alt

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই কি এত তাপ?

শাফিউল আল ইমরান : রোববার, ২১ এপ্রিল ২০২৪

বর্তমানে দেশের বেশিরভাগ জেলায় বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। অসহনীয় গরমে নাকাল মানুষ। তাপমাত্রা কিছুটা কমবেশি হলেও বাতাসে জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি অনুভূত হচ্ছে বেশি।

জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ও সেন্টার ফর পিপল অ্যান্ড এনভায়রন (সিপিই) পরিচালক মুহম্মদ আবদুর রহমান সংবাদকে বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশে গড়ে প্রতিবছর ০.০৫ ডিগ্রির মতো তাপমাত্রা বাড়ছে। সেই হিসেবে প্রতি বছরই পূর্বের বছরের তুলনায় গ্রীষ্মের তাপমাত্রা একটু একটু করে বাড়ছে। তদুপরি গত কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে উপমহাদেশীয় মৌসুমী বায়ুতে বড় রকমের পরিবর্তন এসেছে। এপ্রিল মে মাসে সাধারণ এখানে সবল মৌসুমী বায়ু থাকে কিন্তু এখন অনেকটা দুর্বল মৌসুুুমি বায়ু বিরাজ করছে উপমহাদেশীয় বায়ুম-লে। এই দুর্বল মৌসুমী বায়ুর কারণে এখানে মাঝেমাঝে স্থানবিশেষে বৃষ্টি হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। অন্যদিকে মাঝেমাঝে বৃষ্টিপাতের কারণে বায়ুম-লে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি। এই আর্দ্রতার কারণে প্রকৃত তাপমাত্রার চেয়ে অনুভূত তাপমাত্রার পরিমাণ বেশি যা প্রতি বছরই তাপদাহে রূপান্তরিত হচ্ছে।

আইওএম এর ক্লাইমেট চেঞ্জ ও হিউম্যান মবিলিটির কনসালটেন্ড ড. এস এম মোর্শেদ সংবাদকে বলেন, ‘আমরা যেভাবে প্রাকৃতিক সম্পদবন উজাড় করে ফেলছি। আর আমাদের বাংলাদেশে তিনটি জেলা সরকার কতৃক ঘোষিত মরুকরণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এখনকার সময়ে নতুন করে যে আপদটা তৈরি হলো তীব্র গরম এটার সঙ্গেও জলবায়ু পরিবর্তনের সম্পর্ক আছে।’

‘নওগাঁ নাটোরসহ উত্তরাঞ্চলের তিন জেলা অনেক আগেই সরকার অফিসিয়ালি ডিক্লিআর করছে মরুকরণ এলাকা হিসেবে। যেখানে বৃষ্টিপাত কম হয়, উষ্ণায়ন থাকে। বৃষ্টির অভাবে মরুকরণ হয় যেখানে এটাকে ‘ডের্জাট অ্যান্ড ডের্জাট ইরিগেশন’ বলে’, জানান তিনি।

ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত সংবাদকে জানান, মৌসুমি বায়ু বদলানোর কারণে যে সময় যে পরিমাণ বৃষ্টি ও বাতাসের আদ্রতা থাকার কথা সেটা অনিশ্চিত হয়ে যাবে। এই বৃষ্টিপাতের অনিশ্চয়তার ফলে উদ্ভিদ জগৎ নির্ভর করে। এই সমস্যাটা ভবিষ্যৎতের সমস্যা। দিনে দিনে এই সমস্যাটা আরও জটিল হবে এটা আর আগের অবস্থানে ফিরবে না।

তিনি আরও বলেন, ‘এর প্রভাবে খাদ্য উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। আমরা একটু একটু টের পাচ্ছি অল্প। কিন্তু এখন থেকে ২০ বা ৩০ বছর পরে এটা মারাত্মক আকার ধারণ করবে এবং প্রকৃতিক দুর্যোগ বন্যা, খরা, নদীভাঙন, ভূমিধস ও বজ্রবিদ্যুৎ এগুলোর অনিশ্চয়তা হবে। মানে কোনো কোনো বছর তীব্র মাত্রায় হবে আবার কোনো কোনো বছর হয়তো স্বাভাবিক মাত্রায় থাকবে। এ কারণে স্বাস্থ্যর ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে।’

রোববার (২১ এপ্রিল) ‘জলবায়ু বিপর্যয় : দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে তীব্র দাবদাহ’ শিরনামে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে সিএনএন। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। এপ্রিলের শুরু থেকেই এখানে প্রচ- দাবদাহ দেখা যাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলছেন, শীঘ্রই এ থেকে পরিত্রাণ নেই।

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘তাপমাত্রা বৃদ্ধির যে প্রবণতা তা অনিবার্য। এই অঞ্চলকে এপ্রিলের বাকি সময় ও মে মাসজুড়ে তীব্র গরম সহ্য করার প্রস্তুতি রাখতে হবে।’

পরিত্রাণের উপায় কী?

