alt

জাতীয়

ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবি : ঢাকায় পৌঁছেছে ৮ বাংলাদেশীর লাশ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪

লিবিয়া হয়ে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টায় ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবে মারা যাওয়া আটজনের লাশ দেশে এসেছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে লাশগুলো ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসে। পরে সন্ধ্যায় লাশগুলো ঢাকা মেডিকেল মর্গে পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় নিহত এক ব্যক্তির বাবা মামলা করায় আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে লাশগুলো মর্গে পাঠানো হয়েছে, স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি।

এদিন দুপুরে লাশগুলো বিমানবন্দরে এসে পৌঁছানোর পর কার্গো ভিলেজে অপেক্ষমান স্বজনরা আহাজারি শুরু করেন।

দালালের মাধ্যমে অবৈধ পথে এসব ব্যক্তি গত ১৪ ফেব্রুয়ারি লিবিয়া থেকে একটি নৌকায় ইতালির উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে তিউনিসিয়া উপকূলে ডুবে মারা যান।

ওই নৌকায় ৩৫ জন বাংলাদেশীসহ ৫৩ জন ছিলেন। নৌকাটি তিউনিসিয়া উপকূলে ডুবে গেলে ওই আট বাংলাদেশীসহ নয়জনের মৃত্যু হয়। মারা যাওয়া অপর ব্যক্তি পাকিস্তানি।

নিহত আটজন হলেন- মামুন শেখ, সজল বৈরাগী, নয়ন বিশ্বাস, রিফাত শেখ, সজীব কাজী, ইমরুল কায়েস আপন, মো. কায়সার ও রাসেল শেখ। এদের মধ্যে পাঁচজন মাদারীপুরের ও তিনজন গোপালগঞ্জের।

নিহত সজল বৈরাগীর বাবা সুনীল বৈরাগী গত ১৯ এপ্রিল এই আটজনকে হত্যার অভিযোগে সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

এ মামলার তদন্ত করছে বিমানবন্দর থানা পুলিশ। তারা লাশগুলো বুঝে নেয়।

পুলিশের উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার তৌহিদুল ইসলাম বলেন, “আমরা লাশগুলো গ্রহণ করেছি। লাশের সঙ্গে সব কাগজপত্র এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলোর পোস্টমর্টেম যদি আগে হয়ে থাকে বা তাদের মৃত্যু কী করে হল এ সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ মতামতসহ ডকুমেন্ট আমরা পাই, তাহলে সুরতহাল করে লাশ স্বজনদের দিয়ে দেওয়া হবে।

”আর যদি সেগুলো না থাকে তাহলে আমরা মৃত্যুর কারণ নির্ণয়ের জন্য লাশ ময়নাতদন্ত করব।”

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ রাতের দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। লিবিয়ার জুয়ারা উপকূল থেকে ইউরোপ যাত্রাপথে ৫২ জন যাত্রী এবং একজন চালকসহ নৌকাটি তিউনিসীয় উপকূলে ডুবে যায়। এরপর জীবিত উদ্ধার করা হয় ৪৪ জনকে, ডুবে মারা যায় ৯ জন।

জীবিত উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে ২৭ জন বাংলাদেশি ও আটজন পাকিস্তানের, পাঁচজন সিরিয়ার ও চারজন মিসরের। নিহত ৯ জনের মধ্যে ৮ জন বাংলাদেশি ও অপরজন পাকিস্তানের নাগরিক বলে শনাক্ত করা হয়।

দুর্ঘটনার পরপরই ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা তিউনিসিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় নগর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করে লাশের সুরতহাল, শনাক্তকরণ, দেশি সংস্থার মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করা, মৃত্যু ও মেডিকেল সনদ ইস্যু সম্পন্ন করা হয়। পাশাপাশি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আফ্রিকা উইং মরদেহ ফিরিয়ে আনতে আন্ত:মন্ত্রণালয় সমন্বয় করে।

স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়ের সহায়তা এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ থেকে এর প্রয়োজনীয় ব্যয়ভার মেটানো হচ্ছে বলে জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বিমানবন্দর থানায় নিহত সজল বৈরাগীর বাবা সুনীল বৈরাগীর করা মামলার আসামিরা হলেন- যুবরাজ কাজী (২৪), তার বাবা মোশারফ কাজী (৫০), রহিম শেখ (৪০), কামাল (৩৮), মনিকা (২৮), সবুজ (৪০) ও ওয়াসিম গাইন (৪২)।

পুলিশের এডিসি তৌহিদুল বলেন, ওই মামলা দায়েরের পরপরই প্রধান আসামি যুবরাজ কাজী ও ৪ নম্বর আসামি কামালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

