জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে হবে না বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালে দুটি মামলার শুনানি শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তাজুল বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাগুলো বিচারের জন্য আইসিসিতে পাঠানো হবে না, এটাই আমাদের রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত।
‘আমাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই অপরাধের বিচার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোনো অবস্থাতেই এটা আইসিসিতে প্রেরণ করতে চাই না, এটাই সম্মিলিত সিদ্ধান্ত।’ ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনা। তখন থেকে তিনি ভারতে অবস্থান করছেন।
দেশ ছাড়ার পর আওয়ামী লীগ প্রধানের বিরুদ্ধে কয়েকশত মামলা হয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও তার বিরুদ্ধে কয়েকটি অভিযোগও জমা পড়েছে। এর মধ্যে ‘গণহত্যার’ দুটি অভিযোগে হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। হাসিনার বিদায়ের পর থেকে অভ্যুত্থানে
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগগুলো আইসিসিতে পাঠানোর বিষয়টি আলোচনায় এসেছে বিভিন্ন সময়ে।
গত ৭ মার্চ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে একই পরামর্শ দেন বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) প্রধান কৌঁসুলির বিশেষ উপদেষ্টা টবি ক্যাডম্যান। সর্বশেষ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমও বলেছেন, জুলাই হত্যাকা-ের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পাঠানো যায় কিনা তা খতিয়ে দেখছে সরকার।
এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে প্রধান কৌঁসুলি তাজুল ইসলাম বলেন, ‘মাননীয় প্রেস সেক্রেটারি যেটা বলেছেন (আইসিসিতে বিচার নিয়ে) সেটা পত্র-পত্রিকায় দেখেছি। উনার সঙ্গে আমার এ বিষয়ে কোনো কথা হয়নি। তবে গণহত্যা বলেন বা মানবতাবিরোধী অপরাধ বলেন, এই মামলাগুলোর বিচার আমাদের ট্রাইব্যুনালেই হবে।
‘তবে আইসিসি যদি টেকনিক্যাল সাপোর্ট দেয় সেটা আমরা গ্রহণ করবো, যেমনটা আমরা জাতিসংঘের কাছে চেয়েছিলাম। তারা আমাদের প্রসিকিউটর ও তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।’ তাজুল বলেন, ‘জাতিসংঘ যে তদন্ত করেছে সেই রিপোর্ট আমাদের দিয়েছে। ওই রিপোর্ট প্রস্তুতের জন্য যত লোকের সাক্ষাৎকার তারা নিয়েছে, সেটা আমাদের বিচারের কাজে ব্যবহারের জন্য চেয়েছি। সেই তথ্যাদি পাওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। তাই এ ধরনের সহযোগিতা যদি আইসিসি থেকে আসে আমরা সেটা গ্রহণ করবো।’
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যা ও নির্বিচার গুলির একাধিক বড় অভিযান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ ও তদারকিতে হয়েছে বলে উঠে এসেছে জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনের প্রতিবেদনে। ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাবলি নিয়ে তৈরি করা এ প্রতিবেদন গত ১২ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হয়।
আইসিটির প্রধান কৌঁসুলি বলেন, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার বিচার করতে বাংলাদেশ সক্ষম ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং ইচ্ছুক। বাংলাদেশের এই বিচার করার সামর্থ্য আছে। সুতরাং ঘটনা বাংলাদেশে ঘটেছে, আসামিরা বাংলাদেশেই বাস করে বা আশপাশের দেশেই আছে, সাক্ষীরা এদেশের। সুতরাং এই বিচার বাংলাদেশের কোর্টে হবে এটাই স্বাভাবিক বিষয়।
‘আইসিসিতে তখনই যেতে হয় যখন কোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করতে সেই রাষ্ট্র সক্ষম না হয় কিংবা সেই রাষ্ট্র যদি এই বিচার করতে ইচ্ছুক না হয়। কিন্তু এই দুটোর একটিও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তাই বাংলাদেশ আইসিসির সদস্য রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার এই দেশের কোর্টেই হবে, এটাই সিদ্ধান্ত।’
মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫
জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে হবে না বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালে দুটি মামলার শুনানি শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তাজুল বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাগুলো বিচারের জন্য আইসিসিতে পাঠানো হবে না, এটাই আমাদের রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত।
‘আমাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই অপরাধের বিচার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোনো অবস্থাতেই এটা আইসিসিতে প্রেরণ করতে চাই না, এটাই সম্মিলিত সিদ্ধান্ত।’ ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনা। তখন থেকে তিনি ভারতে অবস্থান করছেন।
দেশ ছাড়ার পর আওয়ামী লীগ প্রধানের বিরুদ্ধে কয়েকশত মামলা হয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও তার বিরুদ্ধে কয়েকটি অভিযোগও জমা পড়েছে। এর মধ্যে ‘গণহত্যার’ দুটি অভিযোগে হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। হাসিনার বিদায়ের পর থেকে অভ্যুত্থানে
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগগুলো আইসিসিতে পাঠানোর বিষয়টি আলোচনায় এসেছে বিভিন্ন সময়ে।
গত ৭ মার্চ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে একই পরামর্শ দেন বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) প্রধান কৌঁসুলির বিশেষ উপদেষ্টা টবি ক্যাডম্যান। সর্বশেষ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমও বলেছেন, জুলাই হত্যাকা-ের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পাঠানো যায় কিনা তা খতিয়ে দেখছে সরকার।
এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে প্রধান কৌঁসুলি তাজুল ইসলাম বলেন, ‘মাননীয় প্রেস সেক্রেটারি যেটা বলেছেন (আইসিসিতে বিচার নিয়ে) সেটা পত্র-পত্রিকায় দেখেছি। উনার সঙ্গে আমার এ বিষয়ে কোনো কথা হয়নি। তবে গণহত্যা বলেন বা মানবতাবিরোধী অপরাধ বলেন, এই মামলাগুলোর বিচার আমাদের ট্রাইব্যুনালেই হবে।
‘তবে আইসিসি যদি টেকনিক্যাল সাপোর্ট দেয় সেটা আমরা গ্রহণ করবো, যেমনটা আমরা জাতিসংঘের কাছে চেয়েছিলাম। তারা আমাদের প্রসিকিউটর ও তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।’ তাজুল বলেন, ‘জাতিসংঘ যে তদন্ত করেছে সেই রিপোর্ট আমাদের দিয়েছে। ওই রিপোর্ট প্রস্তুতের জন্য যত লোকের সাক্ষাৎকার তারা নিয়েছে, সেটা আমাদের বিচারের কাজে ব্যবহারের জন্য চেয়েছি। সেই তথ্যাদি পাওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। তাই এ ধরনের সহযোগিতা যদি আইসিসি থেকে আসে আমরা সেটা গ্রহণ করবো।’
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যা ও নির্বিচার গুলির একাধিক বড় অভিযান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ ও তদারকিতে হয়েছে বলে উঠে এসেছে জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনের প্রতিবেদনে। ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাবলি নিয়ে তৈরি করা এ প্রতিবেদন গত ১২ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হয়।
আইসিটির প্রধান কৌঁসুলি বলেন, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার বিচার করতে বাংলাদেশ সক্ষম ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং ইচ্ছুক। বাংলাদেশের এই বিচার করার সামর্থ্য আছে। সুতরাং ঘটনা বাংলাদেশে ঘটেছে, আসামিরা বাংলাদেশেই বাস করে বা আশপাশের দেশেই আছে, সাক্ষীরা এদেশের। সুতরাং এই বিচার বাংলাদেশের কোর্টে হবে এটাই স্বাভাবিক বিষয়।
‘আইসিসিতে তখনই যেতে হয় যখন কোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করতে সেই রাষ্ট্র সক্ষম না হয় কিংবা সেই রাষ্ট্র যদি এই বিচার করতে ইচ্ছুক না হয়। কিন্তু এই দুটোর একটিও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তাই বাংলাদেশ আইসিসির সদস্য রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার এই দেশের কোর্টেই হবে, এটাই সিদ্ধান্ত।’