প্রাকৃতিক বনভূমি সংরক্ষণ ও পরিমাণ বাড়ানো, ভূপৃষ্ঠের জলাধার সংরক্ষণ, নদীর স্বাভাবিক গতিপথ চলমান রাখা, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস হতে পারে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলছে বিশেষজ্ঞরা। অনেকেই নতুন কৃষি ব্যবস্থার কথাও বলছেন।

ড. এস এম মোর্শেদ বলেন, ‘উষ্ণায়ন ও তাপমাত্রাকে বেইজ করে নিউ এগ্রিকালচার মডালিটি। যেসমস্ত ফলস অধিক তাপমাত্রাও রেজিলিয়েন্ট থাকে নষ্ট হয় না সে ধরনের ফসল ফলানো। আর একটা হচ্ছে এগ্রিকালচার প্যাটার্ন চেঞ্জ করা। পানি নির্ভর যে ফসলগুলো হয় সেগুলোর পরিবর্তে আলু, বাদাম, গম ও ভুট্টার মতো ফসলের দিকে অগ্রসর হওয়া।’

তবে তাপমাত্রা কমার দীর্ঘমেয়াদি কৌশল হিসেবে তিনি ‘নতুন বনয়নের’ কথা জোর দিয়ে বলেন। মুহম্মদ আবদুর রহমান বলেন, ‘জলাভূমি হ্রাস, বনভূমি হ্রাস, যথেচ্ছহারে ভূমিরূপ পরিবর্তন, বায়ুতে দূষণের অত্যধিক মাত্রা এই তাপমাত্রা ও শৈত্যপ্রবাহকে আরও বেশি ত্বরান্বিত করছে। যদিও গাছ লাগানোকে অনেকেই সমাধান মনে করছে কিন্তু বনায়ন কোনো সুষ্ঠু সমাধান নয়। প্রাকৃতিক বনভূমি সংরক্ষণ ও পরিমাণ বাড়ানো, ভূ-পৃষ্ঠের জলাধার সংরক্ষণ, নদীর স্বাভাবিক গতিপথ চলমান রাখা, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস হতে পারে কার্যকরী পদক্ষেপ। নতুবা সামনের দিনগুলোতে আরও ভয়ংকর রূপে দাবদাহের আবির্ভাব ঘটবে।’

টিভি সূচি

ছবি

পরিবেশ ধ্বংসের বিনিময়ে উন্নয়ন ‘টেকসই হতে পারে না’: সৈয়দা রিজওয়ানা

ছবি

ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু

ছবি

হালদা নদী রক্ষায় গেজেট পরিবর্তন করা হবে : প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

ছবি

‘সেনা কর্মকর্তাদের চাকরিতে থাকা’ নিয়ে মন্তব্যের ব্যাখ্যা ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের

ছবি

নির্বাচন ভবনের নিরাপত্তা বাড়াতে ডিএমপিকে ইসির চিঠি

ছবি

সংবিধান সংস্কার ‘জুলাই সনদ অনুসারে’: ২৭০ পঞ্জিকা দিবসে না হলে ‘স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিল পাস’

আইনি প্রক্রিয়ায় শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চেয়েছি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

বেসরকারি স্কুল ও কলেজে এমপিও নীতিমালায় বড় পরিবর্তন: জ্যেষ্ঠ প্রভাষক পদ বিলুপ্ত, অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ যোগ্যতায় পরিবর্তন

ছবি

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন বাংলাদেশের অতীত থেকে মুক্তির পথ দেখাবে: প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস

ছবি

জুলাই সনদে সংবিধান সংস্কারে সরকারের জন্য দুটি বিকল্প পথ প্রস্তাব ঐকমত্য কমিশনের

ছবি

নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য বডি-ওর্ন-ক্যামেরা কেনার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

ছবি

শীতের কম্বল ফেব্রুয়ারিতে দিয়ে লাভ নেই বিভাগীয় কমিশনার

ছবি

দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় কৃষকরা সম্মুখসারির যোদ্ধা খাদ্য উপদেষ্টা

ছবি

নির্বাচনের আগে বা নির্বাচনের দিন গণভোট আয়োজনের সুপারিশ

ছবি

যুক্তরাষ্ট্র-চীন উভয়ের সঙ্গেই আমাদের সম্পর্ক গভীর: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

বঙ্গোপসাগরে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোনথা’, ভারতের অন্ধ্র উপকূলে আঘাতের শঙ্কা

ছবি

ঢাকার বাতাস আজ ‘অস্বাস্থ্যকর’

ছবি

আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের ভূমিকা সর্বাগ্রে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

বৃহস্পতিবার বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে মতবিনিময় করবে ইসি

ছবি

ডেঙ্গুতে একদিনে আরও ৬ জনের মৃত্যু: হাসপাতালে ভর্তি ৯৮৩ জন

ছবি

জেইসির মাধ্যমে বাংলাদেশ-পাকিস্তান দুই দেশের জনগণ উপকৃত হবে: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ চূড়ান্ত, আজ অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে হস্তান্তর

চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন

ছবি

এক লাখ কর্মী নিয়োগ, প্রধান উপদেষ্টাকে অগ্রগতি জানালো জাপানি প্রতিনিধিদল

ছবি

মঙ্গলবার সরকারের হাতে যাবে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের রূপরেখা

ছবি

নভেম্বরের পরও চলবে উপদেষ্টা পরিষদের কার্যক্রম: অন্তর্বর্তী সরকারের স্পষ্টীকরণ

ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ৭৬১

ছবি

অর্থ পাচারের মামলায় সম্রাট ও আরমানের জামিন বাতিল, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ছবি

তরুণ প্রজন্মকে উদ্যোক্তা হওয়া ও নৈতিক নেতৃত্বে অনুপ্রাণিত হওয়ার আহ্বান শিক্ষা উপদেষ্টার

ডেঙ্গু: একদিনে সর্বোচ্চ ১১৪৩ জন হাসপাতালে, মৃত্যু ৪

ছবি

শাহজালালে আগুন: অনুসন্ধানে ঢাকায় তুরস্কের বিশেষজ্ঞ দল

সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউলসহ দুই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় বেড়েছে

ছবি

মেট্রো রেললাইনের বিয়ারিং প্যাড পড়ে পথচারীর মৃত্যু, ৭ ঘণ্টা বন্ধ ছিল ট্রেন

সেনা সদর দপ্তর আইন প্রয়োগ না করা পর্যন্ত আসামি ১৫ সেনা কর্মকর্তা কর্মরত: প্রসিকিউটর

ছবি

বিচারপতি খায়রুল হককে কেন জামিন দেয়া হবে না, হাইকোর্টের প্রশ্ন

tab

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই কি এত তাপ?

শাফিউল আল ইমরান

রোববার, ২১ এপ্রিল ২০২৪

বর্তমানে দেশের বেশিরভাগ জেলায় বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। অসহনীয় গরমে নাকাল মানুষ। তাপমাত্রা কিছুটা কমবেশি হলেও বাতাসে জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি অনুভূত হচ্ছে বেশি।

জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ও সেন্টার ফর পিপল অ্যান্ড এনভায়রন (সিপিই) পরিচালক মুহম্মদ আবদুর রহমান সংবাদকে বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশে গড়ে প্রতিবছর ০.০৫ ডিগ্রির মতো তাপমাত্রা বাড়ছে। সেই হিসেবে প্রতি বছরই পূর্বের বছরের তুলনায় গ্রীষ্মের তাপমাত্রা একটু একটু করে বাড়ছে। তদুপরি গত কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে উপমহাদেশীয় মৌসুমী বায়ুতে বড় রকমের পরিবর্তন এসেছে। এপ্রিল মে মাসে সাধারণ এখানে সবল মৌসুমী বায়ু থাকে কিন্তু এখন অনেকটা দুর্বল মৌসুুুমি বায়ু বিরাজ করছে উপমহাদেশীয় বায়ুম-লে। এই দুর্বল মৌসুমী বায়ুর কারণে এখানে মাঝেমাঝে স্থানবিশেষে বৃষ্টি হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। অন্যদিকে মাঝেমাঝে বৃষ্টিপাতের কারণে বায়ুম-লে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি। এই আর্দ্রতার কারণে প্রকৃত তাপমাত্রার চেয়ে অনুভূত তাপমাত্রার পরিমাণ বেশি যা প্রতি বছরই তাপদাহে রূপান্তরিত হচ্ছে।

আইওএম এর ক্লাইমেট চেঞ্জ ও হিউম্যান মবিলিটির কনসালটেন্ড ড. এস এম মোর্শেদ সংবাদকে বলেন, ‘আমরা যেভাবে প্রাকৃতিক সম্পদবন উজাড় করে ফেলছি। আর আমাদের বাংলাদেশে তিনটি জেলা সরকার কতৃক ঘোষিত মরুকরণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এখনকার সময়ে নতুন করে যে আপদটা তৈরি হলো তীব্র গরম এটার সঙ্গেও জলবায়ু পরিবর্তনের সম্পর্ক আছে।’

