স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার মতে, মনোযোগ প্রয়োজন মানসিকতার পরিবর্তনে
রোম থেকে ঢাকায় আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে বোমা হুমকি সম্পর্কে ‘মিথ্যা সংবাদ’ বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। রাজধানীর খামারবাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, এই সংবাদের সত্যতা নেই এবং যারা এই ভুয়া তথ্য ছড়িয়েছে, তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
বুধবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রোম থেকে ২৫০ যাত্রী এবং ১৩ জন ক্রু নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিজি-৫৩৬ অবতরণ করে। তবে ঢাকায় আসার আগে পাকিস্তানি একটি নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি বার্তা আসে, যেখানে দাবি করা হয়, এই ফ্লাইটে ৩৪ কেজি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরক রয়েছে।
খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সিটিটিসি বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট এবং ক্যানাইন ইউনিটসহ নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত তদন্ত শুরু করে। উড়োজাহাজটি নিরাপত্তা বেষ্টনীতে নিয়ে আসা হয় এবং যাত্রীদের নিরাপদে নামিয়ে সব ধরনের তল্লাশি করা হয়।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যথাযথ নিরাপত্তা প্রক্রিয়া অনুসরণ করে উড়োজাহাজটি তল্লাশি করা হয়। যাত্রী ও লাগেজসহ পুরো ফ্লাইটটি যাচাই করে কোনো ঝুঁকিপূর্ণ বস্তু পাওয়া যায়নি।
তল্লাশি শেষে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে ফ্লাইটটি নিরাপদ বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর যাত্রীরা ইমিগ্রেশনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তাদের গন্তব্যে চলে যান। দুপুর দেড়টার মধ্যে যাত্রীরা বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “এটি একটি মিথ্যা সংবাদ। কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। যারা এই ভুয়া তথ্য দিয়েছে, তাদের শনাক্তের প্রক্রিয়া চলছে। শনাক্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, এ ধরনের ভুয়া সংবাদের কারণে শুধু নিরাপত্তা ব্যবস্থা নয়, সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি হয়। এজন্য তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নতুন পোশাক নিয়ে মতামত দেন। তিনি বলেন, “শুধু পোশাক পরিবর্তন দিয়ে কিছু হবে না, মন ও মানসিকতার পরিবর্তন আনতে হবে। দুর্নীতি কমানো গেলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও উন্নত হবে।”
সরকার পুলিশ, র্যাব এবং আনসার বাহিনীর পোশাক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সোমবার আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম জানান, নিরাপত্তা প্রক্রিয়াগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়েছে। উড়োজাহাজ, যাত্রী ও লাগেজ সবই তল্লাশি করা হয়েছে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সব ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে।
কামরুল ইসলাম আরও বলেন, “নিরাপত্তা তল্লাশির কারণে যাত্রীদের সাময়িক অসুবিধা হলেও সবার সহযোগিতায় আমরা কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করেছি। ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়াতে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো আরও সক্রিয় থাকবে।”
উড়োজাহাজে ভুয়া নিরাপত্তা হুমকি এবং সেই সঙ্গে ভুয়া সংবাদের প্রতিক্রিয়া মোকাবিলায় সরকারের পদক্ষেপ নজরকাড়া। এই ঘটনায় কোনো বিপজ্জনক বস্তু না মিললেও ভুয়া সংবাদের প্রভাব যে কতটা মারাত্মক হতে পারে, তা স্পষ্ট। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মনোভাব এবং কার্যক্রমের মান উন্নত করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সতর্কতা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও দক্ষ ও স্বচ্ছ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। নিরাপত্তা ও আস্থার জন্য শুধুমাত্র পোশাক পরিবর্তন নয়, প্রয়োজন মানসিকতার উন্নয়ন এবং সুষ্ঠু প্রশাসনিক কার্যক্রম।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার মতে, মনোযোগ প্রয়োজন মানসিকতার পরিবর্তনে
বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫
রোম থেকে ঢাকায় আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে বোমা হুমকি সম্পর্কে ‘মিথ্যা সংবাদ’ বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। রাজধানীর খামারবাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, এই সংবাদের সত্যতা নেই এবং যারা এই ভুয়া তথ্য ছড়িয়েছে, তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
বুধবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রোম থেকে ২৫০ যাত্রী এবং ১৩ জন ক্রু নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিজি-৫৩৬ অবতরণ করে। তবে ঢাকায় আসার আগে পাকিস্তানি একটি নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি বার্তা আসে, যেখানে দাবি করা হয়, এই ফ্লাইটে ৩৪ কেজি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরক রয়েছে।
খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সিটিটিসি বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট এবং ক্যানাইন ইউনিটসহ নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত তদন্ত শুরু করে। উড়োজাহাজটি নিরাপত্তা বেষ্টনীতে নিয়ে আসা হয় এবং যাত্রীদের নিরাপদে নামিয়ে সব ধরনের তল্লাশি করা হয়।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যথাযথ নিরাপত্তা প্রক্রিয়া অনুসরণ করে উড়োজাহাজটি তল্লাশি করা হয়। যাত্রী ও লাগেজসহ পুরো ফ্লাইটটি যাচাই করে কোনো ঝুঁকিপূর্ণ বস্তু পাওয়া যায়নি।
তল্লাশি শেষে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে ফ্লাইটটি নিরাপদ বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর যাত্রীরা ইমিগ্রেশনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তাদের গন্তব্যে চলে যান। দুপুর দেড়টার মধ্যে যাত্রীরা বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “এটি একটি মিথ্যা সংবাদ। কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। যারা এই ভুয়া তথ্য দিয়েছে, তাদের শনাক্তের প্রক্রিয়া চলছে। শনাক্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, এ ধরনের ভুয়া সংবাদের কারণে শুধু নিরাপত্তা ব্যবস্থা নয়, সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি হয়। এজন্য তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নতুন পোশাক নিয়ে মতামত দেন। তিনি বলেন, “শুধু পোশাক পরিবর্তন দিয়ে কিছু হবে না, মন ও মানসিকতার পরিবর্তন আনতে হবে। দুর্নীতি কমানো গেলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও উন্নত হবে।”
সরকার পুলিশ, র্যাব এবং আনসার বাহিনীর পোশাক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সোমবার আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম জানান, নিরাপত্তা প্রক্রিয়াগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়েছে। উড়োজাহাজ, যাত্রী ও লাগেজ সবই তল্লাশি করা হয়েছে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সব ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে।
কামরুল ইসলাম আরও বলেন, “নিরাপত্তা তল্লাশির কারণে যাত্রীদের সাময়িক অসুবিধা হলেও সবার সহযোগিতায় আমরা কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করেছি। ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়াতে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো আরও সক্রিয় থাকবে।”
উড়োজাহাজে ভুয়া নিরাপত্তা হুমকি এবং সেই সঙ্গে ভুয়া সংবাদের প্রতিক্রিয়া মোকাবিলায় সরকারের পদক্ষেপ নজরকাড়া। এই ঘটনায় কোনো বিপজ্জনক বস্তু না মিললেও ভুয়া সংবাদের প্রভাব যে কতটা মারাত্মক হতে পারে, তা স্পষ্ট। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মনোভাব এবং কার্যক্রমের মান উন্নত করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সতর্কতা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও দক্ষ ও স্বচ্ছ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। নিরাপত্তা ও আস্থার জন্য শুধুমাত্র পোশাক পরিবর্তন নয়, প্রয়োজন মানসিকতার উন্নয়ন এবং সুষ্ঠু প্রশাসনিক কার্যক্রম।