alt

জাতীয়

বাংলাদেশে প্রায় ১২ শতাংশ মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছে : গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশের জনসংখ্যার ১১ দশমিক ৯ শতাংশ অপুষ্টির শিকার। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ১১ শতাংশ মৃত্যুঝুঁকিতে এবং ২৩ দশমিক ছয় শতাংশের শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি বয়সের তুলনায় যথেষ্ট কম। বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক বা গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স (জিএইচআই) ২০২৪ এর প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক ২০২৪ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। ‘জিরো হাঙ্গার: চ্যালেঞ্জস অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড ও ওয়েলথাঙ্গারহিলফ যৌথভাবে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ক্ষুধা হ্রাসে অগ্রগতি অর্জন করলেও জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য যথেষ্ট নয়। প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে মাঝারি মাত্রার ক্ষুধাপীড়িত দেশের তালিকায় রাখা হয়েছে যার জিএইচআই সূচক ১৯ দশমিক চার। সূচক অনুযায়ী, কোনো দেশের মান শূন্য হওয়া মানে সেখানে ক্ষুধা নেই। স্কোর যত বাড়বে, ক্ষুধার মাত্রা সেখানে তত বেশি। স্কোর ১০০ হওয়ার অর্থ, সেখানে ক্ষুধার মাত্রা সর্বোচ্চ। বাংলাদেশের জিএইচআই সূচক গণনার সময় মূলত অপুষ্টি, শিশুমৃত্যু, শিশুর মৃত্যুঝুঁকি ও বৃদ্ধি হিসাব করা হয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের দুই দশমিক নয় শতাংশ শিশু পাঁচ বছর বয়সের আগেই মারা যায়, ১১ দশমিক ৯ শতাংশ অপুষ্টিতে ভুগছে, পাঁচ বছরের ছোট শিশুদের ২৩ দশমিক ছয় শতাংশের বৃদ্ধি তুলনামূলক কম এবং ১১ শতাংশ শিশু মৃত্যুঝুঁকিতে থাকে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার। তিনি বলেন, ‘আমরা দেশের বাইরে থেকে আমদানি করে ক্ষুধা মেটাতে পারি না। তাই আমাদের খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। রাস্তাঘাট বানানোর মতো অপরিকল্পিত উন্নয়ন খাদ্য জোগানে সবচেয়ে বড় বাধা। অনিরাপদ কৃষিচর্চার ফলে আমরা নিরাপদ খাদ্যের জোগান নিশ্চিত করতে পারছি না। এতে পুষ্টি নিরাপত্তাও নিশ্চিত হচ্ছে না। মাছসহ বাংলাদেশে যেমন প্রাকৃতিক খাদ্যবৈচিত্র্য আছে তা রক্ষার ওপর জোর দিতে হবে। শস্য উৎপাদনে কীটনাশক ও হার্বিসাইড ব্যবহারের ফলে অসংক্রামক রোগ ক্যানসারসহ বিভিন্ন ব্যাধি বেড়েই চলছে।’

খাদ্য আমদানির বিরোধিতা করে উপদেষ্টা বলেন, ‘মানুষ যদি নিজের খাবার নিজে উৎপাদন করতে পারে কেবল তাহলেই বলা যাবে আমরা ক্ষুধা মেটাতে পারছি। সরকারের দিক থেকেও খাদ্য আমদানি করা উচিত নয়।’

বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক ২০২৪-এর তথ্য পর্যালোচনা করলে আরও দেখা যায়, ক্ষুধা নিরসনে বাংলাদেশের অগ্রগতি হলেও এখনও জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২-এর প্রকৃত ক্ষুধামুক্তির প্রতিশ্রুতি থেকে অনেক দূরে আছে। জলবায়ু পরিবর্তন ও লিঙ্গ বৈষম্যের কারণে এখনো দেশের বিভিন্ন জায়গায় বহু মানুষ খাবারের তীব্র সংকটে থাকে।

