alt

জাতীয়

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ: জয় দেখাতে ক্ষয় আড়াল

নিউজ ডেস্ক : সোমবার, ১২ মে ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ভারতের একটি টেলিভিশন চ্যানেল পর্দাজুড়ে প্রচার করতে থাকে ‘পাকিস্তানের আত্মসমর্পণ’। এর কিছুক্ষণ পর ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের সামরিক পদক্ষেপ সন্ত্রাসীদের প্রতি একটি জোরালো বার্তা দিয়েছে। অন্যদিকে, পাকিস্তানের জনতা ইসলামাবাদের রাস্তায় নেমে ‘ভারতের বিরুদ্ধে সামরিক বিজয়’ উদযাপন করে। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেন, তাঁদের ‘সাহসী সেনাবাহিনী এক দর্শনীয় সামরিক ইতিহাস রচনা করেছে।’

শরিফ আরও বলেন, “মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আমাদের যুদ্ধবিমানগুলো যেভাবে ভারতের কামানগুলো স্তব্ধ করে দিয়েছে, ইতিহাস তা সহজে ভুলবে না।” এ সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কুশপুতুল পোড়ানো হচ্ছিল।

তবে বাস্তবতা হলো, পারমাণবিক শক্তিধর এই দুই প্রতিবেশীর সহিংসতায় উভয় পক্ষই প্রবলভাবে আঘাত করেছে এবং একই সঙ্গে প্রবল ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীনও হয়েছে।

পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা আকাশযুদ্ধে ফ্রান্সের তৈরি তিনটি রাফালসহ পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। যদি এ দাবি সত্য হয়, তবে তা ভারতীয় বিমানবাহিনীর জন্য এক বড় ধাক্কা।

সিএনএনের খবরে বলা হয়, পাকিস্তানের এই দাবি ওঠার সময় ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে দুটি বিমান বিধ্বস্ত হয়। ফ্রান্সের গোয়েন্দা সংস্থার এক সূত্র সিএনএনকে জানায়, অন্তত একটি রাফাল পাকিস্তান ভূপাতিত করেছে।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ যদিও এখনো কোনো যুদ্ধবিমান হারানোর কথা স্বীকার করেনি। তবে ভারত নতুন স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করে দাবি করেছে, তাদের হামলায় পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি বিমানঘাঁটি এবং রাডার স্টেশন ধ্বংস হয়েছে।

‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড়’ আকাশযুদ্ধে পাঁচটি যুদ্ধবিমান হারানোর পাকিস্তানের দাবির জবাবে ভারতীয় বিমানবাহিনী জানায়, “ক্ষয়ক্ষতি যুদ্ধেরই অংশ।”

রোববার দি????তে এক সংবাদ সম্মেলনে এয়ার মার্শাল এ. কে. ভারতী বলেন, “আমরা যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আছি এবং ক্ষয়ক্ষতি এতে অন্তর্ভুক্ত।” তিনি জানান, সব পাইলট নিরাপদে ফিরে এসেছেন, তবে বিস্তারিত কিছু জানাননি।

পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র জানান, তাদের পাইলটরা ভারতের তিনটি রাফাল, একটি এসইউ-৩০ ও একটি মিগ-২৯ ভূপাতিত করেছে। তবে ভারত এসব দাবি নিশ্চিত করেনি।

রয়টার্সকে কাশ্মীরের চারজন ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তা জানান, তাঁদের অঞ্চলে তিনটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে এবং ধ্বংসাবশেষ তিনটি ভিন্ন এলাকায় পাওয়া গেছে। এই বিমানের সব পাইলটকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ভারত জানিয়েছে, বুধবার রাত ১টা ৫ মিনিটে তারা পাকিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামোগুলোতে’ হামলা শুরু করে।

বুধবারই যুক্তরাষ্ট্রের দুই কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, পাকিস্তানি পাইলটরা চীনের তৈরি জে-১০ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ভারতের দুটি ফ্রান্সের তৈরি রাফালকে আকাশ থেকে গুলি করে নামিয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সংঘর্ষ চীনের আধুনিক যুদ্ধবিমান প্রযুক্তির

কার্যকারিতা দেখিয়েছে। ভবিষ্যতের যুদ্ধ পরিস্থিতি নির্ধারণে বিভিন্ন দেশের সামরিক বাহিনী এই লড়াই গভীরভাবে বিশ্লেষন করছে?।

