alt

ইলিয়াস কাঞ্চন-শওকত মাহমুদের নেতৃত্বে ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

‘নিরাপদ সড়ক চাই’-এর প্রধান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন এবং সাংবাদিক শওকত মাহমুদের নেতৃত্বে ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’ নামে আরও একটি নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করেছে। শুক্রবার, (২৫ এপ্রিল) হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এক অনুষ্ঠানে ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’-এর আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দেন শওকত মাহমুদ।

নতুন দল ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’-এর চেয়ারম্যান হয়েছেন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ সংগঠনের প্রধান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন এবং মহাসচিব হয়েছেন সাংবাদিক শওকত মাহমুদ। দুই বছর আগে বিএনপি থেকে বহিষ্কার হয়েছেন শওকত মাহমুদ। পরে জাতীয় ইনসাফ কমিটি নামে একটি সংগঠনের সদস্য সচিব হয়েছিলেন তিনি।

শুক্রবার দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে শওকত মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, প্রতিটি গণঅভ্যুত্থান, বিপ্লব ও আন্দোলনের পর ওই সব সংগ্রামী চেতনায় নতুন নতুন রাজনৈতিক দলের অভ্যুদয় ঘটে। যেহেতু রাষ্ট্র সাজবে একাত্তর ও চব্বিশের গণজাগরণের চেতনায়, সেই আঙ্গিকে নতুন দলের আবির্ভাব অনিবার্য।’

‘জাতির এই মাহেন্দ্রক্ষণে জাতীয় প্রত্যাশায় সব ধরনের বৈষম্য, ফ্যাসিবাদ, আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে- জনকল্যাণ, ইনসাফ ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে এবং গর্বিত জাতীয়তাবোধ দৃঢকরণ করতে আমরা আজ নতুন এই দলের আত্মপ্রকাশ ঘোষণা করছি।’

শওকত মাহমুদ বলেন, ‘মোটা দাগে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনা, ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান- সর্বোপরি ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের চেতনায় আমরা জনতা পার্টি বাংলাদেশ গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

‘আমাদের মূল স্লোগান হবে- গড়বো মোরা ইনসাফের দেশ। সাম্য, মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশকে বিনির্মাণের সফল অভিযাত্রায় আমরা এগিয়ে যেতে চাই।’

দলের ১৮ দফা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘অন্য দলের তুলনায় আমাদের পার্থক্য হবে নিখাদ দেশপ্রেম, চিন্তা-চেতনায় স্বচ্ছতা ও সাহসিকতা, দলের ভেতরে-বাইরে গণতন্ত্রের অব্যাহত চর্চা, উচ্চারণে-কর্মে-জনসেবায় অভিন্ন লক্ষ্যাভিসারী হওয়া। জনগণকে রাষ্ট্রের মালিকানা ও নীতিনির্ধারণের অধিকার ফিরিয়ে দেয়া।

১৯৯৩ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চন মারা যাওয়ার পর নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে রাজপথে নেমেছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি গড়ে তোলেন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ নামের সংগঠন।

শুক্রবার নতুন দলের অনুষ্ঠানে তিন দশকের সেই আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘৩২ বছর নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠনে যেভাবে আমি সততার সঙ্গে এদেশের মানুষের জন্য কাজ করেছি, আমি নতুন এই দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এদেশের জন্য সততার সঙ্গে কাজ করতে চাই। আমি আশা করি, আমাকে সহযোগিতা করবেন, অনুপ্রাণিত করবেন, আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।’

