কোটা আন্দোলনে মঙ্গলবার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেয়। বিমানবন্দর সড়কে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে। এতে আটকা পড়ে অনেক যানবাহন। দুর্ভোগে পড়েন মানুষ-সংবাদ
কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছে বিভিন্ন কলেজ ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সড়ক অবরোধের ফলে রাজধানীর অন্তত ২০টি পয়েন্টে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ভোগান্তিতে পড়ে নগরবাসী।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা, কোটা বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার এবং কোটা প্রথার যৌক্তিক সমাধানের দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। ফলে ঢাকার বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। রাজধানী ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ করার খবর পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে ও সরেজমিন ঘুরে উত্তরা, মহাখালী, বনানী, কুড়িল, নতুন বাজার, রামপুরা ব্রিজ, বাড্ডা, সাইন্সল্যাবরোটরি, মিরপুর, মুগদা, বিরুলিয়া, যাত্রাবাড়ীসহ ঢাকার অন্তত ২০টি পয়েন্টে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের রাস্তা অবরোধ করে রাখতে দেখা গেছে। এমনকি ঢাকা ও আশপাশের বেশ কয়েকটি স্থানে রেল লাইন অবরোধ করারও খবর পাওয়া গেছে।
এরমধ্যে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড়ে ঢাকা কলেজ, আইডিয়াল কলেজ, সিটি কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ এবং বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ পাবলিক কলেজের শিক্ষার্থীরা, বসুন্ধরা এলাকায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, বাড্ডা এলাকায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, রামপুরা ব্রিজ এলাকায় ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি ও ইম্পেরিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা, বনানী এলাকায় প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, বেড়িবাঁধ এলাকায় ইউল্যাবের শিক্ষার্থীরা, শনিরআখড়ার কাজলা এলাকায় স্থানীয় কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে রাখে। এছাড়াও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিইউবিটি ও বাংলা কলেজের শিক্ষার্থীরা মিরপুর এলাকায় সড়ক অবরোধ করে। অবরোধের কারণে রাজধানীতে তীব্র যানজট দেখা দেয়।
কোটা আন্দোলনকারীরা সড়ক মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকা আসার পথে এবং ঢাকা থেকে অন্যান্য জেলায় যাওয়ার সময় দুঃসহ ভোগান্তিতে পড়তে হয় মানুষকে। মঙ্গলবার সকাল ৯টার পর বিভিন্ন জেলা থেকে কোনো যানবাহন ঢাকায় প্রবেশ করতে পারেনি, ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেলেও সেসব যানবাহন ঢাকা থেকে বের হওয়ার মুখে আটকে যায়।
অন্যদিকে ঢাকার ভিতরে কোটা আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়া এবং কোথাও কোথাও গাড়ি ভাচুরের কারণে নগরীর ভিতরে যানবাহন চলাচল ছিল অনেক কম। যে কয়েকটি গণপরিবহন সকালে রাস্তায় নেমেছিল তাও দুপুরের আগেই বন্ধ হয়ে যায়। দুপুরের পর নগরীতে গণপরিবহন চলাচল করেনি বললেই চলে। সব মিলিয়ে যানবাহনের সংকটে চরম বিড়ম্বনা এবং ভোগান্তি সহ্য করতে হয়েছে।
রাজধানীর ফার্মগেটে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের মধ্যে মঙ্গলবার দুপুরে সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষের পর ফার্মগেট হয়ে কোনো যানবাহন চলাচল করতে দেয়নি আন্দোলনকারীরা। এমনকি পুলিশ, সাংবাদিক কিংবা জরুরি যানবাহনও আটকে দেয় তারা। ফলে যানবাহন থেকে নেমে যাত্রীদের পায়ে হেটে গন্তব্যে যেতে হয়। এতে বৃদ্ধ, নারী ও শিশুদের চরম কষ্ট ভোগ করতে হয়। কিছু রিকশা সে পথে চললেও তাতে এত বেশি ভাড়া হাকা হয় যে, সাধারণ যাত্রীদের পক্ষে সে ভাড়া গুণে রিকশায় চড়া সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা পুরনো ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে সদরঘাটগামী জনসন রোড অবরোধ করে রাখে দুপুরের আগ থেকেই। ফলে সে পথে যানবাহন চলতে পারেনি। এ কারণে সে এলাকা হয়ে সদরঘাটে যেতে হয়েছে পায়ে হেঁটে। একই ভাবে তাদেরও চরম কষ্ট ভোগ করতে হয়।