এবারের সংঘর্ষে উভয় পক্ষই আগের চেয়ে কঠোর অবস্থানে ছিল। বিশেষ করে ভারত পূর্ববর্তী সংঘাতগুলোর চেয়ে ভিন্ন ফলাফল অর্জনের চেষ্টা করছিল। তবে এই দুই দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা বদলায়নি। বরং সংঘাত আরও নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

রোববার পর্যন্ত কোনো পক্ষই কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের উদ্যোগ নেয়নি। এমনকি পরস্পরের নাগরিকদের জন্য ভিসা নিষেধাজ্ঞাও বহাল ছিল। ভারতের পক্ষ থেকে সিন্ধু পানিচুক্তি মেনে চলারও কোনো প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়নি—যা পাকিস্তানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামাবাদ জানিয়ে দিয়েছে, নদীর পানি আটকে দেওয়া হলে তারা তা যুদ্ধ ঘোষণার শামিল মনে করবে।

এই উত্তেজনার সূচনা হয়েছিল ২২ এপ্রিল, কাশ্মীরের পেহেলগামে এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নিহত হওয়ার পর। ভারত এ হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে, যদিও পাকিস্তান তা প্রত্যাখ্যান করেছে।

এই সংঘর্ষে ৬ বছরের তুলনামূলক শান্তিপূর্ণ সম্পর্কের অবসান ঘটে। মোদি সরকার এই সময় পাকিস্তানের সঙ্গে ন্যূনতম কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখে কাশ্মীরে সামরিকীকরণ জোরদার করে। ২০১৬ ও ২০১৯ সালের হামলার পর ভারত যে কড়া সামরিক প্রতিক্রিয়ার ধারা শুরু করে, তারই ধারাবাহিকতায় এবারও তাৎক্ষণিক জবাব আসে।

তবে ভারতের জন্য প্রতিক্রিয়া জানানো সহজ ছিল না। ২০১৯ সালের সংঘাতে ভারতের একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছিল এবং পাকিস্তান একটি যুদ্ধবিমান গুলি করে নামিয়ে তার পাইলটকে আটক করেছিল।

সেই পর থেকে ভারতের সেনাবাহিনীকে আধুনিকীকরণে বিলিয়ন ডলারের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়, কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সরবরাহ–সংকটে তা বাধাগ্রস্ত হয়। একই সঙ্গে চীনের সঙ্গে সীমান্তে উত্তেজনা ভারতকে চাপে ফেলে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুদ্ধ পরিস্থিতি যত এগিয়েছে, কৌশলগত বা কার্যকর কোনো অগ্রগতির ইঙ্গিত মেলেনি। ভারত প্রথম ধাপের হামলায় শত্রু ভূখে এমন সব লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে, যা আগে কখনো করা হয়নি। এসব হামলা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ঘাঁটির কাছাকাছি হলেও, পুরোপুরি সফল বলা যাচ্ছে না।

উভয় পক্ষই প্রতিদিন তাদের বক্তব্যে নিজেদের বিজয়ী দেখাতে চেয়েছে। তবে বাস্তবতা ছিল প্রতিরাতে চলা হানাহানি ও ক্রমবর্ধমান গোলাবর্ষণ। সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয় সীমান্তবর্তী এলাকায়।

ড্রোন ও বিমান হামলা বাড়তে বাড়তে সংবেদনশীল সামরিক স্থাপনাগুলো পর্যন্ত পৌঁছায়। যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক চাপ তখন তীব্র হয়ে ওঠে, যাতে সৌদি আরব ও উপসাগরীয় দেশগুলোরও ভূমিকা ছিল।

এই চাপের পেছনে কারণ শুধু হামলার লক্ষ্যবস্তু নয়, বরং আশঙ্কা ছিল—উত্তেজনা বাড়তে থাকলে পারমাণবিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি প্রবল হয়ে উঠবে।

যুদ্ধবিরতির আগের শনিবার রাতে ভারত স্পষ্ট করে দেয়, আরেকটি সন্ত্রাসী হামলা হলে জবাব হবে আরও কঠোর।

ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল বেদ প্রকাশ মালিক বলেন, “আদৌ কোনো রাজনৈতিক বা কৌশলগত সুবিধা পাওয়া গেছে কি না, সেটি ভারতের ভবিষ্যৎ ইতিহাসই নির্ধারণ করবে।”

পারভেজ হত্যা: জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কারাগারে টিনা

লম্বা ছুটির কবলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

ছবি

জিআই সনদপ্রাপ্ত হাজরাপুরী লিচুমেলা বসেছে মাগুরায়

ছবি

বেরোবিতে ইউজিসির নিয়ম উপেক্ষা করে শিক্ষক নিয়োগ

ছবি

‘কোরবানির পশু পরিবহনে নৌপথে থাকবে কঠোর নিরাপত্তা’

দেশে যেসব কারণে বাড়ে প্লেনের সিটের দাম

ছবি

জাতীয় সংগীত অবমাননার প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষার্থীদের সমবেত কণ্ঠ

ছবি

পরিবর্তনের মানসিকতা নিয়ে চিকিৎসাসেবায় আত্মনিয়োগের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

ছবি

এবার গুজরাট থেকে ৭৮ বাংলাদেশিকে পুশব্যাক, নির্যাতনের অভিযোগ

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আড়ালে সাজানো নাটক চলছে: মির্জা আব্বাস

একাত্তরে যারা জনযুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল তারা অবস্থান ব্যাখ্যা করবে, আশা এনসিপির

ছবি

বাইসাইকেল কিনতে টাকা চুরি দেখে ফেলায় দুই খালাকে হত্যা

প্রজ্ঞাপন দেখে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত নেবে ইসি

আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সব সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ, প্রজ্ঞাপন

হাসিনাই জুলাই হত্যার ‘নির্দেশদাতা’: ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদন

ছবি

চলতি অর্থবছরে প্রবাসী আয়ে ২৭.৭০% প্রবৃদ্ধি, হুন্ডি কমায় ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স বৃদ্ধি

ছবি

চিকিৎসা ব্যয়ের চাপ, বিদেশে ডলার নেওয়ার অনুমোদিত সীমা বাড়লো

ছবি

র‍্যাব পুনর্গঠনে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন

ছবি

আওয়ামী লীগের নিবন্ধন: নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন দেখে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি

ছবি

জুলাইয়ের দমন-পীড়নের ‘মাস্টারমাইন্ড ও হুকুমদাতা’ শেখ হাসিনা: ট্রাইব্যুনালের তদন্ত প্রতিবেদন

ছবি

শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা

ছবি

দাবদাহ: ৭ পরামর্শ দিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

বনশ্রীতে শিশু গৃহকর্মীকে ধর্ষণ, গৃহকর্তা গ্রেপ্তার

এক যুগ পর ভাইয়ের বাসায় খালেদা জিয়া

নিষিদ্ধ সংগঠনের কার্যক্রম শক্ত হাতে দমন করা হবে -ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি

ছবি

পাথারিয়ায় বনভূমি দখল, জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে

ছবি

ঝিকরগাছা ও গুরুদাসপুরে বিএনপির দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, এক কর্মীর মৃত্যু

ছবি

২৫ মে পেট্রোল পাম্প মালিকদের কর্মবিরতির ঘোষণা

ছবি

প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগাম তথ্য জানাতে রাডার স্টেশন চালু

ছবি

সারাদেশে গরম চরমে, অতিষ্ঠ মানুষ ও প্রাণিকুল

‘ট্রেড বাস্কেটে’ সর্বোচ্চ গুরুত্ব যুক্তরাষ্ট্রের

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি

শেয়ারবাজারের জন্য প্রধান উপদেষ্টার পাঁচ নির্দেশনা

আ’লীগের নিবন্ধন বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত: সিইসি

নতুন সংবিধান প্রণয়নে ‘২ থেকে ৩ বছর সময় লাগতে পারে’: আইন উপদেষ্টা

ভারত-পাকিস্তান ‘যুদ্ধবিরতি’র স্থায়িত্ব নিয়ে সংশয়

tab

জাতীয়

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ: জয় দেখাতে ক্ষয় আড়াল

নিউজ ডেস্ক

সোমবার, ১২ মে ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ভারতের একটি টেলিভিশন চ্যানেল পর্দাজুড়ে প্রচার করতে থাকে ‘পাকিস্তানের আত্মসমর্পণ’। এর কিছুক্ষণ পর ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের সামরিক পদক্ষেপ সন্ত্রাসীদের প্রতি একটি জোরালো বার্তা দিয়েছে। অন্যদিকে, পাকিস্তানের জনতা ইসলামাবাদের রাস্তায় নেমে ‘ভারতের বিরুদ্ধে সামরিক বিজয়’ উদযাপন করে। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেন, তাঁদের ‘সাহসী সেনাবাহিনী এক দর্শনীয় সামরিক ইতিহাস রচনা করেছে।’