‘নওগাঁ নাটোরসহ উত্তরাঞ্চলের তিন জেলা অনেক আগেই সরকার অফিসিয়ালি ডিক্লিআর করছে মরুকরণ এলাকা হিসেবে। যেখানে বৃষ্টিপাত কম হয়, উষ্ণায়ন থাকে। বৃষ্টির অভাবে মরুকরণ হয় যেখানে এটাকে ‘ডের্জাট অ্যান্ড ডের্জাট ইরিগেশন’ বলে’, জানান তিনি।

ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত সংবাদকে জানান, মৌসুমি বায়ু বদলানোর কারণে যে সময় যে পরিমাণ বৃষ্টি ও বাতাসের আদ্রতা থাকার কথা সেটা অনিশ্চিত হয়ে যাবে। এই বৃষ্টিপাতের অনিশ্চয়তার ফলে উদ্ভিদ জগৎ নির্ভর করে। এই সমস্যাটা ভবিষ্যৎতের সমস্যা। দিনে দিনে এই সমস্যাটা আরও জটিল হবে এটা আর আগের অবস্থানে ফিরবে না।

তিনি আরও বলেন, ‘এর প্রভাবে খাদ্য উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। আমরা একটু একটু টের পাচ্ছি অল্প। কিন্তু এখন থেকে ২০ বা ৩০ বছর পরে এটা মারাত্মক আকার ধারণ করবে এবং প্রকৃতিক দুর্যোগ বন্যা, খরা, নদীভাঙন, ভূমিধস ও বজ্রবিদ্যুৎ এগুলোর অনিশ্চয়তা হবে। মানে কোনো কোনো বছর তীব্র মাত্রায় হবে আবার কোনো কোনো বছর হয়তো স্বাভাবিক মাত্রায় থাকবে। এ কারণে স্বাস্থ্যর ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে।’

রোববার (২১ এপ্রিল) ‘জলবায়ু বিপর্যয় : দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে তীব্র দাবদাহ’ শিরনামে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে সিএনএন। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। এপ্রিলের শুরু থেকেই এখানে প্রচ- দাবদাহ দেখা যাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলছেন, শীঘ্রই এ থেকে পরিত্রাণ নেই।

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘তাপমাত্রা বৃদ্ধির যে প্রবণতা তা অনিবার্য। এই অঞ্চলকে এপ্রিলের বাকি সময় ও মে মাসজুড়ে তীব্র গরম সহ্য করার প্রস্তুতি রাখতে হবে।’

পরিত্রাণের উপায় কী?

প্রাকৃতিক বনভূমি সংরক্ষণ ও পরিমাণ বাড়ানো, ভূপৃষ্ঠের জলাধার সংরক্ষণ, নদীর স্বাভাবিক গতিপথ চলমান রাখা, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস হতে পারে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলছে বিশেষজ্ঞরা। অনেকেই নতুন কৃষি ব্যবস্থার কথাও বলছেন।

ড. এস এম মোর্শেদ বলেন, ‘উষ্ণায়ন ও তাপমাত্রাকে বেইজ করে নিউ এগ্রিকালচার মডালিটি। যেসমস্ত ফলস অধিক তাপমাত্রাও রেজিলিয়েন্ট থাকে নষ্ট হয় না সে ধরনের ফসল ফলানো। আর একটা হচ্ছে এগ্রিকালচার প্যাটার্ন চেঞ্জ করা। পানি নির্ভর যে ফসলগুলো হয় সেগুলোর পরিবর্তে আলু, বাদাম, গম ও ভুট্টার মতো ফসলের দিকে অগ্রসর হওয়া।’

তবে তাপমাত্রা কমার দীর্ঘমেয়াদি কৌশল হিসেবে তিনি ‘নতুন বনয়নের’ কথা জোর দিয়ে বলেন। মুহম্মদ আবদুর রহমান বলেন, ‘জলাভূমি হ্রাস, বনভূমি হ্রাস, যথেচ্ছহারে ভূমিরূপ পরিবর্তন, বায়ুতে দূষণের অত্যধিক মাত্রা এই তাপমাত্রা ও শৈত্যপ্রবাহকে আরও বেশি ত্বরান্বিত করছে। যদিও গাছ লাগানোকে অনেকেই সমাধান মনে করছে কিন্তু বনায়ন কোনো সুষ্ঠু সমাধান নয়। প্রাকৃতিক বনভূমি সংরক্ষণ ও পরিমাণ বাড়ানো, ভূ-পৃষ্ঠের জলাধার সংরক্ষণ, নদীর স্বাভাবিক গতিপথ চলমান রাখা, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস হতে পারে কার্যকরী পদক্ষেপ। নতুবা সামনের দিনগুলোতে আরও ভয়ংকর রূপে দাবদাহের আবির্ভাব ঘটবে।’

back to top