রাজধানীর সায়েন্সল্যাব এলাকায় ঢাকা কলেজ ও ঢাকা সিটি কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আবারও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৫এপ্রিল) সকাল থেকে উত্তেজনা শুরুর পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের প্রকৃত কারণ জানা না গেলেও পূর্ব শত্রুতার জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
সংঘর্ষের কারণে সড়কের দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ হলে যাত্রীসহ সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে দুপুর থেকেই যান চলতে শুরু করে। ঘটনাস্থলে বিপুল পরিমাণ পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের ধানমন্ডি জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) শাহ মোস্তফা তারিকুজ্জামান বলেন, সকাল ১০টার পর থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। একপর্যায়ে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের প্রায় আড়াইশ-৩শ’ শিক্ষার্থী মুখোমুখি অবস্থান নিলে দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে আধাঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। শিক্ষার্থীদের যার যার ক্যাম্পাসে পাঠিয়ে দেয়া হয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় বাড়তি ফোর্স মোতায়েন রয়েছে। সড়কে যান চলাচলও স্বাভাবিক রয়েছে।
তারিকুজ্জামান আরও বলেন, শোনা গেছে, এক কলেজের শিক্ষার্থীরা আরেক কলেজের শিক্ষার্থীকে বাস থেকে নামিয়ে মারধর করেছে। পরে আরেক পক্ষ আবার মারধর করে। এর থেকেই উত্তেজনার সূত্রপাত হয়। প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা চলছে।
ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী জানান, গত ১৩ এপ্রিল সায়েন্সল্যাব এলাকায় একটি বাসে বাগবিত-ার জেরে ঢাকা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের এক শিক্ষার্থীর আইডি কার্ড নিয়ে নেয় সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা। সেই ঘটনা ফেইসবুকে পোস্ট করেন ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী। সেটিকে কেন্দ্র করে দুই কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
ঢাকা মেডিকেল সূত্র জানায়, দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে ইটের আঘাতে জাফরি (১৭) নামে ঢাকা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের এক
শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাকে চিকিৎসার জন্য দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হয়েছে। সাব্বির নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, গত সোমবার সিটি কলেজের শিক্ষার্থীর ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মারধর করে। সেটির প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে আমরা বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী একত্রিত হলে তারা ইট ছুড়লে জাফিরের কপালে লেগে আহত হয়।
রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, ঘটনার পরে দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের তাদের ক্যাম্পাসে পাঠানো হয়েছে। তারা যেন মুখোমুখি না হতে পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এখন দুই কলেজের শিক্ষার্থীরাই ভেতরে ঢুকে গেছেন। ঘটনার প্রকৃত কারণ জানার চেষ্টা চলছে।
শিক্ষকদের ভূমিকার বিষয়ে মাসুদ আলম বলেন, এবারের ঘটনায় আমরা শিক্ষকদের সহায়তা পেয়েছি। অনেকেই চেষ্টা করছিলেন নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে নিতে। তবে শিক্ষক প্রতিনিধিদের সংখ্যা আরও বেশি হলে ভালো হয়। একজন বা কয়েকজন শিক্ষকের পক্ষে এত বড় সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, সে বিষয়ে আমরা কাজ করব।
ঘটনাস্থলে দেখা গেছে, সিটি কলেজে শিক্ষার্থীরা সায়েন্সল্যাব ফুটওভার ব্রিজের নিচে এবং ঢাকা কলেজে শিক্ষার্থীরা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সামনে অবস্থান নিয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। ডিসি মাসুদ আলমের নেতৃত্বে পুলিশ তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সায়েন্সল্যাব মোড়ের এক কিলোমিটারেরও কম দূরত্বে ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের অবস্থান। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা তুচ্ছ কারণে বছরে কয়েকবার সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে। গত ৯ ফেব্রুয়ারি ‘কথা কাটাকাটির’ জেরে সায়েন্সল্যাব এলাকায় সংঘর্ষে জড়ায় সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা। ওই বছর ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকা কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে জড়ায়।
সেদিন প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ১৮ জন আহত হন। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদেরকে ওই দিন আইডিয়াল কলেজের নামফলকও খুলে নিয়ে যেতে দেখা যায়। এর পাঁচদিন পর সায়েন্সল্যাব এলাকায় ঢাকা কলেজের একটি বাস ভাঙচুর করেন আইডিয়ালের শিক্ষার্থীরা। গত ২০ নভেম্বর ঢাকা কলেজের ১৮৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন দুপুরে কলেজের দুটি বাস সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা ভাঙচুর করেন। এ ঘটনার জেরে দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। সেদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা মারামারিতে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়।
পুলিশ ও কলেজ সংশ্লিষ্ট থেকে জানা গেছে, ওই ঘটনার পর ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ, আইডিয়াল কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ ও বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজের প্রতিনিধিসহ পুলিশের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। ধানমন্ডি এলাকার এসব কলেজগুলোর ছোট ছোট সমস্যা যেন বড় রূপ না নেয়, তা নিশ্চিত করতে কমিটি কাজ করবে বলে জানানো হয়।
মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫
রাজধানীর সায়েন্সল্যাব এলাকায় ঢাকা কলেজ ও ঢাকা সিটি কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আবারও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৫এপ্রিল) সকাল থেকে উত্তেজনা শুরুর পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের প্রকৃত কারণ জানা না গেলেও পূর্ব শত্রুতার জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
সংঘর্ষের কারণে সড়কের দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ হলে যাত্রীসহ সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে দুপুর থেকেই যান চলতে শুরু করে। ঘটনাস্থলে বিপুল পরিমাণ পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের ধানমন্ডি জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) শাহ মোস্তফা তারিকুজ্জামান বলেন, সকাল ১০টার পর থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। একপর্যায়ে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের প্রায় আড়াইশ-৩শ’ শিক্ষার্থী মুখোমুখি অবস্থান নিলে দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে আধাঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। শিক্ষার্থীদের যার যার ক্যাম্পাসে পাঠিয়ে দেয়া হয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় বাড়তি ফোর্স মোতায়েন রয়েছে। সড়কে যান চলাচলও স্বাভাবিক রয়েছে।
তারিকুজ্জামান আরও বলেন, শোনা গেছে, এক কলেজের শিক্ষার্থীরা আরেক কলেজের শিক্ষার্থীকে বাস থেকে নামিয়ে মারধর করেছে। পরে আরেক পক্ষ আবার মারধর করে। এর থেকেই উত্তেজনার সূত্রপাত হয়। প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা চলছে।
ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী জানান, গত ১৩ এপ্রিল সায়েন্সল্যাব এলাকায় একটি বাসে বাগবিত-ার জেরে ঢাকা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের এক শিক্ষার্থীর আইডি কার্ড নিয়ে নেয় সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা। সেই ঘটনা ফেইসবুকে পোস্ট করেন ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী। সেটিকে কেন্দ্র করে দুই কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
ঢাকা মেডিকেল সূত্র জানায়, দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে ইটের আঘাতে জাফরি (১৭) নামে ঢাকা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের এক
শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাকে চিকিৎসার জন্য দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হয়েছে। সাব্বির নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, গত সোমবার সিটি কলেজের শিক্ষার্থীর ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মারধর করে। সেটির প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে আমরা বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী একত্রিত হলে তারা ইট ছুড়লে জাফিরের কপালে লেগে আহত হয়।
রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, ঘটনার পরে দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের তাদের ক্যাম্পাসে পাঠানো হয়েছে। তারা যেন মুখোমুখি না হতে পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এখন দুই কলেজের শিক্ষার্থীরাই ভেতরে ঢুকে গেছেন। ঘটনার প্রকৃত কারণ জানার চেষ্টা চলছে।
শিক্ষকদের ভূমিকার বিষয়ে মাসুদ আলম বলেন, এবারের ঘটনায় আমরা শিক্ষকদের সহায়তা পেয়েছি। অনেকেই চেষ্টা করছিলেন নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে নিতে। তবে শিক্ষক প্রতিনিধিদের সংখ্যা আরও বেশি হলে ভালো হয়। একজন বা কয়েকজন শিক্ষকের পক্ষে এত বড় সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, সে বিষয়ে আমরা কাজ করব।
ঘটনাস্থলে দেখা গেছে, সিটি কলেজে শিক্ষার্থীরা সায়েন্সল্যাব ফুটওভার ব্রিজের নিচে এবং ঢাকা কলেজে শিক্ষার্থীরা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সামনে অবস্থান নিয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। ডিসি মাসুদ আলমের নেতৃত্বে পুলিশ তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সায়েন্সল্যাব মোড়ের এক কিলোমিটারেরও কম দূরত্বে ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের অবস্থান। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা তুচ্ছ কারণে বছরে কয়েকবার সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে। গত ৯ ফেব্রুয়ারি ‘কথা কাটাকাটির’ জেরে সায়েন্সল্যাব এলাকায় সংঘর্ষে জড়ায় সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা। ওই বছর ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকা কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে জড়ায়।
সেদিন প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ১৮ জন আহত হন। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদেরকে ওই দিন আইডিয়াল কলেজের নামফলকও খুলে নিয়ে যেতে দেখা যায়। এর পাঁচদিন পর সায়েন্সল্যাব এলাকায় ঢাকা কলেজের একটি বাস ভাঙচুর করেন আইডিয়ালের শিক্ষার্থীরা। গত ২০ নভেম্বর ঢাকা কলেজের ১৮৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন দুপুরে কলেজের দুটি বাস সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা ভাঙচুর করেন। এ ঘটনার জেরে দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। সেদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা মারামারিতে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়।
পুলিশ ও কলেজ সংশ্লিষ্ট থেকে জানা গেছে, ওই ঘটনার পর ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ, আইডিয়াল কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ ও বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজের প্রতিনিধিসহ পুলিশের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। ধানমন্ডি এলাকার এসব কলেজগুলোর ছোট ছোট সমস্যা যেন বড় রূপ না নেয়, তা নিশ্চিত করতে কমিটি কাজ করবে বলে জানানো হয়।