যাত্রী কল্যাণ সমিতি
ট্রেনে ভ্রমণের ক্ষেত্রে রেয়াত সুবিধা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। বাস মালিকদের সুবিধা দিতেই রেলের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
সংগঠনটি বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৫ বছর যাবৎ ধারাবাহিকভাবে রেলখাতের উন্নয়নে লাখো কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে রেল সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে। ঠিক তখনই রেল কর্তৃপক্ষ রেয়াত সুবিধা প্রত্যাহারের নামে রেলের ভাড়া বাসের চেয়ে বেশি নির্ধারণ করে বাস মালিকদের বিশেষ সুবিধা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এ গণবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে রেলপথকে অতীতের মতো নিরাপদ ও সাশ্রয়ী রাখার দাবি জানান তারা।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনের মহাসচিব মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
লিখিত বক্তব্যে মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, যাত্রী কল্যাণ সমিতি পর্যবেক্ষণ করে ৫টি রুটের বাস এবং রেলের ভাড়ার তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে, এতে দেখা গেছে—
১। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম তুর্না নিশিতা ট্রেনে শোভন চেয়ার আগের ভাড়া ছিল ৩৪৫ টাকা এখন রেয়াত সুবিধা প্রত্যাহারের পর ৪০৫ টাকা। এই টিকিট কালোবাজারির কাছ থেকে যাত্রীদের কিনতে হয় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে লোকাল বাসের ভাড়া ৪০০ টাকা, ডাইরেক্ট বাসের ভাড়া ৬৮০ টাকা। ঢাকা চট্টগ্রাম তুর্না নিশিতা ট্রেনে এসি চেয়ারে আগের ভাড়া ছিল ৬৫৬ টাকা রেয়াত প্রত্যাহারের পরে এখন ৭৭৭ টাকা। এই টিকিট কালোবাজারির কাছ থেকে কিনতে হয় ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। অথচ এই রুটে এসি বাসের ভাড়া ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে বাসে যেতে সময় লাগে ৪ থেকে ৫ ঘন্টা, ট্রেনে সময় লাগে ৬ থেকে ৮ ঘন্টা।
২। ঢাকা খুলনা রুটে ট্রেনের শোভন চেয়ারে ৫০০ টাকার ভাড়া এখন ৬২৫ টাকা। অথচ এই রুটে বাসে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায় যাতায়াত করেন যাত্রীরা। এই রুটে ট্রেনে এসি চেয়ার ৯৫৫ টাকার টিকিট এখন ১ হাজার ১৯৬ টাকা যা কালোবাজারির কাছ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় কিনতে হয়। অথচ ঢাকা-খুলনা রুটে বিলাস বহুল এসি বাসের ভাড়া মাত্র ৯০০ টাকা।
৩। ঢাকা-রংপুর রুটে ট্রেনের শোভন চেয়ার ৫০৫ টাকা টিকিট এখন ৬৩৫ টাকা যা কালোবাজারির কাছ থেকে কিনতে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা লাগে। ঢাকা রংপুর রুটে লোকাল বাসের ভাড়া ৪০০/৫০০ টাকা, ডাইরেক্ট বাসের ভাড়া ৮০০ টাকা। এই রুটে ট্রেনের এসি চেয়ার ৯৬৬ টাকার টিকিট এখন ১ হাজার ২১৪ টাকা যা কালোবাজারির কাছ থেকে কিনতে লাগে ১৫০০ টাকায়। এই রুটে বিলাসবহুল বাসের এসি টিকিট ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায় পাওয়া যায়। ঢাকা রংপুর ট্রেনের এসি বার্থ ২ হাজার ১৮০ টাকা যা কালোবাজারে কিনতে ৩ হাজার টাকা লাগে অথচ বিলাসবহুল বাসে এই রুটে এসি স্লিপার ১ হাজার ৬০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এই রুটে বাসে যেতে সময় লাগে ৬ থেকে ৭ ঘন্টা, ট্রেনে সময় লাগে ১০ থেকে ১১ ঘন্টা।
৪। ঢাকা-কুড়িগ্রাম রুটে ট্রেনের ৫১০ টাকার শোভন চেয়ার টিকিট এখন ৬৪৫ টাকা যা কালোবাজারে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায় কিনতে হয়। অথচ এই রুটে ৬০০ থেকে ৯০০ টাকার উন্নতমানের বাসে যাওয়া যায়। এই রুটে ট্রেনের এসি চেয়ার ৯৭২ টাকার টিকিট এখন ১২৩৭ টাকা যা কালোবাজারির কাছ থেকে ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকায় কিনতে হয়। অথচ বিলাস বহুল এসি বাসের টিকিট ১২০০ টাকায় পাওয়া যায়।
৫। ঢাকা-পঞ্চগড় রুটে এসি বার্থ এর মূল্য ২৪০০ টাকা। এই রুটে বিলাস বহুল বাসে এসি স্লিপারের ভাড়া ১৮০০ টাকা।
যাত্রী কল্যাণ সমিতি
