alt

জাতীয়

হামলা, ধ্বংসযজ্ঞের বিচারের ভার জনগণকে দিলেন প্রধানমন্ত্রী

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪

মেট্রোরেলের ধ্বংসযজ্ঞ দেখে ব্যথিত, বেদনার্ত প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সকালে মিরপুর-১০ নম্বরে মেট্রোরেল স্টেশন পরিদর্শনে এসে গণমাধ্যমের উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, ‘দেশের জনগণকে তাদের (দেশব্যাপী তা-বের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের) বিচার করতে হবে। আমি জনগণের কাছে ন্যায়বিচার চাইছি। ধ্বংসযজ্ঞের বর্ণনা দেয়ার মতো আমার আর কোনো ভাষা নেই।’

এছাড়া যারা কোটা আন্দেলনকে পুঁজি করে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে তাদের প্রতিহত করারও আহ্বান জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, এই মেট্রো রেল করবার সময়ও অনেক বাধা-বিঘœ আমাদের অতিক্রম করতে হয়েছিল। সব বাধা বিঘœ অতিক্রম করে এই মেট্রো রেল আমরা করে দিয়েছি এবং সময়ের আগেই আমরা করতে পেরেছি। আজ মেট্রো রেল বন্ধ কারণ, এই ষ্টেশন সেভাবে ধ্বংস হয়েছে যেটা সম্পূর্ণ ডিজিটাল ও ইলেকট্রনিক সিস্টেম, সম্পূর্ণ মডার্ন। এটাতো কতদিনে ঠিক হবে আমি জানি না। কস্ট পাবে কিন্তু মানুষ।

সরকারপ্রধান বলেন, এটা তার সরকার করে দিয়েছে সকলে যাতে সময়মতো স্কুল কলেজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা নিজ নিজ কর্মস্থলে যেতে পারেন এবং কর্মস্থল থেকে আবার ঘরে ফিরে অন্তত কিছুটা সময় পরিবারের সঙ্গে কাটাতে পারেন। আর্থিত দিকটাও সাশ্রয় হয়। সেসব কথা চিন্তা করেই তার সরকার দেশের মানুষের কল্যাণে মেট্রো রেলসহ বিভিন্ন যোগাযোগের মাধ্যম নির্মাণ করে দিয়েছে। অবকাঠামোর উন্নয়ন ঘটিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী মেট্রো রেল ক্ষতিগ্রস্ত করার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, এতে আপনারাই কস্ট পাবেন। দেশের মানুষই কস্ট পাবে। এই ঢাকা শহরের মানুষই কষ্ট পাবেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আবার ট্রাফিক জ্যামে পড়ে থাকতে হবে। কর্মস্থলে সময়মতো পৌঁছানো আবার ফেরত আসায় দীর্ঘ সময় লাগবে, বসে বসে সেই ট্রাফিক জ্যামে কষ্ট পাওয়া থেকে আপনাদের এই কষ্ট লাঘব করতে চেয়েছিলাম।

তিনি বলেন, ‘তাই আমি আপনাদেরকেই বলবো যে কষ্ট আমি লাঘব করতে চেয়েছি সেই কষ্ট আবার যারা সৃষ্টি করলো তাদের বিরুদ্ধে আপনাদেরই রুখে দাঁড়াতে হবে। দেশবাসীকেই রুখে দাঁড়াতে হবে। এর বিচার তাদের করতে হবে। আমি তাদের কাছেই বিচার চাই।’

এর আগে ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রো রেল স্টেশন পরিদর্শন করেন তিনি। তিনি পুরো স্টেশন ঘুরে ঘুরে দেখেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে গত শুক্রবার তা-বলীলা চালানো হয় মেট্রো রেল স্টেশনে। সন্ত্রাসীদের হামলায় অন্যান্য স্থাপনার মতই ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় আধুনিক গণপরিবহনের এই মেট্রো স্টেশন। ভাংচুর করা হয় সিসি ক্যামেরা, এলইডি মনিটর, টিকেট কাটার মেশিনসহ বিভিন্ন জায়গা। লুট করা হয় মূল্যবান অনেক জিনিষ।

