ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) এবং নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আরপিওতে প্রার্থীর যোগ্যতা-অযোগ্যতায় নতুন দফা, হলফনামায় ভুল তথ্য দেয়া, মনোনয়নপত্র জমার সময় নির্ধারণ, প্রচারণার সময় নির্ধারণ, প্রার্থী আচরণবিধি মানবে, দল থেকে এমন প্রত্যয়নপত্র দেয়া ও দল নিবন্ধন আইন-বিধিসহ ছোটখাটো সংযোজন ও সংশোধনের প্রস্তুতি চলছে।
আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে অবাধ ও প্রভাবমুক্ত রাখতে নির্বাচন কমিশন তাদের নিজস্ব প্রস্তাবের পাশাপাশি নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশগুলোকে বিবেচনায় নিয়ে সংশোধনের কাজ পর্যালোচনা করছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। ‘ভালো নির্বাচনের জন্য সংস্কার কমিশনের কোনো প্রস্তাব গ্রহণ করলে অসুবিধা নাই’ মন্তব্য নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকারের। ডিসেম্বরকে লক্ষ্য ধরেই ইসি কাজ এগিয়ে নিচ্ছে এবং নির্বাচনী প্রচারে সব প্রার্থী যাতে সমান সুযোগ পায় তা নতুন আচরণবিধিতে নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
খসড়ায় ২০০৮ সালে প্রণীত ‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালার নাম এবার ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন আচরণ বিধিমালা, ২০২৫’ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানান ইসি আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আচরণবিধি যেটি আছে, সেটি একটু নতুন আঙ্গিকে আমরা দাঁড় করাচ্ছি। নতুন আঙ্গিকে বলতে নতুন কিছু এখানে ইনকরপোরেট হবে।’
ইতোমধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ‘অতি জরুরি ভিত্তিতে’ নির্বাচনী আইন, বিধি, নীতিমালা নিয়ে প্রস্তাব পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সরকার প্রস্তাবগুলো পাওয়ার পর আইন মন্ত্রণালয় পর্যালোচনা করে অধ্যাদেশ, বিধি গেজেট আকারে প্রকাশের উদ্যোগ নেবে।
নির্বাচনী আচরণ বিধিমালার খসড়ায় আচরণবিধি লঙ্ঘনে প্রার্থিতা বাতিলের বিষয়টি স্পষ্ট করে নতুন দফা যুক্ত করা হয়েছে। ঋণখেলাপি ও হলফনামায় তথ্য গোপন করলে ভোটের পরেও ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তাব রাখা ও ডিজিটাল প্রচারের সুযোগ রাখা হয়েছে। এছাড়া পলিথিনের লিফলেট, প্লাস্টিক ব্যানার (পিভিসি ব্যানার) নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা থাকছে উপদেষ্টাদের জন্যও।
এ বিষয়ে ইসি আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যমান আচরণ বিধিমালায় নির্বাচনী প্রচারে ভিআইপিরা যেন কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে অংশ নিতে না পারেন, সে বিষয়টি রয়েছে। এর সঙ্গে নির্বাচিত সরকারের বাইরেও, যেমন বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রয়েছে বা ভবিষ্যতে কেয়ারটেকার সরকার থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে পদ-পদবি বা মন্ত্রী বা ভিআইপির সঙ্গে উপদেষ্টা শব্দটিও ইনকরপোরেট করার প্রস্তাব করবো আমরা।’
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘পোস্টার, লেমিনেটেড পোস্টার নিয়ে পরিবেশবিদদের সুপারিশ আর সংস্কার কমিশনের সুপারিশ গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছি আমরা। পোস্টারের বদলে এটা ব্যানারে থাকা যায় কিনা চিন্তা-ভাবনা করছি। কমিশনের সিদ্ধান্তের পরে চূড়ান্ত হবে।’ ঋণখেলাপি ও হলফনামায় ভুল তথ্য দিলে ভোটের পরেও ব্যবস্থা নেয়ার বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব থাকছে বলে জানান তিনি। সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী আচরণবিধি প্রতিপালনে তিনটি সময় প্রস্তাব করা হয়েছে। সংসদের মেয়াদ শেষ থেকে তফসিল ঘোষণার সময়কে ‘নির্বাচনপূর্ব সময়’; তফসিল ঘোষণা থেকে ফলাফলের গেজেট প্রকাশ পর্যন্ত ‘নির্বাচনকালীন সময়’ এবং গেজেট প্রকাশ থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত ‘নির্বাচনপরবর্তী সময়’ বলা হয়েছে।