বেলা ১২টা থেকে মতিঝিল শাপলা চত্বরসহ আশপাশের সড়ক অবরোধ করে রেখেছিলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন নটরডেম কলেজ, আইডিয়াল কলেজ, সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, ঢাকা ইম্পেরিয়াল কলেজ, ইউনিভার্সিটি অফ এশিয়া প্যাসিফিক, সবুজবাগ সরকারি কলেজসহ আরও বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। বিকেল ৪টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা মতিঝিল শাপলা চত্বর অবরোধ করে রাখায় সেখানকার সব সড়কে কোনো যানবাহন চলতে পারেনি। এ কারণে মতিঝিলের অফিস পাড়া কার্যত : অচল হয়ে পড়েছিল। এতে সাধারণ মানুষ বেশ ভোগান্তিতে পড়েছিল। শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ করার ফলে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয় মতিঝিল ও এর আশপাশের এলাকায়। এ সময় অনেককে গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছাতে দেখা যায়।
রাজধানীর সায়েন্সল্যাব এলাকায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া, পাল্টা-ধাওয়া হয়। সংঘাত শুরুর পরপরই সে এলাকায় যানবাহন ও দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। লোকজনও যে যেদিকে পারে দৌড়ে সরে যায়। অনেকে দৌড়ে পালাতে গিয়ে রিকশার সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে আহত হন। তবে বেশি ভোগান্তি হয় শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের।
কোটা আন্দোলনে মঙ্গলবার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেয়। বিমানবন্দর সড়কে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে। এতে আটকা পড়ে অনেক যানবাহন। দুর্ভোগে পড়েন মানুষ-সংবাদ
মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই ২০২৪
কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছে বিভিন্ন কলেজ ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সড়ক অবরোধের ফলে রাজধানীর অন্তত ২০টি পয়েন্টে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ভোগান্তিতে পড়ে নগরবাসী।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা, কোটা বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার এবং কোটা প্রথার যৌক্তিক সমাধানের দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। ফলে ঢাকার বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। রাজধানী ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ করার খবর পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে ও সরেজমিন ঘুরে উত্তরা, মহাখালী, বনানী, কুড়িল, নতুন বাজার, রামপুরা ব্রিজ, বাড্ডা, সাইন্সল্যাবরোটরি, মিরপুর, মুগদা, বিরুলিয়া, যাত্রাবাড়ীসহ ঢাকার অন্তত ২০টি পয়েন্টে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের রাস্তা অবরোধ করে রাখতে দেখা গেছে। এমনকি ঢাকা ও আশপাশের বেশ কয়েকটি স্থানে রেল লাইন অবরোধ করারও খবর পাওয়া গেছে।
