বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফলে গ্রীনহাউজ গ্যাস ও তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, এ কারণে প্রতিনিয়ত জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে; ফলে বিশ্বব্যাপী নানান দূর্যোগ প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে বাঁচতে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তাই নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার ও টেকসই উৎপাদন নিশ্চিত করতে নীতিনির্ধারকদের উপর আরো চাপ প্রয়োগ করতে হবে।
গতকাল বায়ুন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর আয়োজনে ও ২৪টি পরিবেশবাদী সংগঠনের সহযোগীতায় প্রেস ইন্সটিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)তে ‘প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন নিউজ সাংবাদিকদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং আসন্ন কপ ২৯ এর সংবাদ গ্রহনের প্রস্তুতি’ শীর্ষক একটি মেন্টরিং প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে আলোচনায় এসব বিষয় উঠে আসে।
মুল প্রবন্ধে অ্যাকশন এইডের আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বায়ো এনার্জি উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের যথেষ্ট সক্ষমতা রয়েছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটের উপর ভিত্তি করে এনার্জি ট্রানজিশন মডেল তৈরি করতে হবে। তাহলে আমরা সফলতার সহিত নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে সক্ষম হব। আমাদেরকে নতুন করে লস এন্ড ড্যামেজ ফান্ডের উত্থাপন করে উন্নত বিশ্বের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ সংগ্রহ করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘জলবায়ু সম্মেলনে সাধারণত পাঁচটি পৃথক সেশন একই সাথে অনুষ্ঠিত হয়, প্রতিটি সেশনই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই কপের ইভেন্টগুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা নিয়ে সবার আগে প্রস্তুতি নিতে হবে, যাতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করা যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘কপ, সিএমপি, সিএমএ, এসবিএসটিএ এই সকল সম্মেলন উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য উন্নত প্রযুক্তির জন্য আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের কথা বলে, কিন্তু বাস্তবে তারা সেই সহযোগিতা যথাযথভাবে প্রদান করেনি।’
‘জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনের লক্ষ্যে আমাদের রেসপন্স মেকানিজমকে উন্নত করতে হবে। তাছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সরাসরি ও পরোক্ষ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। নিয়মিত এজেন্ডাগুলোর উপর গবেষণা চালিয়ে যেতে হবে এবং একটি কার্যকর লজিক্যাল ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করতে হবে’, বলে মত দেন তিনি।
প্রধান অতিথি সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক ধরনের পরিবেশগত সমস্যা বিদ্যমান, যা জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির সাথে যুক্ত হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার, এবং তাই আমাদের এই ব্যবহার কমাতে হবে।’
তিনি উন্নয়নের মডেলগুলোতে পরিবর্তন আনতে ও দূষণ রোধে সকলে মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
রিজওয়ানা হাসান বলেন,‘জলবায়ু পরিবর্তনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা আমাদের জন্য জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমাদের এই সম্মেলনগুলোতে অংশগ্রহণ করতে হবে এবং দক্ষতার সাথে সংবাদ সংগ্রহ করতে হবে। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে আমাদের দেশের এবং আন্তর্জাতিকভাবে ঝুঁকিতে থাকা জনগণের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা এবং কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করাই আমাদের দায়িত্ব।’
বিশেষ অতিথি হিসাবে সুইডেন দূতাবাস বাংলাদেশ এর ফার্স্ট সেক্রেটারি, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং ডেপুটি হেড, ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন সেকশন এর নাইওকা মার্টিনেজ ব্যাকস্ট্রোম বলেন, ‘বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন বিষয়টি খুবই জটিল। কপ ২৯ কাভারে সাংবাদিকদের ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে জলবায়ু সমস্যাকে স্বতন্ত্র সমস্যা হিসেবে দেখতে হবে। সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থাগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে একসাথে কাজ করতে হবে।’
ক্যাপস এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, ‘উন্নত শহরগুলো যারা বর্তমানে পরিবেশ বিষয়ক নীতি নির্ধারণ করছে ১০০ বছর আগে তারাই দূষিত শহরের তালিকার শীর্ষে ছিলো। এই দীর্ঘমেয়াদী পরিবেশ দূষণ গুলোর ফলাফল হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তন এর প্রভাব আমরা দেখতে পাচ্ছি’।
তিনি আরো বলেন ‘বায়ু দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন একই মুদ্রার দুটো পিঠ, স্থানীয় পর্যায়ে বায়ু দূষণ সমস্যার সমাধান সহ বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে জলবায়ু সম্মেলনের অংশগ্রহণের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষায় কাজ করতে পারে প্রিন্ট এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া।’
সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের নির্বাহী সভাপতি কেরামত উল্লাহ বিপ্লব বলেন, বিশ্ব পরিবর্তন হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য। জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে নারীদের মধ্যে কম বয়সে বার্ধক্য দেখা দিচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন হ্রাস করার পদ্ধতি গুলো সম্পর্কে প্রচার প্রচারণা বৃদ্ধি করতে হবে এবং যোগাযোগ বাড়াতে হবে।
ক্যাপস চেয়ারম্যান আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ ও সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আব্দুল্লাহ। জলবায়ু সম্মেলন কাভার করতে ইচ্ছুক সাংবাদিকদের দক্ষতা উন্নয়ন ও জলবায়ু সম্মলেনে সংবাদ সংগ্রহের বিভিন্ন কলাকৌশল সম্পর্কে জানাতে প্রোগ্রামটি আয়োজন করা হয়।
