অবৈধ সুবিধা নিয়ে ঢাকার গুলশানে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাজ্যের সাবেক ‘সিটি মিনিস্টার’ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ মঙ্গলবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সহকারী পরিচালক মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
দুদকের প্রধান কার্যালয়ের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন জানান, মামলায় টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, রাজউকের সাবেক সহকারী আইন উপদেষ্টা শাহ মো. খসরুজ্জামান এবং সরদার মোশারফ হোসেনকে আসামি করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে কোনো টাকা পরিশোধ না করেই গুলশান-২ এর একটি ফ্ল্যাট দখল ও পরে রেজিস্ট্রি করে নেন।
দুদকের ভাষ্য, সরকার থেকে ইজারা নেওয়া জমিতে জালিয়াতির মাধ্যমে ভবনটি নির্মিত হয় এবং সেখান থেকে টিউলিপ সিদ্দিক অবৈধভাবে ফ্ল্যাট দখল করেন। এ ঘটনা অনুসন্ধানে দুদকের উপপরিচালক মো. মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি তদন্ত দল গঠন করা হয়।
এর আগে, পূর্বাচলে অনিয়মের মাধ্যমে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দের অভিযোগে শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানার পরিবারের সদস্যসহ ১৪ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক ৮টি অভিযোগপত্র দেয় দুদক। ওই মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করে আদালত।
এদিকে, লন্ডনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে টিউলিপ সিদ্দিক বলেন, বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেনি এবং তাঁকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই।
টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমানে লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসনের এমপি। মামলার বিষয়ে আলোচনার মধ্যে গত জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘সিটি মিনিস্টার’ পদ থেকে তিনি ইস্তফা দেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৬৩ সালে বিচারপতি ইমাম হোসেন চৌধুরী গুলশানে একটি প্লট বরাদ্দ পান, যার লিজ চুক্তি অনুযায়ী ৯৯ বছরের মধ্যে জমি হস্তান্তর নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু ১৯৭৩ সালে ওই জমি হস্তান্তর ও বিভাজন করা হয় এবং পরে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলামের দুই মেয়ের কাছে বিক্রি করা হয়।
পরে জমিটি বিভাজন করে ভবন নির্মাণ করা হয়। নির্মাণাধীন অবস্থায় বিভিন্ন আইনি জটিলতায় পড়ে জমির মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। তারপরও রাজউকের আইন উপদেষ্টারা ‘অসত্য তথ্য’ দিয়ে ইস্টার্ন হাউজিংকে ফ্ল্যাট হস্তান্তরের অনুমোদন দেন। যদিও কোম্পানিটি জমির মালিক ছিল না।
দুদক বলছে, টিউলিপ সিদ্দিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে জমি বিভাজন ও ফ্ল্যাট হস্তান্তরের অনুমোদনে ভূমিকা রাখেন। বিনিময়ে তিনি বিনামূল্যে একটি ফ্ল্যাট গ্রহণ করেন। ইস্টার্ন হাউজিংয়ের এক চিঠিতে ‘রিজওয়ানা সিদ্দিক টিউলিপ’কে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। কোম্পানির পাঠানো তালিকায় ৫ নম্বরে টিউলিপের নাম ছিল।
আরও বলা হয়, ২০০১ সালের ১৯ মে থেকে ফ্ল্যাটটির দখল টিউলিপের কাছে রয়েছে এবং তিনি হোল্ডিং ট্যাক্স দিয়ে আসছেন। তবে কোনো অর্থ পরিশোধের রশিদ পাওয়া যায়নি। ফলে বিনামূল্যেই রেজিস্ট্রি দলিল করে ফ্ল্যাটটি গ্রহণ করেন তিনি।
দুদক বলছে, টিউলিপ সিদ্দিক ও রাজউকের দুই সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। মামলায় দণ্ডবিধির ১২০(বি), ৪০৯, ১৬১–১৬৫(ক), ১০৯ ধারা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫
অবৈধ সুবিধা নিয়ে ঢাকার গুলশানে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাজ্যের সাবেক ‘সিটি মিনিস্টার’ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ মঙ্গলবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সহকারী পরিচালক মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
দুদকের প্রধান কার্যালয়ের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন জানান, মামলায় টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, রাজউকের সাবেক সহকারী আইন উপদেষ্টা শাহ মো. খসরুজ্জামান এবং সরদার মোশারফ হোসেনকে আসামি করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে কোনো টাকা পরিশোধ না করেই গুলশান-২ এর একটি ফ্ল্যাট দখল ও পরে রেজিস্ট্রি করে নেন।
দুদকের ভাষ্য, সরকার থেকে ইজারা নেওয়া জমিতে জালিয়াতির মাধ্যমে ভবনটি নির্মিত হয় এবং সেখান থেকে টিউলিপ সিদ্দিক অবৈধভাবে ফ্ল্যাট দখল করেন। এ ঘটনা অনুসন্ধানে দুদকের উপপরিচালক মো. মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি তদন্ত দল গঠন করা হয়।
এর আগে, পূর্বাচলে অনিয়মের মাধ্যমে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দের অভিযোগে শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানার পরিবারের সদস্যসহ ১৪ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক ৮টি অভিযোগপত্র দেয় দুদক। ওই মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করে আদালত।
এদিকে, লন্ডনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে টিউলিপ সিদ্দিক বলেন, বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেনি এবং তাঁকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই।
টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমানে লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসনের এমপি। মামলার বিষয়ে আলোচনার মধ্যে গত জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘সিটি মিনিস্টার’ পদ থেকে তিনি ইস্তফা দেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৬৩ সালে বিচারপতি ইমাম হোসেন চৌধুরী গুলশানে একটি প্লট বরাদ্দ পান, যার লিজ চুক্তি অনুযায়ী ৯৯ বছরের মধ্যে জমি হস্তান্তর নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু ১৯৭৩ সালে ওই জমি হস্তান্তর ও বিভাজন করা হয় এবং পরে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলামের দুই মেয়ের কাছে বিক্রি করা হয়।
পরে জমিটি বিভাজন করে ভবন নির্মাণ করা হয়। নির্মাণাধীন অবস্থায় বিভিন্ন আইনি জটিলতায় পড়ে জমির মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। তারপরও রাজউকের আইন উপদেষ্টারা ‘অসত্য তথ্য’ দিয়ে ইস্টার্ন হাউজিংকে ফ্ল্যাট হস্তান্তরের অনুমোদন দেন। যদিও কোম্পানিটি জমির মালিক ছিল না।
দুদক বলছে, টিউলিপ সিদ্দিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে জমি বিভাজন ও ফ্ল্যাট হস্তান্তরের অনুমোদনে ভূমিকা রাখেন। বিনিময়ে তিনি বিনামূল্যে একটি ফ্ল্যাট গ্রহণ করেন। ইস্টার্ন হাউজিংয়ের এক চিঠিতে ‘রিজওয়ানা সিদ্দিক টিউলিপ’কে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। কোম্পানির পাঠানো তালিকায় ৫ নম্বরে টিউলিপের নাম ছিল।
আরও বলা হয়, ২০০১ সালের ১৯ মে থেকে ফ্ল্যাটটির দখল টিউলিপের কাছে রয়েছে এবং তিনি হোল্ডিং ট্যাক্স দিয়ে আসছেন। তবে কোনো অর্থ পরিশোধের রশিদ পাওয়া যায়নি। ফলে বিনামূল্যেই রেজিস্ট্রি দলিল করে ফ্ল্যাটটি গ্রহণ করেন তিনি।
দুদক বলছে, টিউলিপ সিদ্দিক ও রাজউকের দুই সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। মামলায় দণ্ডবিধির ১২০(বি), ৪০৯, ১৬১–১৬৫(ক), ১০৯ ধারা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।