শরিফ আরও বলেন, “মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আমাদের যুদ্ধবিমানগুলো যেভাবে ভারতের কামানগুলো স্তব্ধ করে দিয়েছে, ইতিহাস তা সহজে ভুলবে না।” এ সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কুশপুতুল পোড়ানো হচ্ছিল।

তবে বাস্তবতা হলো, পারমাণবিক শক্তিধর এই দুই প্রতিবেশীর সহিংসতায় উভয় পক্ষই প্রবলভাবে আঘাত করেছে এবং একই সঙ্গে প্রবল ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীনও হয়েছে।

পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা আকাশযুদ্ধে ফ্রান্সের তৈরি তিনটি রাফালসহ পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। যদি এ দাবি সত্য হয়, তবে তা ভারতীয় বিমানবাহিনীর জন্য এক বড় ধাক্কা।

সিএনএনের খবরে বলা হয়, পাকিস্তানের এই দাবি ওঠার সময় ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে দুটি বিমান বিধ্বস্ত হয়। ফ্রান্সের গোয়েন্দা সংস্থার এক সূত্র সিএনএনকে জানায়, অন্তত একটি রাফাল পাকিস্তান ভূপাতিত করেছে।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ যদিও এখনো কোনো যুদ্ধবিমান হারানোর কথা স্বীকার করেনি। তবে ভারত নতুন স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করে দাবি করেছে, তাদের হামলায় পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি বিমানঘাঁটি এবং রাডার স্টেশন ধ্বংস হয়েছে।

‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড়’ আকাশযুদ্ধে পাঁচটি যুদ্ধবিমান হারানোর পাকিস্তানের দাবির জবাবে ভারতীয় বিমানবাহিনী জানায়, “ক্ষয়ক্ষতি যুদ্ধেরই অংশ।”

রোববার দি????তে এক সংবাদ সম্মেলনে এয়ার মার্শাল এ. কে. ভারতী বলেন, “আমরা যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আছি এবং ক্ষয়ক্ষতি এতে অন্তর্ভুক্ত।” তিনি জানান, সব পাইলট নিরাপদে ফিরে এসেছেন, তবে বিস্তারিত কিছু জানাননি।

পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র জানান, তাদের পাইলটরা ভারতের তিনটি রাফাল, একটি এসইউ-৩০ ও একটি মিগ-২৯ ভূপাতিত করেছে। তবে ভারত এসব দাবি নিশ্চিত করেনি।

রয়টার্সকে কাশ্মীরের চারজন ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তা জানান, তাঁদের অঞ্চলে তিনটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে এবং ধ্বংসাবশেষ তিনটি ভিন্ন এলাকায় পাওয়া গেছে। এই বিমানের সব পাইলটকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ভারত জানিয়েছে, বুধবার রাত ১টা ৫ মিনিটে তারা পাকিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামোগুলোতে’ হামলা শুরু করে।

বুধবারই যুক্তরাষ্ট্রের দুই কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, পাকিস্তানি পাইলটরা চীনের তৈরি জে-১০ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ভারতের দুটি ফ্রান্সের তৈরি রাফালকে আকাশ থেকে গুলি করে নামিয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সংঘর্ষ চীনের আধুনিক যুদ্ধবিমান প্রযুক্তির

কার্যকারিতা দেখিয়েছে। ভবিষ্যতের যুদ্ধ পরিস্থিতি নির্ধারণে বিভিন্ন দেশের সামরিক বাহিনী এই লড়াই গভীরভাবে বিশ্লেষন করছে?।

