জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৯২ এর ১৩ এর (১) ধারা অনুযায়ী, ‘প্রয়োজন মনে করিলে চ্যান্সেলর কর্তৃক নির্ধারিত শর্তে ও মেয়াদে এক বা একাধিক প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ করিতে পারিবেন’।
ধারা অনুযায়ী চলতি মাসের ৪ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নতুন উপ-উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে নিয়োগ দেয়া হয়। তবে কয়েক ঘণ্টা পরই সেই নিয়োগ স্থগিত করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, অধ্যাপক মিজানুর রহমানকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হিসেবে রাষ্ট্রপতি ও আচার্য এই নিয়োগ দিয়েছেন। তবে আরেক প্রজ্ঞাপনে এ নিয়োগ স্থগিত করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। যদিও সেখানে নিয়োগ স্থগিতের কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করা হয়নি।
‘দুপুরে নিয়োগের পর রাতে’ স্থগিতের ঘটনা নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। সবার কৌতূহল- রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দপ্তর ঘুরে ও নানা যাচাই-বাছাইয়ের পর যে নিয়োগ চূড়ান্ত করা হলো, তা কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে স্থগিতের নেপথ্যে কী?
অভিযোগের তীর বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমানের দিকে। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, অধ্যাপক মশিউরের চাওয়া — সরকার যদি উপ-উপাচার্য হিসেবে কাউকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্ব দিতে চায়, সেক্ষেত্রে তার ‘অনুসারী কাউকে’ দিতে হবে। এজন্য সরকারের উচ্চপর্যায়ে নেতিবাচক বার্তা দিয়েছেন তিনি। এক্ষেত্রে তিন বছর আগের যৌন হয়রানির একটি অভিযোগ (যা নিষ্পত্তি হয়ে গেছে) ও বিএনপি-সাদা দল সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ কাজে লাগিয়ে অধ্যাপক মিজানুরের নিয়োগ স্থগিত করেন।
অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলছেন সরকার নিয়োগ দিতে পারে, আবার স্থগিতও করতে পারে। তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিভিন্ন মহলে মিথ্যাচার করেছেন বলে দাবি তার।
অধ্যাপক মিজানুর বলেন, ‘সরকার আমাকে যোগ্য-দক্ষ মনে করেছিল বলেই হয়তো নিয়োগ দিয়েছিলো। পরক্ষণে কেন নিয়োগ স্থগিত হলো তা নিয়ে আমার কোনো প্রশ্ন ছিল না। গণমাধ্যমের বরাতে জানতে পারলাম উপাচার্য (অধ্যাপক মশিউর রহমান) আমার বিরুদ্ধে সরকারের বিভিন্ন মহলে মিথ্যাচার করেছেন। তিনি আমার আদর্শ, চিন্তা-চেতনা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।’
বিএনপি ও সাদা দল সংশ্লিষ্টতার বিষয়টিকে ‘বানোয়াট ও মিথ্যা’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ২০০৮ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আমি নীল দল থেকে ডিন, সিন্ডিকেট মেম্বার পদে নির্বাচন করেছি। নীল দলের প্রতিটি সভায় অংশ নিয়েছি। ২০১৬ সাল থেকে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি।’
উপাচার্য মশিউর রহমানের দাবি অধ্যাপক মিজানুর রহমানের সাথে তার কোনো ‘দ্বন্দ বা মতদ্বৈধতা’ নেই।
উপাচার্য মশিউর রহমান বলেন, ‘সরকার উপ-উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে আবার স্থগিত করেছে। এখানে সরাসরি ভূমিকা পালনের আমার কোনো সুযোগই নেই। এ নিয়োগ আমাদের প্রস্তাবনায় হয়নি। সরকার স্বত:প্রণোদিত হয়ে নিয়োগ দিয়েছে। পরে কিছু সুনির্দিষ্ট বিষয় নজরে আসার পর সরকার এটি স্থগিত করেছে। এখানে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’
এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
২০২১ সালে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চের (নিটার) উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনকালে অধ্যাপক মিজানুরের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ তদন্তে ৬ সদস্যের কমিটি হয়। তদন্তে অভিযোগকারীসহ ৩৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে তদন্ত কমিটি। নিটারের ৬২তম সভায় ঐ প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ‘কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি’ বলে তাকে ওই অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৯২ এর ১৩ এর (১) ধারা অনুযায়ী, ‘প্রয়োজন মনে করিলে চ্যান্সেলর কর্তৃক নির্ধারিত শর্তে ও মেয়াদে এক বা একাধিক প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ করিতে পারিবেন’।
ধারা অনুযায়ী চলতি মাসের ৪ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নতুন উপ-উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে নিয়োগ দেয়া হয়। তবে কয়েক ঘণ্টা পরই সেই নিয়োগ স্থগিত করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, অধ্যাপক মিজানুর রহমানকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হিসেবে রাষ্ট্রপতি ও আচার্য এই নিয়োগ দিয়েছেন। তবে আরেক প্রজ্ঞাপনে এ নিয়োগ স্থগিত করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। যদিও সেখানে নিয়োগ স্থগিতের কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করা হয়নি।
‘দুপুরে নিয়োগের পর রাতে’ স্থগিতের ঘটনা নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। সবার কৌতূহল- রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দপ্তর ঘুরে ও নানা যাচাই-বাছাইয়ের পর যে নিয়োগ চূড়ান্ত করা হলো, তা কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে স্থগিতের নেপথ্যে কী?