শেখ হাসিনা বলেন, যে সব স্থাপনা মানুষের জীবনযাত্রা সহজ করে বেছে বেছে সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। যারা উন্নয়নবিরোধী এসব কর্মকা-ে জড়িত তাদের মানসিকতা কোনো ধরনের সে প্রশ্নও তোলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। আজকে বাংলাদেশের উন্নয়ন দৃশ্যমান। বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। যারা আজ বিদেশে যাচ্ছে, তারা সেই সম্মান পাচ্ছে। আগে সেটা পেত না। ভিক্ষুকের জাতি হিসেবে আমাদেরকে একটা বঞ্চনার স্বীকার হতে হয়েছে। আজকে সেটা ছিল না। কিন্তু আমি জানি না এই যে প্রতিটি স্থাপনা তৈরি করেছি যেগুলো মানুষকে সেবা দেয়, তাদের জীবনযাত্রা সহজ করেছে। মানুষের জীবনকে উন্নত করেছে ঠিক সেইগুলো ভেঙে সম্পূর্ণ নষ্ট করে দেয়া কী ধরনের মানসিকতা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ধ্বংসের চিহ্ন দেখলাম এটা বিশ্বাস হতে চায় না যে এদেশের মানুষ এটা করতে পারে। কিন্তু, সেই কাজই করেছে।’

তিনি বলেন, আমার দুঃখ লাগে ২০১৮ সালে যখন ছাত্ররা কোটাবিরোধী আন্দোলন করলো আমি সঙ্গে সঙ্গে সেটা মেনে নিয়ে কোটা বাতিল করে দিলাম। এর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার থেকে মামলা করা হলো সরকারের জারি করা পরিপত্র হাইকোর্টে বাতিল হলো। সেটার কিরুদ্ধে সরকার আপিল করলো। সেই সময়ে হাইকোর্টের রায়কে স্থিতাবস্থা দিয়ে তারা একটা সময় (সুপ্রিম কোর্ট) দিলেন। এই সময়ের মধ্যে সকলের বক্তব্য শুনে তারা একটা সিদ্ধান্ত দেবেন।

তিনি বলেন, ‘আমি কোটা আন্দোরনকারী থেকে শুরু করে দেশবাসীকে বললাম একটু ধৈর্য ধারণ করতে হবে। এটাতো সরকার আপিল করেছে, তাদের হতাশ হতে হবে না। সেই আশ্বাস দিয়ে তাদেরকে বললাম বিরত থাকতে। একটুতো ধৈর্য ধরতে হবে। যে কোনো নাগরিক কেইতো আইন আদালত মেনে চলতে হবে। আর এই এর সুযোগ নিয়ে সেই ১৭ জুলাই থেকে যেভাবে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ শুরু হলো।’

তিনি বলেন, ’৭৫ এর পর ২৯টি বছর এ দেশের মানুষ বঞ্চিত ছিল। সেখান থেকে আওয়ামী লীগ সরকারে এসে জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা, বিদ্যুৎ, চিকিৎসাসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া, রাস্তা-ঘাট, পুল-ব্রীজসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণে গত ১৫ বছরে মানুষের জীবন যাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।

তিনি প্রশ্ন করেন এ গুলো কাদের জন্য? এই মেট্রো রেলে কি আমি চড়বো? আমাদের সরকার ও মন্ত্রীরা শুধু চড়বে না জনগণ চড়বে, এটা আমার প্রশ্ন। এর উপরকারিতা আপনারা পাচ্ছেন। এদেশের সাধারণ জনগণ পাচ্ছেন। তাহলে এটার ওপর এতো ক্ষোভ কেন? আমরা বার বার অনুরোধ সত্বেও আন্দোলন, কোটাবিরোধী আন্দোলন। আদালতের রায় নিয়েও আমরা বারবার কথা বলেছি, বোঝাতে চেষ্টা করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে মন্ত্রণালয়ের যারা এবং এই মেট্রো রেল নির্মাণ কাজের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকেরই চোখের পানি পড়ছে। এটা দেখে যে কীভাবে এই দানবীয় কর্মকা- হলো, আর কীভাবে করলো?

বাকরুদ্ধ কণ্ঠে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছি। এই অ্যালাইনমেন্টে (মেট্রোরেলের) আমি পরিবর্তন এমনভাবে করে দিয়েছি যাতে দ্রুত সময়ে হয়।

তিনি এটাকে আরো বাড়িয়ে একেবারে মতিঝিল ও কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত করে দিয়েছেন। যাতে মানুষ আরো সুন্দরভাবে চলতে পারে। যারা এর ওপর আঘাত করলো এই মেট্রো রেল এভাবে ভাঙচুর করলো, যেখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ চলাচল করতে পারতো অল্প ময়ের মধ্যে। এদেশের মানুষ কত খুশি ছিল। এই আনন্দ যারা নষ্ট করলো, জনগণের নির্বিঘেœ চলাচলের পথ যারা রুদ্ধ করলো তাদের বিচার এদেশের জনগণকেই করতে হবে। আমি সেই বিচারের দিকে চেয়ে আছি। আমি এর নিন্দা জানানোর ভাষা পাচ্ছি না।