পরে ইলিয়াস কাঞ্চন নতুন দলের কমিটি ঘোষণা করেন। তারা হলেনÑ নির্বাহী চেয়ারম্যান ও মুখপাত্র গোলাম সারওয়ার মিলন, ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল হক হাফিজ, এ বি এম ওয়ালিউর রহমান খান, রেহানা সালাম, মো. আবদুল্লাহ, এম এ ইউসুফ ও নির্মল চক্রবর্তী, মহাসচিব শওকত মাহমুদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এম আসাদুজ্জামান, যুগ্ম মহাসচিব এ বি এম রফিকুল হক তালুদার রাজা, আল আমিন রাজু, নাজমুল আহসান, সমন্বয়নকারী নুরুল কাদের সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক মুরাদ আহমেদ।

সদস্যরা হলেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর ইমরান, অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল সাব্বির, প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক গুলজার হোসেন ও প্রচার সম্পাদক হাসিবুর রেজা কল্লোল।

উপদেষ্টা সদস্যরা হলেন শাহ মো. আবু জাফর, অবসরপ্রাপ্ত মেজর মুজিব, ইকবাল হোসেন মাহমুদ, ফরহাদ হোসেন মাহবুব, জাফর ইকবাল সিদ্দিকী, আউয়াল ঠাকুর, তৌহিদা ফারুকী, মামুনুর রশীদ।

পরে এই কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হবে বলে জানান চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন।

দলীয় ‘শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজে’ লিপ্ত থাকার অভিযোগে ২০২৩ সালের ২১ মার্চ শওকত মাহমুদকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানসহ দলের সব পদ থেকে ‘বহিষ্কার’ করা হয়। সেই প্রেক্ষাপটের কথা বলতে গিয়ে শওকত মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত দূরত্ব হয়েছে- সেটা হয়েছে যে, আমরা বেগম খালেদা জিয়ার অনুমতিতে ২০১২ সালে জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি গঠন করেছিলাম। সেই কমিটি যখন আমরা পুনরুজ্জীবিত করি এবং আমরা বলেছি যে, ইনসাফ কায়েম কমিটি একটা গণঅভ্যুত্থান করতে চায়; যেই গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে সব রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা থাকা প্রয়োজন। আমাদের এই আহ্বানকে বিএনপির কোনো কোনো নেতা ভুল বুঝেছে; মনে করেছেন যে, দলকে বোধহয় ভাঙতে চায়। সেই কারণে আমার সঙ্গে বিএনপির একটা বিচ্ছেদ ঘটে।’

তিনি বলেন, ২-৩ বছর ধরে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে মানুষের মতামত নিয়ে নতুন দল করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি হচ্ছে- পিবি। আমরা নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করবো এবং সেই সময়ে আমাদের গঠনতন্ত্র, লোগো, প্রতীক, পতাকা সবই আমরা জমা দেব।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রেজা কিবরিয়া, সাবেক মুখ্য সচিব এম এ আবদুল করীম, মুসলিম লীগের চেয়ারম্যান মহসিন রশীদ, জামায়াতে ইসলামীর কর্ম পরিষদের সদস্য মোবারক হোসাইন, ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির চেয়ারম্যান এ বি এম খন্দকার গোলাম মূর্তজা, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেনেন্ট জেনারেল নাজিম উদ্দিন, নৈতিক সমাজের প্রতিষ্ঠাতা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আমসা আমিন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের একাংশের মহাসচিব শাহ আহমেদে বাদল, গণআজাদী লীগের একাংশের সভাপতি আতাউল্লাহ খান, গণফোরামের একাংশের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হেলালউদ্দিন, জাস্টিস পার্টির চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মজুমদার, আমজনতা দলের দপ্তর সম্পাদক আরিফ বিল্লাহ, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ প্রমুখ।

ছবি

ইসি শতভাগ প্রস্তুত, ফেব্রুয়ারির প্রথম ভাগেই সংসদ নির্বাচন সম্ভব: মাছউদ

ছবি

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও ভুল তথ্য ছড়াচ্ছেন: প্রেস সচিব

ছবি

আইআরআইয়ের প্রাক-নির্বাচনী মূল্যায়ন প্রতিবেদন, বাংলাদেশে প্রাক-নির্বাচনী পরিবেশ এখনও নাজুক

ছবি

মেঘনা-ধনাগোদা নদীর উপর সেতু নির্মাণ প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করলেন সেতু বিভাগের সচিব

ছবি

তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিলের রায় ‘অসৎ উদ্দেশ্যে’ দেয়া হয়েছিল দাবি অ্যাটর্নি জেনারেলের

হালদা নদীকে মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন: দলগুলোকে দায়িত্ব দেয়ার চার দিনেও অগ্রগতি নেই

ছবি

শতভাগ জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনে বড় বাধা দুর্বল আইন, শক্তিশালীকরণের দাবি

ছবি

ইন্টারনেট বন্ধে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা, বিলুপ্ত হচ্ছে এনটিএমসি

ছবি

ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১০৩৪ জন

ছবি

আওয়ামী লীগের চিঠিতে কোনও কাজ হবে না: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

জুলাইযোদ্ধা জাহাঙ্গীর আলমকে নির্যাতনের অভিযোগে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের ১০ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

ছবি

মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার অধ্যাদেশের চূড়ান্ত অনুমোদন

ছবি

সাবেক বিচারপতিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ছবি

ডেঙ্গুতে একদিনে সর্বোচ্চ ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে আরও ১,০৬৯ জন

জামিনে মুক্তি পাওয়া আ’লীগ নেতারা অপরাধে জড়ালে কঠোর ব্যবস্থা: উপদেষ্টা

ছবি

তদন্ত প্রতিবেদন: পাইলটের ত্রুটির কারণে মাইলস্টোন স্কুলে বিমান বিধ্বস্ত হয়

ছবি

বাংলাদেশে পুলিশ সংস্কারে সহায়তার আগ্রহ আয়ারল্যান্ডের

ছবি

নির্বাচন হলে দেশে স্থিতিশীলতা আরও ভালো হবে, আশা সেনাবাহিনীর

ছবি

অগ্নিঝুঁকিতে বেনাপোল স্থলবন্দরের পণ্যাগার, ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ, নিরাপত্তা জোরদার

ছবি

নির্বাচন হলে দেশে স্থিতিশীলতা আসবে, সেনাবাহিনী ফিরবে ব্যারাকে: জিওসি মাইনুর রহমান

ছবি

নিষিদ্ধ দলের মিছিলের চেষ্টা করলে আইনের কঠোর প্রয়োগ: প্রেস সচিব

দায়িত্ব পালনে অযোগ্যতা: হাই কোর্টের বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারের অপসারণ

ছবি

দেশে ডেঙ্গুতে একদিনে প্রাণ গেল ১০ জনের

ছবি

আইসিটি মামলায় আটক ১৫ সেনা কর্মকর্তার চাকরি নিয়ে সেনাসদরের ব্যাখ্যা: “এটি একটি আইনগত প্রক্রিয়া”

ছবি

১৪ মাসে ৪০ বিচারবহির্ভূত হত্যা, আইনের মাধ্যমে ফয়সালা করা হবে: স্বরাষ্ট্র্র উপদেষ্টা

ছবি

আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ জারি: বিএনপির আপত্তি আমলে নেয়নি অন্তর্বর্তী সরকার

কোটা আন্দোলনে হামলায় ঢাবির আরও ২৭৫ শিক্ষার্থী অভিযুক্ত

ছবি

নির্বাচন: দেড় লাখের মধ্যে ৪৮ হাজার পুলিশের প্রশিক্ষণ শেষ

আবু সাঈদ হত্যা মামলায় তিনবারেও সাক্ষী হাজিরে ব্যর্থ প্রসিকিউশন

ছবি

নভেম্বর মাসেও কমছে না ডেঙ্গু, পরিস্থিতি উদ্বেগজনক

ছবি

সনদ, গণভোট: দলগুলোকে দ্রুত ‘সিদ্ধান্ত’ নেয়ার আহ্বান, নইলে পদক্ষেপ নেবে অন্তর্বর্তী সরকার