অভিযোগের তীর বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমানের দিকে। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, অধ্যাপক মশিউরের চাওয়া — সরকার যদি উপ-উপাচার্য হিসেবে কাউকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্ব দিতে চায়, সেক্ষেত্রে তার ‘অনুসারী কাউকে’ দিতে হবে। এজন্য সরকারের উচ্চপর্যায়ে নেতিবাচক বার্তা দিয়েছেন তিনি। এক্ষেত্রে তিন বছর আগের যৌন হয়রানির একটি অভিযোগ (যা নিষ্পত্তি হয়ে গেছে) ও বিএনপি-সাদা দল সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ কাজে লাগিয়ে অধ্যাপক মিজানুরের নিয়োগ স্থগিত করেন।
অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলছেন সরকার নিয়োগ দিতে পারে, আবার স্থগিতও করতে পারে। তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিভিন্ন মহলে মিথ্যাচার করেছেন বলে দাবি তার।
অধ্যাপক মিজানুর বলেন, ‘সরকার আমাকে যোগ্য-দক্ষ মনে করেছিল বলেই হয়তো নিয়োগ দিয়েছিলো। পরক্ষণে কেন নিয়োগ স্থগিত হলো তা নিয়ে আমার কোনো প্রশ্ন ছিল না। গণমাধ্যমের বরাতে জানতে পারলাম উপাচার্য (অধ্যাপক মশিউর রহমান) আমার বিরুদ্ধে সরকারের বিভিন্ন মহলে মিথ্যাচার করেছেন। তিনি আমার আদর্শ, চিন্তা-চেতনা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।’
বিএনপি ও সাদা দল সংশ্লিষ্টতার বিষয়টিকে ‘বানোয়াট ও মিথ্যা’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ২০০৮ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আমি নীল দল থেকে ডিন, সিন্ডিকেট মেম্বার পদে নির্বাচন করেছি। নীল দলের প্রতিটি সভায় অংশ নিয়েছি। ২০১৬ সাল থেকে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি।’
উপাচার্য মশিউর রহমানের দাবি অধ্যাপক মিজানুর রহমানের সাথে তার কোনো ‘দ্বন্দ বা মতদ্বৈধতা’ নেই।
উপাচার্য মশিউর রহমান বলেন, ‘সরকার উপ-উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে আবার স্থগিত করেছে। এখানে সরাসরি ভূমিকা পালনের আমার কোনো সুযোগই নেই। এ নিয়োগ আমাদের প্রস্তাবনায় হয়নি। সরকার স্বত:প্রণোদিত হয়ে নিয়োগ দিয়েছে। পরে কিছু সুনির্দিষ্ট বিষয় নজরে আসার পর সরকার এটি স্থগিত করেছে। এখানে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’
এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
২০২১ সালে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চের (নিটার) উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনকালে অধ্যাপক মিজানুরের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ তদন্তে ৬ সদস্যের কমিটি হয়। তদন্তে অভিযোগকারীসহ ৩৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে তদন্ত কমিটি। নিটারের ৬২তম সভায় ঐ প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ‘কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি’ বলে তাকে ওই অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।