেখেছেন। একইভাবে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের শেষ পর্যায়ে তিন জোটের বৈঠক আয়োজন ও রূপরেখা প্রণয়নেও তিনি মধ্যস্থতার কাজ করেছেন। গাফফার চৌধুরী দীর্ঘকাল প্রবাসজীবনে থাকলেও বাংলাদেশের রাজনীতির প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক ভাষ্য রচনা করে গেছেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং আরও নানা পদক্ষেপে অবাধে তথ্যপ্রাপ্তি ও নিশ্চিন্তে তথ্য ব্যবহারের অবকাশ সংকুচিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন আবুল মোমেন। লিখিত বক্তৃতায় তিনি আরও বলেন, বর্তমানে রাজনীতি জনবিচ্ছিন্ন হয়েছে এবং ক্ষমতা জন-অংশগ্রহণের ব্যাপারে উদাসীন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আজকের পত্রিকার সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক গোলাম রহমান। এবিএম মূসা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘মূসা ভাই নিজেই একটা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত হতেন। তিনি যতটা না বলতে পারতেন, তার চেয়ে লিখতেন অনেক বেশি।’
অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণা করেন এবিএম মূসার একসময়ের সহকর্মী ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘মূসা ভাই নিষ্ঠাবান মানুষ ছিলেন।’
পরে মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর হাতে আজীবন সম্মাননা তুলে দেন অধ্যাপক গোলাম রহমান ও মানবজমিনের সম্পাদক (মতিউর রহমান চৌধুরীর স্ত্রী) মাহবুবা চৌধুরী।
বক্তব্য দিতে গিয়ে মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘পুরস্কার পেয়ে আমি গর্বিত ও আনন্দিত। একই সঙ্গে কিছুটা চিন্তিতও বটে। চিন্তিত এই কারণে যে আমার দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল। মূসা ভাই একজন অসাধারণ মানুষ ছিলেন। তিনি সত্যের সঙ্গে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আপস করেননি।’
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
শনিবার, ২০ মে ২০২৩
জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এবিএম মূসা-সেতারা মূসা স্মারক বক্তৃতা ও আজীবন সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তি ব্যক্তিরা বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কারণে সাংবাদিকেরা প্রবল চাপের মুখে আছেন।
শনিবার বিশিষ্ট সাংবাদিক এবিএম মূসার ৯২তম জন্মদিনে দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এবিএম মূসা-সেতারা মূসা ফাউন্ডেশন। এবার ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়েছে দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে।
বক্তারা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ নানা পদক্ষেপে অবাধে তথ্যপ্রাপ্তি ও নিশ্চিন্তে তথ্য ব্যবহারের অবকাশ সংকুচিত হচ্ছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কারণে সাংবাদিকেরা প্রবল চাপের মুখে আছেন। মুক্ত সমাজ না থাকলে মুক্ত সাংবাদিকতা হয় না।
অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা দেন কবি, প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক আবুল মোমেন। তিনি বলেন, এবিএম মূসা, ফয়েজ আহমদ ও আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী—এই তিনজন সাংবাদিকের সঙ্গেই বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তাঁদের কেউ কেউ তাঁর (বঙ্গবন্ধু) বা তাঁর মাধ্যমে সরকারের আনুকূল্যও পেয়েছেন। কিন্তু যখনই প্রয়োজন বোধ করেছেন, তখনই তাঁরা সরকারের সমালোচনায় পিছপা হননি। ফয়েজ আহমদ ঘাতক-দালালবিরোধী আন্দোলন ও গণ-আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থেকে ইতিহাসের এক বাঁকবদলে ভূমিকা রেখেছেন। একইভাবে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের শেষ পর্যায়ে তিন জোটের বৈঠক আয়োজন ও রূপরেখা প্রণয়নেও তিনি মধ্যস্থতার কাজ করেছেন। গাফফার চৌধুরী দীর্ঘকাল প্রবাসজীবনে থাকলেও বাংলাদেশের রাজনীতির প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক ভাষ্য রচনা করে গেছেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং আরও নানা পদক্ষেপে অবাধে তথ্যপ্রাপ্তি ও নিশ্চিন্তে তথ্য ব্যবহারের অবকাশ সংকুচিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন আবুল মোমেন। লিখিত বক্তৃতায় তিনি আরও বলেন, বর্তমানে রাজনীতি জনবিচ্ছিন্ন হয়েছে এবং ক্ষমতা জন-অংশগ্রহণের ব্যাপারে উদাসীন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আজকের পত্রিকার সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক গোলাম রহমান। এবিএম মূসা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘মূসা ভাই নিজেই একটা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত হতেন। তিনি যতটা না বলতে পারতেন, তার চেয়ে লিখতেন অনেক বেশি।’
অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণা করেন এবিএম মূসার একসময়ের সহকর্মী ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘মূসা ভাই নিষ্ঠাবান মানুষ ছিলেন।’
পরে মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর হাতে আজীবন সম্মাননা তুলে দেন অধ্যাপক গোলাম রহমান ও মানবজমিনের সম্পাদক (মতিউর রহমান চৌধুরীর স্ত্রী) মাহবুবা চৌধুরী।
বক্তব্য দিতে গিয়ে মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘পুরস্কার পেয়ে আমি গর্বিত ও আনন্দিত। একই সঙ্গে কিছুটা চিন্তিতও বটে। চিন্তিত এই কারণে যে আমার দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল। মূসা ভাই একজন অসাধারণ মানুষ ছিলেন। তিনি সত্যের সঙ্গে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আপস করেননি।’