বিএনপি চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন চায়। আর সরকার বলছে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। নির্বাচনের তারিখ নিয়ে সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে খুব বেশি সময়ের পার্থক্য নেই। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের বয়স আট মাস পার হওয়ার পরও নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা না করার কারণে রাজনৈতিক অঙ্গনে তৈরি হচ্ছে নানা সন্দেহ ও প্রশ্ন। নির্বাচন বিলম্বিত হলে রাষ্ট্র অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে বলে মনে করেন রাজনীতিবিদরা।
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব না হলেও ফেব্রুয়ারির মধ্যে অবশ্যই নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে
বিএনপির যুক্তি, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব না হলেও ফেব্রুয়ারির মধ্যে অবশ্যই নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। কারণ এরপর রমজান, এসএসসি পরীক্ষা, এইচএসসি পরীক্ষা, গরম ও ঝড়-বৃষ্টির কারণে নির্বাচন করা সম্ভব নাও হতে পারে। ফলে নির্বাচন আরও বিলম্বিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। একই কথা বলছে জামায়াতে ইসলামীও। আর নির্বাচন বিলম্ব হলে রাষ্ট্র অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে বলে শঙ্কা বিএনপির।
তাই অন্তর্বর্তী সরকারের তরফ থেকে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণের ঘোষণা চায় বিএনপি। নির্বাচন ডিসেম্বরে না করতে পারলে আগামী জানুয়ারি কিংবা ফেব্রুয়ারিতে হলেও তেমন আপত্তি নেই দলটির। তবে সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ ঘোষণা করলে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে সব ধরনের শঙ্কা কেটে যাবে এবং দেশ নির্বাচনের দিকে যাত্রা শুরু করতে পারবে বলে মনে করেন তারা। রাজনৈতিক দলগুলোও আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করে দিতে পারবে।
সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে ইতোমধ্যে কিছু মহলের সমালোচনার মুখে বিএনপি। প্রশ্ন উঠছে দলটি সংস্কার চায়, নাকি ক্ষমতা চায়। বিএনপি বলছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংস্কারের প্রস্তাবে বিএনপি ইতিবাচক অবস্থান নিয়েছে। তারা সংস্কারের বিপক্ষে নয়, রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা দিয়ে এসেছেন তারা। তবে সংস্কারের নামে নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করা হলে তা তারা মানবে না। প্রয়োজনে নির্বাচনের জন্য আবার তারা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন। ঐকমত্য কমিশনে দেয়া রাজনৈতিক দলের প্রস্তাব প্রকাশ করে একমাসের মধ্যেই জুলাই সনদ স্বাক্ষর করে নির্বাচনী রোডম্যাপ দেয়া সম্ভব বলেও মত তাদের।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বিএনপি আশা করছে ডিসেম্বরের মধ্যে জনগণের প্রত্যাশা পূরণের নির্বাচন আয়োজন করবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।’
দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনা, বাঁচিয়ে রাখা এবং গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করাসহ সমস্ত উদ্যোগ বিএনপির নেতৃত্বে হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হলে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ হতে পারে।’
দলটির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আগে কারও মুখ দিয়ে সংস্কারের শব্দ বের হয়নি। কিন্তু বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের কথা বলে আসছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনের কাছে দেয়া সব রাজনৈতিক দলের সংস্কার প্রস্তাব
প্রকাশ করলে জনগণও জানল একমত কোথায় হয়েছে, কোথায় হয়নি। যেখানে ঐকমত হয়েছে, সেগুলোর সংস্কার একমাসের মধ্যে সমাধান করা যাবে। জুলাই সনদে স্বাক্ষরের মাধ্যমে নির্বাচনী রোডম্যাপ দেয়া সম্ভব।’
দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘বিএনপি সাত-আট বছর আগ থেকেই সংস্কারের কথা বলে আসছে। একবারে সংস্কার হয় না, সংস্কার ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকে। যে সরকারই আসুক সংস্কার করতে হবে। যেগুলো হাতে থাকবে সেগুলো অথবা নতুন কোনো সংস্কার।’
সংস্কার নিয়ে বিএনপির কোনো সমস্যা নেই জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা তো সংস্কার চাই। তবে নির্বাচন বিলম্ব করার কোনো কারণ দেখি না। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রোজা, তারপর গরম। এরপর এসএসসি পরীক্ষা রয়েছে। কাজেই জানুয়ারির মধ্যেই নির্বাচনটা হওয়াই ভালো। এরপরে গেলেই জনগণ ও বিএনপি মানবে না।’
১২ দলীয় জোটের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান হায়দার অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব। তাই বিভ্রান্তি এড়াতে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করার স্পষ্ট রোড ম্যাপ ঘোষণা করুন।’
শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫
বিএনপি চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন চায়। আর সরকার বলছে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। নির্বাচনের তারিখ নিয়ে সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে খুব বেশি সময়ের পার্থক্য নেই। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের বয়স আট মাস পার হওয়ার পরও নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা না করার কারণে রাজনৈতিক অঙ্গনে তৈরি হচ্ছে নানা সন্দেহ ও প্রশ্ন। নির্বাচন বিলম্বিত হলে রাষ্ট্র অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে বলে মনে করেন রাজনীতিবিদরা।
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব না হলেও ফেব্রুয়ারির মধ্যে অবশ্যই নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে
বিএনপির যুক্তি, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব না হলেও ফেব্রুয়ারির মধ্যে অবশ্যই নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। কারণ এরপর রমজান, এসএসসি পরীক্ষা, এইচএসসি পরীক্ষা, গরম ও ঝড়-বৃষ্টির কারণে নির্বাচন করা সম্ভব নাও হতে পারে। ফলে নির্বাচন আরও বিলম্বিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। একই কথা বলছে জামায়াতে ইসলামীও। আর নির্বাচন বিলম্ব হলে রাষ্ট্র অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে বলে শঙ্কা বিএনপির।
তাই অন্তর্বর্তী সরকারের তরফ থেকে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণের ঘোষণা চায় বিএনপি। নির্বাচন ডিসেম্বরে না করতে পারলে আগামী জানুয়ারি কিংবা ফেব্রুয়ারিতে হলেও তেমন আপত্তি নেই দলটির। তবে সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ ঘোষণা করলে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে সব ধরনের শঙ্কা কেটে যাবে এবং দেশ নির্বাচনের দিকে যাত্রা শুরু করতে পারবে বলে মনে করেন তারা। রাজনৈতিক দলগুলোও আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করে দিতে পারবে।
সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে ইতোমধ্যে কিছু মহলের সমালোচনার মুখে বিএনপি। প্রশ্ন উঠছে দলটি সংস্কার চায়, নাকি ক্ষমতা চায়। বিএনপি বলছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংস্কারের প্রস্তাবে বিএনপি ইতিবাচক অবস্থান নিয়েছে। তারা সংস্কারের বিপক্ষে নয়, রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা দিয়ে এসেছেন তারা। তবে সংস্কারের নামে নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করা হলে তা তারা মানবে না। প্রয়োজনে নির্বাচনের জন্য আবার তারা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন। ঐকমত্য কমিশনে দেয়া রাজনৈতিক দলের প্রস্তাব প্রকাশ করে একমাসের মধ্যেই জুলাই সনদ স্বাক্ষর করে নির্বাচনী রোডম্যাপ দেয়া সম্ভব বলেও মত তাদের।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বিএনপি আশা করছে ডিসেম্বরের মধ্যে জনগণের প্রত্যাশা পূরণের নির্বাচন আয়োজন করবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।’
দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনা, বাঁচিয়ে রাখা এবং গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করাসহ সমস্ত উদ্যোগ বিএনপির নেতৃত্বে হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হলে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ হতে পারে।’
দলটির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আগে কারও মুখ দিয়ে সংস্কারের শব্দ বের হয়নি। কিন্তু বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের কথা বলে আসছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনের কাছে দেয়া সব রাজনৈতিক দলের সংস্কার প্রস্তাব
প্রকাশ করলে জনগণও জানল একমত কোথায় হয়েছে, কোথায় হয়নি। যেখানে ঐকমত হয়েছে, সেগুলোর সংস্কার একমাসের মধ্যে সমাধান করা যাবে। জুলাই সনদে স্বাক্ষরের মাধ্যমে নির্বাচনী রোডম্যাপ দেয়া সম্ভব।’
দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘বিএনপি সাত-আট বছর আগ থেকেই সংস্কারের কথা বলে আসছে। একবারে সংস্কার হয় না, সংস্কার ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকে। যে সরকারই আসুক সংস্কার করতে হবে। যেগুলো হাতে থাকবে সেগুলো অথবা নতুন কোনো সংস্কার।’
সংস্কার নিয়ে বিএনপির কোনো সমস্যা নেই জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা তো সংস্কার চাই। তবে নির্বাচন বিলম্ব করার কোনো কারণ দেখি না। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রোজা, তারপর গরম। এরপর এসএসসি পরীক্ষা রয়েছে। কাজেই জানুয়ারির মধ্যেই নির্বাচনটা হওয়াই ভালো। এরপরে গেলেই জনগণ ও বিএনপি মানবে না।’
১২ দলীয় জোটের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান হায়দার অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব। তাই বিভ্রান্তি এড়াতে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করার স্পষ্ট রোড ম্যাপ ঘোষণা করুন।’