রোববার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪
বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফলে গ্রীনহাউজ গ্যাস ও তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, এ কারণে প্রতিনিয়ত জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে; ফলে বিশ্বব্যাপী নানান দূর্যোগ প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে বাঁচতে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তাই নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার ও টেকসই উৎপাদন নিশ্চিত করতে নীতিনির্ধারকদের উপর আরো চাপ প্রয়োগ করতে হবে।
গতকাল বায়ুন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর আয়োজনে ও ২৪টি পরিবেশবাদী সংগঠনের সহযোগীতায় প্রেস ইন্সটিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)তে ‘প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন নিউজ সাংবাদিকদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং আসন্ন কপ ২৯ এর সংবাদ গ্রহনের প্রস্তুতি’ শীর্ষক একটি মেন্টরিং প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে আলোচনায় এসব বিষয় উঠে আসে।
মুল প্রবন্ধে অ্যাকশন এইডের আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বায়ো এনার্জি উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের যথেষ্ট সক্ষমতা রয়েছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটের উপর ভিত্তি করে এনার্জি ট্রানজিশন মডেল তৈরি করতে হবে। তাহলে আমরা সফলতার সহিত নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে সক্ষম হব। আমাদেরকে নতুন করে লস এন্ড ড্যামেজ ফান্ডের উত্থাপন করে উন্নত বিশ্বের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ সংগ্রহ করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘জলবায়ু সম্মেলনে সাধারণত পাঁচটি পৃথক সেশন একই সাথে অনুষ্ঠিত হয়, প্রতিটি সেশনই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই কপের ইভেন্টগুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা নিয়ে সবার আগে প্রস্তুতি নিতে হবে, যাতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করা যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘কপ, সিএমপি, সিএমএ, এসবিএসটিএ এই সকল সম্মেলন উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য উন্নত প্রযুক্তির জন্য আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের কথা বলে, কিন্তু বাস্তবে তারা সেই সহযোগিতা যথাযথভাবে প্রদান করেনি।’
‘জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনের লক্ষ্যে আমাদের রেসপন্স মেকানিজমকে উন্নত করতে হবে। তাছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সরাসরি ও পরোক্ষ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। নিয়মিত এজেন্ডাগুলোর উপর গবেষণা চালিয়ে যেতে হবে এবং একটি কার্যকর লজিক্যাল ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করতে হবে’, বলে মত দেন তিনি।
প্রধান অতিথি সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক ধরনের পরিবেশগত সমস্যা বিদ্যমান, যা জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির সাথে যুক্ত হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার, এবং তাই আমাদের এই ব্যবহার কমাতে হবে।’
তিনি উন্নয়নের মডেলগুলোতে পরিবর্তন আনতে ও দূষণ রোধে সকলে মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
রিজওয়ানা হাসান বলেন,‘জলবায়ু পরিবর্তনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা আমাদের জন্য জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমাদের এই সম্মেলনগুলোতে অংশগ্রহণ করতে হবে এবং দক্ষতার সাথে সংবাদ সংগ্রহ করতে হবে। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে আমাদের দেশের এবং আন্তর্জাতিকভাবে ঝুঁকিতে থাকা জনগণের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা এবং কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করাই আমাদের দায়িত্ব।’
বিশেষ অতিথি হিসাবে সুইডেন দূতাবাস বাংলাদেশ এর ফার্স্ট সেক্রেটারি, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং ডেপুটি হেড, ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন সেকশন এর নাইওকা মার্টিনেজ ব্যাকস্ট্রোম বলেন, ‘বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন বিষয়টি খুবই জটিল। কপ ২৯ কাভারে সাংবাদিকদের ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে জলবায়ু সমস্যাকে স্বতন্ত্র সমস্যা হিসেবে দেখতে হবে। সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থাগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে একসাথে কাজ করতে হবে।’
ক্যাপস এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, ‘উন্নত শহরগুলো যারা বর্তমানে পরিবেশ বিষয়ক নীতি নির্ধারণ করছে ১০০ বছর আগে তারাই দূষিত শহরের তালিকার শীর্ষে ছিলো। এই দীর্ঘমেয়াদী পরিবেশ দূষণ গুলোর ফলাফল হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তন এর প্রভাব আমরা দেখতে পাচ্ছি’।
তিনি আরো বলেন ‘বায়ু দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন একই মুদ্রার দুটো পিঠ, স্থানীয় পর্যায়ে বায়ু দূষণ সমস্যার সমাধান সহ বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে জলবায়ু সম্মেলনের অংশগ্রহণের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষায় কাজ করতে পারে প্রিন্ট এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া।’
সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের নির্বাহী সভাপতি কেরামত উল্লাহ বিপ্লব বলেন, বিশ্ব পরিবর্তন হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য। জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে নারীদের মধ্যে কম বয়সে বার্ধক্য দেখা দিচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন হ্রাস করার পদ্ধতি গুলো সম্পর্কে প্রচার প্রচারণা বৃদ্ধি করতে হবে এবং যোগাযোগ বাড়াতে হবে।
ক্যাপস চেয়ারম্যান আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ ও সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আব্দুল্লাহ। জলবায়ু সম্মেলন কাভার করতে ইচ্ছুক সাংবাদিকদের দক্ষতা উন্নয়ন ও জলবায়ু সম্মলেনে সংবাদ সংগ্রহের বিভিন্ন কলাকৌশল সম্পর্কে জানাতে প্রোগ্রামটি আয়োজন করা হয়।