এবারের সংঘর্ষে উভয় পক্ষই আগের চেয়ে কঠোর অবস্থানে ছিল। বিশেষ করে ভারত পূর্ববর্তী সংঘাতগুলোর চেয়ে ভিন্ন ফলাফল অর্জনের চেষ্টা করছিল। তবে এই দুই দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা বদলায়নি। বরং সংঘাত আরও নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

রোববার পর্যন্ত কোনো পক্ষই কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের উদ্যোগ নেয়নি। এমনকি পরস্পরের নাগরিকদের জন্য ভিসা নিষেধাজ্ঞাও বহাল ছিল। ভারতের পক্ষ থেকে সিন্ধু পানিচুক্তি মেনে চলারও কোনো প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়নি—যা পাকিস্তানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামাবাদ জানিয়ে দিয়েছে, নদীর পানি আটকে দেওয়া হলে তারা তা যুদ্ধ ঘোষণার শামিল মনে করবে।

এই উত্তেজনার সূচনা হয়েছিল ২২ এপ্রিল, কাশ্মীরের পেহেলগামে এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নিহত হওয়ার পর। ভারত এ হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে, যদিও পাকিস্তান তা প্রত্যাখ্যান করেছে।

এই সংঘর্ষে ৬ বছরের তুলনামূলক শান্তিপূর্ণ সম্পর্কের অবসান ঘটে। মোদি সরকার এই সময় পাকিস্তানের সঙ্গে ন্যূনতম কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখে কাশ্মীরে সামরিকীকরণ জোরদার করে। ২০১৬ ও ২০১৯ সালের হামলার পর ভারত যে কড়া সামরিক প্রতিক্রিয়ার ধারা শুরু করে, তারই ধারাবাহিকতায় এবারও তাৎক্ষণিক জবাব আসে।

তবে ভারতের জন্য প্রতিক্রিয়া জানানো সহজ ছিল না। ২০১৯ সালের সংঘাতে ভারতের একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছিল এবং পাকিস্তান একটি যুদ্ধবিমান গুলি করে নামিয়ে তার পাইলটকে আটক করেছিল।

সেই পর থেকে ভারতের সেনাবাহিনীকে আধুনিকীকরণে বিলিয়ন ডলারের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়, কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সরবরাহ–সংকটে তা বাধাগ্রস্ত হয়। একই সঙ্গে চীনের সঙ্গে সীমান্তে উত্তেজনা ভারতকে চাপে ফেলে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুদ্ধ পরিস্থিতি যত এগিয়েছে, কৌশলগত বা কার্যকর কোনো অগ্রগতির ইঙ্গিত মেলেনি। ভারত প্রথম ধাপের হামলায় শত্রু ভূখে এমন সব লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে, যা আগে কখনো করা হয়নি। এসব হামলা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ঘাঁটির কাছাকাছি হলেও, পুরোপুরি সফল বলা যাচ্ছে না।

উভয় পক্ষই প্রতিদিন তাদের বক্তব্যে নিজেদের বিজয়ী দেখাতে চেয়েছে। তবে বাস্তবতা ছিল প্রতিরাতে চলা হানাহানি ও ক্রমবর্ধমান গোলাবর্ষণ। সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয় সীমান্তবর্তী এলাকায়।

ড্রোন ও বিমান হামলা বাড়তে বাড়তে সংবেদনশীল সামরিক স্থাপনাগুলো পর্যন্ত পৌঁছায়। যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক চাপ তখন তীব্র হয়ে ওঠে, যাতে সৌদি আরব ও উপসাগরীয় দেশগুলোরও ভূমিকা ছিল।

এই চাপের পেছনে কারণ শুধু হামলার লক্ষ্যবস্তু নয়, বরং আশঙ্কা ছিল—উত্তেজনা বাড়তে থাকলে পারমাণবিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি প্রবল হয়ে উঠবে।

যুদ্ধবিরতির আগের শনিবার রাতে ভারত স্পষ্ট করে দেয়, আরেকটি সন্ত্রাসী হামলা হলে জবাব হবে আরও কঠোর।

ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল বেদ প্রকাশ মালিক বলেন, “আদৌ কোনো রাজনৈতিক বা কৌশলগত সুবিধা পাওয়া গেছে কি না, সেটি ভারতের ভবিষ্যৎ ইতিহাসই নির্ধারণ করবে।”

back to top