সাবেক শিক্ষা সচিব নজরুলসহ ১০ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা

কোভিড: আরও ২৫ জন শনাক্ত, মৃত্যু ১

শ্রমিকদের জন্য বিশেষ ভাড়া : আরও ৪ রুটে চালু করলো বিমান

স্বামীসহ সাবেক রাষ্ট্রদূত মুনার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু

হাসিনাকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ

আগামী ৫ দিন অতিভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস, কমবে তাপমাত্রা

গ্রেপ্তারের পর দুই মামলার আসামিকে ছেড়ে দিলো পুলিশ

ছবি

ডেঙ্গুতে আরও ২৩৪ জন আক্রান্ত, মোট মৃত্যু ৩০ জনের

ছবি

বসুন্ধরা চেয়ারম্যানের ছেলেদের সম্পত্তির তথ্য জানিয়ে যুক্তরাজ্যে চিঠি

ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে বন্দরের কন্টেইনার জট

ছবি

নগর ভবনে ইশরাকের সভা, ব্যানারে ‘মাননীয় মেয়র’ লেখা

ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা ফের শুরু মঙ্গলবার

ছবি

ঈদযাত্রার ১৫ দিনে সড়কে নিহত ৩৯০, আহত ১১৮২

ছবি

লন্ডন বৈঠকের সিদ্ধান্ত দ্রুত নির্বাচন কমিশনকে জানান: সরকারকে সালাহউদ্দিন

ছবি

বিতর্কিত তিন নির্বাচনে জড়িতদের ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

গুম ঠেকাতে স্থায়ী কমিশন গঠনে দ্রুতই আইন হচ্ছে

ছবি

ঈদের ছুটির পর ফের আন্দোলনে সচিবালয়ের কর্মচারীরা

ছবি

ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তিতে এনটিআরসিএর রেকর্ড সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ

ছবি

‘জুলাই সনদ’ চূড়ান্তের পথে, প্রবাসীদের ভোটাধিকারের বিষয়েও ভাবছে সরকার

লেবানন প্রবাসী বাংলাদেশীদের চলাফেরায় সতর্ক থাকার অনুরোধ

ছবি

ব্রিটিশ রাজার সম্মাননা পেলেন সিআরপি প্রতিষ্ঠাতা ভ্যালেরি টেইলরসহ তিন জন স্বেচ্ছাসেবক

ছবি

গুম প্রতিরোধ ও অভিযোগ নিষ্পত্তিতে বাংলাদেশকে আরও সহযোগিতা করবে জাতিসংঘ

ছবি

গুম নিয়ে জাতিসংঘের প্রশংসা, আইন আসছে জুলাইয়ের আগেই: আসিফ নজরুল

ছবি

সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের কিছু কিছু জায়গায় পুনর্বিবেচনার সুযোগ রয়েছে: আইন উপদেষ্টা

হাজারীবাগে তরুণ খুন, পরিবারের দাবি বাবাই হত্যাকারী

আ’লীগ নেতার কারাগারে আত্মহত্যার চেষ্টা, ঢামেকে মৃত্যু

এক ঘরে দুই পীর হতে পারে না: বদিউল

‘মেয়েকে বিয়ে না দেয়ায়’ বাবাকে পিটিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ৩

ছবি

কুয়াকাটায় এক কোরাল বিক্রি ২৪ হাজার ১শ’ ৫০ টাকায়

দেড় লাখ টাকায় ৫ যুবককে ছাড়ার অভিযোগ

করোনাভাইরাসে আরও ২৬ জন শনাক্ত, মৃত্যু ১

জয়সহ অনেকে জাতীয় পতাকা পরিবর্তনের গুজব ছড়াচ্ছেন: প্রেস উইং

সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ সংকট

ছবি

ঈদের ছুটি শেষে খুলেছে কুয়েট, ক্লাস শুরু নিয়ে অনিশ্চয়তা

ছবি

এনটিআরসিএ সনদধারীদের সচিবালয়মুখী মিছিলে সাউন্ড গ্রেনেড ও লাঠিপেটা

পাচার অর্থ ফেরাতে আইনি প্রক্রিয়ায় ধাপে ধাপে এগোতে হবে: গভর্নর

tab

জাতীয়

হামলা, ধ্বংসযজ্ঞের বিচারের ভার জনগণকে দিলেন প্রধানমন্ত্রী

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

মেট্রোরেলের ধ্বংসযজ্ঞ দেখে ব্যথিত, বেদনার্ত প্রধানমন্ত্রী

শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪

প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সকালে মিরপুর-১০ নম্বরে মেট্রোরেল স্টেশন পরিদর্শনে এসে গণমাধ্যমের উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, ‘দেশের জনগণকে তাদের (দেশব্যাপী তা-বের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের) বিচার করতে হবে। আমি জনগণের কাছে ন্যায়বিচার চাইছি। ধ্বংসযজ্ঞের বর্ণনা দেয়ার মতো আমার আর কোনো ভাষা নেই।’

এছাড়া যারা কোটা আন্দেলনকে পুঁজি করে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে তাদের প্রতিহত করারও আহ্বান জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, এই মেট্রো রেল করবার সময়ও অনেক বাধা-বিঘœ আমাদের অতিক্রম করতে হয়েছিল। সব বাধা বিঘœ অতিক্রম করে এই মেট্রো রেল আমরা করে দিয়েছি এবং সময়ের আগেই আমরা করতে পেরেছি। আজ মেট্রো রেল বন্ধ কারণ, এই ষ্টেশন সেভাবে ধ্বংস হয়েছে যেটা সম্পূর্ণ ডিজিটাল ও ইলেকট্রনিক সিস্টেম, সম্পূর্ণ মডার্ন। এটাতো কতদিনে ঠিক হবে আমি জানি না। কস্ট পাবে কিন্তু মানুষ।

সরকারপ্রধান বলেন, এটা তার সরকার করে দিয়েছে সকলে যাতে সময়মতো স্কুল কলেজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা নিজ নিজ কর্মস্থলে যেতে পারেন এবং কর্মস্থল থেকে আবার ঘরে ফিরে অন্তত কিছুটা সময় পরিবারের সঙ্গে কাটাতে পারেন। আর্থিত দিকটাও সাশ্রয় হয়। সেসব কথা চিন্তা করেই তার সরকার দেশের মানুষের কল্যাণে মেট্রো রেলসহ বিভিন্ন যোগাযোগের মাধ্যম নির্মাণ করে দিয়েছে। অবকাঠামোর উন্নয়ন ঘটিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী মেট্রো রেল ক্ষতিগ্রস্ত করার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, এতে আপনারাই কস্ট পাবেন। দেশের মানুষই কস্ট পাবে। এই ঢাকা শহরের মানুষই কষ্ট পাবেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আবার ট্রাফিক জ্যামে পড়ে থাকতে হবে। কর্মস্থলে সময়মতো পৌঁছানো আবার ফেরত আসায় দীর্ঘ সময় লাগবে, বসে বসে সেই ট্রাফিক জ্যামে কষ্ট পাওয়া থেকে আপনাদের এই কষ্ট লাঘব করতে চেয়েছিলাম।

তিনি বলেন, ‘তাই আমি আপনাদেরকেই বলবো যে কষ্ট আমি লাঘব করতে চেয়েছি সেই কষ্ট আবার যারা সৃষ্টি করলো তাদের বিরুদ্ধে আপনাদেরই রুখে দাঁড়াতে হবে। দেশবাসীকেই রুখে দাঁড়াতে হবে। এর বিচার তাদের করতে হবে। আমি তাদের কাছেই বিচার চাই।’

এর আগে ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রো রেল স্টেশন পরিদর্শন করেন তিনি। তিনি পুরো স্টেশন ঘুরে ঘুরে দেখেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে গত শুক্রবার তা-বলীলা চালানো হয় মেট্রো রেল স্টেশনে। সন্ত্রাসীদের হামলায় অন্যান্য স্থাপনার মতই ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় আধুনিক গণপরিবহনের এই মেট্রো স্টেশন। ভাংচুর করা হয় সিসি ক্যামেরা, এলইডি মনিটর, টিকেট কাটার মেশিনসহ বিভিন্ন জায়গা। লুট করা হয় মূল্যবান অনেক জিনিষ।