এরমধ্যে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড়ে ঢাকা কলেজ, আইডিয়াল কলেজ, সিটি কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ এবং বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ পাবলিক কলেজের শিক্ষার্থীরা, বসুন্ধরা এলাকায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, বাড্ডা এলাকায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, রামপুরা ব্রিজ এলাকায় ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি ও ইম্পেরিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা, বনানী এলাকায় প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, বেড়িবাঁধ এলাকায় ইউল্যাবের শিক্ষার্থীরা, শনিরআখড়ার কাজলা এলাকায় স্থানীয় কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে রাখে। এছাড়াও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিইউবিটি ও বাংলা কলেজের শিক্ষার্থীরা মিরপুর এলাকায় সড়ক অবরোধ করে। অবরোধের কারণে রাজধানীতে তীব্র যানজট দেখা দেয়।
কোটা আন্দোলনকারীরা সড়ক মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকা আসার পথে এবং ঢাকা থেকে অন্যান্য জেলায় যাওয়ার সময় দুঃসহ ভোগান্তিতে পড়তে হয় মানুষকে। মঙ্গলবার সকাল ৯টার পর বিভিন্ন জেলা থেকে কোনো যানবাহন ঢাকায় প্রবেশ করতে পারেনি, ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেলেও সেসব যানবাহন ঢাকা থেকে বের হওয়ার মুখে আটকে যায়।
অন্যদিকে ঢাকার ভিতরে কোটা আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়া এবং কোথাও কোথাও গাড়ি ভাচুরের কারণে নগরীর ভিতরে যানবাহন চলাচল ছিল অনেক কম। যে কয়েকটি গণপরিবহন সকালে রাস্তায় নেমেছিল তাও দুপুরের আগেই বন্ধ হয়ে যায়। দুপুরের পর নগরীতে গণপরিবহন চলাচল করেনি বললেই চলে। সব মিলিয়ে যানবাহনের সংকটে চরম বিড়ম্বনা এবং ভোগান্তি সহ্য করতে হয়েছে।
রাজধানীর ফার্মগেটে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের মধ্যে মঙ্গলবার দুপুরে সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষের পর ফার্মগেট হয়ে কোনো যানবাহন চলাচল করতে দেয়নি আন্দোলনকারীরা। এমনকি পুলিশ, সাংবাদিক কিংবা জরুরি যানবাহনও আটকে দেয় তারা। ফলে যানবাহন থেকে নেমে যাত্রীদের পায়ে হেটে গন্তব্যে যেতে হয়। এতে বৃদ্ধ, নারী ও শিশুদের চরম কষ্ট ভোগ করতে হয়। কিছু রিকশা সে পথে চললেও তাতে এত বেশি ভাড়া হাকা হয় যে, সাধারণ যাত্রীদের পক্ষে সে ভাড়া গুণে রিকশায় চড়া সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা পুরনো ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে সদরঘাটগামী জনসন রোড অবরোধ করে রাখে দুপুরের আগ থেকেই। ফলে সে পথে যানবাহন চলতে পারেনি। এ কারণে সে এলাকা হয়ে সদরঘাটে যেতে হয়েছে পায়ে হেঁটে। একই ভাবে তাদেরও চরম কষ্ট ভোগ করতে হয়।
বেলা ১২টা থেকে মতিঝিল শাপলা চত্বরসহ আশপাশের সড়ক অবরোধ করে রেখেছিলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন নটরডেম কলেজ, আইডিয়াল কলেজ, সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, ঢাকা ইম্পেরিয়াল কলেজ, ইউনিভার্সিটি অফ এশিয়া প্যাসিফিক, সবুজবাগ সরকারি কলেজসহ আরও বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। বিকেল ৪টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা মতিঝিল শাপলা চত্বর অবরোধ করে রাখায় সেখানকার সব সড়কে কোনো যানবাহন চলতে পারেনি। এ কারণে মতিঝিলের অফিস পাড়া কার্যত : অচল হয়ে পড়েছিল। এতে সাধারণ মানুষ বেশ ভোগান্তিতে পড়েছিল। শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ করার ফলে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয় মতিঝিল ও এর আশপাশের এলাকায়। এ সময় অনেককে গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছাতে দেখা যায়।
রাজধানীর সায়েন্সল্যাব এলাকায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া, পাল্টা-ধাওয়া হয়। সংঘাত শুরুর পরপরই সে এলাকায় যানবাহন ও দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। লোকজনও যে যেদিকে পারে দৌড়ে সরে যায়। অনেকে দৌড়ে পালাতে গিয়ে রিকশার সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে আহত হন। তবে বেশি ভোগান্তি হয় শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের।