রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে দুর্নীতির মাধ্যমে প্রায় ৫৯ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকের ভাই, স্ত্রী-সন্তানসহ প্রচ্ছায়া লিমিটেডের আট পরিচালকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
এই আটজনের মধ্যে শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার স্বামী শফিক আহেদ সিদ্দিকও রয়েছেন, যিনি তারিক আহমেদ সিদ্দিকের ভাই। তারিক সিদ্দিকের স্ত্রী শাহিন সিদ্দিক, দুই মেয়ে বুশরা সিদ্দিক ও নওরীন তাসমিয়া সিদ্দিকের নামেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।
এছাড়া সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল শহীদ উদ্দিন খান, তার স্ত্রী ফারজানা আনজুম, তাদের দুই মেয়ে শেহতাজ মুন্নাসী খান ও পারিজা পাইনাজ খানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে শাহিন সিদ্দিক প্রচ্ছায়া লিমিটেডের চেয়ারম্যান, বাকিরা সবাই পরিচালক।
দুদকের আবেদনে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। এই আটজনের মধ্যে কেউ কেউ আগে থেকেই বিদেশে অবস্থান করছেন। শেখ হাসিনার সরকার পতনের পরও অনেকে লাপাত্তা হয়েছেন।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম জানান, দুদকের উপপরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, ছোট বোন শেখ রেহানা, ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকী ও অন্যদের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে প্রায় ৫৯ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অনুসন্ধান করছে দুদকের সাত সদস্যের একটি দল।
আবেদনে আরও বলা হয়, প্রচ্ছায়া লিমিটেডের শেয়ারহোল্ডাররা সপরিবারে গোপনে দেশত্যাগের চেষ্টা করছেন। তারা পালিয়ে গেলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ডপত্র পেতে ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে এবং অনুসন্ধানে বিঘ্ন ঘটবে। তাই অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ যাত্রা নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন।
এর আগে ২৮ জানুয়ারি তারিক আহমেদ সিদ্দিকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল আদালত।
রূপপুর প্রকল্পে কী ধরনের দুর্নীতির তথ্য দুদকের হাতে এসেছে, তার একটি ধারণা পাওয়া যায় সরকারপ্রধানের দপ্তরের দেওয়া এক সারসংক্ষেপে। দুদকের বরাত দিয়ে ওই সারসংক্ষেপে বলা হয়, বিভিন্ন উন্মুক্ত সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, রূপপুর প্রকল্পে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের আর্থিক অনিয়ম হয়েছে।
এই প্রকল্পের জন্য অতিরিক্ত ব্যয় দেখিয়ে ১২.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তির মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করেছেন, যা মালয়েশিয়ার বিভিন্ন অফশোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পাচার করা হয়েছে।
সারসংক্ষেপে আরও বলা হয়, টিউলিপ সিদ্দিকের চাচা তারিক আহমেদ সিদ্দিক ছিলেন শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা। তার স্ত্রী ও মেয়ে প্রচ্ছায়া লিমিটেড (নিবন্ধন নম্বর সি-৭৫৬৫৯/০৯, তারিখ ২৫ মার্চ ২০০৯) নামের একটি ভুয়া কোম্পানির অংশীদার। এই কোম্পানি ডেসটিনি গ্রুপ নামের একটি চিট ফান্ড কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত ছিল।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, প্রচ্ছায়া লিমিটেড যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে প্রায় ৯০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচার করেছে। এই অর্থ দিয়ে যুক্তরাজ্যে জুমানা ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড প্রোপার্টিস লিমিটেড (নিবন্ধন নম্বর ৭৪১৭৪১৭, তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০১০) নামের একটি কোম্পানিও খোলা হয়েছে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিক রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে এক সাক্ষাতের পর থেকে মস্কোর সঙ্গে গোপন সম্পর্ক বজায় রেখেছেন।
গণ-অভ্যুত্থানের মুখে গত আগস্টে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর তার পরিবারের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু করে দুদক। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গুমের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ যে ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, তাদের মধ্যে তারিক আহমেদ সিদ্দিকের নামও রয়েছে।
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে দুর্নীতির মাধ্যমে প্রায় ৫৯ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকের ভাই, স্ত্রী-সন্তানসহ প্রচ্ছায়া লিমিটেডের আট পরিচালকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
এই আটজনের মধ্যে শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার স্বামী শফিক আহেদ সিদ্দিকও রয়েছেন, যিনি তারিক আহমেদ সিদ্দিকের ভাই। তারিক সিদ্দিকের স্ত্রী শাহিন সিদ্দিক, দুই মেয়ে বুশরা সিদ্দিক ও নওরীন তাসমিয়া সিদ্দিকের নামেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।
এছাড়া সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল শহীদ উদ্দিন খান, তার স্ত্রী ফারজানা আনজুম, তাদের দুই মেয়ে শেহতাজ মুন্নাসী খান ও পারিজা পাইনাজ খানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে শাহিন সিদ্দিক প্রচ্ছায়া লিমিটেডের চেয়ারম্যান, বাকিরা সবাই পরিচালক।
দুদকের আবেদনে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। এই আটজনের মধ্যে কেউ কেউ আগে থেকেই বিদেশে অবস্থান করছেন। শেখ হাসিনার সরকার পতনের পরও অনেকে লাপাত্তা হয়েছেন।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম জানান, দুদকের উপপরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, ছোট বোন শেখ রেহানা, ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকী ও অন্যদের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে প্রায় ৫৯ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অনুসন্ধান করছে দুদকের সাত সদস্যের একটি দল।
আবেদনে আরও বলা হয়, প্রচ্ছায়া লিমিটেডের শেয়ারহোল্ডাররা সপরিবারে গোপনে দেশত্যাগের চেষ্টা করছেন। তারা পালিয়ে গেলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ডপত্র পেতে ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে এবং অনুসন্ধানে বিঘ্ন ঘটবে। তাই অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ যাত্রা নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন।
এর আগে ২৮ জানুয়ারি তারিক আহমেদ সিদ্দিকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল আদালত।
রূপপুর প্রকল্পে কী ধরনের দুর্নীতির তথ্য দুদকের হাতে এসেছে, তার একটি ধারণা পাওয়া যায় সরকারপ্রধানের দপ্তরের দেওয়া এক সারসংক্ষেপে। দুদকের বরাত দিয়ে ওই সারসংক্ষেপে বলা হয়, বিভিন্ন উন্মুক্ত সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, রূপপুর প্রকল্পে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের আর্থিক অনিয়ম হয়েছে।
এই প্রকল্পের জন্য অতিরিক্ত ব্যয় দেখিয়ে ১২.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তির মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করেছেন, যা মালয়েশিয়ার বিভিন্ন অফশোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পাচার করা হয়েছে।
সারসংক্ষেপে আরও বলা হয়, টিউলিপ সিদ্দিকের চাচা তারিক আহমেদ সিদ্দিক ছিলেন শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা। তার স্ত্রী ও মেয়ে প্রচ্ছায়া লিমিটেড (নিবন্ধন নম্বর সি-৭৫৬৫৯/০৯, তারিখ ২৫ মার্চ ২০০৯) নামের একটি ভুয়া কোম্পানির অংশীদার। এই কোম্পানি ডেসটিনি গ্রুপ নামের একটি চিট ফান্ড কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত ছিল।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, প্রচ্ছায়া লিমিটেড যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে প্রায় ৯০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচার করেছে। এই অর্থ দিয়ে যুক্তরাজ্যে জুমানা ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড প্রোপার্টিস লিমিটেড (নিবন্ধন নম্বর ৭৪১৭৪১৭, তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০১০) নামের একটি কোম্পানিও খোলা হয়েছে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিক রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে এক সাক্ষাতের পর থেকে মস্কোর সঙ্গে গোপন সম্পর্ক বজায় রেখেছেন।
গণ-অভ্যুত্থানের মুখে গত আগস্টে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর তার পরিবারের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু করে দুদক। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গুমের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ যে ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, তাদের মধ্যে তারিক আহমেদ সিদ্দিকের নামও রয়েছে।