ছবি

ডেঙ্গু ও নিউমোনিয়ায় মাধবদীতে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি

ছবি

বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষা খাতে তুরস্কের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে চায় বাংলাদেশ

বিটিআরসির প্রস্তাবিত নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে ইন্টারনেটের দাম বাড়বে: আইএসপিএবি

ছবি

ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১১৪৭ জন

tab

ইলিয়াস কাঞ্চন-শওকত মাহমুদের নেতৃত্বে ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

‘নিরাপদ সড়ক চাই’-এর প্রধান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন এবং সাংবাদিক শওকত মাহমুদের নেতৃত্বে ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’ নামে আরও একটি নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করেছে। শুক্রবার, (২৫ এপ্রিল) হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এক অনুষ্ঠানে ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’-এর আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দেন শওকত মাহমুদ।

নতুন দল ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’-এর চেয়ারম্যান হয়েছেন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ সংগঠনের প্রধান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন এবং মহাসচিব হয়েছেন সাংবাদিক শওকত মাহমুদ। দুই বছর আগে বিএনপি থেকে বহিষ্কার হয়েছেন শওকত মাহমুদ। পরে জাতীয় ইনসাফ কমিটি নামে একটি সংগঠনের সদস্য সচিব হয়েছিলেন তিনি।

শুক্রবার দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে শওকত মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, প্রতিটি গণঅভ্যুত্থান, বিপ্লব ও আন্দোলনের পর ওই সব সংগ্রামী চেতনায় নতুন নতুন রাজনৈতিক দলের অভ্যুদয় ঘটে। যেহেতু রাষ্ট্র সাজবে একাত্তর ও চব্বিশের গণজাগরণের চেতনায়, সেই আঙ্গিকে নতুন দলের আবির্ভাব অনিবার্য।’

‘জাতির এই মাহেন্দ্রক্ষণে জাতীয় প্রত্যাশায় সব ধরনের বৈষম্য, ফ্যাসিবাদ, আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে- জনকল্যাণ, ইনসাফ ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে এবং গর্বিত জাতীয়তাবোধ দৃঢকরণ করতে আমরা আজ নতুন এই দলের আত্মপ্রকাশ ঘোষণা করছি।’

শওকত মাহমুদ বলেন, ‘মোটা দাগে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনা, ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান- সর্বোপরি ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের চেতনায় আমরা জনতা পার্টি বাংলাদেশ গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

‘আমাদের মূল স্লোগান হবে- গড়বো মোরা ইনসাফের দেশ। সাম্য, মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশকে বিনির্মাণের সফল অভিযাত্রায় আমরা এগিয়ে যেতে চাই।’

দলের ১৮ দফা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘অন্য দলের তুলনায় আমাদের পার্থক্য হবে নিখাদ দেশপ্রেম, চিন্তা-চেতনায় স্বচ্ছতা ও সাহসিকতা, দলের ভেতরে-বাইরে গণতন্ত্রের অব্যাহত চর্চা, উচ্চারণে-কর্মে-জনসেবায় অভিন্ন লক্ষ্যাভিসারী হওয়া। জনগণকে রাষ্ট্রের মালিকানা ও নীতিনির্ধারণের অধিকার ফিরিয়ে দেয়া।

১৯৯৩ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চন মারা যাওয়ার পর নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে রাজপথে নেমেছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি গড়ে তোলেন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ নামের সংগঠন।

শুক্রবার নতুন দলের অনুষ্ঠানে তিন দশকের সেই আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘৩২ বছর নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠনে যেভাবে আমি সততার সঙ্গে এদেশের মানুষের জন্য কাজ করেছি, আমি নতুন এই দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এদেশের জন্য সততার সঙ্গে কাজ করতে চাই। আমি আশা করি, আমাকে সহযোগিতা করবেন, অনুপ্রাণিত করবেন, আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।’