এ বছরের বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচকে বাংলাদেশের স্কোর ১৯ দশমিক ৪। এটা মাঝারি মাত্রার ক্ষুধার নির্দেশক। ২০১৬ সালের তুলনায় ক্ষুধা সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতি ঘটলেও এ স্কোর অপুষ্টিসহ সামগ্রিক খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা নির্দেশ করে। মূলত চারটি সূচকের ওপর ভিত্তি করে ক্ষুধা সূচকের স্কোর নির্ধারিত হয়েছে। এর মধ্যে অপুষ্টির মাত্রা, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের উচ্চতা অনুযায়ী কম ওজন, বয়স অনুযায়ী কম উচ্চতা এবং শিশুমৃত্যুর হার। বাংলাদেশে জনসংখ্যার ১১ দশমিক ৯ শতাংশ অপুষ্টিতে ভুগছে। পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ খর্বকায়। পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের ১১ শতাংশ শারীরিকভাবে দুর্বল। পাঁচ বছর বয়সের আগে ২ দশমিক ৯ শতাংশ শিশু মারা যায়।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের হেড অব ডেভেলপমেন্ট কোদঅপারেশন ড. মিশেল ক্রেজা। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাসুদুল হাসান, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কেয়া খান, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ খালেদ হাসান এবং বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদের মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান।

ড. মিশেল ক্রেজা বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বহুখাতভিত্তিক উন্নয়নে কার্যক্রমে বাংলাদেশকে সহায়তা দিয়ে আসছে। দরিদ্র মানুষেরা অনেক সময় পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার কিনতে পারে না। তাই সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে দরিদ্রসহ অন্যান্য বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠীকে আরো অগ্রাধিকার দিয়ে সামগ্রিক খাদ্য নিরাপত্তার ব্যবস্থাকে জোরদার করতে হবে।’

স্বাগত বক্তব্যে ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফে বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর পঙ্কজ কুমার বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্ষুধা হ্রাসে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে, কিন্তু ২০২৪ সালের গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স-এর দিকে তাকালে দেখা যায় এখনও গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। ক্ষুধার-চক্রকে ভাঙতে আমরা কমিউনিটি-ভিত্তিক সমাধান, অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতিমালা এবং জলবায়ু সহনশীলতার শক্তিকে গুরুত্ব দিচ্ছি।’

ছবি

আয়নাঘরের অস্তিত্ব স্বীকার, ক্ষমা চাইলেন র‌্যাবের ডিজি

ছবি

ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশ নিয়ে অপপ্রচারে ৫৪ নাগরিকের উদ্বেগ

ছবি

আলোচনার মাধ্যমে ভারতে আটক বাংলাদেশী ৭৮ নাবিককে ফেরানোর আশা

ছবি

এবার কিছু এলাকাকে ‘নো ব্রিকফিল্ড জোন’ করার ঘোষণা রিজওয়ানার

ছবি

ভারত-পাকিস্তানের ‘সমস্যা’ অন্যদের প্রভাবিত করা উচিত না: সার্ক নিয়ে ইউনূস

ছবি

ভারতীয় কোস্টগার্ডের হাতে আটক ৭৯ নাবিক শিগগিরই দেশে ফিরবে : পররাষ্ট্র সচিব

ছবি

আয়নাঘর, গুম-খুন স্বীকার করে ক্ষমা চাইলেন র‌্যাব মহাপরিচালক

ছবি

শীতের শুরুতেই শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা, সাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ

ছবি

উত্তরায় ইসকন সদস্যের ওপর হামলার খবরটি ভুয়া: সিএ প্রেস উইং

ছবি

শিশুশ্রম থাকলে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ সম্ভব নয়: শ্রম সংস্কার কমিশন প্রধান

ছবি

রিমান্ড শেষে কারাগারে ইনু

স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা ‘চাইলেও করা যাবে না’: উপদেষ্টা ফারুক

আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাবে, আশা টবি ক্যাডম্যানের

ছবি

আগরতলা অভিমুখে বিএনপির তিন অঙ্গসংগঠনের লংমার্চ

ঘুষের বিনিময়ে ভুক্তভোগীকে ‘মিথ্যা মামলায়’ ফাঁসানোর অভিযোগ

ছবি

বিসিএস আবেদন ফি ও ভাইভা নম্বর কমালো সরকার, বয়সসীমা ৩২ বছর

ছবি

বিচার বিভাগে দুর্নীতির কালো মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছে

ছবি

সঙ্গীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ার লাইফ সাপোর্টে

ছবি

ভিসা উন্মুক্ত করতে পারে আরব আমিরাতের সাধারণ ক্ষমার মেয়াদ শেষ হলে

ছবি

রাজাকারের তালিকা করা কঠিন, বাস্তবতা অস্বীকার নয়: উপদেষ্টা

ছবি

এইচপিভি টিকা পেল ৫৬ লাখ কিশোরী, টিকাদানের হার ৯৩ শতাংশ

ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণের চেষ্টা করছে রাজনৈতিক দলগুলো: নাহিদ ইসলাম

ছবি

সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণে কড়াকড়ি, ‘জাতীয় স্বার্থে’ ব্যতিক্রম

ছবি

বিদ্যুৎ খাতের চুক্তি বাতিল ব্যয়বহুল, পুনর্বিবেচনায় সরকার

ছবি

নতজানু পররাষ্ট্রনীতি থেকে সরে এসেছে অন্তর্বর্তী সরকার: উপদেষ্টা আসিফ

ছবি

প্রযুক্তি দিয়ে পার্বত্য অঞ্চলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে : মুহাম্মদ ইউনূস

ছবি

২০ দেশে রাষ্ট্রদূত পরিবর্তন করবে অন্তর্বর্তী সরকার

ছবি

ঢাকার বায়ুদূষণ ‘অস্বাস্থ্যকর’ থেকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’, সতর্কতার পরামর্শ

ছবি

সংখ্যালঘুদের টার্গেট করে সহিংসতায় ৭০ জন গ্রেপ্তার, মামলা ৮৮টি

ছবি

গণমাধ্যমকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রেখে জনস্বার্থে কাজ করার আহ্বান

ছবি

আরও ২০ রাষ্ট্রদূত বদল হচ্ছেন: প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর

ছবি

হাওর বাঁচাতে জলাভূমি সুরক্ষায় আইনের কঠোর প্রয়োগের দাবি

ছবি

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক সামরিক সংলাপ শুরু হচ্ছে বুধবার

ছবি

পুরোনো ছবি নিয়ে বিভ্রান্তি: বৃদ্ধের ফুটপাত থেকে উচ্ছিষ্ট খাওয়ার দৃশ্য

ছবি

অর্থপাচার: তারেক-মামুনের ৭ বছর কারাদণ্ডের রায় স্থগিত

ছবি

দুদকের নতুন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন

tab

জাতীয়

বাংলাদেশে প্রায় ১২ শতাংশ মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছে : গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশের জনসংখ্যার ১১ দশমিক ৯ শতাংশ অপুষ্টির শিকার। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ১১ শতাংশ মৃত্যুঝুঁকিতে এবং ২৩ দশমিক ছয় শতাংশের শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি বয়সের তুলনায় যথেষ্ট কম। বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক বা গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স (জিএইচআই) ২০২৪ এর প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক ২০২৪ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। ‘জিরো হাঙ্গার: চ্যালেঞ্জস অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড ও ওয়েলথাঙ্গারহিলফ যৌথভাবে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ক্ষুধা হ্রাসে অগ্রগতি অর্জন করলেও জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য যথেষ্ট নয়। প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে মাঝারি মাত্রার ক্ষুধাপীড়িত দেশের তালিকায় রাখা হয়েছে যার জিএইচআই সূচক ১৯ দশমিক চার। সূচক অনুযায়ী, কোনো দেশের মান শূন্য হওয়া মানে সেখানে ক্ষুধা নেই। স্কোর যত বাড়বে, ক্ষুধার মাত্রা সেখানে তত বেশি। স্কোর ১০০ হওয়ার অর্থ, সেখানে ক্ষুধার মাত্রা সর্বোচ্চ। বাংলাদেশের জিএইচআই সূচক গণনার সময় মূলত অপুষ্টি, শিশুমৃত্যু, শিশুর মৃত্যুঝুঁকি ও বৃদ্ধি হিসাব করা হয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের দুই দশমিক নয় শতাংশ শিশু পাঁচ বছর বয়সের আগেই মারা যায়, ১১ দশমিক ৯ শতাংশ অপুষ্টিতে ভুগছে, পাঁচ বছরের ছোট শিশুদের ২৩ দশমিক ছয় শতাংশের বৃদ্ধি তুলনামূলক কম এবং ১১ শতাংশ শিশু মৃত্যুঝুঁকিতে থাকে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার। তিনি বলেন, ‘আমরা দেশের বাইরে থেকে আমদানি করে ক্ষুধা মেটাতে পারি না। তাই আমাদের খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। রাস্তাঘাট বানানোর মতো অপরিকল্পিত উন্নয়ন খাদ্য জোগানে সবচেয়ে বড় বাধা। অনিরাপদ কৃষিচর্চার ফলে আমরা নিরাপদ খাদ্যের জোগান নিশ্চিত করতে পারছি না। এতে পুষ্টি নিরাপত্তাও নিশ্চিত হচ্ছে না। মাছসহ বাংলাদেশে যেমন প্রাকৃতিক খাদ্যবৈচিত্র্য আছে তা রক্ষার ওপর জোর দিতে হবে। শস্য উৎপাদনে কীটনাশক ও হার্বিসাইড ব্যবহারের ফলে অসংক্রামক রোগ ক্যানসারসহ বিভিন্ন ব্যাধি বেড়েই চলছে।’

