দীর্ঘদিন স্থবিরতার পর অর্থনীতিতে কিছুটা গতি ফিরে এসেছে। এর ফলে অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকের তিন মাসে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ। তবে মূল্যস্ফীতিতে রয়েছে খারাপ খবর। ফেব্রুয়ারিতে ২২ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন মূল্যস্ফীতি দেখার পর মার্চ মাসে তা সামান্য বেড়ে গেছে। এই মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। পরিসংখ্যানে এসব তথ্য জানা গেছে।
মার্চে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশে
জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৮১ শতাংশে নেমেছিল
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এর আগে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও ব্যবসা-বাণিজ্যে শ্লথগতির কারণে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে ব্যাপকভাবে টান পড়েছিল। গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৮১ শতাংশে নেমেছিল। পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় টানা তিন প্রান্তিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার পর গত অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে তা আবার বাড়লো।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) চলতি অর্থবছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর এই তিন মাসের জিডিপির চিত্র প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেছে, গত জানুয়ারি থেকে টানা তিন প্রান্তিক ধরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধারাবাহিকভাবে কমেছে। কৃষি, শিল্প ও সেবা- এই তিন খাত দিয়ে জিডিপি প্রকাশ করা হয়। অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি হয়েছে কৃষি খাতে। এই খাতের প্রবৃদ্ধি মাত্র ১ দশমিক ২৫ শতাংশ। এরপর সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং শিল্প খাতে ৭ দশমিক ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
বিবিএসের তথ্যানুসারে, অক্টোবর-ডিসেম্বর সময়ে দেশের ভেতরে স্থির মূল্যে ৮ লাখ ৮৬ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকার মূল্য সংযোজন হয়। আগের প্রান্তিকে ৮ লাখ ৪ হাজার ৯৪২ কোটি টাকার মূল্য সংযোজন হয়। এর মানে, অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে আগের প্রান্তিকের চেয়ে ৮২ হাজার কোটি টাকার বেশি মূল্য সংযোজন হয়।
ফেব্রুয়ারিতে কমে মার্চে বেড়ে গেল মূল্যস্ফীতি
মঙ্গলবার প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মার্চ মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশে যা এক মাস আগে ফেব্রুয়ারিতে ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ ছিল। আর গত বছর মার্চে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ।
অর্থাৎ ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ মূল্যস্ফীতির মানে হলো, ২০২৪
সালের মার্চ মাসে যে পণ্য বা সেবা ১০০ টাকায় মিলেছে, তা চলতি বছরের মার্চে কিনতে ব্যয় করতে হয়েছে ১০৯ টাকা ৩৫ পয়সা। ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ ছিল। এরপর থেকেই চড়তে থাকে এই হার। ২০২৪ সালের আন্দোলনের মাস জুলাইয়ে তা ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশে পৌঁছায়।
বছরের শুরুর মাস জানুয়ারিতে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার চার মাস পর এক অঙ্কের ঘরে নেমে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ হয়। ফেব্রুয়ারিতে এসে তা আরও কমে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৩২ শতাংশে। মার্চে তা আবার সামান্য বাড়ল।
বিশ্লেষণে দেখা যায়, সার্বিক মূল্যস্ফীতি মাসের ব্যবধানে সামান্য বেড়ে যাওয়ার কারণ খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতি। শহর ও গ্রামে একই চিত্র মিলেছে।
মার্চে খাদ্য মূল্যস্ফীতি যেখানে ফেব্রুয়ারির ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ থেকে কমে ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, সেখানে খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি ফেব্রুয়ারির ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ হয়েছে। খাদ্যবহির্ভূত খাতে ফেব্রুয়ারিতেও মূল্যস্ফীতি বাড়ার তথ্য মিলেছিল। মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছিল ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ জানুয়ারিতে যা ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ ছিল।
শহর ও গ্রামের খাদ্য খাতের মূল্যস্ফীতিতে খাবারের দাম কমার তথ্য দিয়েছে পরিসংখ্যান ব্যুরো। এতে দেখা যায়, মার্চে শহরের খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ১৮ শতাংশ যা ফেব্রুয়ারিতে ৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ ছিল। অন্যদিকে গ্রামে খাদ্য মূল্যস্ফীতি মার্চে ছিল ৮ দশমিক ৮১ শতাংশ যা ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৯ দশমিক ১৫ শতাংশ। আর গ্রামে খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি ফেব্রুয়ারির ৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ থেকে বেড়ে মার্চে ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ হয়েছে। শহরে খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি ফেব্রুয়ারির ৯ দশমিক ২৭ শতাংশ থেকে বেড়ে মার্চে ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করার পর দেশ হাল ধরে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেয়ার পরপরই মুহাম্মদ ইউনূস মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেন। মুদ্রা সরবরাহে লাগাম দিতে বারবার সুদের হার বাড়ানো হয়। সরকার গত তিন মাস মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখিতার তথ্য দিলেও নিত্যপণ্যের বাজারে সে অর্থে সুফল মেলেনি।
মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫
দীর্ঘদিন স্থবিরতার পর অর্থনীতিতে কিছুটা গতি ফিরে এসেছে। এর ফলে অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকের তিন মাসে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ। তবে মূল্যস্ফীতিতে রয়েছে খারাপ খবর। ফেব্রুয়ারিতে ২২ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন মূল্যস্ফীতি দেখার পর মার্চ মাসে তা সামান্য বেড়ে গেছে। এই মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। পরিসংখ্যানে এসব তথ্য জানা গেছে।
মার্চে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশে
জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৮১ শতাংশে নেমেছিল
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এর আগে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও ব্যবসা-বাণিজ্যে শ্লথগতির কারণে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে ব্যাপকভাবে টান পড়েছিল। গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৮১ শতাংশে নেমেছিল। পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় টানা তিন প্রান্তিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার পর গত অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে তা আবার বাড়লো।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) চলতি অর্থবছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর এই তিন মাসের জিডিপির চিত্র প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেছে, গত জানুয়ারি থেকে টানা তিন প্রান্তিক ধরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধারাবাহিকভাবে কমেছে। কৃষি, শিল্প ও সেবা- এই তিন খাত দিয়ে জিডিপি প্রকাশ করা হয়। অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি হয়েছে কৃষি খাতে। এই খাতের প্রবৃদ্ধি মাত্র ১ দশমিক ২৫ শতাংশ। এরপর সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং শিল্প খাতে ৭ দশমিক ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
বিবিএসের তথ্যানুসারে, অক্টোবর-ডিসেম্বর সময়ে দেশের ভেতরে স্থির মূল্যে ৮ লাখ ৮৬ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকার মূল্য সংযোজন হয়। আগের প্রান্তিকে ৮ লাখ ৪ হাজার ৯৪২ কোটি টাকার মূল্য সংযোজন হয়। এর মানে, অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে আগের প্রান্তিকের চেয়ে ৮২ হাজার কোটি টাকার বেশি মূল্য সংযোজন হয়।
ফেব্রুয়ারিতে কমে মার্চে বেড়ে গেল মূল্যস্ফীতি
মঙ্গলবার প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মার্চ মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশে যা এক মাস আগে ফেব্রুয়ারিতে ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ ছিল। আর গত বছর মার্চে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ।
অর্থাৎ ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ মূল্যস্ফীতির মানে হলো, ২০২৪
সালের মার্চ মাসে যে পণ্য বা সেবা ১০০ টাকায় মিলেছে, তা চলতি বছরের মার্চে কিনতে ব্যয় করতে হয়েছে ১০৯ টাকা ৩৫ পয়সা। ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ ছিল। এরপর থেকেই চড়তে থাকে এই হার। ২০২৪ সালের আন্দোলনের মাস জুলাইয়ে তা ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশে পৌঁছায়।
বছরের শুরুর মাস জানুয়ারিতে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার চার মাস পর এক অঙ্কের ঘরে নেমে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ হয়। ফেব্রুয়ারিতে এসে তা আরও কমে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৩২ শতাংশে। মার্চে তা আবার সামান্য বাড়ল।
বিশ্লেষণে দেখা যায়, সার্বিক মূল্যস্ফীতি মাসের ব্যবধানে সামান্য বেড়ে যাওয়ার কারণ খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতি। শহর ও গ্রামে একই চিত্র মিলেছে।
মার্চে খাদ্য মূল্যস্ফীতি যেখানে ফেব্রুয়ারির ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ থেকে কমে ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, সেখানে খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি ফেব্রুয়ারির ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ হয়েছে। খাদ্যবহির্ভূত খাতে ফেব্রুয়ারিতেও মূল্যস্ফীতি বাড়ার তথ্য মিলেছিল। মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছিল ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ জানুয়ারিতে যা ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ ছিল।
শহর ও গ্রামের খাদ্য খাতের মূল্যস্ফীতিতে খাবারের দাম কমার তথ্য দিয়েছে পরিসংখ্যান ব্যুরো। এতে দেখা যায়, মার্চে শহরের খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ১৮ শতাংশ যা ফেব্রুয়ারিতে ৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ ছিল। অন্যদিকে গ্রামে খাদ্য মূল্যস্ফীতি মার্চে ছিল ৮ দশমিক ৮১ শতাংশ যা ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৯ দশমিক ১৫ শতাংশ। আর গ্রামে খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি ফেব্রুয়ারির ৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ থেকে বেড়ে মার্চে ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ হয়েছে। শহরে খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি ফেব্রুয়ারির ৯ দশমিক ২৭ শতাংশ থেকে বেড়ে মার্চে ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করার পর দেশ হাল ধরে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেয়ার পরপরই মুহাম্মদ ইউনূস মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেন। মুদ্রা সরবরাহে লাগাম দিতে বারবার সুদের হার বাড়ানো হয়। সরকার গত তিন মাস মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখিতার তথ্য দিলেও নিত্যপণ্যের বাজারে সে অর্থে সুফল মেলেনি।