পরে ইলিয়াস কাঞ্চন নতুন দলের কমিটি ঘোষণা করেন। তারা হলেনÑ নির্বাহী চেয়ারম্যান ও মুখপাত্র গোলাম সারওয়ার মিলন, ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল হক হাফিজ, এ বি এম ওয়ালিউর রহমান খান, রেহানা সালাম, মো. আবদুল্লাহ, এম এ ইউসুফ ও নির্মল চক্রবর্তী, মহাসচিব শওকত মাহমুদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এম আসাদুজ্জামান, যুগ্ম মহাসচিব এ বি এম রফিকুল হক তালুদার রাজা, আল আমিন রাজু, নাজমুল আহসান, সমন্বয়নকারী নুরুল কাদের সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক মুরাদ আহমেদ।

সদস্যরা হলেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর ইমরান, অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল সাব্বির, প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক গুলজার হোসেন ও প্রচার সম্পাদক হাসিবুর রেজা কল্লোল।

উপদেষ্টা সদস্যরা হলেন শাহ মো. আবু জাফর, অবসরপ্রাপ্ত মেজর মুজিব, ইকবাল হোসেন মাহমুদ, ফরহাদ হোসেন মাহবুব, জাফর ইকবাল সিদ্দিকী, আউয়াল ঠাকুর, তৌহিদা ফারুকী, মামুনুর রশীদ।

পরে এই কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হবে বলে জানান চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন।

দলীয় ‘শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজে’ লিপ্ত থাকার অভিযোগে ২০২৩ সালের ২১ মার্চ শওকত মাহমুদকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানসহ দলের সব পদ থেকে ‘বহিষ্কার’ করা হয়। সেই প্রেক্ষাপটের কথা বলতে গিয়ে শওকত মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত দূরত্ব হয়েছে- সেটা হয়েছে যে, আমরা বেগম খালেদা জিয়ার অনুমতিতে ২০১২ সালে জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি গঠন করেছিলাম। সেই কমিটি যখন আমরা পুনরুজ্জীবিত করি এবং আমরা বলেছি যে, ইনসাফ কায়েম কমিটি একটা গণঅভ্যুত্থান করতে চায়; যেই গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে সব রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা থাকা প্রয়োজন। আমাদের এই আহ্বানকে বিএনপির কোনো কোনো নেতা ভুল বুঝেছে; মনে করেছেন যে, দলকে বোধহয় ভাঙতে চায়। সেই কারণে আমার সঙ্গে বিএনপির একটা বিচ্ছেদ ঘটে।’

তিনি বলেন, ২-৩ বছর ধরে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে মানুষের মতামত নিয়ে নতুন দল করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি হচ্ছে- পিবি। আমরা নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করবো এবং সেই সময়ে আমাদের গঠনতন্ত্র, লোগো, প্রতীক, পতাকা সবই আমরা জমা দেব।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রেজা কিবরিয়া, সাবেক মুখ্য সচিব এম এ আবদুল করীম, মুসলিম লীগের চেয়ারম্যান মহসিন রশীদ, জামায়াতে ইসলামীর কর্ম পরিষদের সদস্য মোবারক হোসাইন, ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির চেয়ারম্যান এ বি এম খন্দকার গোলাম মূর্তজা, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেনেন্ট জেনারেল নাজিম উদ্দিন, নৈতিক সমাজের প্রতিষ্ঠাতা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আমসা আমিন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের একাংশের মহাসচিব শাহ আহমেদে বাদল, গণআজাদী লীগের একাংশের সভাপতি আতাউল্লাহ খান, গণফোরামের একাংশের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হেলালউদ্দিন, জাস্টিস পার্টির চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মজুমদার, আমজনতা দলের দপ্তর সম্পাদক আরিফ বিল্লাহ, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ প্রমুখ।

back to top