সুনীল বৈরাগীর অভিযোগ, তার ছেলে সজল বৈরাগীকে ১৪ লাখ টাকার বিনিময়ে ‘বৈধ পথে’ ইতালি পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছিল তাদের পূর্ব পরিচিত যুবরাজ কাজী ও তার বাবা মোশারফ কাজী। মোশারফ লিবিয়ায় থাকেন, এখনও সেখানেই রয়েছেন। সজল বৈরাগী ও তার পরিবার এ প্রস্তাবে রাজি হয়।

টাকা দেওয়া ও দেশত্যাগের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, দুই পক্ষের সম্মতিতে গত বছর ১৭ নভেম্বর যুবরাজ কাজীর গোপালগঞ্জের বাসায় আড়াই লাখ টাকা ও পাসপোর্ট দেন সজল। ৩০ ডিসেম্বর তাদের কথামতো শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন সজল। বিমানবন্দরে গাড়ি থেকে নামার আগেই সজলের কাছ থেকে আরও নগদ পাঁচ লাখ টাকা নেন যুবরাজ কাজী। ৩১ ডিসেম্বর সকাল ৬টায় দুবাই রওনা হন তিনি। এরপর সুনীল বৈরাগী গত ৮ জানুয়ারি যুবরাজ কাজীর বাসায় গিয়ে আরও সাড়ে ছয় লাখ টাকা দিয়ে আসেন।

তবে এরপর থেকে ছেলের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেননি দাবি করে সুনীল বলেন, এরপর খবরে জানতে পারেন ১৪ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে লিবিয়া থেকে ইতালি অভিমুখে যাত্রা করা একটি ট্রলারে যে আট বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন তার মধ্যে সজল রয়েছেন।

সুনীল বৈরাগীর অভিযোগ, এই চক্র উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার করে এই তরুণদের। নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও উত্তাল সাগরে তারা ছোট একটি নৌকায় তাদের তুলে দিয়ে পানিতে ডুবিয়ে তাদের মৃত্যু ঘটায়।

বিমানবন্দরে পুলিশের কাছে লাশ হস্তান্তরের সময় ব্র্যাকের কর্মকর্তারাও ছিলেন। প্রতিষ্ঠানের সহযোগী পরিচালক (মাইগ্রেশন ও ইয়ুথ প্লাটফর্ম) শরিফুল হাসান বলেন, ওই নৌকায় থাকা আরও ১১ বাংলাদেশী দেশে ফিরেছেন। তাদের মধ্যে মাদারীপুর রাজৈর উপজেলার দুজন ব্র্যাকের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাদেরও অভিযোগ ওই আট বাংলাদেশীকে হত্যা করা হয়েছে।

শরিফুল বলেন, “এ ঘটনায় যেহেতু একটা মামলা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্তে বিস্তারিত উঠে আসবে আশা করছি।”

ছবি

আজ শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস

ছবি

বিদেশি অর্থায়নের প্রকল্প দ্রুত শেষ করার নির্দেশ: প্রধানমন্ত্রীর

ছবি

পরিবেশবান্ধব, জ্বালানি সাশ্রয়ী গ্রীণ ভবন করা সময়ের দাবী: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

ছবি

বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সংসদীয় কূটনীতি কার্যকর হাতিয়ার-- স্পীকার

ছবি

পর্যটন খাতে তুরস্ককে বিনিয়োগের আহ্বান জানালেন মন্ত্রী

ছবি

শেয়ার হস্তান্তরে স্থিতাবস্থায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ বন্ধ

ছবি

‘অনিয়ম, দুর্নীতি আড়াল করতেই’ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা, সাংবাদিক নেতাদের অভিমত

ছবি

শিক্ষক নিবন্ধনের ফল প্রকাশ

ছবি

২ দিনের সতর্কবার্তা, গরম বাড়ারও আভাস: আবহাওয়া অফিস

ছবি

রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলবে না: কাদের

ছবি

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে আমি এসেছি : ডোনাল্ড লু

ছবি

বিএনপির সময় স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় স্থবিরতা নেমে আসে: প্রধানমন্ত্রী

ছবি

মডেল ঘরে ফসল সংরক্ষণ

ছবি

হজযাত্রীদের কাছ থেকে কুরবানির টাকা নেয়ার বিষয়ে সতর্ক করলো মন্ত্রণালয়

ছবি

মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো কবে নিজ অর্থ নিতে পারবে, জানতে চেয়েছেন লু

ছবি

সারাদেশে ৫ বছরে ৩৪ হাজার ধর্ষনের মামলা : ৬ হাজার মামলায় ৯ হাজার ধর্ষককে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট

ছবি

ঢাকায় এসেছেন ডোনাল্ড লু

ছবি

আজ ঢাকায় আসছেন ডোনাল্ড লু

ছবি

৫৬ হাজার টন চুনাপাথর নিয়ে এসেছে এমভি আবদুল্লাহ

ছবি

হজযাত্রীর ভিসার সময় বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

গরম কমলেও আছে লোডশেডিং, ভুক্তভোগী গ্রাম

ছবি

শ্রম আইন সংশোধনে আইএলও’র সঙ্গে আলোচনা চলছে : আইনমন্ত্রী

ছবি

ঢাকায় নগর বনায়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে : পরিবেশমন্ত্রী

ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড.মনোয়ার হোসেন ‘জাতীয় পরিবেশ পদক ২০২৩’-এর জন্য মনোনীত

ছবি

‘সংখ্যায় ছেলেরা কম’ এবং ‘ফলাফলে পিছিয়ে’ কেন, খুঁজে দেখতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

ছবি

পাসের হার কমেছে এসএসসি ভোকেশনালে

ছবি

শিক্ষার্থীরা স্মার্ট বাংলাদেশের সৈনিক হিসেবে গড়ে উঠবে: প্রধানমন্ত্রী

ছবি

কুমিল্লা বোর্ডে বেড়েছে পাসের হার ও জিপিএ-৫

ছবি

এসএসসিতে পাসের হার ৮৩.০৪ শতাংশ

ছবি

প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসএসসির ফল হস্তান্তর

ছবি

পরিচ্ছন্ন জ্বালানি বাস্তবায়নে বিশ্ব সম্প্রদায়কে অন্তর্ভুক্ত করার প্রত্যয়

ছবি

বাঙালির শক্তির মূল জায়গা হচ্ছে সংস্কৃতি : দীপু মনি

দেশের চলচ্চিত্রকে এগিয়ে নেয়ার জন্য সরকার সব ধরণের পদক্ষেপ নেবে : তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী

ছবি

অবৈধ অভিবাসীদের ফেরার জন্য ‘নিরাপদ’ বাংলাদেশ, ইতালির ঘোষণা

ছবি

মাটি ভরাট করে হাওরে আর রাস্তা হবে না: প্রধানমন্ত্রী

ছবি

বাংলাদেশের জলসীমায় এমভি আবদুল্লাহ, সোমবার পৌঁছাবে কুতুবদিয়া

tab

জাতীয়

ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবি : ঢাকায় পৌঁছেছে ৮ বাংলাদেশীর লাশ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪

লিবিয়া হয়ে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টায় ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবে মারা যাওয়া আটজনের লাশ দেশে এসেছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে লাশগুলো ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসে। পরে সন্ধ্যায় লাশগুলো ঢাকা মেডিকেল মর্গে পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় নিহত এক ব্যক্তির বাবা মামলা করায় আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে লাশগুলো মর্গে পাঠানো হয়েছে, স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি।

এদিন দুপুরে লাশগুলো বিমানবন্দরে এসে পৌঁছানোর পর কার্গো ভিলেজে অপেক্ষমান স্বজনরা আহাজারি শুরু করেন।

দালালের মাধ্যমে অবৈধ পথে এসব ব্যক্তি গত ১৪ ফেব্রুয়ারি লিবিয়া থেকে একটি নৌকায় ইতালির উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে তিউনিসিয়া উপকূলে ডুবে মারা যান।

ওই নৌকায় ৩৫ জন বাংলাদেশীসহ ৫৩ জন ছিলেন। নৌকাটি তিউনিসিয়া উপকূলে ডুবে গেলে ওই আট বাংলাদেশীসহ নয়জনের মৃত্যু হয়। মারা যাওয়া অপর ব্যক্তি পাকিস্তানি।

নিহত আটজন হলেন- মামুন শেখ, সজল বৈরাগী, নয়ন বিশ্বাস, রিফাত শেখ, সজীব কাজী, ইমরুল কায়েস আপন, মো. কায়সার ও রাসেল শেখ। এদের মধ্যে পাঁচজন মাদারীপুরের ও তিনজন গোপালগঞ্জের।

নিহত সজল বৈরাগীর বাবা সুনীল বৈরাগী গত ১৯ এপ্রিল এই আটজনকে হত্যার অভিযোগে সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

এ মামলার তদন্ত করছে বিমানবন্দর থানা পুলিশ। তারা লাশগুলো বুঝে নেয়।

পুলিশের উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার তৌহিদুল ইসলাম বলেন, “আমরা লাশগুলো গ্রহণ করেছি। লাশের সঙ্গে সব কাগজপত্র এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলোর পোস্টমর্টেম যদি আগে হয়ে থাকে বা তাদের মৃত্যু কী করে হল এ সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ মতামতসহ ডকুমেন্ট আমরা পাই, তাহলে সুরতহাল করে লাশ স্বজনদের দিয়ে দেওয়া হবে।

”আর যদি সেগুলো না থাকে তাহলে আমরা মৃত্যুর কারণ নির্ণয়ের জন্য লাশ ময়নাতদন্ত করব।”