‘নির্বাচনপূর্ব সময়’ বলতে বিদ্যমান বিধিতে তফসিল ঘোষণা থেকে ফলাফলের গেজেট প্রকাশের সময়কে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।
খসড়া প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, মনোনয়নপত্র জমায় প্রার্থীর সঙ্গে ৫ জনের বেশি থাকতে পারবেন না। ডিজিটাল বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারের সুযোগ তবে প্রচার ব্যয় নির্বাচনী ব্যয়ে দেখাতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় উসকানিমূলক ও মানহানিকর বক্তব্য দেয়া হলে অর্থদণ্ডের পাশাপাশি ডিজিটাল বা সাইবার সুরক্ষা আইনের আওতায় শাস্তি। মাইকের প্রচারের জন্য ৬০ ডেসিবেলের বেশি শব্দ নয়। দলগুলো আচরণবিধি মানবে এমন প্রত্যয়নপত্র প্রতীক বরাদ্দের আগে ইসিতে দিতে হবে এবং প্রার্থীও বিধি মানার বিষয়ে রিটার্নিং অফিসারের কাছে প্রত্যয়নপত্র দেবেন। অঙ্গীকার না মানলে বিধিমালার শাস্তি মানতে বাধ্য হবেন।
২ মার্চ ভোটার দিবসে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায় নিজ দলকেই নিতে হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে প্রত্যেকটা দলের কাছ থেকে দলিলে সই নিতে পারে ঐকমত্য কমিশন। তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন করা অনেকটা সহজ হবে।
মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) এবং নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আরপিওতে প্রার্থীর যোগ্যতা-অযোগ্যতায় নতুন দফা, হলফনামায় ভুল তথ্য দেয়া, মনোনয়নপত্র জমার সময় নির্ধারণ, প্রচারণার সময় নির্ধারণ, প্রার্থী আচরণবিধি মানবে, দল থেকে এমন প্রত্যয়নপত্র দেয়া ও দল নিবন্ধন আইন-বিধিসহ ছোটখাটো সংযোজন ও সংশোধনের প্রস্তুতি চলছে।
আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে অবাধ ও প্রভাবমুক্ত রাখতে নির্বাচন কমিশন তাদের নিজস্ব প্রস্তাবের পাশাপাশি নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশগুলোকে বিবেচনায় নিয়ে সংশোধনের কাজ পর্যালোচনা করছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। ‘ভালো নির্বাচনের জন্য সংস্কার কমিশনের কোনো প্রস্তাব গ্রহণ করলে অসুবিধা নাই’ মন্তব্য নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকারের। ডিসেম্বরকে লক্ষ্য ধরেই ইসি কাজ এগিয়ে নিচ্ছে এবং নির্বাচনী প্রচারে সব প্রার্থী যাতে সমান সুযোগ পায় তা নতুন আচরণবিধিতে নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
খসড়ায় ২০০৮ সালে প্রণীত ‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালার নাম এবার ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন আচরণ বিধিমালা, ২০২৫’ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানান ইসি আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আচরণবিধি যেটি আছে, সেটি একটু নতুন আঙ্গিকে আমরা দাঁড় করাচ্ছি। নতুন আঙ্গিকে বলতে নতুন কিছু এখানে ইনকরপোরেট হবে।’
ইতোমধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ‘অতি জরুরি ভিত্তিতে’ নির্বাচনী আইন, বিধি, নীতিমালা নিয়ে প্রস্তাব পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সরকার প্রস্তাবগুলো পাওয়ার পর আইন মন্ত্রণালয় পর্যালোচনা করে অধ্যাদেশ, বিধি গেজেট আকারে প্রকাশের উদ্যোগ নেবে।
নির্বাচনী আচরণ বিধিমালার খসড়ায় আচরণবিধি লঙ্ঘনে প্রার্থিতা বাতিলের বিষয়টি স্পষ্ট করে নতুন দফা যুক্ত করা হয়েছে। ঋণখেলাপি ও হলফনামায় তথ্য গোপন করলে ভোটের পরেও ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তাব রাখা ও ডিজিটাল প্রচারের সুযোগ রাখা হয়েছে। এছাড়া পলিথিনের লিফলেট, প্লাস্টিক ব্যানার (পিভিসি ব্যানার) নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা থাকছে উপদেষ্টাদের জন্যও।
এ বিষয়ে ইসি আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যমান আচরণ বিধিমালায় নির্বাচনী প্রচারে ভিআইপিরা যেন কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে অংশ নিতে না পারেন, সে বিষয়টি রয়েছে। এর সঙ্গে নির্বাচিত সরকারের বাইরেও, যেমন বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রয়েছে বা ভবিষ্যতে কেয়ারটেকার সরকার থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে পদ-পদবি বা মন্ত্রী বা ভিআইপির সঙ্গে উপদেষ্টা শব্দটিও ইনকরপোরেট করার প্রস্তাব করবো আমরা।’
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘পোস্টার, লেমিনেটেড পোস্টার নিয়ে পরিবেশবিদদের সুপারিশ আর সংস্কার কমিশনের সুপারিশ গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছি আমরা। পোস্টারের বদলে এটা ব্যানারে থাকা যায় কিনা চিন্তা-ভাবনা করছি। কমিশনের সিদ্ধান্তের পরে চূড়ান্ত হবে।’ ঋণখেলাপি ও হলফনামায় ভুল তথ্য দিলে ভোটের পরেও ব্যবস্থা নেয়ার বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব থাকছে বলে জানান তিনি। সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী আচরণবিধি প্রতিপালনে তিনটি সময় প্রস্তাব করা হয়েছে। সংসদের মেয়াদ শেষ থেকে তফসিল ঘোষণার সময়কে ‘নির্বাচনপূর্ব সময়’; তফসিল ঘোষণা থেকে ফলাফলের গেজেট প্রকাশ পর্যন্ত ‘নির্বাচনকালীন সময়’ এবং গেজেট প্রকাশ থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত ‘নির্বাচনপরবর্তী সময়’ বলা হয়েছে।
‘নির্বাচনপূর্ব সময়’ বলতে বিদ্যমান বিধিতে তফসিল ঘোষণা থেকে ফলাফলের গেজেট প্রকাশের সময়কে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।
খসড়া প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, মনোনয়নপত্র জমায় প্রার্থীর সঙ্গে ৫ জনের বেশি থাকতে পারবেন না। ডিজিটাল বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারের সুযোগ তবে প্রচার ব্যয় নির্বাচনী ব্যয়ে দেখাতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় উসকানিমূলক ও মানহানিকর বক্তব্য দেয়া হলে অর্থদণ্ডের পাশাপাশি ডিজিটাল বা সাইবার সুরক্ষা আইনের আওতায় শাস্তি। মাইকের প্রচারের জন্য ৬০ ডেসিবেলের বেশি শব্দ নয়। দলগুলো আচরণবিধি মানবে এমন প্রত্যয়নপত্র প্রতীক বরাদ্দের আগে ইসিতে দিতে হবে এবং প্রার্থীও বিধি মানার বিষয়ে রিটার্নিং অফিসারের কাছে প্রত্যয়নপত্র দেবেন। অঙ্গীকার না মানলে বিধিমালার শাস্তি মানতে বাধ্য হবেন।
২ মার্চ ভোটার দিবসে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায় নিজ দলকেই নিতে হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে প্রত্যেকটা দলের কাছ থেকে দলিলে সই নিতে পারে ঐকমত্য কমিশন। তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন করা অনেকটা সহজ হবে।