খাদ্য আমদানির বিরোধিতা করে উপদেষ্টা বলেন, ‘মানুষ যদি নিজের খাবার নিজে উৎপাদন করতে পারে কেবল তাহলেই বলা যাবে আমরা ক্ষুধা মেটাতে পারছি। সরকারের দিক থেকেও খাদ্য আমদানি করা উচিত নয়।’

বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক ২০২৪-এর তথ্য পর্যালোচনা করলে আরও দেখা যায়, ক্ষুধা নিরসনে বাংলাদেশের অগ্রগতি হলেও এখনও জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২-এর প্রকৃত ক্ষুধামুক্তির প্রতিশ্রুতি থেকে অনেক দূরে আছে। জলবায়ু পরিবর্তন ও লিঙ্গ বৈষম্যের কারণে এখনো দেশের বিভিন্ন জায়গায় বহু মানুষ খাবারের তীব্র সংকটে থাকে।

এ বছরের বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচকে বাংলাদেশের স্কোর ১৯ দশমিক ৪। এটা মাঝারি মাত্রার ক্ষুধার নির্দেশক। ২০১৬ সালের তুলনায় ক্ষুধা সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতি ঘটলেও এ স্কোর অপুষ্টিসহ সামগ্রিক খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা নির্দেশ করে। মূলত চারটি সূচকের ওপর ভিত্তি করে ক্ষুধা সূচকের স্কোর নির্ধারিত হয়েছে। এর মধ্যে অপুষ্টির মাত্রা, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের উচ্চতা অনুযায়ী কম ওজন, বয়স অনুযায়ী কম উচ্চতা এবং শিশুমৃত্যুর হার। বাংলাদেশে জনসংখ্যার ১১ দশমিক ৯ শতাংশ অপুষ্টিতে ভুগছে। পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ খর্বকায়। পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের ১১ শতাংশ শারীরিকভাবে দুর্বল। পাঁচ বছর বয়সের আগে ২ দশমিক ৯ শতাংশ শিশু মারা যায়।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের হেড অব ডেভেলপমেন্ট কোদঅপারেশন ড. মিশেল ক্রেজা। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাসুদুল হাসান, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কেয়া খান, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ খালেদ হাসান এবং বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদের মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান।

ড. মিশেল ক্রেজা বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বহুখাতভিত্তিক উন্নয়নে কার্যক্রমে বাংলাদেশকে সহায়তা দিয়ে আসছে। দরিদ্র মানুষেরা অনেক সময় পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার কিনতে পারে না। তাই সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে দরিদ্রসহ অন্যান্য বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠীকে আরো অগ্রাধিকার দিয়ে সামগ্রিক খাদ্য নিরাপত্তার ব্যবস্থাকে জোরদার করতে হবে।’

স্বাগত বক্তব্যে ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফে বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর পঙ্কজ কুমার বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্ষুধা হ্রাসে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে, কিন্তু ২০২৪ সালের গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স-এর দিকে তাকালে দেখা যায় এখনও গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। ক্ষুধার-চক্রকে ভাঙতে আমরা কমিউনিটি-ভিত্তিক সমাধান, অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতিমালা এবং জলবায়ু সহনশীলতার শক্তিকে গুরুত্ব দিচ্ছি।’

back to top