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ রাতের দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। লিবিয়ার জুয়ারা উপকূল থেকে ইউরোপ যাত্রাপথে ৫২ জন যাত্রী এবং একজন চালকসহ নৌকাটি তিউনিসীয় উপকূলে ডুবে যায়। এরপর জীবিত উদ্ধার করা হয় ৪৪ জনকে, ডুবে মারা যায় ৯ জন।

জীবিত উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে ২৭ জন বাংলাদেশি ও আটজন পাকিস্তানের, পাঁচজন সিরিয়ার ও চারজন মিসরের। নিহত ৯ জনের মধ্যে ৮ জন বাংলাদেশি ও অপরজন পাকিস্তানের নাগরিক বলে শনাক্ত করা হয়।

দুর্ঘটনার পরপরই ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা তিউনিসিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় নগর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করে লাশের সুরতহাল, শনাক্তকরণ, দেশি সংস্থার মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করা, মৃত্যু ও মেডিকেল সনদ ইস্যু সম্পন্ন করা হয়। পাশাপাশি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আফ্রিকা উইং মরদেহ ফিরিয়ে আনতে আন্ত:মন্ত্রণালয় সমন্বয় করে।

স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়ের সহায়তা এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ থেকে এর প্রয়োজনীয় ব্যয়ভার মেটানো হচ্ছে বলে জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বিমানবন্দর থানায় নিহত সজল বৈরাগীর বাবা সুনীল বৈরাগীর করা মামলার আসামিরা হলেন- যুবরাজ কাজী (২৪), তার বাবা মোশারফ কাজী (৫০), রহিম শেখ (৪০), কামাল (৩৮), মনিকা (২৮), সবুজ (৪০) ও ওয়াসিম গাইন (৪২)।

পুলিশের এডিসি তৌহিদুল বলেন, ওই মামলা দায়েরের পরপরই প্রধান আসামি যুবরাজ কাজী ও ৪ নম্বর আসামি কামালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

সুনীল বৈরাগীর অভিযোগ, তার ছেলে সজল বৈরাগীকে ১৪ লাখ টাকার বিনিময়ে ‘বৈধ পথে’ ইতালি পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছিল তাদের পূর্ব পরিচিত যুবরাজ কাজী ও তার বাবা মোশারফ কাজী। মোশারফ লিবিয়ায় থাকেন, এখনও সেখানেই রয়েছেন। সজল বৈরাগী ও তার পরিবার এ প্রস্তাবে রাজি হয়।

টাকা দেওয়া ও দেশত্যাগের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, দুই পক্ষের সম্মতিতে গত বছর ১৭ নভেম্বর যুবরাজ কাজীর গোপালগঞ্জের বাসায় আড়াই লাখ টাকা ও পাসপোর্ট দেন সজল। ৩০ ডিসেম্বর তাদের কথামতো শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন সজল। বিমানবন্দরে গাড়ি থেকে নামার আগেই সজলের কাছ থেকে আরও নগদ পাঁচ লাখ টাকা নেন যুবরাজ কাজী। ৩১ ডিসেম্বর সকাল ৬টায় দুবাই রওনা হন তিনি। এরপর সুনীল বৈরাগী গত ৮ জানুয়ারি যুবরাজ কাজীর বাসায় গিয়ে আরও সাড়ে ছয় লাখ টাকা দিয়ে আসেন।

তবে এরপর থেকে ছেলের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেননি দাবি করে সুনীল বলেন, এরপর খবরে জানতে পারেন ১৪ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে লিবিয়া থেকে ইতালি অভিমুখে যাত্রা করা একটি ট্রলারে যে আট বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন তার মধ্যে সজল রয়েছেন।

সুনীল বৈরাগীর অভিযোগ, এই চক্র উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার করে এই তরুণদের। নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও উত্তাল সাগরে তারা ছোট একটি নৌকায় তাদের তুলে দিয়ে পানিতে ডুবিয়ে তাদের মৃত্যু ঘটায়।

বিমানবন্দরে পুলিশের কাছে লাশ হস্তান্তরের সময় ব্র্যাকের কর্মকর্তারাও ছিলেন। প্রতিষ্ঠানের সহযোগী পরিচালক (মাইগ্রেশন ও ইয়ুথ প্লাটফর্ম) শরিফুল হাসান বলেন, ওই নৌকায় থাকা আরও ১১ বাংলাদেশী দেশে ফিরেছেন। তাদের মধ্যে মাদারীপুর রাজৈর উপজেলার দুজন ব্র্যাকের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাদেরও অভিযোগ ওই আট বাংলাদেশীকে হত্যা করা হয়েছে।

শরিফুল বলেন, “এ ঘটনায় যেহেতু একটা মামলা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্তে বিস্তারিত উঠে আসবে আশা করছি।”

back to top