শেখ হাসিনা বলেন, যে সব স্থাপনা মানুষের জীবনযাত্রা সহজ করে বেছে বেছে সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। যারা উন্নয়নবিরোধী এসব কর্মকা-ে জড়িত তাদের মানসিকতা কোনো ধরনের সে প্রশ্নও তোলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। আজকে বাংলাদেশের উন্নয়ন দৃশ্যমান। বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। যারা আজ বিদেশে যাচ্ছে, তারা সেই সম্মান পাচ্ছে। আগে সেটা পেত না। ভিক্ষুকের জাতি হিসেবে আমাদেরকে একটা বঞ্চনার স্বীকার হতে হয়েছে। আজকে সেটা ছিল না। কিন্তু আমি জানি না এই যে প্রতিটি স্থাপনা তৈরি করেছি যেগুলো মানুষকে সেবা দেয়, তাদের জীবনযাত্রা সহজ করেছে। মানুষের জীবনকে উন্নত করেছে ঠিক সেইগুলো ভেঙে সম্পূর্ণ নষ্ট করে দেয়া কী ধরনের মানসিকতা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ধ্বংসের চিহ্ন দেখলাম এটা বিশ্বাস হতে চায় না যে এদেশের মানুষ এটা করতে পারে। কিন্তু, সেই কাজই করেছে।’

তিনি বলেন, আমার দুঃখ লাগে ২০১৮ সালে যখন ছাত্ররা কোটাবিরোধী আন্দোলন করলো আমি সঙ্গে সঙ্গে সেটা মেনে নিয়ে কোটা বাতিল করে দিলাম। এর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার থেকে মামলা করা হলো সরকারের জারি করা পরিপত্র হাইকোর্টে বাতিল হলো। সেটার কিরুদ্ধে সরকার আপিল করলো। সেই সময়ে হাইকোর্টের রায়কে স্থিতাবস্থা দিয়ে তারা একটা সময় (সুপ্রিম কোর্ট) দিলেন। এই সময়ের মধ্যে সকলের বক্তব্য শুনে তারা একটা সিদ্ধান্ত দেবেন।

তিনি বলেন, ‘আমি কোটা আন্দোরনকারী থেকে শুরু করে দেশবাসীকে বললাম একটু ধৈর্য ধারণ করতে হবে। এটাতো সরকার আপিল করেছে, তাদের হতাশ হতে হবে না। সেই আশ্বাস দিয়ে তাদেরকে বললাম বিরত থাকতে। একটুতো ধৈর্য ধরতে হবে। যে কোনো নাগরিক কেইতো আইন আদালত মেনে চলতে হবে। আর এই এর সুযোগ নিয়ে সেই ১৭ জুলাই থেকে যেভাবে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ শুরু হলো।’

তিনি বলেন, ’৭৫ এর পর ২৯টি বছর এ দেশের মানুষ বঞ্চিত ছিল। সেখান থেকে আওয়ামী লীগ সরকারে এসে জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা, বিদ্যুৎ, চিকিৎসাসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া, রাস্তা-ঘাট, পুল-ব্রীজসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণে গত ১৫ বছরে মানুষের জীবন যাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।

তিনি প্রশ্ন করেন এ গুলো কাদের জন্য? এই মেট্রো রেলে কি আমি চড়বো? আমাদের সরকার ও মন্ত্রীরা শুধু চড়বে না জনগণ চড়বে, এটা আমার প্রশ্ন। এর উপরকারিতা আপনারা পাচ্ছেন। এদেশের সাধারণ জনগণ পাচ্ছেন। তাহলে এটার ওপর এতো ক্ষোভ কেন? আমরা বার বার অনুরোধ সত্বেও আন্দোলন, কোটাবিরোধী আন্দোলন। আদালতের রায় নিয়েও আমরা বারবার কথা বলেছি, বোঝাতে চেষ্টা করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে মন্ত্রণালয়ের যারা এবং এই মেট্রো রেল নির্মাণ কাজের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকেরই চোখের পানি পড়ছে। এটা দেখে যে কীভাবে এই দানবীয় কর্মকা- হলো, আর কীভাবে করলো?

বাকরুদ্ধ কণ্ঠে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছি। এই অ্যালাইনমেন্টে (মেট্রোরেলের) আমি পরিবর্তন এমনভাবে করে দিয়েছি যাতে দ্রুত সময়ে হয়।

তিনি এটাকে আরো বাড়িয়ে একেবারে মতিঝিল ও কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত করে দিয়েছেন। যাতে মানুষ আরো সুন্দরভাবে চলতে পারে। যারা এর ওপর আঘাত করলো এই মেট্রো রেল এভাবে ভাঙচুর করলো, যেখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ চলাচল করতে পারতো অল্প ময়ের মধ্যে। এদেশের মানুষ কত খুশি ছিল। এই আনন্দ যারা নষ্ট করলো, জনগণের নির্বিঘেœ চলাচলের পথ যারা রুদ্ধ করলো তাদের বিচার এদেশের জনগণকেই করতে হবে। আমি সেই বিচারের দিকে চেয়ে আছি। আমি এর নিন্দা জানানোর ভাষা পাচ্ছি না।

back to top