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪
ট্রেনে ভ্রমণের ক্ষেত্রে রেয়াত সুবিধা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। বাস মালিকদের সুবিধা দিতেই রেলের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
সংগঠনটি বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৫ বছর যাবৎ ধারাবাহিকভাবে রেলখাতের উন্নয়নে লাখো কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে রেল সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে। ঠিক তখনই রেল কর্তৃপক্ষ রেয়াত সুবিধা প্রত্যাহারের নামে রেলের ভাড়া বাসের চেয়ে বেশি নির্ধারণ করে বাস মালিকদের বিশেষ সুবিধা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এ গণবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে রেলপথকে অতীতের মতো নিরাপদ ও সাশ্রয়ী রাখার দাবি জানান তারা।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনের মহাসচিব মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
লিখিত বক্তব্যে মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, যাত্রী কল্যাণ সমিতি পর্যবেক্ষণ করে ৫টি রুটের বাস এবং রেলের ভাড়ার তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে, এতে দেখা গেছে—
১। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম তুর্না নিশিতা ট্রেনে শোভন চেয়ার আগের ভাড়া ছিল ৩৪৫ টাকা এখন রেয়াত সুবিধা প্রত্যাহারের পর ৪০৫ টাকা। এই টিকিট কালোবাজারির কাছ থেকে যাত্রীদের কিনতে হয় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে লোকাল বাসের ভাড়া ৪০০ টাকা, ডাইরেক্ট বাসের ভাড়া ৬৮০ টাকা। ঢাকা চট্টগ্রাম তুর্না নিশিতা ট্রেনে এসি চেয়ারে আগের ভাড়া ছিল ৬৫৬ টাকা রেয়াত প্রত্যাহারের পরে এখন ৭৭৭ টাকা। এই টিকিট কালোবাজারির কাছ থেকে কিনতে হয় ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। অথচ এই রুটে এসি বাসের ভাড়া ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে বাসে যেতে সময় লাগে ৪ থেকে ৫ ঘন্টা, ট্রেনে সময় লাগে ৬ থেকে ৮ ঘন্টা।
২। ঢাকা খুলনা রুটে ট্রেনের শোভন চেয়ারে ৫০০ টাকার ভাড়া এখন ৬২৫ টাকা। অথচ এই রুটে বাসে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায় যাতায়াত করেন যাত্রীরা। এই রুটে ট্রেনে এসি চেয়ার ৯৫৫ টাকার টিকিট এখন ১ হাজার ১৯৬ টাকা যা কালোবাজারির কাছ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় কিনতে হয়। অথচ ঢাকা-খুলনা রুটে বিলাস বহুল এসি বাসের ভাড়া মাত্র ৯০০ টাকা।
৩। ঢাকা-রংপুর রুটে ট্রেনের শোভন চেয়ার ৫০৫ টাকা টিকিট এখন ৬৩৫ টাকা যা কালোবাজারির কাছ থেকে কিনতে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা লাগে। ঢাকা রংপুর রুটে লোকাল বাসের ভাড়া ৪০০/৫০০ টাকা, ডাইরেক্ট বাসের ভাড়া ৮০০ টাকা। এই রুটে ট্রেনের এসি চেয়ার ৯৬৬ টাকার টিকিট এখন ১ হাজার ২১৪ টাকা যা কালোবাজারির কাছ থেকে কিনতে লাগে ১৫০০ টাকায়। এই রুটে বিলাসবহুল বাসের এসি টিকিট ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায় পাওয়া যায়। ঢাকা রংপুর ট্রেনের এসি বার্থ ২ হাজার ১৮০ টাকা যা কালোবাজারে কিনতে ৩ হাজার টাকা লাগে অথচ বিলাসবহুল বাসে এই রুটে এসি স্লিপার ১ হাজার ৬০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এই রুটে বাসে যেতে সময় লাগে ৬ থেকে ৭ ঘন্টা, ট্রেনে সময় লাগে ১০ থেকে ১১ ঘন্টা।
৪। ঢাকা-কুড়িগ্রাম রুটে ট্রেনের ৫১০ টাকার শোভন চেয়ার টিকিট এখন ৬৪৫ টাকা যা কালোবাজারে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায় কিনতে হয়। অথচ এই রুটে ৬০০ থেকে ৯০০ টাকার উন্নতমানের বাসে যাওয়া যায়। এই রুটে ট্রেনের এসি চেয়ার ৯৭২ টাকার টিকিট এখন ১২৩৭ টাকা যা কালোবাজারির কাছ থেকে ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকায় কিনতে হয়। অথচ বিলাস বহুল এসি বাসের টিকিট ১২০০ টাকায় পাওয়া যায়।
৫। ঢাকা-পঞ্চগড় রুটে এসি বার্থ এর মূল্য ২৪০০ টাকা। এই রুটে বিলাস বহুল বাসে এসি স্লিপারের ভাড়া ১৮০০ টাকা।