“সীমান্তে আর কোনো লাশ নয়”
সীমান্ত হত্যা বন্ধ এবং এসব হত্যার বিচার দাবিতে কুড়িগ্রাম থেকে শুরু হয়েছে ‘মার্চ ফর ফেলানী’ কর্মসূচি। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় কুড়িগ্রাম জেলা শহরের কলেজ মোড় থেকে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে এ লংমার্চ শুরু হয়। কর্মসূচির শেষ গন্তব্য নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের নাখারগঞ্জ গ্রামে ফেলানীর বাড়ি। সেখানে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
কর্মসূচির উদ্বোধনকালে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, “বাংলাদেশের সীমান্তে আর কোনো লাশ দেখতে চাই না। যারা সীমান্তে হত্যার শিকার হয়েছেন, তাদের বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে গড়ে ওঠা নতুন বাংলাদেশ কোনো নতজানু পররাষ্ট্রনীতি মেনে নেবে না। আগামীতে যে দলই ক্ষমতায় আসুক, যদি তারা ক্ষমতা আঁকড়ে ধরতে অন্য দেশের দালালি করে, তাদের পরিণতি হবে বর্তমান সরকারের মতোই।”
সারজিস আলম সতর্ক করে বলেন, “আর একটি হত্যাকাণ্ড হলেও আমরা কাঁটাতারের বেড়া ভেদ করে চোখ যতদূর যাবে, ততদূর লংমার্চ নিয়ে যাব।”
লংমার্চে তুলে ধরা পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে:
১. ফেলানীসহ সীমান্তে সব হত্যার বিচার নিশ্চিত করা।
২. সীমান্তে মরণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার বন্ধ করা।
৩. ‘শহীদ ফেলানী’র নামে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ভবনের নামকরণ।
৪. নতজানু পররাষ্ট্রনীতি বাতিল করে সাম্যের ভিত্তিতে পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়ন।
৫. কুড়িগ্রামের চর অঞ্চলের জীবনমান উন্নয়নে নদী সংস্কার।
কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম, জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, সদস্যসচিব আরিফ সোহেল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দপ্তর সম্পাদক জাহিদ আহসান এবং সমন্বয়ক রকিব মাসুদ।
ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, “আমার মেয়ের হত্যার এত বছর পরেও আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। এই কর্মসূচি কেবল আমার মেয়ের জন্য নয়, সীমান্তে নিহত সকলের জন্য। আমরা চাই, সীমান্তে আর কোনো মা-বাবাকে তাদের সন্তান হারানোর বেদনায় কাঁদতে না হয়।”
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর গুলিতে ১৫ বছর বয়সী ফেলানী খাতুন নিহত হন। সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে থাকা তার মরদেহের ছবি দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। এই হত্যার বিচার দাবি জানানো হলেও দীর্ঘদিনেও তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি।
সারজিস আলম বলেন, “যতবার সীমান্তে কোনো হত্যাকাণ্ড ঘটে, ততবার আন্তর্জাতিক মহলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় যে এমন ঘটনা আর ঘটবে না। কিন্তু বাস্তবে তা রোধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এখন প্রয়োজন জনগণের চাপ সৃষ্টি করা।”
‘মার্চ ফর ফেলানী’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে নাগেশ্বরী উপজেলার নাখারগঞ্জ বাজারে সমাবেশ আয়োজন করা হবে। সেখানে সীমান্ত হত্যার প্রতিকার ও কুড়িগ্রামবাসীর অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে বক্তব্য দেওয়া হবে।
লংমার্চে অংশগ্রহণকারীরা জানান, সীমান্ত এলাকায় অবস্থানরত জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। সীমান্তে নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড চালিয়ে বাংলাদেশিদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করার নীতি বন্ধ করতে হবে।
‘মার্চ ফর ফেলানী’ কর্মসূচি বাংলাদেশের জনগণের দীর্ঘদিনের সীমান্ত নিরাপত্তার দাবি ও আত্মমর্যাদার প্রতীক হয়ে উঠেছে। অংশগ্রহণকারীরা প্রত্যাশা করেন, এই আন্দোলন সীমান্ত হত্যার বিচার এবং নির্যাতনের শিকার প্রত্যেক পরিবারের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
“সীমান্তে আর কোনো লাশ নয়”
বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫
সীমান্ত হত্যা বন্ধ এবং এসব হত্যার বিচার দাবিতে কুড়িগ্রাম থেকে শুরু হয়েছে ‘মার্চ ফর ফেলানী’ কর্মসূচি। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় কুড়িগ্রাম জেলা শহরের কলেজ মোড় থেকে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে এ লংমার্চ শুরু হয়। কর্মসূচির শেষ গন্তব্য নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের নাখারগঞ্জ গ্রামে ফেলানীর বাড়ি। সেখানে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
কর্মসূচির উদ্বোধনকালে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, “বাংলাদেশের সীমান্তে আর কোনো লাশ দেখতে চাই না। যারা সীমান্তে হত্যার শিকার হয়েছেন, তাদের বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে গড়ে ওঠা নতুন বাংলাদেশ কোনো নতজানু পররাষ্ট্রনীতি মেনে নেবে না। আগামীতে যে দলই ক্ষমতায় আসুক, যদি তারা ক্ষমতা আঁকড়ে ধরতে অন্য দেশের দালালি করে, তাদের পরিণতি হবে বর্তমান সরকারের মতোই।”
সারজিস আলম সতর্ক করে বলেন, “আর একটি হত্যাকাণ্ড হলেও আমরা কাঁটাতারের বেড়া ভেদ করে চোখ যতদূর যাবে, ততদূর লংমার্চ নিয়ে যাব।”
লংমার্চে তুলে ধরা পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে:
১. ফেলানীসহ সীমান্তে সব হত্যার বিচার নিশ্চিত করা।
২. সীমান্তে মরণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার বন্ধ করা।
৩. ‘শহীদ ফেলানী’র নামে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ভবনের নামকরণ।
৪. নতজানু পররাষ্ট্রনীতি বাতিল করে সাম্যের ভিত্তিতে পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়ন।
৫. কুড়িগ্রামের চর অঞ্চলের জীবনমান উন্নয়নে নদী সংস্কার।
কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম, জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, সদস্যসচিব আরিফ সোহেল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দপ্তর সম্পাদক জাহিদ আহসান এবং সমন্বয়ক রকিব মাসুদ।
ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, “আমার মেয়ের হত্যার এত বছর পরেও আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। এই কর্মসূচি কেবল আমার মেয়ের জন্য নয়, সীমান্তে নিহত সকলের জন্য। আমরা চাই, সীমান্তে আর কোনো মা-বাবাকে তাদের সন্তান হারানোর বেদনায় কাঁদতে না হয়।”
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর গুলিতে ১৫ বছর বয়সী ফেলানী খাতুন নিহত হন। সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে থাকা তার মরদেহের ছবি দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। এই হত্যার বিচার দাবি জানানো হলেও দীর্ঘদিনেও তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি।
সারজিস আলম বলেন, “যতবার সীমান্তে কোনো হত্যাকাণ্ড ঘটে, ততবার আন্তর্জাতিক মহলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় যে এমন ঘটনা আর ঘটবে না। কিন্তু বাস্তবে তা রোধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এখন প্রয়োজন জনগণের চাপ সৃষ্টি করা।”
‘মার্চ ফর ফেলানী’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে নাগেশ্বরী উপজেলার নাখারগঞ্জ বাজারে সমাবেশ আয়োজন করা হবে। সেখানে সীমান্ত হত্যার প্রতিকার ও কুড়িগ্রামবাসীর অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে বক্তব্য দেওয়া হবে।
লংমার্চে অংশগ্রহণকারীরা জানান, সীমান্ত এলাকায় অবস্থানরত জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। সীমান্তে নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড চালিয়ে বাংলাদেশিদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করার নীতি বন্ধ করতে হবে।
‘মার্চ ফর ফেলানী’ কর্মসূচি বাংলাদেশের জনগণের দীর্ঘদিনের সীমান্ত নিরাপত্তার দাবি ও আত্মমর্যাদার প্রতীক হয়ে উঠেছে। অংশগ্রহণকারীরা প্রত্যাশা করেন, এই আন্দোলন সীমান্ত হত্যার বিচার এবং নির্যাতনের শিকার প্রত্যেক পরিবারের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে।